1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

নিক্সন চৌধুরীর বিরুদ্ধে নির্বাচন কমিশনের মামলা

১৫ অক্টোবর ২০২০

ফরিদপুর-৪ আসনের সংসদ সদস্য মুজিবর রহমান চৌধুরী নিক্সনের বিরুদ্ধে নির্বাচনি আচরণবিধি লঙ্ঘন, দায়িত্বরত কর্মকর্তাকে গালি ও হুমকি দেওয়ার অভিযোগে মামলা করেছে নির্বাচন কমিশন৷

DW Talkshow Khaled Muhiuddin Asks | Nixon Chowdhury
ছবি: DW/S. Hossain

ডয়চে ভেলের কন্টেন্ট পার্টনার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম জানায়, চরভদ্রাসন উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান পদে উপনির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা ও জেলার জ্যেষ্ঠ নির্বাচন কর্মকর্তা নওয়াবুল ইসলাম আজ সকালে চরভদ্রাসন থানায় এ মামলা করেন৷

নওয়াবুল ইসলাম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেছেন, ইসির নির্দেশনায় তিনি বাদী হয়ে এ মামলা করেছেন৷

ওই উপনির্বাচনকে কেন্দ্র করে জেলা প্রশাসক ও নির্বাচনি দায়িত্ব পালন করা কর্মকর্তাদের হুমকি-ধামকি দেওয়ার অভিযোগ ওঠায় গত কয়েক দিন ধরেই আলোচনা চলছে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হওয়া নিক্সন চৌধুরীকে নিয়ে৷

তবে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটকে গালি ও হুমকি দেওয়ার অডিও ফেসবুকে ভাইরাল হলেও তা ‘সুপার এডিটেড' বলে দাবি করেছেন মুজিবর রহমান চৌধুরী নিক্সন৷

ভোটের দিন সকালে বুথে ঢুকে ভেতরে সিগারেট খাওয়া ও জাল ভোট দেওয়ার চেষ্টা করায় নিক্সন চৌধুরীর এক অনুসারীকে আটক করেছিলেন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট হিসেবে দায়িত্ব পালন করতে আসা ভাঙ্গা উপজেলার একজন সহকারী কমিশনার (এসি ল্যান্ড)৷

এতে ক্ষুব্ধ হয়ে সাংসদ নিক্সন চৌধুরী তাকে ফোন করেন বলে জানান ইউএনও জেসমিন সুলতানা৷ ওই অডিওতে তাকে উদ্দেশ্য করে নিক্সন চৌধুরীকে বলতে শোনা যায়, ‘‘শুয়রের বাচ্চা, কুত্তার বাচ্চা.... আমার লোকদের গাড়িতে উঠায়ছে ক্যান; এখনই ছাড়তে বলেন৷ ওর কত বড় সাহস শুয়ারের বাচ্চা, আমি চরভদ্রাসন আসতেছি, ওরে আমি দেখতেছি৷''

সাংসদের এই ফোনের পর আটক ব্যক্তিকে ছেড়ে দেওয়া হয় জানিয়ে ইউএনও বলেন, পাঁচ মিনিটের মধ্যে আটক ব্যক্তিকে না ছাড়লে লোকজন নিয়ে উপজেলা ঘেরাও করার হুমকি দিয়েছিলেন নিক্সন চৌধুরী৷

তবে এই অডিও তিনি সোশাল মিডিয়ায় দেননি জানিয়ে এই সরকারি কর্মকর্তা বলেন, ‘‘নির্বাচনের দিন দায়িত্বরত সব কর্মকর্তার ফোন নজরদারিতে থাকে৷''

এই ঘটনার পর স্থানীয় আওয়ামী লীগ যেমন তার বিচার দাবি করেছে, তেমনি বাংলাদেশ অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনও এই সাংসদকে আইনের আওতায় আনার দাবি জানিয়েছে৷

নিক্সন চৌধুরী আচরণ বিধির বাইরে আর কোনো নির্বাচনি অপরাধ করেছেন কিনা, তা তদন্ত করে দেখতে একজন অতিরিক্ত সচিবের নেতৃত্বে তিন সদস্যের একটি কমিটি করার কথাও বলেন সিইসি৷

