1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

ভুগছে জার্মান সেনাবাহিনী

গ্রেহেম লুকাস/এসিবি৭ অক্টোবর ২০১৪

১৯৬২ সাল৷ ডেয়ার স্পিগেল লিখলো, জার্মান সেনাবাহিনী সোভিয়েত ইউনিয়নের সম্ভাব্য আক্রমণ থেকে দেশকে রক্ষা করতে পারবে না৷ এরপর আর কী? পত্রিকাটির কার্যালয়ে চললো পুলিশি অভিযান আর মন্ত্রীত্ব গেল প্রতিরক্ষামন্ত্রীর৷

Symbolbild Bundeswehr Ausrüstungsmängel
ছবি: imago/Christian Ohde

সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা ক্ষুণ্ণ করার কারণে এমনটা ঘটেছিল তখন৷ তবে এ মুহূর্তে জার্মানির বর্তমান প্রতিরক্ষামন্ত্রী উর্সুলা ফন ডেয়ার লাইয়েনও জার্মান সেনাবাহিনীর সামর্থ্য নিয়ে প্রশ্ন ওঠায় সংকটে আছেন৷ প্রতিরক্ষামন্ত্রীর জনপ্রিয়তা হঠাৎ করেই তলানিতে নেমেছে৷ আফগানিস্তানে ন্যাটো বাহিনীতে জার্মানির অংশগ্রহণের সময়সীমা শেষ হওয়ার পর থেকে জার্মানির অনেকেই আন্তর্জাতিক পর্যায়ে জার্মান সেনাবাহিনীর ব্যাপক অংশগ্রহণ সমর্থন করে না৷ তবে যেখানে প্রয়োজন হবে সেখানে গিয়ে যেন সহায়তা করার সামর্থ্য সেনাবাহিনীর থাকে, তা তাঁরাও চান৷ বিশেষ করে জনমত এখন আইএস বিরোধী যুদ্ধে কুর্দিদের অস্ত্র সরবরাহ করার পক্ষে৷ ইসলামি জঙ্গিরা জার্মানিতে হামলা চালাতে পারে এমন আশঙ্কা জার্মানির অধিকাংশ মানুষের মনেই রয়েছে৷ ইউক্রেনে রাশিয়ার ভূমিকা নিয়েও অনেকেই শঙ্কিত৷ তাঁদের মনে ফিরে এসেছে সেই সোভিয়েত হুমকির স্মৃতি৷

ট্র্যানসাল এয়ারক্রাফট সেকেলে হয়ে পড়ায় নির্ভরযোগ্যতা হারিয়েছেছবি: picture-alliance/dpa/Thomas Warnack

এখন বেশির ভাগ জার্মানই চান, সেনাবাহিনীর পেছনে অর্থ বরাদ্দ বাড়ানো হোক৷ অনেক সরঞ্জাম পুরোনো এবং বিকলা, আর এ কারণে সামরিক বাহিনী নানাভাবে ভুগছে – এ খবর তাঁদের বেশ নাড়া দিয়েছে৷ অনেকেরই প্রশ্ন, ‘‘এ অবস্থার উদ্ভব হলো কীভাবে?'' অবস্থা বেগতিক৷ গুণগত মানে সমস্যা ধরা পড়ায় জার্মানির প্রধান যুদ্ধবিমান ‘ইউরোফাইটার্স'-এর উৎপাদন আপাতত বন্ধ৷ সংবাদমাধ্যমের খবর অনুযায়ী, বিমানগুলোর চালকের আসন এবং রিভেটিংয়ে জটিল সমস্যা রয়েছে৷

অন্যদিকে জার্মান বিমানবাহিনীর মূল চালিকাশক্তি ‘ট্র্যানসাল' এয়ারক্রাফট সেকেলে হয়ে পড়ায় নির্ভরযোগ্যতা হারিয়েছে৷ এ মুহূর্তে চালু ১৯০টি হেলিকপ্টারের মধ্যে মাত্র ৪১টি উড়তে সক্ষম৷ সেনাবাহিনীর জি-৩৬ রাইফেলের গুণগত মানও প্রশ্নবিদ্ধ৷ এখানেই শেষ নয়৷ প্রচুর বিনিয়োগের পর গত বছর ইউরোড্রোনের উৎপাদন বন্ধ রাখা হয়৷ এমন আরো অনেক বিষয়েরই উল্লেখ করা যায় যা, জার্মান সেনাবাহিনী সম্পর্কে প্রচলিত ধারণার সঙ্গে একেবারেই মেলে না৷

এ সবের জন্য নিশ্চয়ই র্সুলা ফন ডেয়ার লাইয়েন দায়ী নন৷ তিনি প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে রয়েছেন প্রায় এক বছর ধরে৷ শীতল যুদ্ধ অবসানের পর জার্মানি অনিচ্ছা সত্ত্বেও ন্যাটো বহির্ভূত এলাকায় আন্তর্জাতিক মিশনে অংশ নিতে সম্মত হয়৷ সোভিয়েত-হুমকি শেষ হয়ে যাওয়ার পর অনেকেরই মনে হয়েছিল, সেনাবাহিনীর পেছনে বেশি অর্থ ব্যায়ের কোনো প্রয়োজন নেই৷ এ কারণে গত দু'দশকে যখনই বাজেট কমানোর প্রশ্ন এসেছে তখনই কাঁচি চলেছে সামরিক খাতে৷ সর্বনাশের যেটুকু বাকি ছিল, ২০০৮ সালে ব্যাংকিং খাতের বিপর্যয় রুখতে ব্যাপক বাজেট হ্রাসের মাধ্যমে তা-ও সারা হলো৷ এমন প্রেক্ষাপটে মেধাবীদের কাছে প্রতিরক্ষামন্ত্রীর পদটা আকর্ষণ হারাতে থাকে৷

গ্রেহেম লুকাস, এই সংবাদভাষ্যের লেখকছবি: DW/P. Henriksen

যা হোক, কী ধরণের সেনাবাহিনী চাই এবং তার পেছনে কী পরিমাণ খরচ করা হবে তা এখন জার্মানিকেই ঠিক করতে হবে৷ জার্মান পুনরেকত্রীকরণের পর থেকেই রাজনীতিবিদরা প্রশ্নটি তুলে আসছেন৷ জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের সদস্যপদ পেতে হলে জার্মানিকে অবশ্যই মিত্রদের প্রত্যাশা অনুযায়ী মধ্যস্থতাকারী এবং শান্তিরক্ষীর ভূমিকায় বিশ্বব্যাপী জোরালো ভূমিকা রাখতে হবে৷ আর তা করতে হলে সামরিক খাতে বরাদ্দ বৃদ্ধি অনিবার্য৷ তবে এ সিদ্ধান্ত নেয়ার আগে বিষয়টি নিয়ে বিতর্ক হওয়া দরকার৷ ১৯৬২ সালের মতো বিষয়টি এখন তো আর গণমাধ্যমের স্বাধীনতার প্রশ্নের মধ্যে সীমাবদ্ধ নেই৷ এর সঙ্গে দেশ রক্ষা এবং আন্তর্জাতিক পর্যায়ে পর্যাপ্ত ভূমিকা রাখার জন্য সামরিক বাহিনীর পেছনে জার্মানি কতটা অর্থ ব্যয়ে প্রস্তুত – এই সিদ্ধান্তটি জড়িয়ে গেছে৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