সুপ্রিম কোর্টে ঝুলে রইল নিয়োগ মামলা। ১৬ জুলাই নির্ধারিত শুনানি পিছিয়ে গেল তিন সপ্তাহ।
বিজ্ঞাপন
স্কুল নিয়োগের ২০১৬ সালের প্যানেল বহাল থাকবে কি না, সে বিষয়ে মঙ্গলবার শুনানি হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু আয়কর সংক্রান্ত মামলার চাপে তা আগামী মাসে পিছিয়ে গেল। সব পক্ষের বক্তব্য কী পদ্ধতিতে আদালতের সামনে পেশ করতে হবে, সে সম্পর্কে নির্দেশ দিয়েছেন প্রধান বিচারপতি।
সুপ্রিম শুনানি
মঙ্গলবার সকালে পূর্ব নির্ধারিত সূচি অনুযায়ী নিয়োগ মামলা ওঠে প্রধান বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড়ের বেঞ্চে। এদিনের নির্ঘণ্টে ১২ নম্বরে ছিল এই মামলা। শুনানিতে বিভিন্ন পক্ষের বক্তব্য শুনতে হবে আদালতকে। এর মধ্যে রয়েছেন চাকরিহারা ও চাকরি না পাওয়া প্রার্থীরা। এছাড়া রাজ্য সরকার, স্কুল সার্ভিস কমিশন ও বোর্ডের পক্ষেও বক্তব্য পেশ করা হবে।
আন্দোলনের সর্বোচ্চ পর্যায়ে টেটপ্রার্থীরা। তিনদিন ধরে চলছে আমরণ অনশন। অসুস্থ দুই।
ছবি: Satyajit Shaw /DW
মৃত্যুর কার্নিভাল
সপ্তাহকয়েক আগে সরকারের প্রচেষ্টায় কলকাতায় হয়েছে দুর্গাপুজোর কার্নিভাল। এবার সেই কার্নিভালের স্লোগান সঙ্গে নিয়েই রাস্তায় টেটপ্রার্থীরা। দাবি না মানলে, শহর এবার মৃত্যুর কার্নিভাল দেখবে, বলছেন আন্দোলনকারীরা।
দাবি মানা না হলে জল পর্যন্ত ছোঁবেন না, এমনই জানাচ্ছেন টেটপ্রার্থীরা। অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে গিয়েও এক অনশনকারী ওআরএস খাননি।
ছবি: Satyajit Shaw /DW
শিশুকে নিয়ে
বাচ্চাকে বাড়িতে রেখে আসার উপায় নেই। তাই তাকে সঙ্গে নিয়েই আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন এই নারী। চাকরি না পেলে রাস্তা ছাড়বেন না।
ছবি: Satyajit Shaw /DW
পর্ষদের অবস্থান
মধ্যশিক্ষা পর্ষদ জানিয়েছে, আন্দোলনকারীদের দাবি অন্যায্য। তারা পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হলেও ইন্টারভিউতে উত্তীর্ণ হতে পারেননি। তাই তাদের আবার ইন্টারভিউ দিতে হবে।
ছবি: Satyajit Shaw /DW
দুর্নীতির অভিযোগ
আন্দোলনকারীরা আগের ইন্টারভিউ মানতে নারাজ। তাদের অভিযোগ, টেট নিয়ে ব্যাপক দুর্নীতি হয়েছে। ফলে তাদের চাকরি দিতে হবে।
ছবি: Satyajit Shaw /DW
শিক্ষামন্ত্রীর অবস্থান
শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু জানিয়েছেন, পর্ষদ যা সিদ্ধান্ত নেবে, তিনি তা সমর্থন করবেন। ফের টেট পরীক্ষা চালু করার কথাও তিনি বলেছেন।
ছবি: Satyajit Shaw /DW
বিরোধী রাজনীতি
বিরোধী বিজেপি, সিপিএম-- সব দলের নেতাই আন্দোলনকারীদের পাশে দাঁড়িয়েছে। বিজেপির প্রিয়ঙ্কা টিবরেওয়াল দুইদিন আন্দোলনস্থলে গেছেন। সিপিএমের তরুণ ব্রিগেডও বিক্ষোভকারীদের পাশে।
