বিশ্বকাপ শুরুর সময় যত ঘনিয়ে আসছে, উন্মাদনা যেন তত বাড়ছে৷ তবে ঢাকার মেরাজনগরে পতাকা তৈরির ব্যস্ততা শুরু হয়েছে আরও আগে৷ প্রতিদিন বিক্রি হচ্ছে হাজার হাজার ছোট বড় পতাকা৷
বিজ্ঞাপন
বিশ্বকাপকে সামনে রেখে ব্যস্ততম দিন কাটছে বাংলাদেশের পতাকা নির্মাতাদের৷ নিজ দেশের পতাকা নয়, নেইমারের ব্রাজিলবা মেসির আর্জেন্টিনার পতাকা বানাচ্ছেন তাঁরা৷
ছোট একটা টেক্সটাইল কারখানা চালান কামাল হোসেন৷ ঢাকার মেরাজনগরে তার সেই কারখানায় গিয়ে দেখা গেল দারুণ ব্যস্ততা৷ রাশিয়ার বিশ্বকাপকে সামনে রেখে দম ফেলানোর সময় নেই কারখানার কারিগরদের৷
কাজের ফাঁকে পতাকা বানানোর মেশিন থেকে মাথা না তুলেই তিনি বলেন, ‘‘গত দু’মাস ধরে কাজ করে যাচ্ছি৷ কোনো কোনো দিন দুই ঘণ্টার জন্যও ঘুমাতে পারি নাই৷’’
ক্রিকেট সবচেয়ে জনপ্রিয় হলেও প্রতি চার বছর পরপর ফুটবল বিশ্বকাপের উন্মাদনায় মেতে উঠে বাংলাদেশের ১৬ কোটি মানুষ৷ মেরাজনগরের ঘরে ঘরে পতাকা নির্মাণের ব্যস্ততা রয়েছে৷ ১৪ জুন শুরু হতে যাওয়া রাশিয়া বিশ্বকাপকে সামনে রেখে আর্জেন্টিনা ও ব্রাজিল সমর্থকদের রয়েছে বিপুল পতাকার চাহিদা৷ মেরাজনগরের প্রতিটি বাড়ি যেন পতাকা তৈরির ছোট কারখানা এখন৷
বিশ্বকাপ রাশিয়ায় না বাংলাদেশে?
বিশ্বকাপে মুখোমুখি হবে ব্রাজিল-আর্জেন্টিনা? হতে পারে, না-ও হতে পারে৷ কিন্তু বাংলাদেশে তারা মুখোমুখি৷ পুরো বাংলাদেশ যেভাবে মেতেছে ফুটবল উন্মাদনায়, তাতে চট করে মনে হতে পারে, বিশ্বকাপ যেন শুরু হলো বাংলাদেশে৷
ছবি: Noman Mohammad
পল্টন ময়দানে মুখোমুখি তারা
ঢাকার পল্টন ময়দানে আর্জেন্টিনা বনাম ব্রাজিলের ম্যাচ৷ নাইন স্টার যুব সংঘ নামের একটি ক্লাব এই প্রীতি ফুটবল ম্যাচের আয়োজন করে৷ এর আগেও দু’বার তারা এমন ম্যাচের আয়োজন করেছিল৷
ছবি: Noman Mohammad
গুলিস্তান যেন বিশ্বকাপের বাজার
নানান দেশের পতাকা আর বিশ্বকাপের জার্সির বাজার হয়ে উঠেছে রাজধানী ঢাকার গুলিস্তান৷ ক্রেতারাও যেন লাইন ধরেছেন৷ আগেভাগেই কিনতে শুরু করেছেন প্রিয় দলের পতাকা বা জার্সি৷
ছবি: Bdnews24.com
ক্রিকেটার তারেক আজিকের দোকানে
ক্রিকেটার তারেক আজিজ তাঁর স্পোর্টস সামগ্রীর দোকানে বিশ্বকাপের নানান জার্সির পসরা সাজিয়ে বসেছেন৷ বিক্রিও হচ্ছে খুব৷
ছবি: Noman Mohammad
ব্রাজিল, না আর্জেন্টিনা?
