জলবায়ু আন্দোলন করে বিশ্বব্যাপী পরিচিতি পেয়েছেন সুইডেনের ১৭ বছর বয়সি তরুণী গ্রেটা টুনব্যার্গ৷ এবার তিনি তাঁর নামের ট্রেডমার্ক করাতে চান বলে জানিয়েছেন৷
বিজ্ঞাপন
বুধবার ইন্সটাগ্রামে দেয়া এক পোস্টে তিনি নিজের নাম ছাড়াও তাঁর শুরু করা ‘ফ্রাইডেস ফর ফিউচার' আন্দোলন এবং সুইডিশ ভাষায় লেখা ‘স্কুলস্ট্রেইক ফুর ক্লিমাটেট', যার অর্থ ‘জলবায়ুর জন্য স্কুল ধর্মঘট', শ্লোগানেরও ট্রেডমার্ক করার ইচ্ছার কথা জানান৷
এই শ্লোগান লেখা প্ল্যাকার্ড নিয়েই তিনি প্রথম সুইডিশ সংসদের সামনে বিক্ষোভ শুরু করেছিলেন৷ প্রতি শুক্রবার স্কুলে না গিয়ে এই প্ল্যাকার্ড নিয়ে বিক্ষোভ করতেন গ্রেটা৷ সেখানে থেকেই পরবর্তীতে ‘ফ্রাইডেস ফর ফিউচার' আন্দোলন গড়ে উঠে৷ বিশ্বের বিভিন্ন দেশের শিক্ষার্থীরা শুক্রবার করে জলবায়ু আন্দোলনে অংশ নিয়েছেন, নিচ্ছেন৷
গ্রেটা টুনব্যার্গ লিখেছেন, এই আন্দোলনকে বাণিজ্যিকীকরণের হাত থেকে বাঁচাতেই ট্রেডমার্ক করা প্রয়োজন৷ ‘‘পূর্ব অনুমতি ছাড়াই সম্পূর্ণ বাণিজ্যিক কারণে তাঁর ও এই আন্দোলনের নাম নিয়মিত ব্যবহার করা হচ্ছে,'' বলে জানান তিনি৷
আন্দোলনের নামে পণ্য বিক্রি ও মানুষের কাছ থেকে টাকা সংগ্রহ করা হচ্ছে বলেও জানান তিনি৷
বই থেকে পাওয়া রয়্যালটি, দান, প্রাইজমানি ইত্যাদি থেকে পাওয়া অর্থ স্বচ্ছতার সঙ্গে ব্যবহারের জন্য পরিবারের সঙ্গে মিলে একটি ফাউন্ডেশন গড়ে তোলা হয়েছে বলেও জানান টুনব্যার্গ৷
জেডএইচ/কেএম (এএফপি, ডিপিএ)
গ্রেটা টুনব্যার্গ-ট্রাম্প: এ কেমন দ্বন্দ্ব!
সুইডেনের ১৭ বছর বয়সি গ্রেটা টুনব্যার্গ একজন পরিবেশকর্মী৷ আর ৭৩ বছর বয়সি ডনাল্ড ট্রাম্প মার্কিন প্রেসিডেন্ট৷ টুনব্যার্গকে নিয়ে অন্তত দুবার উপহাস করেছেন তিনি৷
ছবি: Imago Images/ZUMA Press/C. Minelli
প্রথম দেখা
গত বছর সেপ্টেম্বরে নিউইয়র্কে জাতিসংঘের সম্মেলনের সময় ট্রাম্পের দিকে এভাবে বড় বড় চোখে তাকিয়ে ছিলেন গ্রেটা টুনব্যার্গ৷ সেই সময় এই দৃশ্যের ভিডিও ভাইরাল হয়েছিল৷ জলবায়ু পরিবর্তন নিয়ে ট্রাম্পের মনোভাব টুনব্যার্গের একেবারে উলটো৷ তাই ট্রাম্পের প্রতি টুনব্যার্গের এমন দৃষ্টি৷
ছবি: Reuters/A. Hofstetter
জাতিসংঘে টুনব্যার্গের বক্তব্য
পরিবেশ বাঁচাতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলন ‘ফ্রাইডেস ফর ফিউচার’-এর উদ্যোক্তা টুনব্যার্গ৷ পরিবেশ রক্ষায় কাজ করতে নেতাদের চাপ দিতে তিনি প্রতি শুক্রবার স্কুলে না গিয়ে সুইডিশ সংসদের সামনে বিক্ষোভ শুরু করেছিলেন৷ গতবছর বিশ্ব নেতৃবৃন্দের তিনি বলেন, ‘‘মানুষ দুর্ভোগ পোহাচ্ছে, মানুষ মারা যাচ্ছে, পুরো ইকোসিস্টেম ভেঙে পড়ছে৷ আমরা গণ বিলুপ্তির শুরুর দিকে আছি, আর আপনারা সবাই টাকা ও প্রবৃদ্ধির রূপকথা শুনিয়ে যাচ্ছেন৷’’