ছবি: Satyajit Shaw /DW
অসুস্থ আন্দোলনকারী
দুই দিনে দুইজন আন্দোলনকারী অসুস্থ হয়ে পড়েন। তাদের হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে অবশ্য তারা আবার বিক্ষোভস্থলে চলে আসেন।
ছবি: Satyajit Shaw /DW
9 ছবি1 | 9
এই শুনানি সময়সাপেক্ষ ও দীর্ঘ হওয়ার আশঙ্কা থাকায় আগে একটি রূপরেখা তৈরি করে দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। প্রধান বিচারপতির নির্দেশ চার সদস্যের একটি নোডাল কমিটি সব পক্ষের বক্তব্যের সংক্ষিপ্তসার তৈরি করবে। আইনজীবীদের নিয়ে গঠিত এই কমিটির কাছে হলফনামা দেবে সব পক্ষ। পাঁচ থেকে সাত পাতার মধ্যে প্রত্যেককে নিজ পক্ষের বক্তব্য জানাতে হবে। দুই সপ্তাহ পর কারো বক্তব্য শোনা হবে না।
বিভিন্ন তরফের বক্তব্য পর্যালোচনা করে তার ভিত্তিতে সংক্ষিপ্তসার তৈরি করবে কমিটি। দুই সপ্তাহের মধ্যে এই প্রক্রিয়া শেষ করতে হবে নোডাল কমিটিকে। তিন সপ্তাহ পরে মঙ্গলবারে নিয়োগ মামলার পরের শুনানি হবে সর্বোচ্চ আদালতে। অর্থাৎ আগস্টের প্রথম সপ্তাহে এই মামলার শুনানি হতে চলেছে।
মঙ্গলবারের সুনানিতে স্কুল সার্ভিস কমিশন ও রাজ্য সরকার হলফনামা দিতে চেয়েছিল। সুপ্রিম কোর্ট আলাদাভাবে তাদের কথা শুনতে চায়নি। কমিটির কাছে পেশ করা বক্তব্যের সংক্ষিপ্তসার আদালতের সামনে হাজির করবে কমিটি।
এদিনের শুনানিতে অংশ নেয়া আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য বলেন, "প্রচুর মামলা হয়েছে নিয়োগ দুর্নীতিতে। হাজার দেড়েক এস এল পি দায়ের হয়েছে। এতো নথিপত্র এক জায়গায় আনার কাজ করবে কমিটি। মূলত পরের শুনানির আগে পদ্ধতি ঠিক করে দিয়েছে আদালত।"
‘এখন আমাদের কাছে এক একটা দিন একটা বছরের সমান’
হাইকোর্টের নির্দেশ
টাকার বিনিময়ে চাকরি বিক্রি, যোগ্য প্রার্থীদের বঞ্চিত করে অযোগ্যদের চাকরি দেয়া, ও এম আর শিটে গড়বড় করা, মেধা তালিকার ক্রম নিয়ে অনিয়ম, এমন নানা অসাধু কাজকর্মের অভিযোগ উঠেছে স্কুলে নিয়োগ প্রক্রিয়াকে ঘিরে। এর মধ্যে নবম, দশম, একাদশ, দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষক নিয়োগ যেমন রয়েছে, তেমনি রয়েছে গ্রুপ সি ও গ্রুপ ডি-তে নিয়োগ সংক্রান্ত অভিযোগ।
এই মামলায় তদন্ত করছে সিবিআই। দুর্নীতির তদন্তে জেলবন্দি সাবেক শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় সহ সেই সময়ের একাধিক শিক্ষাকর্তা। গত মে মাসে কলকাতা হাইকোর্ট ২০১৬ সালের গোটা প্যানেল বাতিল করে দেয়। এর ফলে ২৫ হাজার ৭৫৩ জনের চাকরি চলে যায়। যোগ্য এবং অযোগ্য প্রার্থীদের আলাদা করা যায়নি বলে সবার চাকরি বাতিল করে আদালত।
