1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

নির্বাচনি বিধি ভঙ্গের অভিযোগে ভোট প্রচারে নিষেধাজ্ঞা

অনিল চট্টোপাধ্যায় নতুনদিল্লি
১৭ এপ্রিল ২০১৯

নির্বাচনি বিধি ভঙ্গের দায়ে চারজন শীর্ষ স্থানীয় রাজনৈতিক নেতা-নেত্রীর ভোট প্রচারে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে নির্বাচন কমিশন৷ তাঁরা হলেন উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ, বহুজন সমাজ পার্টির মায়াবতী এবং ...

Indien Dharamsala Wahlen Exil-Tibeter Tinte Finger
ছবি: Reuters/A. Abidi

 কেন্দ্রীয় মন্ত্রী মানেকা গান্ধী এবং রামপুরের বিধায়ক আজম খান৷ নির্বাচনি প্রচারে তাঁরা ধর্ম ও জাতি বিদ্বেষ উস্কে দিয়েছেন, এমনটাই অভিযোগ৷

সুপ্রিম কোর্টের হস্তক্ষেপের পর নির্বাচনি বিধি ভঙ্গের অভিযোগের হাত থেকে শেষপর্যন্ত রেহাই পেলেন না চারজন প্রথম সারির রাজনীতিক৷ ভোটের মরসুমে রাজনীতিকরা নির্বাচন বিধির তোয়াক্কা না করে লাগাতার বিদ্বেষপূর্ণ মন্তব্য করে চলেছেন, এই মর্মে সম্প্রতি সুপ্রিম কোর্টের দৃষ্টি আকর্ষণ করে এক জনস্বার্থ মামলা করা হয়৷ তার প্রেক্ষিতে নির্বাচন কমিশনকে তিরস্কার করেন শীর্ষ আদালত৷ বলা হয়, নির্বাচনি বিধি ভঙ্গ হওয়া সত্বেও কমিশন দেখেও না দেখার ভান করে থাকছে৷ চোখ বন্ধ না করে কমিশন যেন তাদের কর্তব্য পালন করে যান৷

তারপরই নড়েচড়ে বসে নির্বাচন কমিশন৷ নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয় ভারতের বৃহত্তম রাজ্য উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ, বহুজন সমাজ পার্টি (বিএসপি)-র দলিত নেত্রী মায়াবতী, রাজ্যের সুলতানপুর লোকসভা কেন্দ্রে বিজেপি প্রার্থী মানেকা গান্ধী এবং উত্তরপ্রদেশের রামপুরের বিধায়ক আজম খান৷ যোগী আদিত্যনাথের ওপর জারি করা হয় ৭২ ঘণ্টার নিষেধাজ্ঞা, মায়াবতী এবং মানেকা গান্ধীর বিরুদ্ধে জারি করা হয় ৪৮ ঘণ্টার নিষেধাজ্ঞা আর রাজ্যের রামপুরের সাতবারের বিধায়ক আজম খানের ওপর জারি করা হয় ৭২ ঘণ্টার নিষেধাজ্ঞা৷ নিষেধাজ্ঞা চলাকালীন এরা কেউ ভোট প্রচারে অংশ নিতে পারবেন না৷ পারবেন না ইলেকট্রনিক, প্রিন্ট বা সোশাল মিডিয়ার সঙ্গে কথা বলতে, সাক্ষাত্কার দিতে বা মতামত রাখতে৷

নির্বাচন কমিশনের যতটা দৃঢ়তা দেখানো দরকার, ততটা তারা করছেন না: অমল মুখোপাধ্যায়

This browser does not support the audio element.

রাজনীতিকদের নির্বাচনী বিধি ভঙ্গের বিষয়ে ডয়চে ভেলের কাছে প্রতিক্রিয়া ব্যাক্ত করে বিশিষ্ট রাষ্ট্রবিজ্ঞানি ড. অমল মুখোপাধ্যায় বললেন, ‘‘নির্বাচন কমিশনের কাজে কোনো সরকারেরই হস্তক্ষেপ করার অধিকার নেই৷ কেন্দ্রীয় সরকারের নেই, রাজ্য সরকারের নেই৷ কিন্তু আমরা দেখতে পাচ্ছি, বিভিন্ন জায়গায় নির্বাচনি বিধি লঙ্ঘন করা হচ্ছে৷ তা সত্বেও নির্বাচন কমিশন যথোপযুক্ত ব্যবস্থা নিতে ব্যর্থ হয়েছে৷ ফলে ভারতীয় গণতন্ত্র হচ্ছে বিপন্ন৷ মনে রাখতে হবে, নির্বাচন গণতন্ত্রের অন্যতম অঙ্গ৷ সেটা অবাধ এবং সুষ্ঠুভাবে পরিচালিত না হলে গণতন্ত্র বিপন্ন হয়ে পড়ে৷ অবাধ ও সুষ্ঠুভাবে নির্বাচন পরিচালনার দায়িত্ব কমিশনের৷ কিন্তু বাস্তবে দেখা যাচ্ছে, নির্বাচন কমিশনের যতটা দৃঢ়তা দেখানো দরকার, ততটা দৃঢ়তা তারা দেখাতে পারছেন না৷

