নিজের করা ডিজাইনে নিজের পছন্দের জিনিস
১৫ জুলাই ২০১১
সুপারমার্কেট চেইন কিংবা ব্র্যান্ড নামের বুটিক শপ বা ডিজাইনাররা অভিরুচির ওপর একচেটিয়া নিয়ন্ত্রণ বহাল রাখবে, এতে আর সন্তুষ্ট থাকতে পারছেনা আধুনিক ক্রেতারা৷ তারা এখন নিজেদের স্টাইল নিজেরাই তৈরি করতে শুরু করেছে৷
লাইফস্টাইল চেইন স্টোরের বই-এর তাক, স্পোর্টস সংক্রান্ত জিনিসের দোকান থেকে রানিং শু বা বড় ডিপার্টমেন্ট স্টারের টি-শার্ট এখন প্রত্যাখ্যান করছে বহু মানুষ৷ নিজেদের পছন্দ অনুযায়ী ডিজাইন করছে তারা প্রতিদিনের ব্যবহার্য জিনিসপত্র৷ কম্পিউটারেই জুতোর ডিজাইন করছে - তাতে বসিয়ে দিচ্ছে নিজের প্রিয় রং৷ শার্টের ওপর থাকছে কোন নাম, মজার কোন স্লোগান বা ছবি৷ এক ধরনের ট্রেন্ড তারা বেঁধে দিচ্ছে নিজেদের ধ্যান ধারণা অনুযায়ী৷ প্রথাগত জিনিস না কিনে তারা আনতে চাইছে ভিন্ন অভিনব রুচির স্বাদ - যা হবে একান্ত আপন, ব্যক্তিগত৷
অস্ট্রিয়ার সালজবুর্গ টেকনিক্যাল কলেজের প্রফেসর ডমিনিক ভালখ্যার বলছেন, অনলাইনে কেনাকাটা করার প্রবণতা বাড়তে থাকার সঙ্গে সঙ্গে ভবিষ্যতের ক্রেতা-ভোক্তা দেখতে পাবে যে মানুষ ক্রমশই ব্যক্তিগত রুচি ও পছন্দের জিনিসপত্র কিনছে অনেক বেশি করে৷ ভালখ্যার ও তাঁর সহযোগী জার্মানির আখেন প্রযুক্তি মহাবিদ্যালয়ের ফ্রাঙ্ক পিলার এমন ৫০০ টি কোম্পানিকে নিয়ে সমীক্ষা চালিয়েছেন যারা কিনা ক্রেতাদের জন্য ব্যক্তিগত পছন্দের জিনিসপত্র সরবরাহ করছে৷ এটাকে বলা হচ্ছে ম্যাস কাস্টমাইজেশন আন্দোলন৷ আর এই আন্দোলনে উদ্ভাবনী ক্ষমতার দিক থেকে শীর্ষে রয়েছে যারা, জার্মান কোম্পানিগুলো তাদের অন্যতম৷
ক্রেতার পুরোপুরি ভিন্ন রুচির দিকে প্রথম নজর দিয়েছিল মোটর গাড়ির কোম্পানিগুলো৷ গাড়িতে নানা ধরণের আনুষঙ্গিক ও অতিরিক্ত জিনিসপত্র সরবরাহ করতে কুন্ঠা নেই তাদের৷ আর নিজের পছন্দের রংটি তো এখনই মেলে৷ আজকের দিনে আনকোরা নতুন একটি গাড়ি দেখতে যেন আর অন্যটির মত নয়৷
স্নিকার, দৌড়ানোর জুতো তো বেশিরভাগ ক্রেতাই স্পোর্টস স্টোর থেকে কিনে থাকে৷ কিন্তু এখন ছবিটা বদলে যাচ্ছে৷ হামবুর্গের এক বড় স্টোরের কর্মী পাট্রিক শেংক্ ক্রেতাদের হালের এই প্রবণতার খোঁজ খবর রাখেন ভাল করেই৷ তিনি বলছেন: ‘‘ আজকাল জুতো উৎপাদনকারী কোম্পানির ওয়েবসাইটে গিয়ে ক্রেতা নিজের পছন্দের সোল এবং জুতোর উপরের অংশ বেছে নিতে পারে৷ ইচ্ছে করলে কমলা রং'এর রানিং শ্যু'তে উজ্জ্বল সবুজ ফিতে লাগাতে পারে৷'' জুতো সরবরাহ করা হবে ঠিক সেই পছন্দ মেনে৷ পরের ম্যারাথন দৌড়ে যখন লাইন করে দাঁড়াচ্ছে, দেখা যাবে কারো জুতোই একরকম নয়৷
কাস্টম টেইলর্ড স্যুট আর শার্ট, ব্যক্তিগত অভিরুচির জুতো - এগুলো আগে ছিল সম্পন্ন এলিট শ্রেনির মাঝে সীমিত৷ কিন্ত এখন সাধারণ ক্রেতাদের জন্যও বেশ কিছু কোম্পানি এ ধরনের জিনিস সরবরাহ করছে৷ এই ট্রেন্ড এখন বেশ স্পষ্ট, মনে করেন হামবুর্গ বণিক সমিতির হাইনার শটে৷ বহু অনলাইন অর্ডার কোম্পানি এখন ক্রেতার পছন্দ মেনে দরজিকে দিয়ে কাপড় তৈরি করিয়ে দিচ্ছে৷ ক্রেতারা তাদের একান্ত ব্যক্তিগত পছন্দের জিনিসের জন্য বেশি দাম দিতেও আর কুন্ঠিত নয়৷
প্রতিবেদন: আব্দুল্লাহ আল-ফারূক
সম্পাদনা: সঞ্জীব বর্মন