ব্রাজিল, না আর্জেন্টিনা? তর্কের শেষ নেই৷ মেসি, না নেইমার, কে ভালো, কত ভালো তার বিশ্লেষণ চলছে৷ দুই দলের সমর্থকদের মধ্যে চলছে চাপা দ্বন্দ্ব, ফোঁসফাঁস৷ দোকানে সাজিয়ে রাখা বিপুল পরিমাণ জার্সির একটি বড় অংশই উঠবে এ দুই দলের সমর্থকদের গায়ে৷
দেয়ালে দেয়ালে এমন ছবিও চোখে পড়ছে শহরের অলিগলিতে৷ ব্রাজিলের তারকা নেইমারের অনেকগুলো ছবি ক্যামেরাবন্দি হয়েছে৷
ছবি: Noman Mohammad
জার্মান সমর্থক
ব্রাজিল আর আর্জেন্টিনার সমর্থক বেশি হলেও বাংলাদেশে জার্মান সমর্থকও খুব কম নয়৷ আর সমর্থক না হলেও ভালোবাসেন জার্মান জার্সিকে৷
ছবি: Noman Mohammad
দরদাম
বিশ্বকাপ ফুটবলকে সামনে রেখে ঢাকার গুলিস্তানে পতাকা কিনেছেন এই সমর্থকরা৷ চলছে বিক্রেতার সাথে দরদাম৷
ছবি: Bdnews24.com
পোস্টার ও ক্যালেন্ডারেও তারা
প্রিয় দলের খেলোয়াড়রা জায়গা পেয়েছে পোস্টার ও ক্যালেন্ডারেও৷
ছবি: Noman Mohammad
রাস্তার ওপর
রাজউকের সামনে রাস্তার ওপরও পতাকা উড়তে দেখা গেছে৷
ছবি: Noman Mohammad
বাড়ির ছাদে
পতাকা উড়ছে বাড়ির ছাদে ছাদে৷ এ সময়টায় এ চিত্র দেখা যায় সারা দেশে৷ তবে সম্প্রতি একটি রিটের কারণে অন্য দেশের পতাকা উত্তোলন নিয়ে বিতর্ক চলছে৷
ছবি: DW/M. Mamun
পতাকার ফেরিওয়ালা
একমাত্র বিশ্বকাপ এলেই পতাকার ফেরিওয়ালার বাঁশে আশ্রয় নেয় এমন রঙ-বেরঙের নানা দেশের পতাকা৷ অন্য সময় বাংলাদেশেরই বিভিন্ন সাইজের পতাকা থাকে সেখানে৷
ছবি: Bdnews24.com
ঈদেও জার্সি
সামনে রোজার ঈদ৷ অনেকেই গ্রামের বাড়ি যাবেন৷ তাই গ্রামের বাড়িতে থাকা স্বজনদের জন্যও কেউ কেউ নিয়ে যাবেন জার্সি৷ ঈদের আনন্দের সাথে ভাগাভাগি হবে খেলার আনন্দ৷
ছবি: Bdnews24.com
13 ছবি1 | 13
কামাল হোসেন বলেন, ‘‘প্রতিদিন আমরা হাজার হাজার পতাকা তৈরি করছি৷ আজ যেমন আর্জেন্টিনার ১১ হাজার ছোট পতাকা তৈরি করেছি৷’’
ইতিমধ্যে বিভিন্ন দলের সমর্থকরা নিজ নিজ দলের পতাকা হাতে মিছিল করেছে৷ গত সপ্তাহে উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় শহর মাদারগঞ্জে ২০০ মিটার বিশাল পতাকা নিয়ে আর্জেন্টাইন সমথর্কদের একটি মিছিলের ভিডিও ভাইরাল হয়৷
১৯৮২ সালে বিশ্বকাপ ফুটবল প্রথমবারের বাংলাদেশে সরাসরি সম্প্রচার করা হয়৷ কিন্তু ১৯৮৬ সালে আজের্ন্টিনাকে যে বিশ্বকাপটি ম্যারোডোনা প্রায় একক নৈপুণ্যে জেতান, সে ঘটনাই বাংলাদেশের বিপুল আর্জেনটাইন সমর্থক তৈরির ভিত্তি বছর ছিল৷
নারায়ণগঞ্জের পতাকা বিক্রেতা ফারুক মিয়ার কথায়, ‘‘এখনও আর্জেন্টাইন সমর্থক বেড়েই চলেছে৷ ম্যারাডোনা খেলা ছেড়ে দিয়েছেন, কিন্তু নতুন সুপারস্টার মেসি তো রয়েছেন!’’
