1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

উত্তরাধিকার

১৪ সেপ্টেম্বর ২০১২

জার্মানিতে দিন দিন বয়স্ক মানুষের সংখ্যা বাড়ছে৷ সমস্যা হলো এদের অনেকেই নিঃসঙ্গ অবস্থায় মারা যান৷ মারা যাওয়ার পর তাদের কোন উত্তরাধিকারী কিংবা আত্মীয় স্বজন পাওয়া যায় না৷ তখন তাদের দায় দায়িত্ব এসে পড়ে রাষ্ট্রের ওপর৷

ছবি: Fotolia/cammer

এটা যেমন একদিকে কর্তৃপক্ষের কাঁধে বোঝা, অন্যদিকে অনেক সময় আর্থিক লাভও নিয়ে আসে৷

জার্মানির জনসংখ্যা দিন দিন বুড়িয়ে যাচ্ছে এটা গত কয়েক বছরের পরিসংখ্যানই বলে দেয়৷ তাদের অনেকেই কোন উত্তরাধিকারী বা আত্মীয় না রেখেই এই পৃথিবী থেকে চিরবিদায় নিচ্ছে৷ প্রতি বছর এভাবে মারা যাচ্ছে গড়ে এক লাখ ৭০ হাজার মানুষ৷ আর এসব মৃতদের কবর দেওয়া থেকে শুরু করে তাদের স্থাবর অস্থাবর সম্পত্তির দায়িত্ব চলে আসে কর্তৃপক্ষের কাছে৷ এইসব সম্পত্তি দেখাশোনার খরচটাও তখন সরকারকে বহন করতে হয়৷

সাধারণত মৃত ব্যক্তি যে এলাকাতে থাকেন সেখানকার স্থানীয় আদালত এই ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিয়ে থাকেন৷ তারা খোঁজ করে দেখেন মৃত ব্যক্তির কোন ছেলেমেয়ে কিংবা আত্মীয় স্বজন রয়েছেন কিনা৷ এরপর তারা সেই রাজ্যের সংশ্লিষ্ট সরকারি আদালতের কাছে এই ব্যাপারে চিঠি পাঠিয়ে দেন৷ যেমন জার্মানির নর্থ রাইন ওয়েস্টফালিয়ার আর্ন্সব্যার্গ শহরের কর্তৃপক্ষের জন্য কাজ করেন টোমাস পেপারহোফে৷ তিনি বলেন, ‘‘ নিয়মানুযায়ী আমাদের কাছে বিষয়টি আসে যখন কারো কোন উত্তরাধিকারী থাকে না৷ দুটি ক্ষেত্রে এটি ঘটে, হয় মৃতের কোন উত্তরাধিকারী নেই, অথবা মৃতের ঘাড়ে এত দেনা চেপেছে যে তার উত্তরাধিকারী সেটির দায় দায়িত্ব নিতে চাচ্ছে না৷''

কারো দায়দেনা কে নিতে চায়? ছেলেমেয়ে নিতে না চাইলে এড়িয়ে যেতে পারে, তবে আইন অনুযায়ী সরকার সেটি পারে না৷ তাই টোমাস পেপারহোফে চাইলেও এই ধরণের কেস প্রত্যাখ্যান করতে পারেন না৷ তাই শেষ পর্যন্ত মৃতের উত্তরাধিকার জোর করেই রাষ্ট্রকে নিতে হয়৷ যেমনটি তিনি বললেন, ‘‘খারাপ লাগলেও সত্যি, কারণ এই ব্যাপারে সুনির্দিষ্ট আইন রয়েছে যে রাষ্ট্রকে এগুলোর দেখাশোনা করতে হবে৷ তাই কারো উত্তরাধিকারী না থাকলে সেটার দায়িত্ব জোর করেই আমাদের নিতে হয়৷''

মালিকের মৃত্যুর পর বাড়ির মালিকানা কার কাছে যাবে?ছবি: Fotolia/M.Rosenwirth

এই ধরণের ঘটনার বেশিরভাগ ঘটে জমিজমার বেলায়৷ এছাড়া অনেক সময় স্থাবর সম্পত্তিও দেখাশোনা করতে হয়, যেমন কারো পুড়ে যাওয়া বাড়ি, গুদামঘর ইত্যাদি৷ আর এগুলো দেখাশোনার জন্য যে খরচ হয় সেগুলো তো জনগণের পয়সা থেকেই আসে৷ যেমন কারো শীত গ্রীষ্মে বাড়িটিকে রক্ষণাবেক্ষণ করা, আবার জমির চারদিকে বেড়া দেওয়া যাতে অন্য কেউ সেখানে প্রবেশ করতে না পারে৷ এতসব কাজের জন্য পেপারহোফে আর তার চারজন সহকারীকে প্রচুর পরিশ্রম করতে হয়৷ গত দশ বছরে এই ধরণের চেপে বসা উত্তরাধিকারের পরিমাণ দ্বিগুণ হয়ে গেছে৷

তবে এই ধরণের কাজে আর্থিক লাভও হয় অনেক সময়৷ যেমন কোন ব্যক্তি যদি মৃত্যুর সময় প্রচুর সম্পত্তি রেখে যান, তাহলে তার সেইসব সম্পত্তি সরকারের হস্তগত হয়৷ যেমন এই বছর তেমনই একটি ঘটনার কথা জানালেন টোমাস পেপারহোফে৷ তিনি বলেন, ‘‘এই বছর তেমন একটি ঘটনায় আমরা ১২ লাখ ইউরো পেয়েছি৷ মৃত ব্যক্তির কোন উত্তরাধিকারী ছিলো না৷ এবং আমরা দুই বছর ধরে খোঁজ খবর নেওয়ার পরও কাউকে পাইনি৷''

জার্মানির অনেক মানুষ অবসরে চলে যাওয়ার পর ভিনদেশে গিয়ে বসবাস শুরু করেন৷ এমন অনেক ব্যক্তি মারা যাওয়ার পর তাদের সহায় সম্পত্তির দায়িত্বও জার্মানির কর্তৃপক্ষের ওপর চলে আসে৷ এবং দিন দিন এর সংখ্যা বাড়ছে৷ যেমন ২০০১ সালে এমন ঘটনা ছিলো ৯৬টি, আর গত বছর ছিলো ২৪৬টি৷ এই বছর সেটি আরও বাড়বে বলে মনে করেন পেপারহোফে৷ তার ভাষায়, ‘‘চলতি বছরের জুলাইয়ের শেষেই এই ধরণের ১৮০টি ঘটনা আমরা পেয়েছি৷ তার মানে হচ্ছে বছরের বাকি সময়গুলোতেও যদি এইভাবে আসতে থাকে তাহলে প্রথমবারের মত এই সংখ্যা ৩০০ ছাড়িয়ে যাবে৷''

বিদেশে কোন জার্মান মারা গেলে সেটি নিয়েও জটিলতা আছে৷ যেমন তার বিষয়-আশয় কি সেখানকার আইন অনুযায়ী দেখা হবে নাকি জার্মান আইন অনুযায়ী হবে সেটি নিয়েও চিন্তাভাবনা করতে হয় সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে৷

প্রতিবেদন: ক্লাউস ডয়স/আরআই

সম্পাদনা: সঞ্জীব বর্মন

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য
স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