রিটার্নিং কর্মকর্তা যে মামলা করেছেন, সেখানে ২০১৩ সালের উপজেলা পরিষদ নির্বাচন বিধিমালা এবং ২০১৬ সালের উপজেলা পরিষদ (নির্বাচন আচরণ) বিধিমালা অনুযায়ী নিক্সন চৌধুরীর বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে অনুরোধ জানানো হয়েছে৷

এজাহারে বলা হয়েছে, গত ১০ অক্টোবর চরভদ্রাসন উপজেলার উপ নির্বাচনে কেন্দ্রভিত্তিক নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নিযুক্ত করায় জেলা প্রশাসক অতুল সরকারকে ফোন করে কৈফিয়ত দাবি করেন সাংসদ নিক্সন৷ তার সমর্থিত প্রার্থী পরাজিত হলে মহাসড়ক অবরোধ করার ‘হুমকি' দেন এবং ‘অশোভন আচরণ' করেন৷

একইসাথে নির্বাচনের দিন একটি ভোট কেন্দ্রের বুথের সামনে জাল ভোট দেওয়া ও ধূমপান করার সময় একজন পোলিং এজেন্টকে আটকের পর চরভদ্রাসনের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, ভাঙ্গার সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও কর্তব্যরত নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটকে সাংসদ ‘অত্যন্ত অশালীন ভাষায় গালিগালাজ, ভয়ভীতি প্রদর্শন এবং হুমকি' দেন বলে অভিযোগ করা হয়েছে মামলায়৷

একজন সংসদ সদস্য হয়েও নির্বাচনি এলাকায় উপস্থিত থেকে নির্বাচনের প্রচারে অংশগ্রহণ করে এবং দায়িত্বরত কর্মকর্তাদের ‘গালিগালাজ ও ভয়ভীতি প্রদর্শন করে' নিক্সন চৌধুরী নির্বাচনি বিধিমালা লঙ্ঘন করেছেন বলে এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে৷

ভোটের দিন সকালেও সাংসদ নিক্সন চরভদ্রাসনের ইউএনওকে ফোন করে হুমকি-ধামকি দেন এবং অপর একজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটকে গালিগালাজ করে দেখে নেওয়ার হুমকি দেন বলে অভিযোগ ওঠে৷ তার ওই টেলিফোন আলাপের অডিও ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়লে শুরু হয় তুমুল সমালোচনা৷

গত মঙ্গলবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে সাংবাদিকদের প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নূরুল হুদা বলেছিলেন, স্বতন্ত্র সাংসদ নিক্সন নির্বাচনি আচরণবিধি লঙ্ঘন করেছেন৷ চরভদ্রাসন উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান পদে উপনির্বাচনকে কেন্দ্র করে জেলা প্রশাসককে (ডিসি) হুমকি ও নির্বাচনি দায়িত্বে থাকা কর্মকর্তাদের গালিগালাজ করার অভিযোগে তাঁর বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে৷

এসি ল্যান্ডকে গালিগালাজ করার বিষয়ে জানতে চাইলে নিক্সন বলেন, গত শনিবার সারা দিনের ঘটনা এবং তাঁর অন্তত ১০ জন নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার, কাউকে জরিমানা করায় জনগণের মধ্যে ক্ষোভ ছিল৷ সেই ক্ষোভ প্রকাশ যাতে অন্য রকম না হয়, সে জন্য তিনি এভাবে কথা বলেছেন৷

এ ঘটনায় বিসিএস প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তাদের সংগঠন বাংলাদেশ অ্যাডমিনিস্ট্রেশন সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনের ফরিদপুর জেলা শাখা গত রোববার সভা করে এ ঘটনার প্রতিকার চেয়েছে৷ জেলা আইনশৃঙ্খলা কমিটির সভায় এ ঘটনায় নিন্দা প্রস্তাব আনা হয় এবং এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হস্তক্ষেপ কামনা করা হয়৷

এপিবি/এসিবি (সূত্র: বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম)

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য
স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