1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

না ফেরার শর্তে মঙ্গল যাত্রা

কার্স্টিন শ্রাইবার/এআই২২ ফেব্রুয়ারি ২০১৪

সারা জীবন আপনি কি একটা বাংকারের ভিতর কাটাতে পারবেন? পারবেন কি পরিবার-পরিজনকে ছেড়ে বহু দূরে বহু বছর কাটিয়ে দিতে? কিংবা ফেরা যাবে না এমন পথে যাত্রা করতে? মঙ্গলগ্রহে বসবাসে আগ্রহীরা কিন্তু এসব মেনে নিয়েই আবেদন করেছেন৷

Stephan Günther Mars One Flug 2014
ছবি: DW/A.-S. Brändlin

মঙ্গলগ্রহে বসবাসের স্বপ্ন দেখে মানুষ৷ সেই স্বপ্ন পূরণের লক্ষ্যে ডাচ কোম্পানি ‘মার্স ওয়ান' মঙ্গলে বসতি স্থাপন করবে৷ তবে মঙ্গল যাত্রা হবে একমুখী৷ ফিরে আসার কোনো উপায় থাকবে না৷ জার্মান ফ্লাইট প্রশিক্ষক স্টেফেন গ্যুন্টার এমন যাত্রার জন্য আবেদন করেছেন৷ তিনি বলেন, ‘‘মহাকাশ সবসময় আমাকে আকর্ষণ করেছে৷ আমি সমসময় মহাকাশ ভ্রমণের সুযোগ খুঁজেছি৷ এটা এখন বলে বোঝানো কিংবা হিসেব কষে দেখানো সম্ভব নয়৷ আগ্রহটা আমার ভেতরেই রয়েছে যা আমাকে মহাকাশের দিকে টানছে৷''

দশ বছর পর মঙ্গল যাত্রা শুরু হবে – সারা জীবন ধরে যে যাত্রার স্বপ্ন দেখেছেন গ্যুন্টার৷ তিনি বলেন, ‘‘আমার সর্বনিম্ন লক্ষ্য ছিল পৃথিবীর কক্ষপথ অবধি যাওয়া, আর লক্ষ্য ছিল চাঁদ৷ ২০১২ সাল পর্যন্ত ব্যাপারটা এমনই ছিল৷ কিন্তু এখন আমার লক্ষ্য মঙ্গলে যাত্রা৷ আমি এই যাত্রার জন্য প্রস্তুত৷ আমি মনে করি এতে আমার জীবন পূর্ণতা পাবে৷''

কারিগরি শিক্ষা, বিমান চালনার মার্কিন লাইসেন্স, মহাকাশ বিষয়ক অ্যাপ তৈরিসহ মহাকাশে যাত্রার জন্য প্রয়োজনীয় বিভিন্ন বিষয়গুলি রপ্ত করেছেন গ্যুন্টার৷ অন্তত তিনি নিজে এমনটা মনে করেন৷ স্বপ্ন বাস্তবায়নে শারীরিকভাবেও নিজেকে ফিট রাখছেন তিনি৷ ইতোমধ্যে ১৪ কেজি ওজন কমিয়েছেন৷ তবে প্রতিযোগিতা সহজ হবে না৷ কারণ, দু'লাখের বেশি মানুষ যে মঙ্গলের উদ্দেশ্যে যাত্রায় অংশ নিতে আবেদন করেছেন৷

গ্যুন্টারের এই একমুখী মঙ্গল যাত্রায় শরিক হওয়ার আবেদনের কথা শুনে তাঁর স্ত্রী বিয়াটে ভিডেন প্রথমে কষ্ট পেয়েছিলেন৷ তিনি বলনে, ‘‘সে যখন প্রথম আমাকে জানিয়েছিল বা আমি বুঝেছিলাম যে, এটা একমুখী যাত্রা, অর্থাৎ মঙ্গলের উদ্দেশ্যে রওয়ানা দেয়ার পর বা সেখানে পৌঁছানোর পর পৃথিবীতে আর ফিরে আসা যাবে না – তখন স্বাভাবিকভাবেই আমি প্রচণ্ড ভয় পেয়েছি৷ কারণ আমরা পৃথিবীতে ভালো আছি, এখানে সবকিছু ঠিকভাবে চলছে৷ তা সত্ত্বেও সে কেনো একমুখী যাত্রার এই প্রকল্পে অংশ নেবে৷''

বিয়াটের স্বামী অবশ্য এখনো মঙ্গল যাত্রার জন্য নির্বাচিত হননি৷ তবে তিনি মনে করেন, মঙ্গল থেকে ফিরে আসারও একটি উপায় বের করা উচিত৷ ‘মার্স ওয়ান' প্রকল্পে ফিরে আসার সুযোগ না থাকার সমালোচনা করেছেন রুপার্ট গ্যার্সারও৷ কোলনে অবস্থিতি ‘ইন্সটিটিউট অফ এরোস্পেস মেডিসিন'-এর পরিচালক তিনি৷

সব ঠিক থাকলে ২০২৩ সাল নাগাদ পৃথিবীকে চির বিদায় জানাবেন স্টেফেন গ্যুন্টারছবি: Stephan Günther

রুপার্ট বলেন, ‘‘প্রথমত আমি মনে করি, বর্তমান সময়ের প্রেক্ষাপটে এটি একটি অবাস্তব প্রকল্প৷ দ্বিতীয়ত, আমার মতে, এটি একটি আত্মঘাতী মিশন৷ সবসময় একটি ছোট্ট বাংকারে আবদ্ধ পরিবেশে বসবাস সম্ভব নয়৷ অন্তত আমি মনে করি, এভাবে কয়েক বছর হয়ত থাকা যেতে পারে৷ কিন্তু সারা জীবন বাংকারে বসবাস অবাস্তব ব্যাপার৷ নীতিগতভাবে মঙ্গলে বৈজ্ঞানিক অভিযান খুবই রোমাঞ্চকর৷ কিন্তু জেনেশুনে মানুষকে মৃত্যুর মুখে ঠেলে দেয়া অনৈতিক৷''

‘মার্স ওয়ান'-এর একমুখী মঙ্গল যাত্রা নিয়ে মূল সমালোচনা হচ্ছে, এটি নৈতিক বিবেচনায় সমর্থনযোগ্য নয়৷ তবে গ্যুন্টার এই সমালোচনা আমলে নিতে আগ্রহী নয়৷ সে এই বিষয়টি বুঝতে পারছে না বা বুঝতে চাচ্ছে না৷

মঙ্গল যাত্রার জন্য চল্লিশ জনের প্রাথমিক তালিকায় স্টেফেন গ্যুন্টার থাকবেন কিনা তা জানা যাবে শীঘ্রই৷ সব ঠিক থাকলে ২০২৩ সাল নাগাদ পৃথিবীকে চির বিদায় জানাবেন তিনি, চলে যাবেন না ফেরার দেশ, মঙ্গলে৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য
স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