তিনি জানান, গেল সপ্তাহে ৫০০ পতাকা নিয়ে গিয়েছিলেন৷ এক সপ্তাহে ফেরি করে সেই পতাকা বিক্রি করেছেন প্রচুর মুনাফায়৷ আরও ৫০০ পতাকা কিনতে এসেছেন৷
কারখানা মালিক সেলিম হাওলাদার মনে করছেন, লাখ লাখ পতাকা বিক্রি হবে বিশ্বকাপের ঠিক আগ দিয়েই৷
তিনি বলেন, ‘‘২০১৪ সালে আমি ৮০ হাজারেরও বেশি পতাকা বিক্রি করেছি৷ বেশিরভাগই বিক্রি হয়েছে বিশ্বকাপ শুরুর অল্প কয়েকদিন আগে বা বিশ্বকাপ চলার সময়৷’’
হাসিমুখে ৩৩ বছর বয়স্ক হাওলাদার বলেন, ‘‘এখন আমি দুই থেকে আড়াই হাজার বড় পতাকা এবং ১০ হাজার ছোট পতাকা বিক্রি করছি প্রতিদিন৷’’
কোন কোন স্টেডিয়ামে হবে বিশ্বকাপের খেলা
রাশিয়া এবারের বিশ্বকাপের জন্য নয়টি নতুন স্টেডিয়াম নির্মাণ বা সংস্কার করেছে৷ মোট ১২টি ভেন্যুতে হবে বিশ্বকাপ৷ ভেন্যুগুলোর বিস্তারিত জেনে নিন ছবিঘরে৷
ছবি: picture alliance/dpa/AP/I. Sekretarev
লুঝনিকি স্টেডিয়াম, মস্কো
বিশ্বকাপের উদ্বোধনী ম্যাচ হবে এখানেই৷ ১৯৫৬ সালে তৈরি এই এরিনায় অনুষ্ঠিত হয় ১৯৮০-র অলিম্পিক৷ পরে অবশ্য এটিকে পূনর্নিমাণ করা হয়৷ এর ধারণক্ষমতা ৮১,০০০৷
ছবি: picture alliance/dpa/AP/I. Sekretarev
ওটক্রিটি অ্যারেনা, মস্কো
৪৫ হাজার দর্শক ধারণক্ষমতার এই স্টেডিয়ামটিও মস্কোতে৷ এটি এখন রাশিয়ার সবচেয়ে জনপ্রিয় ক্লাব স্পার্টাক মস্কোর হোম গ্রাউন্ড৷ এখানে গ্রুপ পর্বের চারটি ও দ্বিতীয় রাউন্ডের একটি ম্যাচ অনুষ্ঠিত হবে৷
ছবি: Picture alliance/dpa/S. Suki/EPA
ক্রেস্তভস্কি স্টেডিয়াম, সেন্ট পিটার্সবুর্গ
সৌন্দর্যমন্ডিত সেন্ট পিটার্সবুর্গের এই স্টেডিয়ামটির ধারণক্ষমতা ৬৮ হাজার৷ এটি এখন এফসি জেনিথের মাঠ৷ পুরোনো একটি স্টেডিয়াম ভেঙে সে জায়গায় এটি নির্মাণ করা হয়েছে৷
ছবি: Picture alliance/dpa/D. Lovetsky/AP
সেন্ট্রাল স্টেডিয়াম, ইয়েকাটেরিনবুর্গ
এই স্টেডিয়ামটি আগে ছিল ৩৫ হাজার দর্শকের জন্য৷ একে বিশ্বকাপের ভেন্যু উপযোগী করে তুলতে আরো ১২ হাজার সিট যুক্ত করা হয়েছে৷ বিশ্বকাপের পর একে আরো সংস্কার করা হবে৷
ছবি: picture-alliance/Sputnik/V. Sergeev
রস্তভ এরেনা, রস্তভ-অন-ডন
রস্তভ-অন-ডনে এই ভেন্যুটি তৈরিই করা হয়েছে ২০১৮ বিশ্বকাপের কথা মাথায় রেখে৷ এর ধারণক্ষমতা ৪৫ হাজার৷ এই স্টেডিয়ামটি তৈরির সময় দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের বেশ কয়েকটি তাজা বোমা উদ্ধার করা হয়৷
ছবি: picture-alliance/Sputnik/Ирина Белова
কাজান এরেনা, কাজান