এর বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে আবেদন জানায় রাজ্য সরকার। লোকসভা নির্বাচনের আগে হাইকোর্টের নির্দেশের উপর স্থগিতাদেশ দেয় শীর্ষ আদালত। তাই ২০১৬ সালের প্যানেলভুক্ত কর্মরত শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মী কারো চাকরি বাতিল হয়নি। ১৭ জুলাইয়ের শুনানির পর এ নিয়ে চূড়ান্ত রায় দেয়ার কথা ছিল সুপ্রিম কোর্টের।
বিক্ষোভে রাস্তায় চাকরিপ্রার্থীরা, তাদের জীবনে উৎসব নেই
করোনার পর এবার শারদোৎসবে মেতেছে গোটা পশ্চিমবঙ্গ। তবে চাকরিপ্রার্থীরা উৎসবের মধ্যেও আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন।
ছবি: Subrata Goswami/DW
উৎসবের দিনেও প্রতিবাদ
এক বছর পরেও ছবিটা বদলালো না। ২০২১ সালের দুর্গোৎসবেও ঘরবাড়ি ছেড়ে এভাবেই আন্দোলনের মধ্যে কাটিয়েছিলেন চাকরিপ্রার্থীরা। এই বছরও কাটাচ্ছেন। তারা উৎসবে নেই, প্রতিবাদে আছেন। এসএসসি চাকরিপ্রার্থীদের কাছে উৎসবের আলাদা তাৎপর্য নেই। তাদের দাবি, পরীক্ষা দিয়ে পাস করার পরেও দুর্নীতির জন্য চাকরি পাননি। তাই সকলে যতদিন চাকরি না পাচ্ছেন, ততদিন প্রতিবাদ চলবে।
ছবি: Subrata Goswami/DW
তিন দফার প্রতিবাদ
এসএসসি চাকরিপ্রার্থীদের আন্দোলন শুরু হয়েছিল ২০১৯-এ। তিন দফায় এই আন্দোলনের বয়স আজ সাড়ে পাঁচশ দিন পেরিয়ে গেছে। কলকাতা হাইকোর্ট জানিয়েছে, এসএসসি চাকরিপ্রার্থীদের নিয়োগে দুর্নীতি ছিল। কতজন এইভাবে চাকরি পেয়েছেন তা জানানোর নির্দেশ দিয়েছে আদালত।
ছবি: Subrata Goswami/DW
ঝড়-জল উপেক্ষা করে
এই কয়েকবছরে গান্ধীমূর্তির পাদদেশের এই ধর্নামঞ্চ রাজ্যের বিভিন্ন জেলা থেকে আসা এই মানুষগুলোর কাছে অভ্যেসে পরিণত হয়েছে। নেই পানীয় জলের ব্যবস্থা, নেই শৌচাগারও। ঝড়-বৃষ্টি-রোদ উপেক্ষা করে দিনের পর দিন অবস্থান করে চলেছেন এরা। কেউ অসুস্থ বাবা-মাকে বাড়িতে রেখে কেউ বা কোলের শিশুকে সঙ্গে নিয়ে। আন্দোলন এখন এদের জীবনের অঙ্গ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
ছবি: Subrata Goswami/DW
উৎসবের দিনেও
গত দুইবছর ধরে ধর্না মঞ্চেই কেটেছে উৎসবের দিনগুলি। দুইটি ঈদ, দুইটি দুর্গাপুজার মত বড় উৎসব এভাবে কেটেছে চাকরিপ্রার্থীদের। বস্তুত তাদের জীবনে উৎসব নেই, আনন্দ নেই, আছে কেবল অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করে চাকরি পাওয়ার লড়াই।
ছবি: Subrata Goswami/DW
অর্পিতার কাহিনি
পশ্চিম মেদিনীপুরের পিংলার অর্পিতা হাজরা। ধর্নামঞ্চে উপস্থিত থাকার জন্য যাতায়াত মিলিয়ে সাতঘণ্টা লাগে অর্পিতার। ভোর পাঁচটায় উঠে রান্না করে তারপর আসেন, আবার বাড়ি ফিরে ১০ বছরের মেয়েকে নিয়ে পড়াতে বসেন।
ছবি: Subrata Goswami/DW
আনন্দ নয়, লড়াই
