বাংলাদেশের ব্লগাররা একের পর এক হত্যা ও হত্যার হুমকির ঘটনায় এবার নিজেরাই নিজেদের নিরাপত্তা নিয়ে ভাবছেন৷ গণজাগরণ মঞ্চের মুখপাত্র ডা. ইমরান এইচ সরকার জানান, ‘‘সরকার নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ হলে অন্য কোনো উপায় থাকবে না৷''
বিজ্ঞাপন
বাংলাদেশে এ পর্যন্ত ন'জন ব্লগারকে হত্যা করা হয়েছে৷ আর এ সমস্ত হত্যার ঘটনা ঘটেছে তালিকা তৈরি করে৷ এখন আবার আরো কয়েকজন ব্লগারকে হত্যার হুমকি দেয়া হচ্ছে, যার মধ্যে আছেন গণজাগরণ মঞ্চের মুখপাত্র ডা. ইমরান এইচ সরকার, মাহমুদুল হক মুন্সি, উগ্র মৌলবাদীদের হাতে নিহত প্রথাবিরোধী লেখক হুমায়ুন আজাদের ছেলে অনন্য আজাদসহ আরো কয়েকজন৷ ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের যুগ্ম কমিশনার কৃষ্ণপদ রায় ডয়চে ভেলেকে জানান, ‘‘ব্লগাররা আমাদের কাছে হুমকির কথা জানালে আমরা ব্যবস্থা নেই৷ তবে তালিকা ধরে নিরপত্তা ব্যবস্থা নেয়ার বিষয়টি আমাদের বিবেচনায় নেই৷''
ব্লগার মাহমুদুল হক মুন্সি ডয়চে ভেলেকে জানান, ‘‘শাহবাগের গণজাগরণ মঞ্চের পর ৮৪ জন ব্লগারকে নিয়ে একটা হত্যা তালিকা করা হয়৷ সেই তালিকা ধরে হত্যা চলছে আর পুলিশ সেই তালিকার কাউকেই আলাদা কোনো নিরপত্তা দিচ্ছে না৷''
মাহমুদুল নিজেও ফেসবুকে এবং টেলিফোনে বার বার হত্যার হুমকি পেয়েছেন৷ এ নিয়ে সম্প্রতি পল্লবী থানায় একটি সাধারণ ডায়েরিও করেছেন৷ কিন্তু কোনো প্রতিকার পাননি৷ তিনি জানান, ‘‘পুলিশ কয়েকদিন আমার বাসার সামনে ঘুরেছে, কিন্তু যারা আমাকে হত্যার হুমকি দিয়েছে, তাদের চিহ্নিত করেনি৷''
সাংবাদিকদের জন্য দুঃসময়
একটি সমীক্ষা অনুযায়ী গত দশ বছরেরও বেশি সময়ের মধ্যে সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতার পরিস্থিতি এতো খারাপ দেখা যায়নি৷ বিশ্ব জনসংখ্যার ৮০ শতাংশেরও বেশি মানুষ বাস করেন যে সব দেশে, সে সব দেশে সাংবাদিকদের কাজে হস্তক্ষেপ করা হয়৷
ছবি: AFP/Getty Images
মধ্য এশিয়ার পরিস্থিতি
ফ্রিডম হাউস নামে একটি প্রতিষ্ঠান ১৯৯৭টি দেশের ওপর একটি সমীক্ষা চালিয়েছে, যার ফলাফলে দেখা গেছে, তুর্কমেনিস্তান, উজবেকিস্তান এবং বেলারুশের সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা সবচেয়ে কম৷ অন্যদিকে সাংবাদিকদের সবচেয়ে বেশি স্বাধীনতা রয়েছে নেদারল্যান্ডস, সুইডেন এবং নরওয়েতে৷
ছবি: picture-alliance/dpa
সাংবাদিকদের ওপর হামলা
তুরস্কে অনেক সাংবাদিকদের ওপর হামলা করা হয়েছে৷ সাংবাদিক গ্যোকহান বিচিচি-কে প্রেপ্তার করা হয় গেজি পার্কে বিক্ষোভ চলাকালীন সময়ে৷ সাংবাদিকদের স্বার্থরক্ষা কমিটির মতে গত ডিসেম্বরের শুরুতে তুরস্কে ৪০জন সাংবাদিকদের আটক করা হয়৷
ছবি: AFP/Getty Images
অপ্রিয় রিপোর্ট
ইউক্রেনেও সাংবাদিকদের ওপর হামলা চালানো হয়৷ বিশেষ করে কিয়েভের ময়দান স্কোয়ারে প্রতিবাদ বিক্ষোভের সময়৷ সরকারের সমালোচক সাংবাদিক টেটিয়ানা চর্নোভোল ঐ হামলার শিকার হন৷ তিনি পদচ্যুত প্রেসিডেন্ট ভিক্টর ইয়ানুকোভিচ বিলাসী জীবনযাত্রার ওপর একটি রিপোর্ট প্রকাশ করেছিলেন৷ হাজারো মানুষ এই সাবেক প্রেসিডেন্টের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ বিক্ষোভ করেন৷
ছবি: Genya Savilov/AFP/Getty Images
মিথ্যা বলা বন্ধ করুন!
