নিজ এলাকা পরিষ্কারে মনযোগী সেনেগালের মানুষ
১৪ মে ২০২৫
সেনেগালের রাজধানী ডাকারের পূর্বে অবস্থিত রুফিস্কের আবাসিক এলাকা জকুল জোরেন বিখ্যাত হয়ে উঠেছে৷ ঐ এলাকা দেশটির সবচেয়ে পরিষ্কার এলাকাগুলির একটি৷ অনলাইন ও সামাজিক নেটওয়ার্কে পরিচালিত এক প্রতিযোগিতায় এটি সারা দেশের মধ্যে দ্বিতীয় স্থান অধিকার করেছে৷
ওমার ডিওপ ও তার প্রতিবেশীরা তাদের রাস্তাঘাট আর গলিগুলিকে নতুন রূপ দেওয়ার জন্য কঠোর পরিশ্রম করেছেন৷ তিনি বলেন, ‘‘আমরা ভাবিনি, এই পুরষ্কার জিতবো৷ এটি প্রথম ও সর্বাগ্রে এলাকার সবার চেষ্টার ফল৷ তবে এটা সত্যিই বাসিন্দাদের অনুপ্রাণিত করেছে৷ এখন আশেপাশের পাড়া-মহল্লা থেকে লোকজন গাছপালা পেতে এবং তাদের বসবাসের পরিবেশ আরও উন্নত করতে আমাকে ফোন করেন৷''
পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা প্রতিযোগিতার কথা দ্রুত ছড়িয়ে পড়েছে৷ থিয়েস-এর কমিউনিটি অ্যাক্টিভিস্ট শেখ টিজিয়ানি ফল এলাকার মানুষদের তাদের আশেপাশের এলাকা পুনর্গঠনের জন্য উৎসাহিত করছেন৷ অনেক জায়গায় তিনি আরও কিছু করার এবং আরো সবুজায়নের সম্ভাবনা দেখছেন৷
ডাকার থেকে প্রায় ৬০ কিলোমিটার পশ্চিমে থিয়েসের লামি পাড়ায় তার বারান্দায় টিজিয়ানি গাছের পরিচর্যা করছেন৷ বেশ কয়েকজন প্রতিবেশীর সঙ্গে মিলে তিনি তার এলাকাটিকে এমনভাবে সাজিয়েছেন যে, এলাকাটি সেনেগালের সবচেয়ে পরিষ্কার এলাকার পুরস্কার জিতেছে৷ টিজিয়ানি বলেন, ‘‘গাছ কিনতে আমরা নার্সারি আর গাছের খামারে গিয়েছিলাম৷ ১৫০টি গাছ কিনেছিলাম৷ এরপর একজন মালির সহায়তায় সেগুলো রোপণ করেছিলাম৷ কাজ শেষ হওয়ার পর পথচারীরা পরিবর্তন দেখে অবাক হয়ে গিয়েছিল আর ছবি তুলতে শুরু করেছিল৷ টিকটকাররাও সামাজিক মাধ্যমে ভিডিও শেয়ার করেছিল৷''
প্রতিযোগিতার আগে স্থানীয়রা শুধু প্ল্যান্টারগুলিতে সবুজ গাছ লাগাননি, তারা সম্মুখভাগ পুনরায় রঙ করেছেন, আর বর্জ্য ব্যবস্থাপনাও উন্নত করেছেন৷
ফলাফলে খুশি বাসিন্দারা - এবং একে এভাবেই রাখতে চান তারা৷ ডিয়েনাবা নাদিয়ের বলেন, ‘‘রাস্তাঘাট পরিষ্কার রাখা এবং ফুলের যত্ন নেওয়ার জন্য আমরা যথাসাধ্য চেষ্টা করি৷ কিন্তু এটাই যথেষ্ট নয়৷ আশেপাশের এলাকায় জীবনযাত্রার মান উন্নত এবং একটি পরিষ্কার পরিবেশ বজায় রাখার জন্য আমরা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ৷''
আরেক বাসিন্দা পাপে এমবায়ে বলেন, ‘‘আমি মনে করি, আমাদের ফলের গাছ লাগানোর দিকেও মনোযোগ দেওয়া উচিত এবং সচেতনতা বৃদ্ধি অব্যাহত রাখা উচিত৷ এভাবেই মানুষ একটি পরিষ্কার এবং স্বাস্থ্যকর পরিবেশের গুরুত্ব শিখতে পারবে৷ এর পাশাপাশি তারা বুঝতেও শিখবে যে, গাছপালা ছাড়া জীবন অসম্ভব৷''
এসব পরিবর্তন বাসিন্দাদের জীবনযাত্রার মান এবং মানসিক সুস্থতার উপর ইতিবাচক প্রভাব ফেলেছে৷ থিয়েসের মেয়রও বিষয়টি লক্ষ্য করেছেন৷ শহরের বিভিন্ন অঞ্চলে প্রতিযোগিতার প্রভাব নিয়ে তিনি গর্বিত৷
থিয়েসের মেয়র আলিও ডিওপ বলেন, ‘‘ফাইনালের প্রস্তুতির সময় এলাকাগুলি সুন্দর করে সাজানো হয়েছিল৷ কিন্তু পরে অনেক এলাকায় সেটা ধরে রাখা হয়নি৷ তবে লামিতে সৌন্দর্য রক্ষা করা হচ্ছে৷ সেখানকার বাসিন্দাদের সেই চেষ্টাটা আছে৷ প্রতিদিন সকালে কাজে যাওয়ার সময় আমি ঐ পথ দিয়ে যাই৷ আমার খুব ভালো লাগে, কারণ, রাস্তাসহ সব বাড়ি একই রঙে রঙ করা হয়েছে৷ রাস্তা আর ফুটপাথ সত্যিই সুন্দর৷ অসাধারণ!''
অন্যদের অনুপ্রাণিত করতে ওমার ডিওপ সামাজিক মাধ্যমে নিয়মিত ক্লিপ পোস্ট করেন৷ এলাকা পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন ও সুন্দর রাখতে এবং ভবিষ্যতে আরো পুরস্কার জিততে তিনি দৃঢ়প্রতিজ্ঞ৷
পাপে নাদিয়ে, লুকাস লটার্সব্যার্গার/জেডএইচ