নিজেকে ‘বেকসুর' হিসেবে তুলে ধরছেন ট্রাম্প
২৫ মার্চ ২০১৯একাধিক তদন্তের মুখে জেরবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বার বার নিজেকে নির্দোষ হিসেবে তুলে ধরার চেষ্টা চালিয়ে আসছেন৷ বিশেষ করে ২০১৬ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে রাশিয়ার সঙ্গে অবৈধ যোগাযোগ এবং সে বিষয়ে তদন্তের পথে প্রেসিডেন্ট হিসেবে বাধা সৃষ্টি করার অভিযোগ তাঁকে নাজেহাল করে এসেছে৷ সে বিষয়ে প্রায় ২২ মাস ধরে তদন্ত চালিয়ে আসছিলেন স্পেশাল কাউন্সেল রবার্ট মালার৷ গত শুক্রবার তিনি চূড়ান্ত রিপোর্ট পেশ করেন৷
সেই রিপোর্ট প্রকাশ্যে আনা না হলেও মার্কিন অ্যাটর্নি জেনারেল উইলিয়াম বার তাঁর চার পৃষ্ঠার প্রাথমিক বয়ানে জানিয়েছেন, যে ট্রাম্প টিমের সঙ্গে রাশিয়ার অবৈধ যোগাযোগের কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি৷ তবে ট্রাম্প সেই তদন্তে বাধা দিয়েছিলেন কিনা, তা নিয়ে অস্পষ্টতা রয়েছে৷
রাশিয়া অবশ্যই ২০১৬ সালের মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে হস্তক্ষেপের চেষ্টা চালিয়েছিল বলে তদন্তে উঠে এসেছে৷ মালার জানিয়েছেন, প্রেসিডেন্ট কোনো অপরাধ করেছেন – এমন অভিযোগের পক্ষে কোনো প্রমাণ পাওয়া না গেলেও তাঁকে সম্পূর্ণ নির্দোষ হিসেবে প্রতিপন্ন করা যাচ্ছে না৷ উল্লেখ্য, তদন্ত চলাকালীন মালার মোট ৩৪ জন ব্যক্তির বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগ এনেছেন৷
তদন্তের এমন ফলাফল সম্পর্কে জেনে উচ্ছ্বসিত ট্রাম্প ও তাঁর সমর্থকরা৷ নিজের রাজনৈতিক জয় তুলে ধরে ট্রাম্প যাবতীয় অভিযোগ থেকে ‘সসম্মানে' মুক্তির দাবি করেন৷ ২০২০ সালে দ্বিতীয় কার্যকালের জন্য প্রচারের ক্ষেত্রে তদন্তের ফলাফলকে হাতিয়ার করতে তৎপর হয়ে উঠছে ট্রাম্প শিবির৷ রবিবার ট্রাম্প সাংবাদিকদের বলেন, তাঁকে ফাঁসাতে ‘বেআইনি' প্রচেষ্টা ব্যর্থ হয়েছে৷ দেশকে এমন পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে যে যেতে হয়েছে, তা অত্যন্ত লজ্জার বিষয় বলে মনে করেন তিনি৷
বিরোধী ডেমোক্র্যাট দল মালার-এর তদন্তের ফলাফল সম্পর্কে অসন্তুষ্ট হয়েছে৷ সেইসঙ্গে তারা ট্রাম্প-এর ব্যবসা সংক্রান্ত ও ব্যক্তিগত নানা বিষয় নিয়ে কংগ্রেসের তদন্ত চালিয়ে যাবার অঙ্গীকার করেছে৷ বিরোধীরা সম্পূর্ণ রিপোর্ট প্রকাশের দাবি জানিয়েছে৷ সংসদের নিম্ন কক্ষের স্পিকার ন্যান্সি পেলোসি ও উচ্চ কক্ষে বিরোধী দলের নেতা চাক শুমার মালার-এর সম্পূর্ণ রিপোর্ট দেখতে চেয়েছেন৷ তাঁরা মনে করিয়ে দেন, যে তদন্তের ক্ষেত্রে ট্রাম্প বাধা দিয়েছিলেন কিনা, মালার সে বিষয়ে তাঁকে কোনো ছাড়পত্র দেননি৷ তাই অবিলম্বে গোটা রিপোর্ট প্রকাশ্যে আনা উচিত৷
অর্থাৎ প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প সাময়িক স্বস্তি পেলেও বাকি তদন্তগুলির হাত থেকে রেহাই পাচ্ছেন না৷ অবৈধ ব্যবসায়িক লেনদেন থেকে শুরু করে নারীঘটিত কেলেঙ্কারি আড়াল করতে অর্থ ব্যয়ের মতো নানা অভিযোগের ভিত্তিতে তাঁর বিরুদ্ধে একাধিক আইনি প্রক্রিয়া চলছে৷ তাছাড়া প্রবল চাপের মুখে রবার্ট মালার-এর তদন্ত রিপোর্ট সত্যি প্রকাশ্যে আনা হলে বিরোধীরা তার নানা অংশ তুলে ধরে ট্রাম্প-এর বিরুদ্ধে তোপ দাগতে পারেন৷
এসবি/জেডএইচ (রয়টার্স, এএফপি)