অর্পিতা জানালেন, ''ছোট্টো মেয়েটাকে নিয়ে যখন জামাকাপড়ের দোকানে গিয়ে শপিং করার কথা, পুজোর চারদিন কীভাবে কাটাব সেই পরিকল্পনা করার কথা, সেই সময় বসে রয়েছি রাস্তার ধারে। পুজোটা আমাদের কাছে প্রবল যন্ত্রণার। সকলকে আনন্দ করতে দেখে আরও যন্ত্রণা পাই ভেতরে ভেতরে।''
ছবি: Subrata Goswami/DW
ঈদও কেটেছে এখানেই
সরকারিভাবে বসতে নিষেধ ছিল, তাও এইবছর দুপুরের পরে এখানে বসেই ঈদ পালন করেছে কামরুজ্জামান, বাড়ির লোকেদের সঙ্গে দেখা করাও হয়ে ওঠেনি। অন্যান্যবার দুর্গাপুজোতেও মুর্শিদাবাদের বাড়ির সামনের পুজোতেই হাজির থাকে কামরুজ্জামান। এইবছর ধর্নামঞ্চেই কাটবে।
ছবি: Subrata Goswami/DW
নিরানন্দ পিঙ্কি
হুগলির পিঙ্কি সাধুখাঁ জানালেন, ''আমাদের এবারের পুজোর দিনগুলো এভাবে কাটার কথা ছিল না। চাকরির নিয়োগপত্র হাতে পেয়ে বাচ্চার হাত ধরে মণ্ডপে মণ্ডপে অনন্দ করে বেড়ানোর কথা ছিল। যেদিন থেকে জানতে পেরেছি আমরা দুর্নীতির শিকার, সেদিন থেকে আমাদের জীবনের আনন্দ চলে গিয়েছে।''
ছবি: Subrata Goswami/DW
সীমার প্রশ্ন
পুজোমণ্ডপে না গিয়ে কোলের বাচ্চা নিয়ে ধর্নামঞ্চে অবস্থান করছেন সীমা। তিনি বললেন, ''নিজের মনেই যদি আনন্দ না থাকে বাচ্চাকে কীভাবে আনন্দ দেব বলতে পারেন?''
ছবি: Subrata Goswami/DW
উৎসব আর নেই
আশিকুল ইসলাম জানালেন, ''যোগ্য হয়েও চাকরি পাইনি। এই আনন্দে এখন আর কোনও উৎসাহ পাই না। দিনলিপি থেকে মুছে গেছে উৎসব।''
ছবি: Subrata Goswami/DW
দুর্গারা পথে
মুর্শিদাবাদের রহুল বিশ্বাস বললেন, ''একদিকে দেবী দুর্গা পুজিত হচ্ছেন আর এখানে দুর্গারা বঞ্চিত হয়ে পথের ধারে পড়ে আছে। সরকার চাইলে যেকোনও সময় আমাদের এই অবস্থা থেকে মুক্তি দিতে পারে।''
ছবি: Subrata Goswami/DW
নিরুপায় তপতী
বাড়িতে সন্তানকে রেখে চুঁচুড়া থেকে প্রতিদিন এই ধর্নামঞ্চে আসেন তপতী দাস। পুজোমণ্ডপে গেলেও মন পড়ে থাকবে এই ধর্নামঞ্চে। তিনি জানালেন, ''আমরা নিরুপায়। বাধ্য হয়ে একটা আশা নিয়েই দিনের পর দিন বসে রয়েছি এখানে।''
ছবি: Subrata Goswami/DW
চোখে জল জয়ন্তের
সাড়ে তিন বছরের বাচ্চা ফোনে তাকে বার বার বাড়িতে আসতে বলছে। বাবার কোলে চড়ে ঠাকুর দেখার বায়না ছোট্ট ছেলেটার। কথাগুলো বলতে বলতে চোখ মুছতে থাকে বীরভূমের জয়ন্ত। ''যখন সারা কলকাতা আলোর রোশনাইতে মেতে উঠেছে, আমরা গান্ধীমূর্তির পাদদেশে, অন্ধকারেই পড়ে আছি। দুইটি পুজো এভাবেই কেটেছে, চাকরির নিয়োগপত্র হাতে না পেলে জীবনের সব পুজো এখানেই কাটাতে পারি।''
ছবি: Subrata Goswami/DW
নিয়োগপত্র চাই