চীন এবং রাশিয়াতেও সংবাদপত্রের স্বাধীনতা সমালোচনার মুখে৷ দুই দেশের সরকারই মিডিয়ার ওপর প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা করে এবং সরকারের মতামত মিডিয়াকে জানানোর জন্য একটি আইনও প্রণয়ন করে৷ এমনকি রাশিয়ায় সংবাদ সংস্থা ‘রিয়া নভোস্তি’ বন্ধ করে সেটা রাষ্ট্রায়ত্ত্ব করা হয়৷ অনেক রুশ নাগরিকের তা পছন্দ না হওয়ায় তারা ‘মিথ্যা বলা বন্ধ করুন’ প্ল্যাকার্ড হাতে নিয়ে বিক্ষোভে অংশ নেয়৷
ছবি: picture-alliance/dpa
মার্কিন সরকারের আড়িপাতা
অ্যামেরিকায় সংবাদপত্রের স্বাধীনতা রয়েছে৷ কিন্তু মার্কিন তথ্যনীতি ক্রমঃশই প্রশ্নের সম্মুখীন হচ্ছে৷ সমীক্ষা অনুযায়ী, সরকার সম্পর্কে কোনো তথ্য পাওয়া বেশ কঠিন হয়ে গেছে৷ শুধু তাই নয়, এমনকি সরকার সাংবাদিকদের কাছে তথ্য সূত্রও জানতে চায়৷ এছাড়া, মার্কিন সরকার সংবাদ সংস্থা এপি-র সাংবাদিকদের টেলিফোনেও আড়ি পেতেছে৷
ছবি: picture-alliance/AP Photo
মুবারক জমানায় প্রত্যাবর্তন
মিশরে সংবাদপত্রের স্বাধীনতা পরিস্থিতির অবনতি ঘটেছে৷ প্রেসিডেন্ট মুরসির পতনের পর সেখানকার পরিস্থিতির আরো অবনতি হয়েছে৷ সমীক্ষা প্রতিষ্ঠান ফ্রিডম হাউস-এর মতে, ২০১৩ সালের মাঝামাঝি সময়ে সামরিক অভ্যুথ্যানের পর থেকে বেশ কিছু সাংবাদিককে গ্রেপ্তার করা হয় হয় এবং পাঁচজন মারা যান৷
ছবি: AFP/Getty Images
মালিতে পরিস্থিতির উন্নতি
মালিতে সংবাদপত্রের স্বাধীনতার ইতিবাচক উন্নতি হয়েছে৷ প্রেসিডেন্ট নির্বাচন ইসলামি বিদ্রোহীদের দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে বিতাড়নের পর মালির আইন ও শৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি হয়৷ ২০১২ সালের সামরিক অভ্যুত্থানের পর বেশ কিছু মিডিয়া বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিলো৷ সেগুলো এখন আবার কাজ করছে৷
ছবি: AFP/Getty Images
কিরগিজিস্তান ও নেপালে ইতিবাচক প্রবণতা
যে সব দেশে সংবাদপত্রের স্বাধীনতা বাড়ছে, সেগুলোর মধ্যে রয়েছে কিরগিজিস্তান৷ সেখানকার সাংবাদিকরা ২০১৩ সালে খুব কম আক্রমণের শিকার হয়েছেন৷ নেপালেও মিডিয়ার ওপর রাজনৈতিক প্রভাব কমেছে, যদিও সাংবাদিকদের হুমকি দেওয়া বন্ধ হয় নি৷ সমীক্ষা অনুযায়ী ইসরায়েলেও সংবাদপত্রের স্বাধীনতার উন্নতি হয়েছে এবং এখন তাঁরা স্বাধীনভাবে কাজ করতে পারছেন৷
ছবি: AFP/Getty Images
8 ছবি1 | 8
