অ্যামেরিকার পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষ পাশ করে দিল প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্পের বিরুদ্ধে আনা ইমপিচমেন্টের প্রস্তাব। এর পর একমাত্র মার্কিন সেনেটই বাঁচাতে পারে প্রেসিডেন্টকে। সেখানে প্রস্তাব যাবে জানুয়ারির গোড়ায়।
বিজ্ঞাপন
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্পের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রকাশ করল সে দেশের সংসদের নিম্নকক্ষ। বুধবার প্রেসিডেন্টের ইমপিচমেন্টের পক্ষে রায় দিলেন সাংসদরা। যদিও এখনও নিজের পদে থেকে যাওয়ার সুযোগ আছে ট্রাম্পের। কারণ নিম্নপক্ষের পরে সংসদের উচ্চকক্ষ বা সেনেটে যাবে মামলা। সেখানেও ভোটাভুটি হবে। সেই ভোটে দুই তৃতীয়াংশ যদি প্রস্তাবের পক্ষে রায় দেন, তবেই ইমপিচমেন্টের প্রস্তাব চূড়ান্ত হবে।
বুধবার প্রায় দশ ঘণ্টা ঘরে অ্যামেরিকার সংসদের নিম্নকক্ষে প্রেসিডেন্টের ইমপিচমেন্ট নিয়ে বিতর্ক চলে। মূলত দুটি বিষয়ে বিতর্ক হয়। এক, পুনর্নিবাচনের সম্ভাবনা বাড়াতে ট্রাম্প বিদেশি হস্তক্ষেপ চেয়েছিলেন৷ ইউক্রেনের সরকারের উপর অনৈতিক চাপ সৃষ্টি করে তিনি রাজনৈতিক ফায়দা তুলতে চেয়েছিলেন৷ এবং দুই, তিনি জাতীয় নিরাপত্তার তোয়াক্কা করেননি এবং সংসদের কার্যকলাপে বাধা দিতে অভূতপূর্ব অভিযান চালিয়েছেন৷ বস্তুত, মার্কিন সংসদের নিম্নকক্ষে ইন্টেলিজেন্স কমিটি আগেই এ বিষয়ে তাদের রিপোর্ট পেশ করেছিল। তারই উপর ভিত্তি করে এ দিন নিম্নকক্ষে বিতর্ক হয়। বিতর্কের শেষে ভোটাভুটিতে যথেষ্ট সংখ্যাগরিষ্ঠতায় পাশ হয়ে যায় ইমপিচমেন্টের প্রস্তাব।
কালে কালে জাতীয়তাবাদ
কোনো দেশ বা জাতির প্রতি আনুগত্য যেমন হতে পারে জাতীয়তাবাদ, তেমনি যে কোনো কিছুর প্রতি আনুগত্য বা বিরাগও হতে পারে এর অংশ৷ কখনোবা ক্ষমতার উত্থান-পতনের সঙ্গে রচিত হয়েছে জাতীয়তাবাদের ইতিহাস৷
ছবি: Imago/IPON
নাৎসিতে পিষ্ট ইহুদি
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় ইহুদিদের উপর চালানো হয় গণহত্যা৷ হিটলারের নেতৃত্বে জার্মান নাৎসি বাহিনী ইউরোপের ইহুদি জনগোষ্ঠীর প্রায় ৬০ লাখ মানুষকে নির্বিচারে হত্যা করে৷
ছবি: Getty Images/AFP
মুসোলিনি ফ্যাসিবাদ
‘ইটালির ফ্যাসিবাদের জনক’ বলা হয় বেনিতো মুসোলিনিকে৷ ন্যাশনাল ফ্যাসিস্ট পার্টির এই নেতা ১৯২২-১৯৪৩ সাল পর্যন্ত দেশটির প্রধানমন্ত্রী ছিলেন৷ ১৯২৫ সালে গণতন্ত্রপ্রথা বাতিল করে চালু করেন একনায়কতন্ত্র এবং পুলিশের সহায়তায় দমন করনে রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বীদের৷
ছবি: AP
ট্রাম্পের দেয়াল
মেক্সিকো থেকে অবৈধভাবে যুক্তরাষ্ট্রে আসা অভিবাসীদের সন্তানদের আলাদা করার ঘোষণা দিয়ে সমালোচিত হন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প৷ যুক্তরাষ্ট্র-মেক্সিকো সীমান্তে দেয়াল নির্মাণের নির্বাহী আদেশেও স্বাক্ষর করেছেন তিনি৷
