দু'দিন কেটে গেলেও হদিশ মেলেনি মালয়েশিয়ান এয়ারলাইনসের বোয়িং ৭৭৭ বিমানটির৷ যাত্রী এবং ক্রু মিলিয়ে বিমানে ছিলেন ২৩৯ জন৷ শনিবার থেকে নিখোঁজ বিমানটির তল্লাশির জন্য মালয়েশিয়াকে আরো তৎপর হতে বলেছে চীন৷
বিজ্ঞাপন
শনিবার কুয়ালালামপুর থেকে বেইজিংয়ের উদ্দেশ্যে রওনা হওয়ার কিছুক্ষণ পরই লাপাত্তা হয়ে যায় মালয়েশিয়ান এয়ারলাইন্সের এমএইচ৩৭০ নাম্বার ফ্লাইট৷ বিমানের ২৩৯ জন আরোহীর মধ্যে ১২ জন ক্রু আর বাকিরা যাত্রী৷ যাত্রীদের অন্তত ১৫২ জন চীনের, ৩৮ জন মালয়েশিয়ার, সাতজন ইন্দোনেশিয়ার, ছয়জন অস্ট্রেলিয়ার, পাঁচজন ভারতের, চারজন ফ্রান্সের এবং তিনজন যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক বলে জানা গেছে৷ খুব ভালো আবহাওয়া থাকা সত্ত্বেও কন্ট্রোল প্যানেল থেকে কোনো বিপদ সংকেত না পাঠিয়েই বিমান নিখোঁজ হয়ে যাওয়ায়, ঘটনাটি নিয়ে সৃষ্টি হয়েছে সন্দেহের ধুম্রজাল, বড় হয়ে উঠেছে মালয়েশিয়ান এয়ারলাইন্সের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে প্রশ্ন৷
ইন্টারপোল জানিয়েছে, বিমান যাত্রীদের মধ্যে অন্তত দু'জন চুরি করা পাসপোর্ট নিয়ে বিমানে উঠেছিলেন৷ পাসপোর্ট দুটো থাইল্যান্ড থেকে চুরি হয় দু'বছর আগে৷ ইউরোপিয়ান ইউনিয়নভুক্ত দেশের দুই নাগরিকের পাসপোর্ট বলে কুয়ালালামপুর থেকে ঐ যাত্রী দু'জনকে চীনের ভিসা নিতে হয়নি৷ তবে ইন্টারপোল জানিয়েছে, চুরি যাওয়া পাসপোর্ট দুটির সমস্ত তথ্য কুয়ালালামপুর বিমান কর্তৃপক্ষের কাছে ছিল৷ কিন্তু শনিবার বোয়িং ৭৭৭-এর বিমানটি যাত্রা শুরুর আগে যাত্রীদের পাসপোর্টের যাচাই-বাছাইয়ের কাজে গুরুত্ব দেয়া হয়নি৷
ভবিষ্যতের বিমান
দিন দিন বাড়ছে জ্বালানি খরচ৷ এই অবস্থায় টিকে থাকতে আরো দক্ষ বিমান তৈরির চেষ্টা চলছে, যেটা জ্বালানি কম খরচ করবে৷
ছবি: Bauhaus-Luftfahrt e.V.
সবুজ এভিয়েশন
বিশ্বের মোট নির্গত কার্বন-ডাই-অক্সাইডের প্রায় তিন শতাংশ আসে বিমান চলাচল থেকে৷ ইউরোপীয় কমিশনের কাছে পরিমাণটা অনেক বেশি৷ তাই ২০৫০ সালের মধ্যে সংখ্যাটা ২৫ শতাংশ কমিয়ে আনার পরিকল্পনা করছে তারা৷ এ জন্য প্রয়োজন নতুন ধরণের বিমান৷ বিশেষজ্ঞরা সেই চেষ্টাই করছেন৷ এই যেমন ছবির প্লেনটি বিদ্যুতের সাহায্যে আকাশে ওড়ে৷
ছবি: Bauhaus-Luftfahrt e.V.
