এক্ষেত্রে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র উত্তর কোরিয়ার পারমাণবিক কর্মসূচি সংক্রান্ত সমস্যার সমাধানের জন্য চীনের ওপর চাপ দেবে বলে জানিয়েছেন জাতিসংঘে মার্কিন রাষ্ট্রদূত নিকি হেলি৷
বিজ্ঞাপন
আগামী ২৮শে এপ্রিল জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে উত্তর কোরিয়াকে নিয়ে যে অধিবেশন বসবে, মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী রেক্স টিলারসন তার সভাপতিত্ব করবেন বলে জানিয়েছেন হেলি৷
আগামী সপ্তাহান্তে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও চীনের রাষ্ট্রপ্রধান শি জিনপিং-এর মধ্যে সাক্ষাতের পর পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে টিলারসনের জাতিসংঘে প্রথম পদার্পণ ঐ সাক্ষাতের একটি গুরুত্বপূর্ণ ‘ফলো-আপ' হবে, বলে হেলি মন্তব্য করেন৷
পিয়ংইয়াংকে তার ধারা বদলাতে বাধ্য করানোয় চীনকে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিতে হবে বলে হেলি যোগ করেন৷ ‘‘চীন হলো একমাত্র (দেশ), উত্তর কোরিয়া যার কথা শুনবে,'' বলেন হেলি৷
সংবাদ সম্মেলনে তিনি আরো বলেন, টিলারসনের সভাপতিত্বে এ অধিবেশনে কী নিয়ে আোলোচনা হবে তা নির্ভর করবে শি-ট্রাম্প সাক্ষাতের ফলাফলের উপর৷
‘‘মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র গত ২৫ বছর ধরে চীনকে বলতে শুনছে যে, তারা উত্তর কোরিয়ার ব্যাপারে উদ্বিগ্ন; কিন্তু আমরা ওদের সে ধরনের কোনো পদক্ষেপ নিতে দেখিনি,'' বলেন হেলি৷ তাঁর কথায়, ‘‘এই (মার্কিন) প্রশাসন ওদের সক্রিয় দেখতে চায় বলে আমার ধারণা এবং সেজন্য (এই প্রশাসন) ওদের উপর চাপ দেবে বলে আমার মনে হয়৷''
আরেকটি রকেট পরীক্ষা?
হেলি বলেন যে, এপ্রিলের শেষে জাতিসংঘের উত্তর কোরিয়া বৈঠকে যত বেশি সম্ভব পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা উপস্থিত থাকবেন বলে তাঁর আশা৷ ‘‘(উত্তর কোরিয়া) যে কোনো দিন আরেকটি রকেট পরীক্ষা করবে বলে আমরা প্রত্যাশা করছি,'' হেলি বলেন৷
‘‘আমাদের লক্ষ্য হলো এইটুকু বলা যে, (উত্তর কোরিয়াকে) থামানোর জন্য আমাদের কী করতে হবে?''
