1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

নির্বাচনের আগে অভিযান-গায়েবি মামলা নিয়ে শঙ্কা

সমীর কুমার দে ঢাকা
২১ অক্টোবর ২০১৮

সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে শিগগিরই সারাদেশে অবৈধ অস্ত্রের বিরুদ্ধে সাঁড়াশি অভিযান শুরু হতে যাচ্ছে৷ গোয়েন্দা সংস্থাগুলো এরই মধ্যে অবৈধ অস্ত্রধারী ও চোরাকারবারিদের তথ্য সংগ্রহ করেছে জানিয়েছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক সূত্র৷

Polizei in Bangladesch
ছবি: Picture-Alliance/AP Photo

নির্বাচনের আগে অবৈধ অস্ত্রের সরবরাহ বাড়ছে বলেও আঁচ পাচ্ছে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী৷ আর এ কারণে সারা দেশে অবৈধ অস্ত্র ব্যবসায়ীদের তালিকা তৈরি করে অভিযানে নামতে যাচ্ছে তারা৷

একই সঙ্গে মামলার আসামীদের গ্রেফতার করবে আইন শৃঙ্খলা বাহিনী৷ তবে মানবাধিকার কর্মীরা আসামী গ্রেফতার নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করেছেন৷ তারা বলছেন, ইতিমধ্যে বেশ কিছু গায়েবি মামলা হয়েছে৷ ঘটনাই ঘটেনি এমন বিষয়েও মামলা হয়েছে৷ সেই সব মামলা অজ্ঞাত শত শত মানুষকে আসামী করা হয়েছে৷ সেসব মামলায় নিরীহ মানুষ বা বিরোধী মতের মানুষ হয়রানির শিকার হতে পারেন বলেও আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন মানবাধিকার কর্মীরা৷

আইন ও সালিশ কেন্দ্রের সাবেক নির্বাহী পরিচালক নূর খান লিটন ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘আইন শৃঙ্খলা বাহিনী যে অভিযান শুরু করতে যাচ্ছে সেখানে বিরোধী মতের মানুষ হয়রানির শিকার হবেন সেটা এখন আর আশঙ্কা না, ইতিমধ্যে তাদের হয়রানি করা শুরু হয়ে গেছে৷ গায়েবি মামলাগুলো সেই কারণেই করা হয়েছে৷ ফলে এই অভিযান শুরু থেকেই প্রশ্নের মুখে পড়েছে৷ কোনো কোনো মামলায় ৫ শতাধিক অজ্ঞাত ব্যক্তিকে আসামী করা হয়েছে৷ এটা খারাপ উদ্দেশ্যেই করা হয়েছে বলে আমাদের মনে হচ্ছে৷ আমরা বলব, আইন শৃঙ্খলা বাহিনী যেন এ বিষয়ে সতর্ক থাকে৷''

‘ইতিমধ্যে তাদের হয়রানি করা শুরু হয়ে গেছে’

This browser does not support the audio element.

গত ১৫ অক্টোবর এক অনুষ্ঠানে র‌্যাবের মহাপরিচালক বেনজীর আহমেদ জানিয়েছেন যে, নির্বাচন সামনে রেখে অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারে অভিযান চালানো হবে৷ একদিন আগেও পুলিশ সদর দপ্তরে অর্ধবার্ষিকী অপরাধ পর্যালোচনা সভায় আইজিপি ড. জাবেদ পাটোয়ারী বলেছেন, নির্বাচন ঘিরে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি বা অরাজকতা সৃষ্টির কোনো সুযোগ কাউকে দেয়া হবে না৷

এরই মধ্যে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ সন্ত্রাসী ও অস্ত্রবাজদের তালিকা করে তাদের গ্রেফতারের জন্য মাঠে নেমেছে৷ কিছুদিন আগে ঢাকা মহানগর পুলিশ কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়াও অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারের জন্য নির্দেশ দিয়েছেন৷ সেই নির্দেশনা অনুযায়ী ডিবি অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারে নেমেছে৷

পুলিশ সদর দফতরের অতিরিক্ত ডিআইজি (গোপনীয়) মনিরুজ্জামান ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘পুলিশ এখনও সেই অভিযান শুরু করেনি৷ তবে নির্বাচনের আগে সব সময়ই এই ধরনের অভিযান হয়৷ কারণ নির্বাচনে যাতে অবৈধ অস্ত্রের ব্যবহার না হয় এবং অপরাধীরা যাতে কোন ধরনের প্রভাব বিস্তার করতে না পারে সে কারণেই এই অভিযান চালানো৷ অস্ত্র বিরোধী অভিযান পুলিশের একটা চলমান প্রক্রিয়া৷ এটা এখনও চলছে৷ বিভিন্ন মামলার আসামীদেরও গ্রেফতার চলমান প্রক্রিয়া৷ এটা যে বিশেষভাবে হচ্ছে তা নয়৷ পুলিশ নির্বাচন কেন্দ্রিক স্বাভাবিক কাজগুলোই করছে৷''

‘নির্বাচনের আগে সব সময়ই এই ধরনের অভিযান হয়’

This browser does not support the audio element.