পাখায় অবস্থান
এখন যেমন বিমানে যাত্রীদের বসার জায়গা আর বিমানের দুটো পাখা একদম আলাদা, ভবিষ্যতের এই বিমানে তেমনটা থাকবে না৷ তখন পাখার মধ্যেও যাত্রীদের বসার ব্যবস্থা থাকবে৷ পাখাটা এভাবে তৈরি করার কারণ, এর ফলে কম জ্বালানি ব্যবহার করেই প্লেন চালানো যাবে৷ অর্থাৎ বিমানের আকারটা এখানে মুখ্য৷
ছবি: DLR
জেট ইঞ্জিনের বদলে খোলা ‘রোটর’
আধুনিক জেট ইঞ্জিনের চেয়েও বেশি দক্ষ খোলা ‘রোটর’৷ জার্মান এভিয়েশন সেন্টারের হিসেব বলছে, রোটর ব্যবহার করে ২০ শতাংশ পর্যন্ত জ্বালানি ব্যবহার কমানো যায়৷
ছবি: DLR
রোটরের সমস্যা
জ্বালানির ব্যবহার কমানো গেলেও রোটরের দুটো সমস্যা আছে৷ এক, এর ফলে এখনকার বিমানের চেয়ে রোটর সমৃদ্ধ বিমানের গতি ধীর হয়ে যাবে৷ আর দু’নম্বর সমস্যা হলো, রোটরে শব্দ হয় অনেক৷
ছবি: DLR
সৌরশক্তিচালিত বিমান
‘সোলার ইমপালস’ নামের এই বিমানটি নিয়ে ইতিমধ্যে অনেক আলোচনা হয়েছে৷ কারণ এটা চলে সূর্যের আলোর উপর নির্ভর করে৷ বিমানটি এখনো পরীক্ষামূলক উড্ডয়ন চালিয়ে যাচ্ছে৷ তবে সমস্যা হলো, প্লেনটি মাত্র ৭০ কিলোমিটার বেগে চলতে পারে৷ আর কোনো পণ্য বহন করতে পারে না এটি৷
ছবি: Reuters
‘বাইপ্লেন’-এ ফিরে যাওয়া
বাইপ্লেন মানেই হলো যার দুটো পাখা একটা আরেকটার উপর থাকে৷ লুফৎহানসার এই বিমানটিও দেখতে অনেকটা সেরকম৷ প্লেনের এমন ডানা বিমানকে দ্রুতগতি ও সাশ্রয়ীভাবে চলতে সহায়তা করে৷
ছবি: Bauhaus-Luftfahrt e.V.
দ্রুতগতির প্লেন
যাঁদের আকাশে বেশি সময় দেয়ার উপায় নেই, যাঁরা দ্রুত এক জায়গা থেকে আরেক জায়গায় যেতে চান তাঁদের জন্য জার্মান এভিয়েশন সেন্টারের এই ‘স্পেসলাইনার’ বিমান৷ রকেট ইঞ্জিনচালিত এই প্লেনের কারণে ইউরোপ থেকে অস্ট্রেলিয়া যেতে মাত্র দেড় ঘণ্টা লাগতে পারে৷ ২০৫০ সাল নাগাদ সেটা সম্ভব হতে পারে৷
ছবি: DLR
7 ছবি1 | 7
চুরি যাওয়া পাসপোর্ট নিয়ে দু'জন ওঠায় বিমানটি নিখোঁজ হওয়ার পেছনে কোনো আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসবাদী সংগঠনের ভূমিকা থাকতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে৷ তবে এখনো কোনো সংগঠন দায়িত্ব স্বীকার করেনি৷ বিমান বা বিমানের ধ্বংসাবশেও খুঁজে পাওয়া যায়নি৷ ভিয়েতনাম, মালয়েশিয়া, থাইল্যান্ড, সিঙ্গাপুর, অস্ট্রেলিয়া, ইন্দোনেশিয়া, চীন এবং যুক্তরাষ্ট্রের বিমান এখনো তল্লাশি চালাচ্ছে৷
সোমবার ভিয়েতনামের বিমান থেকে সমুদ্রে ভাসমান অবস্থায় হলুদ রংয়ের একটি বস্তু দেখা গেছে বলে দাবি করা হয়৷ বস্তুটি নিখোঁজ বিমানের দরজা বা তার মধ্যে থাকা ছোট্ট ডিঙি নৌকার অংশ হতে পারে বলে ধারণা করা হলেও, পরে এ তথ্য সত্য নয় বলে জানা যায়৷