গত মাসে বেইজিংয়ে টিলারসনের সাক্ষাৎ হয় চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং য়ি-র সঙ্গে৷ য়ি পরে বলেন, কোরীয় উপদ্বীপের পারমাণবিক সমস্যাটি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও উত্তর কোরিয়ার মধ্যে৷ কূটনৈতিক আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে শান্তিপূর্ণভাবে সমস্যাটি সমাধানের সংকল্প থাকা বলেও মনে করেন য়ি৷
এসি/এসিবি (এএফপি, এপি, রয়টার্স, ডিপিএ)
উত্তর কোরিয়ার গুপ্তহত্যার সংস্কৃতি
মালয়েশিয়ায় কিম জং-উন-এর সৎ ভাইকে হত্যার অভিযোগ উঠেছে উত্তর কোরিয়ার বিরুদ্ধে৷ আর উত্তর কোরিয়ায় এ ধরনের হত্যাকাণ্ডের ঘটনা বা অভিযোগ কিন্তু এবারই প্রথম নয়৷
ছবি: picture-alliance/dpa
দলত্যাগের শাস্তি মৃত্যুদণ্ড
উত্তর কোরিয়ার শাসকগোষ্ঠী থেকে বেরিয়ে আসা হুয়াং ইয়ুং-ইয়পকে গোপনে কয়েকবার হত্যার চেষ্টা করা হলেও তিনি শেষমেশ ৮৭ বছর বয়সে স্বাভাবিক মৃত্যুবরণ করেছেন৷ ১৯৯৭ সালে উত্তর কোরিয়া থেকে পালিয়ে দক্ষিণ কোরিয়ায় চলে যান তিনি৷
ছবি: AP
চাচাকে ‘কুকুরের খাবার করা হয়নি’
কিম জং-উনের চাচা জং সং থেককে একসময় দেশটির দ্বিতীয় ক্ষমতাশালী ব্যক্তি হিসেবে বিবেচনা করা হতো৷ তাঁকে হত্যার খবর গোটা দেশেই আলোড়ন সৃষ্টি করেছিল৷ অনেক সংবাদমাধ্যম দাবি করে যে, ক্ষমতাসীন পরিবারের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করায় তাঁকে ক্ষুধার্ত কুকুরের খাবার করা হয়েছিল৷ কিন্তু আসলে তেমনটা ঘটেনি বলে জানিয়েছে পিয়ংইয়ংয়ের কর্মকর্তারা এবং দক্ষিণ কোরিয়ার গোয়েন্দা সংস্থা৷ তাঁকে গুলি করে হত্যা করা হয়েছিল৷
ছবি: picture-alliance/dpa
বর্বরতার গুজব
সৌলের গোয়েন্দা সংস্থাগুলো ২০১৫ সালে জানায় যে, দক্ষিণ কোরিয়ার প্রতিরক্ষামন্ত্রী হুয়ন ইয়ং-চোলের মৃত্যুদণ্ড বিমানবিধ্বংসী অস্ত্র ব্যবহার করে কার্যকর করা হয়েছে৷ তবে পরবর্তীতে জাতীয় গোয়েন্দা সংস্থা জানায় ভিন্ন তথ্য৷ তাদের মতে, হোয়ান সম্ভবত জীবিত আছেন৷ উত্তর কোরিয়ায় বর্বরোচিত উপায়ে মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের এরকম আরো গুজব শোনা গেছে৷
ছবি: picture-alliance/dpa
বিষাক্ত ইনজেকশন
উত্তর কোরিয়ার শাসক গোষ্ঠীর দলত্যাগকারী এবং বিরুদ্ধবাদী হিসেবে পরিচিত পার্ক সং-হককে হত্যা করতে এক ঘাতককে প্রস্তুত করেছিল পিয়ংইয়ং৷ ২০১১ সালে দক্ষিণ কোরিয়ার কর্তৃপক্ষ উত্তর কোরিয়ার সাবেক এক কমান্ডোকে হত্যার পরিকল্পনা করার অভিযোগে সং-হককে গ্রেপ্তার করে৷
ছবি: AFP/Getty Images
প্রতিপক্ষকে সরিয়ে দেয়া?
উত্তর কোরিয়ার শীর্ষ নেতা কিম জং-উনের সৎ ভাইকে দুই নারী কুয়ালালামপুর বিমানবন্দরে বিষ প্রয়োগ করে হত্যা করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে৷ হত্যাকাণ্ড সম্পর্কে বিস্তারিত এখনো জানা যায়নি৷ তবে গণমাধ্যমে প্রকাশিত খবর অনুযায়ী, উত্তর কোরিয়ার শাসকগোষ্ঠী হত্যাকারীদের পাঠিয়েছিল৷ ২০১১ সাল থেকে বিদেশে অবস্থান করছিলেন কিম জং-নাম৷