পুলিশের দাবি, ব্লগাররা হত্যার হুমকি পেলেও তাদের তা জানায় না৷ মাহমুদুল বলেন, ‘‘এটা এখন হয়েছে৷ কারণ ব্লগাররা এর আগে অভিযোগ করেও কোনো ফল পাননি৷ অভিজিৎ হত্যাকাণ্ডের আগে তাঁকে হত্যার হুমকি পুলিশকে জানানো হয়েছিল৷ কিন্তু পুলিশ কোনো ব্যবস্থা নেয়নি৷ ন'জন ব্লগার হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় পুলিশি তদন্ত হতাশজনক৷ তাই ব্লগাররা এখন আর পুলিশকে বিশ্বাস করতে পারছেন না৷''
তিনি আরো বলেন, ‘‘আমরা এখন নিশ্চিত যে পুলিশের মধ্যেও জঙ্গি এবং উগ্র ধর্মীয় গোষ্ঠীর প্রতি সহানুভূতিশীল লোকজন আছেন৷ তাই আমরা এখন আর পুলিশের ওপর আস্থা রাখতে পারছি না৷ এ কারণে হয়ত ব্লগাররা এখন হত্যার হুমকি পেলেও পুলিশকে জানাচ্ছেন না৷''
যুগ্ম কমিশনার কৃষ্ণপদ রায় বলেন, ‘‘যে ৮৪ জন ব্লগারের কথা বলা হচ্ছে, তাঁরা এক জায়গায় থাকেন না৷ তাই এমন নয় যে এক জায়গায় নিরাপত্তা দিলেই তাঁদের সবার নিরাপত্তা নিশ্চিত হবে৷ আমরা সার্বিকভাবে নিরাপত্তা নিয়ে কাজ করি৷ নিরাপত্তার ইস্যুটি শুধু পুলিশের একার বিষয় নয়৷ নিজের নিরাপত্তার ব্যাপারে নিজেদেরও সচেতন থাকতে হবে৷''
গণজাগরণ মঞ্চের মুখপাত্র ডা. ইমরান এইচ সরকার ডয়চে ভেলেকে জানান, ‘‘আমাকেও হত্যার পরিকল্পনা করা হয়েছে৷ গোয়েন্দা সূত্র থেকে আমাকে এ তথ্য জানিয়ে সাবধানে থাকার পরামর্শ দেয়া হয়েছে৷ কিন্তু এ নিয়ে পুলিশ আনুষ্ঠানিকভাবে আমার নিরাপত্তার জন্য কিছু করেনি বা আমার সঙ্গে কথাও বলেনি৷'
তিনি বলেন, ‘‘দু'বছর আগে যে ৮৪ জন ব্লগারের হত্যার তালিকা করা হয়েছে, সেই তালিকার আমিও একজন৷ কিন্তু আজ পর্যন্ত এ নিয়ে আমি বা আমাদের সঙ্গে কোনো কথা বলেনি পুলিশ৷''
ইমরান এইচ সরকার বলেন, ‘‘ব্লগারদের নিরপত্তায় পুলিশের বিশেষ কোনো দলকে দায়িত্ব দেয়া উচিত এবং তাঁদের নিরাপত্তার দিকে বিশেষভাবে নজর দেয়া প্রয়োজন৷ কিন্তু তা করা হচ্ছে না৷'''
পুলিশি নির্যাতনের শিকার গণজাগরণ মঞ্চের কর্মীরা
পাকিস্তানের সঙ্গে অস্থায়ী কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্নের আন্দোলন করতে গিয়ে পুলিশের নির্যাতনের শিকার হয়েছেন গণজাগরণ মঞ্চের কর্মীরা৷ এতে নারীসহ বেশ কয়েকজন কর্মী আহত হয়েছেন৷ প্রতিবাদে নতুন আন্দোলনের ঘোষণা দিয়েছে গণজাগরণ মঞ্চ৷
ছবি: REUTERS
পাকিস্তানের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্নের দাবি
একাত্তরে মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে জামায়াত নেতা কাদের মোল্লার ফাঁসির রায় গত ১২ ডিসেম্বর কার্যকর হয়৷ এই মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের পর পাকিস্তানে তীব্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়৷ এমনকি সেদেশের জাতীয় পরিষদে নিন্দা প্রস্তাবও পাস হয়৷ বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয় নিয়ে পাকিস্তানের এসব কর্মকাণ্ডের প্রতিবাদে সরব হয় গণজাগরণ মঞ্চ৷