ভ্লাদিমির পুটিন নিজে এই স্টেডিয়ামের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন৷ ৪১,৫৮৫ দর্শক ধারণক্ষমতাসম্পন্ন এই স্টেডিয়ামটি রুবিন কাজান ক্লাবের হোমগ্রাউন্ড৷
ছবি: Picture alliance/dpa/N. Alexandrov/AP
ভলগোগ্রাদ এরেনা, ভলগোগ্রাদ
এই ভলগোগ্রাদেরই আগের নাম ছিল স্টালিনগ্রাদ৷ দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে রাশিয়ার বিজয়ের সাক্ষী এই শহরে তৈরি এই স্টেডিয়ামটি ভলগা নদীর তীরে অবস্থিত৷ ধারণক্ষমতা ৪৫ হাজারের কিছু বেশি৷
ছবি: picture-alliance/dpa
নিঝনি নভগোরদ স্টেডিয়াম, নিঝনি নভগোরদ
এটিও এই বিশ্বকাপকে কেন্দ্র করে বানানো নতুন স্টেডিয়াম৷ এর ধারণক্ষমতা ৪৫ হাজার৷
ছবি: picture-alliance/AP Images
কলিনিনগ্রাদ স্টেডিয়াম, কলিনিনগ্রাদ
রাশিয়ার সর্বপশ্চিমের স্টেডিয়াম এটি৷ ৩৫ হাজারের চেয়ে কিছু বেশি এর দর্শক ধারণক্ষমতা৷
ছবি: picture-alliance/TASS/V. Nevar
মর্ডোভিয়া এরেনা, সারানস্ক
৪৪ হাজার দর্শক ধারণক্ষমতার এই স্টেডিয়ামটি স্থানীয় তৃতীয় বিভাগের ক্লাব মর্ডোভিয়া সারানস্কের হোমগ্রাউন্ড৷
ছবি: picture-alliance/TASS/S. Krasilnikov
কসমস এরেনা, সামারা
এই স্টেডিয়ামটি হওয়ার কথা ছিল ভলগা নদীর একটি দ্বীপে৷ কিন্তু সেই দ্বীপে যেতে কোনো সেতু না থাকায়, এটিকে সামারায় নিয়ে আসা হয়েছে৷ এর ধারণক্ষমতা ৪৪ হাজার৷
ছবি: picture-alliance/TASS/Y. Aleyev
অলিম্পিক স্টেডিয়াম, সোচি
শীতের অলিম্পিকের জন্য তৈরি এই ভেন্যুটির ধারণক্ষমতা ৪১,২২০৷ এখানে প্রথম দুই রাউন্ডের ম্যাচ ছাড়াও একটি কোয়ার্টার ফাইনালও হবার কথা রয়েছে৷
ছবি: Picture alliance/dpa/A. Lebevev/AP
12 ছবি1 | 12
তাঁর নিজের কারখানায় ২৫ জন কর্মী এবং মেরাজনগরে প্রায় ২ হাজার মানুষ পতাকা বানানোর কাজে ২৪ ঘণ্টা ব্যস্ত রয়েছেন বলে জানান সেলিম হাওলাদার৷
‘‘আমি আর্জেন্টিনার ৫০ ফুট লম্বা পতাকা বানানোরও অর্ডার পেয়েছি৷ ব্রাজিল ও আর্জেন্টিনার সমর্থক ছাড়াও জার্মানি, পর্তুগাল এবং স্পেনের সমর্থক’’, বলেন হাওলাদার৷
প্রচুর পতাকার চাহিদা থাকায় দরিদ্র সেলাই কর্মীদের হাতেও এসেছে বাড়তি কাজ এবং বাড়তি আয়ের সুযোগ৷
নার্গিস আক্তার এবং তাঁর স্বামী মোহাম্মদ ইকবাল হাওলাদারের কারখানায় কাজ করেন৷
মোহাম্মদ ইকবালের কথায়, ‘‘প্রতিদিন গড়ে আমরা ৩ হাজার টাকা করে আয় করছি৷’’
সারা মাস কাজ করে বাংলাদেশের গার্মেন্টস শ্রমিক পান মাত্র ৬ হাজার টাকা৷ সে কথা মাথায় রেখেই কিনা জানি না, পাশ থেকে মৃদু হেসে মোহাম্মদের স্ত্রী নার্গিস বললেন, ‘‘ইস্, পতাকা তৈরির এই ধুম যদি আরও অনেক মাস চলতো!’’
