নাসার সঙ্গে রাশিয়ার নতুন চুক্তি
২ মে ২০১৩আন্তর্জাতিক স্পেস স্টেশনে মহাকাশচারী ও রসদ পাঠানোর ব্যয় ভবিষ্যতে বেড়ে যাচ্ছে৷ ২০১৬ এবং ২০১৭ সালে প্রতি মহাকাশচারীর জন্য ৭ কোটি ৭০ হাজার ডলার গুনতে হবে মার্কিন মহাকাশ সংস্থা নাসা-কে৷ এই মর্মে তারা রুশ মহাকাশ সংস্থা রসকসমস-এর সঙ্গে ৪২ কোটি ৪০ লক্ষ ডলারের একটি চুক্তি স্বাক্ষর করেছে৷ প্রশিক্ষণ, উৎক্ষেপণের প্রস্তুতি, মূল অভিযান, অভিযান শেষে পৃথিবীতে ফেরা এবং প্রয়োজনে উদ্ধারকার্য – প্রতিটি ধাপই চুক্তির আওতায় আছে৷
২০১৫ সাল পর্যন্ত নাসা ও রসকসমস-এর মধ্যে যে চুক্তি কার্যকর রয়েছে, তাতে আইএসএস-এ মহাকাশচারী পাঠানোর খরচ ছিল ৬ কোটি ২৭ লক্ষ ডলার৷ এই মুহূর্তে রাশিয়ার সোইয়ুজ মহাকাশযান ছাড়া আন্তর্জাতিক স্পেস স্টেশনে মানুষের যাতায়াত প্রায় অসম্ভব বলা চলে৷ মার্কিন বেসরকারি কিছু সংস্থা আইএসএস-এ রসদ পাঠানোর উদ্যোগ শুরু করেছে বটে, কিন্তু অদূর ভবিষ্যতে মহাকাশচারী পাঠানোর কোনো পথ অ্যামেরিকার সামনে খোলা নেই৷
নাসার পক্ষে তাদের বর্তমান দুর্বলতা মেনে নেওয়া বেশ কঠিন৷ নাসার প্রশাসক চার্লস বোল্ডেন সহযোগী হিসেবে রাশিয়ার প্রশংসা করেও বলেন, বেসরকারি সংস্থাগুলি মহাকাশে মানুষ পাঠাতে যে উদ্যোগ নিতে চায়, তার জন্য আরও অনেক অর্থের প্রয়োজন৷ অথচ মার্কিন সংসদের সদস্যরা সেই পরিমাণ অর্থ মঞ্জুর করতে প্রস্তুত নন৷ ২০১৫ সালের মধ্যেই অ্যামেরিকা আবার মহাকাশচারী পাঠানোর যে পরিকল্পনা নিয়েছিল, সেই স্বপ্ন এখন ভেঙে গেছে৷ ফলে ভবিষ্যতেও রাশিয়ার উপর নির্ভর করা ছাড়া কোনো উপায় থাকছে না৷ খোদ প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা মহাকাশ কর্মসূচির অর্থায়নের যে পরিকল্পনা নিয়েছিলেন, সংসদ তা গ্রাহ্য করে নি৷ এই অবস্থায় বোল্ডেন মনে করেন, ২০১৭ সাল পর্যন্ত নাসাকে হাত-পা গুটিয়ে বসে থাকতে হবে৷
যে দেশ প্রথম চাঁদে মানুষ পাঠিয়েছে ও সৌরজগতের সীমা পেরিয়ে মহাকাশ অভিযান চালিয়েছে, সেই দেশের আজ পৃথিবীর কক্ষপথে মহাকাশচারী পাঠানোর সামর্থ্য নেই, এমনটা মেনে নিতে পারছেন না নাসা-প্রধান বোল্ডেন সহ অনেকেই৷ মহাকাশ অভিযানে বেসরকারি উদ্যোগের পথ খুলে দিলেও রাষ্ট্রকে যে অর্থ বিনিয়োগ করতে হবে, তাও সংগ্রহ করতে সমস্যা হচ্ছে৷
এসবি/ডিজি (ডিপিএ, এএফপি)