পুলিশ সদর দপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, ২০১৭ সাল পর্যন্ত সারা দেশে সাড়ে পাঁচ হাজার অস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে৷ এসব অস্ত্র উদ্ধারের বিপরীতে দুই হাজার ২০৮টি মামলা দায়ের হয়৷ তবে উদ্ধার বা আটকের বেশির ভাগ মামলাই বিচারাধীন৷ আইনের দীর্ঘসূত্রতার কারণে মামলার বিচারে ধীরগতি এবং সাক্ষ্য-প্রমাণের অভাবে অবৈধ অস্ত্রধারীদের বিচার হচ্ছে না৷

এদিকে বিদেশে পালিয়ে থাকা শীর্ষ সন্ত্রাসীরা আসন্ন নির্বাচনের মাঠ নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করছে বলে একাধিক সম্ভাব্য প্রার্থী অভিযোগ করেছেন৷ দূর থেকে তারা মোবাইল ফোনে পছন্দের প্রার্থীর পক্ষে চিহ্নিত সন্ত্রাসীদের মাঠে নামার নির্দেশনা দিচ্ছে৷ বিশেষ করে রাজধানীতে দীর্ঘদিন ধরে আত্মগোপনে চিহ্নিত সন্ত্রাসীদের প্রকাশ্যে আনাগোনা বেড়ে গেছে৷

ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন শাখার উপ-কমিশান মাসুদুর রহমান বলেন, ‘‘নির্বাচনে কেউ যাতে কোন সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড করতে না পারে বা অবৈধ বল প্রয়োগ বা ভীতি প্রদর্শন করতে না পারে, সেজন্য ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ কাজ শুরু করেছে৷ যারা পেশাদার অস্ত্রবাজ বা সন্ত্রাসী তাদেরকে আমরা ইতিমধ্যে গ্রেফতার করেছি৷''

গোয়েন্দা সংস্থার একজন কর্মকর্তা বলেন, সম্ভাব্য প্রার্থীদের পক্ষে ইতিমধ্যেই ভয়ঙ্কর সন্ত্রাসীরা কে কোথায় আছে খোঁজ নেয়া শুরু হয়েছে৷ অনেকে জেলে থাকা সন্ত্রাসীদের সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করছে৷ তবে পাড়া-মহল্লায় গড়ে উঠেছে অনেকগুলো উঠতি সন্ত্রাসী গ্রুপ৷ এরাই বিদেশে আত্মগোপনে থাকা শীর্ষ সন্ত্রাসীদের নাম ব্যবহার করে এলাকায় ভয়-ভীতি প্রদর্শন করছে৷ এসব উঠতি মাস্তান বাহিনীর একটি তালিকাও করা হচ্ছে৷ এরপর অভিযান শুরু হবে৷পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক নুরুল হুদা ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘নির্বাচনের আগে এই ধরনের অভিযান আগেও হতো, এখনও হয়৷ এটা দুইভাবে দেখা যায়৷ এক. নির্বাচনে যাতে অপরাধীরা কোন ঝামেলা তৈরী করতে না পারে সে জন্যই এই অভিযান৷ আর দুই. বলা হচ্ছে যে বিরোধী মতের মানুষদের এখানে হয়রানি করা হতে পারে৷ তবে এটা নিশ্চিত করবে আদালত৷ পুলিশ তো অভিযান চালাবেই৷ নির্বাচন আসছে বলে তো স্বাভাবিক অপরাধ বন্ধ হয়ে যাবে না৷ কেউ রাজনীতি করলে ফৌজদারি অপরাধ করবেন না, সেটা কি কেউ নিশ্চিত করে বলতে পারবেন? তাহলে কেউ ফৌজদারি অপরাধ করলে তো তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতেই হবে৷''

‘রাজনীতি করে বলে কি ফৌজদারি অপরাধ করবে না?’

This browser does not support the audio element.

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