বনগাঁর সোমা মালাকার বললেন, ''দুর্নীতি করে যারা চাকরি পেয়েছে, তারা আজ পরিবার পরিজন নিয়ে আনন্দে পুজো কাটাচ্ছে। অথচ আমরা যোগ্য হয়েও পথে পড়ে রয়েছি। চাকরির নিয়োগপত্রই আমাদের কাছে পূজার প্রসাদ। যেদিন হাতে পাব সেদিনই আমাদের সত্যিকারের পুজো।'' বললেন, বনগাঁর সোমা মালাকার।
ছবি: Subrata Goswami/DW
14 ছবি1 | 14
বাড়লো অপেক্ষা
এদিনের শুনানি পিছিয়ে যাওয়ায় হতাশ যোগ্য শিক্ষক ও চাকরিপ্রার্থীরা। তাদের অবস্থান বিক্ষোভ চলছে। তাদের বক্তব্য, অপেক্ষা করতে তারা রাজি। কিন্তু শেষমেশ যেন সুবিচার মেলে। কিন্তু স্কুল সার্ভিস কমিশন যদি যোগ্য ও অযোগ্যদের আলাদা করতে না পারে, তাহলে প্যানেলের ভবিষ্যৎ কী হবে, তা নিয়ে গভীর আশঙ্কায় রয়েছেন কর্মরত শিক্ষক শিক্ষিকারা।
নদিয়ার চাকরিপ্রার্থী আবু নাসের রয়েছেন ওয়েটিং লিস্টে। তিনি বলেন, "এখন আমাদের কাছে এক একটা দিন একটা বছরের সমান। তবু আমরা অপেক্ষা করতে রাজি। আশা করব, সুপ্রিম কোর্ট পুরো প্যানেল বাতিল করবে না। অযোগ্য প্রার্থীদের জায়গায় যাতে আমরা নিয়োগ পেতে পারি।"
এই অভিযোগ ঘিরে রাজনৈতিক চাপানউতোর চলছে গোড়া থেকে। তৃণমূল মুখপাত্র অরূপ চক্রবর্তী বলেন, "সুপ্রিম কোর্ট আগেই বুঝিয়েছে, তারা সবার চাকরি বাতিলের পক্ষপাতী নয়। ১০ জনের মধ্যে তিনজন অন্যায় করলে সবার শাস্তি হতে পারে না। সবার চাকরি খাওয়ার জন্য যারা রাজনীতির করেছে, সেই বিরোধীদের জনতা প্রত্যাখ্যান করেছে নির্বাচনে।"
শুধু তৃণমূলের সাবেক মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায় নন, বিধায়ক, নেতাদের নাম উঠে এসেছে সিবিআই তদন্তে। বিজেপি সাংসদ শমীক ভট্টাচার্য বলেন, "বাজার থেকে যারা চাকরি কিনেছে, তাদের শাস্তি চাই। আর গোটা শিক্ষা ব্যবস্থাকে কার্যত খোলা বাজার যারা বানিয়েছিলেন, যারা আজ বুক চিতিয়ে ঘুরছেন, নীতির কথা বলছেন, তাদেরও বিচার ও শাস্তি জনগণের দাবি।"
প্রাথমিকের মামলা
মঙ্গলবার কলকাতা হাইকোর্টে প্রাথমিকের টেট সংক্রান্ত মামলার শুনানি হয়। ২০১৪ সালে এই পরীক্ষা হয়েছিল। এর ভিত্তিতে ২০১৬ সালে ৪২ হাজার শূন্যপদে নিয়োগ করা হয়েছিল। এই প্রক্রিয়াকে আদালতে চ্যালেঞ্জ করেন চাকরিপ্রার্থীদের একাংশ। এই শুনানিতে বিচারপতি অমৃতা সিনহা প্রশ্ন করেন, "৪২ হাজার নিয়োগ তালিকা কারা ওই প্রক্রিয়ায় চাকরি পেয়েছিলেন?"
২০১৬ সালের প্যানেলের মেয়াদ শেষ হয়ে গিয়েছে। বিচারপতি বলেন, "প্যানেলের মেয়াদ উত্তীর্ণ হলেও নিয়োগের তালিকা থাকা প্রয়োজন। কারা যোগ্য প্রার্থী ও কাদের নিয়োগ করা হল, তা সেই প্যানেল থেকে জানা সম্ভব। এই প্যানেল আদালত দেখতে চায়।"
হাইকোর্টের নির্দেশ অনুযায়ী, ৪২ হাজার পদে কাদের নিয়োগ করা হয়েছিল, সেই সংক্রান্ত তালিকা আদালতে পেশ করতে হবে প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদকে। এই মামলার পরের শুনানি ৩০ জুলাই।