ছবি: DW
‘নাক গলানোর’ প্রতিবাদ
কাদের মোল্লার মৃত্যুদণ্ডের বিষয়ে পাকিস্তানের ‘নাক গলানোর’ প্রতিবাদে ১৮ ডিসেম্বর ঢাকায় সেদেশের দূতাবাসের সামনে জড়ো হওয়ার চেষ্টা করেন গণজাগরণ মঞ্চের কর্মীরা৷ কিন্তু তাদের সেই চেষ্টা পুলিশের বাধার কারণে সফল হয়নি৷ তাই গুলশানে পাকিস্তান দূতাবাসের কাছাকাছি জায়গায় অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করেন তাঁরা৷
ছবি: DW/M. Mamun
সম্পর্ক ছিন্নের আল্টিমেটাম
গণজাগরণ মঞ্চের কর্মীরা বুধবারের বিক্ষোভ সমাবেশ থেকে পাকিস্তানের সঙ্গে বাংলাদেশের কূটনৈতিক সম্পর্ক আপাতত স্থগিত রাখতে সরকারকে ২০ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দেয়৷ এই সময়ের মধ্যে সম্পর্ক ছিন্ন না করলে পাকিস্তান দূতাবাস ঘেরাও করার ঘোষণাও দেয় তারা৷
ছবি: DW/M. Mamun
পাকিস্তান দূতাবাস ঘেরাও চেষ্টা
আল্টিমেটাম অনুযায়ী, ২০ ঘণ্টা সময় পেরিয়ে যাওয়ার পর আবারো সক্রিয় হন গণজাগরণ মঞ্চের কর্মীরা৷ কিন্তু পাকিস্তান দূতাবাস অভিমুখে তাদের মিছিলে লাঠিপেটা করে পুলিশ৷ ফলে দূতাবাস অবধি পৌঁছানো আর সম্ভব হয়নি তাঁদের পক্ষে৷
পুলিশের লাঠিপেটায় আহতদের মধ্যে রয়েছেন গণজাগরণ মঞ্চের মুখপাত্র ইমরান এইচ সরকার৷ পুলিশ তাঁকে মিছিল থেকে একাধিকবার আটকের চেষ্টা করে বলে দাবি করেছেন মঞ্চের কর্মীরা৷ কিন্তু কর্মীদের বাধার মুখে ইমরানকে আটক করতে পারেনি পুলিশ৷ গণজাগরণ মঞ্চের মারুফ রসুল এই বিষয়ে বলেন, ‘‘ইমরানকে পুলিশ দু’দফায় লাঠিপেটা করলে তিনি মাথা, বুক ও পিঠে আঘাত পান৷ তাঁকে প্রথমে ল্যাবএইড এবং পরে ইউনাইটেড হাসপাতালে নেয়া হয়৷’’
ছবি: DW/M. Mamun
বাদ যায়নি নারী কর্মীরাও
পুলিশের লাঠিপেটার শিকার হয়েছেন গণজাগরণ মঞ্চের নারী কর্মীরাও৷ এক নারী কর্মীকে পুরুষ পুলিশের পেটানোর এবং টানাহ্যাঁচড়ার ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করেছে৷ পুলিশ অবশ্য দাবি করেছে, তারা গণজাগরণ মঞ্চের নেতা-কর্মীদের লাঠিপেটা বা নির্যাতন করেনি৷ ঐ এলাকা কূটনৈতিক পল্লি হওয়ায় স্পর্শকাতর এলাকা থেকে গণজাগরণ মঞ্চের নেতা-কর্মীদের ছত্রভঙ্গ করে দিয়েছে৷
ছবি: DW
‘পুলিশের লাঠিপেটা গ্রহণযোগ্য নয়’
গণজাগরণ মঞ্চের কর্মীদের উপর পুলিশের লাঠিপেটা প্রসঙ্গে অধ্যাপক মুনতাসির মামুন বলেছেন, ‘‘গণজাগরণ মঞ্চ যে অবস্থান থেকে পাকিস্তানের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থগিতের দাবি জানিয়েছে তা ঠিকই আছে৷ কিন্তু সরকারকে সিদ্ধান্ত নিতে হয় সবদিক বিবেচনা করে৷ তবে গণজাগরণ মঞ্চের শান্তিপূর্ণ অবস্থানে পুলিশের লাঠিপেটা গ্রহণযোগ্য নয়৷’’