ছবি: Reuters/C. Allegri
ট্রাম্পের প্রথম উপহাস
জাতিসংঘে দেয়া টুনব্যার্গের এই বক্তব্যের পর ডনাল্ড ট্রাম্প এক টুইটে টুনব্যার্গকে নিয়ে উপহাস করেছিলেন৷ তিনি লিখেছিলেন, ‘‘তাকে দেখে খুব সুখি মেয়ে মনে হয় যে, একটি সুন্দর ও উজ্জ্বল ভবিষ্যতের দিকে তাকিয়ে আছে৷ দেখে খুব ভালো লাগছে৷’’ ট্রাম্পের হোয়াইট হাউসের সাবেক কমিউনিকেশন্স ডাইরেক্টর ট্রাম্পের এই টুইটের সমালোচনা করেছিলেন৷ তিনি বলেছিলেন, একজন ১৬ বছর বয়সির পেছনে লাগা ট্রাম্প তাঁর কাজের জন্য যোগ্য নন৷
ছবি: picture-alliance/dpa/AP Photo/E. Vucci
টুনব্যার্গের উত্তর
ট্রাম্পের এমন বক্তব্যের পর টুনব্যার্গ তাঁর টুইটার অ্যাকাউন্টে নিজের পরিচয় লিখেছিলেন এভাবে, ‘‘একজন খুব সুখি মেয়ে যে একটি সুন্দর ও উজ্জ্বল ভবিষ্যতের দিকে তাকিয়ে আছে৷’’
ছবি: twitter.com/gretathunberg
আবারও ট্রাম্প
গত ডিসেম্বরে টাইম ম্যাগাজিন টুনব্যার্গকে ‘পারসন অফ দ্য ইয়ার’ ঘোষণা করেছিল৷ এরপর টুনব্যার্গকে নিয়ে আরেকটি টুইট করেছিলেন ট্রাম্প৷ তিনি লিখেছিলেন, ‘‘গ্রেটাকে অবশ্যই তার রাগ ব্যবস্থাপনা (অ্যাঙ্গার ম্যানেজমেন্ট) সমস্যা নিয়ে কাজ করতে হবে৷ এরপর তার একজন বন্ধুকে নিয়ে পুরনো ভালো মুভি দেখতে যাওয়া উচিত৷’’
ছবি: Imago Images/ZUMA Press/C. Minelli
ট্রাম্পকে টুনব্যার্গের ট্রল
মার্কিন প্রেসিডেন্টের টুইটের পর তাঁকে ট্রল করে টুইটারে আবারও নিজের পরিচয় পরিবর্তন করেছিলেন টুনব্যার্গ৷ তিনি লিখেছিলেন, ‘‘একজন টিনএজার যে তার রাগ ব্যবস্থাপনা সমস্যা নিয়ে কাজ করছে৷ আর এখন একজন বন্ধুকে নিয়ে পুরনো ভালো মুভি দেখছে৷’’
ছবি: Twitter/@GretaThunberg
‘সময় নষ্ট করতাম না’
গত সেপ্টেম্বরে জাতিসংঘের সম্মেলনে ট্রাম্পের সঙ্গে কথা হলে তাঁকে কী বলতেন টুনব্যার্গ? গত ডিসেম্বরে বিবিসির এমন এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেছিলেন, ‘‘সত্যি করে বললে, আমার মনে হয় না, আমি তাঁকে কিছু বলতাম, কারণ, তিনি বিজ্ঞানী ও বিশেষজ্ঞদের কথা শোনেন না৷ তাহলে আমার কথা কেন শুনবেন? সে কারণে সম্ভবত আমি কিছুই বলতাম না, আমি আমার সময় নষ্ট করতাম না৷’’
ছবি: picture-alliance/AP Photo/Ahn Young-joon
আবারও একই অনুষ্ঠানে
মঙ্গলবার সুইজারল্যান্ডের ডাভোসে শুরু হতে যাওয়া ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামের অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখবেন ডনাল্ড ট্রাম্প ও গ্রেটা টুনব্যার্গ৷ দেখা যাক, নতুন কিছু ঘটে কিনা!