এইচআই/ডিজি (এইপিই)
বিশ্বকাপের কোন গ্রুপে কে ফেবারিট
বিশ্বকাপ ফুটবল মানেই টানটান উত্তেজনা৷ গ্রুপ পর্ব থেকেই উত্তেজনার পারদ যেন তুঙ্গে৷ এবারের রাশিয়া বিশ্বকাপের গ্রুপগুলো নিয়েও চলছে হিসেব-নিকেষ৷ চলুন চুলচেরা বিশ্লেষণ করে নিই গ্রুপগুলোর৷
ছবি: picture-alliance/dpa/ATP/Mexsport/O. Aguilar
গ্রুপ এ
গ্রুপ এ-তে আছে স্বাগতিক রাশিয়া, ল্যাটিন পরাশক্তি উরুগুয়ে, আফ্রিকার দেশ মিশর ও এশিয়ার সৌদি আরব৷ এর মধ্যে সুয়ারেজ, কাভানির উরুগুয়েকেই ফেবারিট মানছেন সবাই৷ তবে সবার চোখ থাকবে লিভারপুল তারকা মোহামেদ সালাহ’র দিকে৷ তাঁর উপর ভর করে স্বাগতিক রাশিয়া ও সৌদি আরবকে পেছনে ফেলে দ্বিতীয় রাউন্ডে মিশর যেতে পারবে বলে অনেকেরই মত৷
ছবি: Getty Images/AFP/J. Tallis
গ্রুপ বি
টিকিটাকা কৌশলের স্পেন ও ক্রিস্টিয়ানো রোনাল্ডোর পর্তুগালের সঙ্গে বি গ্রুপে আছে মরক্কো ও ইরান৷ বলাই বাহুল্য, কোনো অঘটন না ঘটলে স্পেন ও পর্তুগালই দেখবে দ্বিতীয় রাউন্ডের মুখ৷ এই বিশ্বকাপটি রোনাল্ডোর চতুর্থ বিশ্বকাপ৷ এবারো ফর্মের তুঙ্গে থাকা রোনাল্ডো দলের জন্য কতটা কী করতে পারেন তা দেখার অপেক্ষায় ফুটবলপ্রেমীরা৷ তারকাখচিত স্পেনও এবার শিরোপার জন্য উন্মুখ৷
ছবি: Reuters/D. Staples
গ্রুপ সি
ফ্রান্স, ডেনমার্ক, পেরু ও অস্ট্রেলিয়া নিয়ে গ্রুপ সি৷ শক্তিমত্তায় ফ্রান্স যে এবারের শিরোপার লড়াইয়ে প্রথম সারিতে, তা বলার অপেক্ষা রাখে না৷ গত বিশ্বকাপে গ্রুপ পর্বে স্পেন, হল্যান্ড ও চিলির মাঝখানে চ্যাপ্টা হওয়া সকারুদের জন্য এবার দ্বিতীয় রাউন্ড নিশ্চিত করার সুযোগ আছে৷ ডেনমার্কেও আছেন কয়েকজন প্রতিভাবান খেলোয়াড়৷ আর ১৯৮২ সালের পর এই প্রথম বিশ্বকাপের মূল পর্বে জায়গা করে নেয়া পেরু না হয়ে ওঠে ডার্কহর্স৷
ছবি: Reuters/F. Lancelot
গ্রুপ ডি