ছবি: Reuters/K. Lamarque
নিন্দিত মোদী
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর শাসনামলে দেশটিতে সংখ্যালঘু মুসলমান ও খ্রিষ্টানদের বিরুদ্ধে নিপীড়নের অভিযোগ ওঠে৷ মুসলিম অধ্যুষিত এলাকায় পরিবর্তন আনতে মোদী সরকার হিন্দুদের উৎসাহিত করছে বলেও অভিযোগ রয়েছে৷
ছবি: Getty Images/AFP/P. Singh
এরদোগানের রোষানলে
২০১৬ সালে ব্যর্থ অভ্যুত্থান সামাল দেয়ার পর আরো শক্তি সঞ্চয় করা তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রেচেপ তাইয়্যেপ এরদোগানের সরকার প্রায় ৫০ হাজার মানুষকে গ্রেপ্তার করে, সরকারি চাকরি থেকে বরখাস্ত করে এক লাখ ১০ হাজারের বেশি মানুষকে এবং বন্ধ করে দেয় বেশ কয়েকটি গণমাধ্যম৷
ছবি: picture-alliance/AP Photo/L. Pitarakis
শ্বেতাঙ্গ জাতীয়তাবাদে শঙ্কা
উগ্র শ্বেতাঙ্গ জাতীয়তাবাদে উদ্ভুদ্ধ হয়ে বিভিন্ন দেশে অস্ত্র নিয়ে হামলা করে নির্বিচারে মানুষ হত্যার ঘটনা দিন দিন বাড়ছে৷ অনেকই মনে করেন ইসলাম বিদ্বেষী মনোভাব থেকে এসব ঘটনা ঘটছে৷
ছবি: Reuters/M. Mitchell
উগ্র বামপন্থা
ইউরোপে সন্ত্রাসবাদ নিয়ে ইউরোপলের এক প্রতিবেদনে বামপন্থিদের উত্থানের বিষয়টি সামনে আসে৷ ইটালি, গ্রিস ও সুইডেন, জার্মানির কয়েকটি স্থানে নৈরাজ্য সৃষ্টিতে উগ্র বামপন্থিদের সংশ্লিষ্টতার প্রমাণও পাওয়া যায়৷
ছবি: picture-alliance/N.Liponne
সতর্ক ইইউ
ইউরোপে উগ্র জাতীয়তাবাদের উত্থান টের পেয়ে জনগণকে নাৎসিবাদ ও স্টালিনবাদের নিপীড়নের কথা মনে করিয়ে দিয়ে সতর্ক হওয়ার আহ্বান জানিয়ে ২০১৭ সালে বিবৃতি দিয়েছেন ইইউ-র নেতারা৷ উগ্র জাতীয়তাবাদ, বিদেশিদের সম্পর্কে অহেতুক ভয় সৃষ্টি এবং ঘৃণা ছড়ানো বক্তব্য থেকে সাবধান থাকার আহ্বান জানিয়েছেন তারা৷
ছবি: DW/T. Sparrow
8 ছবি1 | 8
২০২০ সালের গোড়ায় বিষয়টি যাবে মার্কিন সংসদের উচ্চকক্ষ সেনেটে। নিম্নকক্ষে ট্রাম্প-বিরোধী ডেমোক্র্যাটদের সংখ্যা বেশি হলেও উচ্চকক্ষে রিপাবলিকানদের সংখ্যাগরিষ্ঠতা। ফলে রাজনৈতিক মহলের ধারণা, উচ্চকক্ষের ভোট প্রেসিডেন্টের পক্ষেই থাকবে। ফলে শেষ পর্যন্ত ইমপিচমেন্টের সিদ্ধান্ত পাশ হবে না।
অ্যামেরিকার ইতিহাসে ট্রাম্পই তৃতীয় প্রেসিডেন্ট যিনি অভিশংসিত হয়েছেন। বিশেষজ্ঞদের বক্তব্য, প্রস্তাব পাশ হোক বা না হোক, কোনও প্রেসিডেন্টের বিরুদ্ধে ইমপিচমেন্টের প্রস্তাব আসাই যথেষ্ট লজ্জার। ট্রাম্পও যে বিষয়টি নিয়ে বিচলিত হয়েছেন, তা তাঁর ব্যবহারেই স্পষ্ট। বুধবার ভোটাভুটির আগে তিনি নিম্নকক্ষের স্পিকারকে চিঠি দিয়ে ডেমোক্র্যাটদের বিরুদ্ধে নজিরবিহীন আক্রমণ করেছিলেন। যার উত্তরে ডেমোক্র্যাটদের উত্তর ছিল, এ ধরনের ভিত্তিহীন আক্রমণে প্রেসিডেন্টের জুরি নেই। এ সব বিষয়ে তিনি নিজেই নিজের নজির ভাঙেন।