প্রশান্ত মহাসাগরের এক ভাসমান ট্রানজিট পয়েন্টে কোকেনের বড় এক চালান ফেলে দেয়া হয়৷ সেগুলো সেখান থেকে তুলে অস্ট্রেলিয়ায় নিয়ে যাওয়ার কথা ছিল বলে জানিয়েছে নিউজিল্যান্ডের কর্তৃপক্ষ৷
যুক্তরাষ্ট্র, ক্যানাডা, ব্রিটেন, অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ডের গোয়েন্দাদের তথ্য বিনিময়ে এই অপরাধ উদঘাটন সম্ভব হয়েছেছবি: NZDF
বিজ্ঞাপন
প্রশান্ত মহাসাগরে ভাসমান অবস্থায় পাওয়া ৩০০ মিলিয়ন ডলারের (২৭৯.৫ মিলিয়ন ইউরো) বেশি মূল্যের কোকেন জব্দ করেছে নিউজিল্যান্ড৷ পুলিশ জানিয়েছে, এ যাবৎকালের মধ্যে এটা মাদকের সবচেয়ে বড় চালান আটক, যা আগামী ৩০ বছর নিউজিল্যান্ডের চাহিদা পূরণের জন্য যথেষ্ট৷
‘‘এটিই হচ্ছে সবচেয়ে বড় অবৈধ মাদকের সন্ধান,” নিউজিল্যান্ডের পুলিশ কমিশনার অ্যান্ড্রু কস্টার বলেন৷
বিপুল পরিমাণ কোকেন উদ্ধার সম্ভব হয়েছে ‘ফাইভ আইজ’ জোটের মধ্যে গোয়েন্দা তথ্য আদান-প্রদানের কারণে৷ এই নেটওয়ার্কে রয়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ক্যানাডা, ব্রিটেন, অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ড৷
কোন দেশের মাদক আইনে কী শাস্তি?
বাংলাদেশের মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ বিল ২০১৮ অনুযায়ী মাদক সেবন ও বহনের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড৷ ছবিঘরে বিশ্বের আরো কয়েকটি দেশের মাদক আইনের তথ্য থাকছে৷
ছবি: picture-alliance/dpa/B. Walton
মালয়েশিয়া
মাদক বিক্রি করতে গিয়ে ধরা পড়লে মৃত্যুদণ্ড হতে পারে৷ এজন্য মাদক রাখার জন্য জেল, জরিমানার ব্যবস্থা আছে৷ অভিবাসীদের কাছে মাদক পাওয়া গেলে তাদের দেশে পাঠিয়ে দেয়া হতে পারে৷
ছবি: picture-alliance/AP Photo/L. Seng Sin
চীন
মাদকসহ ধরা পড়লে সরকারের মাদকাসক্তি নিরাময় কেন্দ্রে যেতে বাধ্য করা হয়৷ মাদক সংক্রান্ত কিছু অপরাধের জন্য ফাঁসিও দেয়া হয়৷
ছবি: Getty Images/Afp/Y. A. Thu
ভিয়েতনাম
০.৫৯ কেজি হেরোইনসহ ধরা পড়লে নিশ্চিত ফাঁসি৷
ছবি: Bulgarian Prosecutor's Office/picture-alliance/AP
ইরান
প্রতিবেশী আফগানিস্তানে আফিমের চাষ হওয়ায় ইরানে এটা একটা অন্যতম সমস্যা৷ সেখানে মাদকসহ ধরা পড়লে বড় অংকের জরিমানা থেকে শুরু করে মৃত্যুদণ্ড পর্যন্ত হতে পারে৷
ছবি: ilna
থাইল্যান্ড
মাদক পাচারের কারণে মৃত্যুদণ্ডও হতে পারে৷ মাদকসেবীদের বাধ্যতামূলকভাবে নিরাময় কেন্দ্রে পাঠানো সে দেশে একটি নিয়মিত ঘটনা৷
ছবি: Lilian Suwanrumpha/AFP/Getty Images
সৌদি আরব
মাদক বিক্রি করতে গিয়ে ধরা পড়লে মৃত্যুদণ্ড প্রায় নিশ্চিত৷ অ্যালকোহল কিংবা মাদক সেবন কিংবা সেগুলো রাখার জন্য প্রকাশ্যে বেত্রাঘাত, জরিমানা, দীর্ঘদিনের কারাবাস কিংবা মৃত্যুদণ্ড হতে পারে৷
ছবি: Yasin Akgul/AFP/Getty Images
সিঙ্গাপুর
মাদক বিক্রির দায়ে অভিযুক্ত হলে মৃত্যুদণ্ড দেয়া হয়৷
ছবি: Bodo Marks/dpa/picture-alliance
কম্বোডিয়া
মাদক রাখার দায়ে এমনকি যাবজ্জীবন কারাদণ্ডও হতে পারে৷ তবে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার অনেক দেশের মতো কম্বোডিয়ায় মাদক পাচারের জন্য মৃত্যুদণ্ডের বিধান নেই৷
ছবি: Reuters/S. Pring