ছবি: DW/M. Mamun
‘সাত দিনের মধ্যে বিচারের দাবি’
এদিকে, কর্মীদের ওপর হামলাকারী পুলিশের ৭ দিনের মধ্যে বিচার না হলে আগামী শুক্রবার কঠোর কর্মসূচি দেয়া হবে বলে জানিয়েছে গণজাগরণ মঞ্চ৷ শুক্রবার শাহবাগে আয়োজিত এক বিক্ষোভ সমাবেশ থেকে একথা জানান তাঁরা৷ এসময় বাংলাদেশিদের প্রতি পাকিস্তানের পণ্য বর্জনের আহ্বানও জানায় গণজাগরণ মঞ্চ৷
ছবি: DW/M. Mamun
গণজাগরণ মঞ্চ
উল্লেখ্য, একাত্তরে মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে কাদের মোল্লাসহ অন্যান্য অভিযুক্তদের সর্বোচ্চ শাস্তির দাবিতে গত ৫ ফেব্রুয়ারি রাতে শাহবাগে সমবেত হন অসংখ্য মানুষ৷ শাহবাগের এই সমাবেশ থেকেই সৃষ্টি হয় গণজাগরণ মঞ্চ, যাদের আন্দোলনের প্রেক্ষিতে আপিলের চূড়ান্ত রায়ে মৃত্যুদণ্ড হয় জামায়াত নেতা কাদের মোল্লার৷
ছবি: REUTERS
10 ছবি1 | 10
জানা গেছে, ব্লগাররা পুলিশের প্রতি আস্থা হারিয়ে এখন নিজেদের নিরাপত্তার ব্যাপারে নিজেরাই চিন্তা করছেন৷ আলোচনা করছেন ব্লগারদের নিরপত্তায় একটি ব্রিগেড গঠনের৷ ইমরান এইচ সরকার বলেন, এ ধরনের আলোচনা ব্লগারদের মধ্যে হচ্ছে৷ তবে আমরা সরকারকে আরো সময় দিতে চাই৷ দেখতে চাই শেষ পর্যন্ত সরকার ব্লগারদের নিরাপত্তায় বিশেষ কোনো ব্যবস্থা নেয় কিনা৷ যদি সরকার ব্যর্থ হয় তাহলে ব্লগারদের নিজেদের নিরাপত্তার জন্য নিজেদেরই কিছু করা ছাড়া উপায় থাকবে না৷''
ইমরান এইচ সরকার বলেন, ‘‘পুলিশের মধ্যে ব্লগারদের নিরাপত্তার ব্যাপারে যে নিস্পৃহতা তা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়৷ ব্লগাররা রাষ্ট্রের নাগরিক৷ তাদের নিরাপত্তা দেয়া সরকারে দায়িত্ব৷ ৮৪ জন ব্লগার তো এখন চিহ্নিত, তাই তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত না করা কোনোভাবেই মেনে নেয়া যায় না৷''
ওদিকে মাহমুদুল হক মুন্সির কথায়, ‘‘আমরা এখন অসহায়৷ যদি ব্লগার হত্যার বিচার হতো, অপরাধীরা ধরা পড়তো, তাদের শাস্তি হতো, তাহলে একের পর এক হত্যাকাণ্ড ঘটতো না৷ ব্লগার হত্যা করলে কিছু হয় না৷ তাই হত্যাকারীরা দিন দিন আরো বেপরোয়া হয়ে উঠছে৷''
বাংলাদেশের পুলিশ অপরাধীদের ধরতে এখন তথ্য-প্রযুক্তি ব্যবহার করছে সফলভাবে৷ আবার উগ্র ধর্মীয় গোষ্ঠীগুলোও ব্লগার হত্যায় তথ্য-প্রযুক্তি ব্যবহার করছে৷ তাই তাদের শনাক্ত করা কঠিন কোনো কাজ নয়৷ ব্লগারদের প্রশ্ন, অন্য অপরাধীদের পুলিশ তথ্য-প্রযুক্তি ব্যবহার করে ধরতে পারলেও ব্লগারদের হত্যাকারী ও হুমকিদাতাদের কেন ধরতে পারছে না? এর রহস্য কোথায়?