কিন্তু সুপ্রিম কোর্টের হস্তক্ষেপের পর কমিশনের ব্যবস্থা নেবার কথা বলতে রাষ্ট্রবিজ্ঞানি ড. অমল মুখোপাধ্যায় ডয়চে ভেলের কাছে ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘‘সেটা তো আরো বেশি লজ্জাজনক৷ সুপ্রিম কোর্টকে কেন হস্তক্ষেপ করতে হবে ভারত আজ এমন অবস্থায় এসে দাঁড়িয়েছে যে, সব ব্যাপারেই শীর্ষ আদালতকে হস্তক্ষেপ করতে হচ্ছে৷ এটা খুবই দুর্ভাগ্যজনক৷ সুপ্রিম কোর্টের নিজস্ব এক্তিয়ার আছে৷ সংবিধান সেটা স্থির করে দিয়েছে৷ অসংখ্য জনস্বার্থ মামলা দেখতে গিয়ে শীর্ষ আদালতের স্বাভাবিক কাজকর্ম ব্যাহত হচ্ছে৷ অসংখ্য গুরুত্বপূর্ণ মামলা ঝুলে আছে৷ সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানগুলি ঠিকমতো দায়িত্ব পালন করতে পারছে না বলে রাজনৈতিক দলগুলি যা খুশি তাই করছে৷ গণতন্ত্র নিয়ে কার্যত একটা ছেলেখেলা চলছে ভারতে৷''

আসলে কী বলেছিলেন তারা ? গত ৭ই এপ্রিল মায়াবতী রাজ্যে ইসলামি শিক্ষার পীঠস্থান দেওবন্ধ এলাকার এক জনসভায় বিএসপি-এসপি-আরএলডি জোটকে ভোট দেবার জন্য মুসলিমদের যেভাবে বোঝাবার চেষ্টা করেছেন, তাতে জনমানসে বিরূপ প্রতিক্রিয়া পড়তে পারে৷ ভোট ভাগাভাগি না করার জন্য মুসলিমদের সাবধান করে দিয়ে তিনি বলেন, পুরোটাই যেন তাদের জোটকে দেওয়া হয়৷ এর উত্তরে য়োগী আদিত্যনাথ যে পাল্টা বক্তব্য রাখেন, সেটাও সাম্প্রদায়িক এবং প্ররোচনামূলক৷ তিনি বলেছিলেন, মুসলিমদের যেমন আলির প্রতি বিশ্বাস, তেমনি হিন্দুত্ববাদীদের বিশ্বাস বজরং বলিতে (রামভক্ত হনুমান)৷  মানেকা গান্ধীর বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনিও নির্বাচনি প্রচারে গিয়ে তাঁর নির্বাচন কেন্দ্র সুলতানপুরে মুসলিমদের উদ্দেশে বলেছিলেন, তাঁরা যদি তাঁকে ভোট না দেন, তাহলে ভবিষ্যতে তাদের জন্য কোনো কাজ তিনি করবেন না৷ এই ভাষণের ভিডিও টেপ হাতে আসার পরই নির্বাচন কমিশন মানেকা গান্ধীর বিরুদ্ধে এই নিষেধাজ্ঞা জারি করে৷ মানেকা গান্ধীর বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা রদ করার আর্জি শীর্ষ আদালতে খারিজ হয়ে যায়৷

আজম খানের বিরুদ্ধে অভিযোগ ভিন্ন৷ তাঁর মন্তব্যে নারীদের প্রতি একটা কুরুচিকর মাত্রাযুক্ত৷ এককালীন তাঁরই দলের রামপুর কেন্দ্রের সাংসদ, সম্পর্কে পরোক্ষভাবে খাঁকি অন্তর্বাস নিয়ে বেফাঁস মন্তব্য করে বিপাকে পড়েন আজম খান৷ গত নির্বাচনে জয়াপ্রদা আজম খানের দলের প্রার্থী হয়ে ভোটে জিতেছিলেন৷ কিন্তু পরবর্তীকালে দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে তাঁকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়৷ আজম খানের বিরুদ্ধে শুধু নিষেধাজ্ঞা নয়, এই অশ্লীল মন্তব্যের জন্য তাঁর বিরুদ্ধে মামলাও করা হয়৷ স্বভাবতই ভোটের আবহে বিজেপি শিবির এটা নিয়ে সমালোচনার ঝড় তুলেছে৷ রামপুরের বিধায়ক আজম খান অবশ্য বলেছেন, এই অভিযোগ যদি সত্যি প্রমাণিত হয়, তাহলে তিনি রাজনীতি ছেড়ে দেবেন৷ তিনি কখনোই জয়প্রদার নাম নেননি৷ পর্যবেক্ষকদের মতে, খাকি অন্তর্বাস বলতে সম্ভবতঃ সংঘপরিবারের খাকি ইউনিফর্মকে বোঝাতে চেয়েছেন আজম খান৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

আরো সংবাদ দেখান
স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