দর্শক ফেবারিট আর্জেন্টিনার গ্রুপ এটি৷ আরো আছে ক্রোয়েশিয়া, নাইজেরিয়া ও আইসল্যান্ড৷ মেসিনির্ভর আর্জেন্টিনা যে গ্রুপ পর্ব সহজেই পেরিয়ে যাবে সে বিষয়ে খুব একটা সন্দেহ নেই৷ তবে ইতিহাসে প্রথমবার বিশ্বকাপে জায়গা করে নেয়া আইসল্যান্ডের ওপর বাজি রাখতে পারেন৷ তারা কিছু একটা দেখাবে নিশ্চিত৷ অন্যদিকে, ক্রোয়েশিয়া ও নাইজেরিয়া দুই দলই নির্ভর করছে তাদের বর্ষীয়ান খেলোয়াড়দের ওপর৷
ছবি: Behrouz Mehri/AFP/Getty Images
গ্রুপ ই
ব্রাজিল এমন একটি দল যারা সবসময়ই শিরোপার দাবিদার৷ তবে ২০০২ সালের পর আর শিরোপা ছুঁয়ে দেখা হয়নি তাদের৷ এবার সে সম্ভবনা কতদূর, তার ব্যাখ্যা বিশ্লেষণ চলছে৷ ই গ্রুপে আর যারা আছে, তাদের মধ্যে সুইজারল্যান্ডকে এগিয়ে রাখছেন অনেকেই৷ এছাড়া আছে সার্বিয়া ও কোস্টারিকা৷
ছবি: Vanderlei Almeida/AFP/Getty Images
গ্রুপ এফ
বিশ্বচ্যাম্পিয়ন জার্মানি আছে এই গ্রুপে৷ জার্মানরাও এবারো শিরোপার দাবিদার৷ ধরে নেয়া যায়, গ্রুপ পর্বে খুব একটা বাধা পাবে না দক্ষিণ কোরিয়া ও সুইডেনের কাছ থেকে৷ তবে হাভিয়ের হার্নান্দেজের মেক্সিকোর সঙ্গে গ্রুপ পর্বে লড়াইটা জমবে বলে মনে হচ্ছে৷ এই গ্রুপে এই দুই দলই ফেবারিট৷
ছবি: imago/ActionPictures
গ্রুপ জি
ইংলিশরা আছে এই গ্রুপে৷ আছে শক্তিশালী বেলজিয়ামও৷ আর আছে পানামা ও টিউনিসিয়া৷ শেষ দুই বিশ্বকাপে গ্রুপ পর্বই পেরুতে পারেনি থ্রি লায়ন্সরা৷ তবে এবার সে সম্ভাবনা আছে তাদের সামনে৷ বেলজিয়ামও গ্রুপের ফেবারিট৷ তবে পানামা ও টিউনিসিয়া অঘটন ঘটাতে উদগ্রীব৷ দুই দলই ভালো খেলেছে বাছাই পর্বে৷
ছবি: Reuters/M. Dalder
গ্রুপ এইচ
হামেস রডরিগেজের কলম্বিয়া গতবার যে চমক দেখিয়েছে তা এবার কতটা ধরে রাখতে পারবে বোঝা যাবে গ্রুপ পর্বেই৷ কারণ, গ্রুপে আছে শক্তিশালী পোল্যান্ড৷ আছে পরিশ্রমী সেনেগাল ও জাপান৷ পোলিশরা ফেবারিট হলেও কোন দু’টি দল শেষ ষোল নিশ্চিত করবে, তা এখনই বলা যাচ্ছে না৷ মনে করা যেতে পারে, এটিই গ্রুপ অফ ডেথ৷