ইন্দোনেশিয়া
গাঁজাসহ ধরা পড়লে সর্বোচ্চ ২০ বছরের জেল হতে পারে৷ অন্যান্য মাদকের ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ ১২ বছর পর্যন্ত জেলের বিধান রয়েছে৷ মাদক বিক্রির দায়ে মৃত্যুদণ্ড হতে পারে৷
ছবি: M Risyal Hidayat/Antara Foto/REUTERS
লাওস
মাদকসহ ধরা পড়লে প্রায় ৩০ লাখ টাকা পর্যন্ত জরিমানা হতে পারে৷ আর চেতনানাশক ওষুধসহ ধরা পড়লে ১০ বা তার বেশি সময়ের জেল হতে পারে৷
ছবি: Getty Images/Afp/A. Jones
ফিলিপাইন্স
মাদকপাচারকারীদের জন্য মৃত্যুদণ্ডের বিধান আছে৷ কারো কাছে ১০ গ্রামের বেশি মাদক পাওয়া গেলে তাকে পাচারকারী হিসেবে ধরে নেয়া হয়৷
ছবি: Getty Images/AFP/N. Celis
তুরস্ক
মাদক রাখার জন্য বড় অংকের জরিমানা ও দীর্ঘ কারাবাসের বিধান রয়েছে৷ মাদক বিক্রির অপরাধের শাস্তি আরো কঠোর হতে পারে৷
ছবি: picture-alliance/TASS/dpa/S. Bobylev
বাংলাদেশ
মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ বিল ২০১৮ অনুযায়ী ৫ গ্রাম পর্যন্ত কোকেন, হেরোইন, মরফিন ও পেথিডিন পাওয়া গেলে ১ থেকে ৫ বছরের কারাদণ্ড ও অর্থদণ্ড দেওয়া যাবে৷ মাদকের পরিমাণ ৫ থেকে ২৫ গ্রামের মধ্যে হলে ৫ থেকে ১০ বছরের কারাদণ্ড ও অর্থদণ্ড এবং মাদকের পরিমাণ ২৫ গ্রাম বা তার বেশি হলে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড বা মৃত্যুদণ্ড ও অর্থদণ্ড দেওয়া যাবে৷
ছবি: bdnews24.com
ইয়াবার শাস্তি
ইয়াবা সেবনের শাস্তি তিন মাস থেকে দুই বছরের কারাদণ্ড ও অর্থদণ্ড৷ এছাড়া ইয়াবা সরবরাহ, বিপণন, কেনা-বেচা, হস্তান্তর, গ্রহণ-প্রেরণ, লেনদেন ও প্রদর্শনের ক্ষেত্রে বলা হয়েছে - ২০০ গ্রাম পর্যন্ত ইয়াবা পাওয়া গেলে ১ থেকে ৫ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া যাবে৷ পরিমাণ ২০০ থেকে ৪০০ গ্রামের মধ্যে হলে ৫ থেকে ১০ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া যাবে৷ পরিমাণ ৪০০ গ্রাম বা তার বেশি হলে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড বা মৃত্যুদণ্ড দেওয়া যাবে৷
ছবি: picture-alliance/dpa/B. Walton
অ্যালকোহল পানের নিয়ম
অনুমতি ছাড়া কেউ অ্যালকোহল পান করতে পারবেন না৷ চিকিৎসার প্রয়োজনে সিভিল সার্জন বা সরকারি মেডিকেল কলেজের কমপক্ষে সহযোগী অধ্যাপকের ব্যবস্থাপত্র ছাড়া কোনো মুসলমানকে অ্যালকোহল পানের অনুমতি দেওয়া যাবে না৷ তবে মুচি, মেথর, ডোম, চা শ্রমিক ও ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর তাড়ি ও পঁচুই এবং পার্বত্য জেলা বা অন্যান্য অঞ্চলের ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর ঐতিহ্যগতভাবে তৈরি করা মদ পান করার ক্ষেত্রে এই বিধান প্রযোজ্য হবে না৷
ছবি: bdnews24.com
15 ছবি1 | 15
কোস্টার বলেন, ‘‘এগুলো উদ্ধারের ফলে কোনো সন্দেহ নেই যে, দক্ষিণ অ্যামেরিকার কোকেন উৎপাদক থেকে শুরু করে এর পরিবেশকরাও বড় আর্থিক ধাক্কার সম্মুখীন৷’’
তবে সাবধান করে দিয়ে তিনি বলেন, ‘‘এই উদ্ধারের মধ্য দিয়ে ধারণা হয়েছে মাদক পাচারকরীরা আইন প্রয়োগকারী সংস্থার নজর এড়িয়ে কিভাবে পাচার করতে পারে৷ তাই কোকেন সিন্ডিকেটের কার্যক্রমকে ব্যাহত করার পরেও আমরা সজাগ রয়েছি৷’’