যদিও সরকারের মেয়াদ শেষ হতে প্রায় আড়াই বছর বাকি, তারপরও আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে আলোচনা চলছে৷ নির্দিষ্ট সময়ে, নাকি মধ্যবর্তী নির্বাচন – মূলত তা নিয়েই চলছে আলোচনা৷ তবে বিশ্লেষকরা বলছেন, নির্বাচনের পরিবেশটা আগে দরকার৷
বিজ্ঞাপন
নির্বাচন নিয়ে দেশি-বিদেশি পর্যবেক্ষকদের আলোচনার মধ্যেই গত ২৬ জুলাই আওয়ামী লীগের সংসদীয় দলের এক সভায় নেতা-কর্মীদের আগামী সংসদ নির্বাচনের প্রস্তুতি নেয়ার নির্দেশ দেন শেখ হাসিনা৷ প্রধানমন্ত্রী সেখানে বলেন, ‘‘বর্তমান সরকারের মেয়াদের আড়াই বছর ইতোমধ্যে চলে গেছে৷ দু’বছর তিন মাস পর নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে৷ তাই এখন থেকেই আপনাদেরকে পরবর্তী নির্বাচনের জন্য প্রস্তুতি নিতে হবে৷''
প্রধানমন্ত্রীর এই নির্দেশনার পর জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে নানা মহলে আলোচনা হচ্ছে৷ কেমন নির্বাচন হবে, কিভাবে হবে তা নিয়েই মূলত আলোচনা৷ পাশাপাশি নতুন নির্বাচন কমিশন কেমন হবে সে ব্যাপারেও আলোচনা আছে৷
বর্তমান নির্বাচন কমিশনের মেয়াদ শেষ হচ্ছে আগামী বছরের ৯ ফেব্রুয়ারি৷ ফলে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে নির্বাচন কমিশন নিয়েই মূলত আলোচনা শুরু করা দরকার, এমন কথা বলছেন বিশ্লেষকরা৷ তাঁদের মতে, নির্বাচন কমিশনকে সব বড় রাজনৈতিক দল আস্থায় নিতে না পারলে সুষ্ঠু নির্বাচন বা সব দলের অংশগ্রহনে কোনো নির্বাচন করা সম্ভব হবে না৷
সহিংসতায় প্রধান হাতিয়ার ‘পেট্রোল বোমা’
বাংলাদেশে সাম্প্রতিক রাজনৈতিক সহিংসতার সময় পেট্রোল বোমার ব্যাপক ব্যবহার লক্ষ্য করা গেছে৷ হাতে তৈরি এই বোমা ব্যবহার করে গাড়িতে আগুন দেয়ার বেশ কয়েকটি ঘটনা ঘটেছে৷ এই বিষয়ে আমাদের ছবিঘর৷
ছবি: Munir Uz Zaman/AFP/Getty Images
পেট্রোল বোমায় পুড়ছে জীবন
বাংলাদেশে ২০১৩ সালে সহিংসতায় প্রাণ হারিয়েছে পাঁচ শতাধিক মানুষ৷ নির্বাচনসংক্রান্ত জটিলতা ছাড়াও যুদ্ধাপরাধীদের বিচার ইস্যুতে সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে এসময়৷ হরতাল, অবরোধ চলাকালে ব্যাপক আকারে ব্যবহার হয়েছে পেট্রোল বোমা৷
ছবি: imago/imagebroker/theissen
যেভাবে তৈরি হয় এই বোমা
কাঁচের বোতল, পেট্রোল আর কিছু ভাঙা কাঁচ বা মার্বেলের টুকরা ব্যবহার করে পেট্রোল বোমা তৈরি করছে দুর্বৃত্তরা৷ এরপর সুযোগ বুঝে সেগুলো নিক্ষেপ করছে যাত্রীবাহী গাড়িতে৷ ফলে গাড়ি পুড়ছে, সঙ্গে পুড়ছে মানুষ৷ সাম্প্রতিক সময়ে সহিংসতার আগুনে পুড়ে মারা গেছেন বেশ কয়েকজন৷ (ফাইল ফটো)
ছবি: picture alliance/abaca
রয়েছে অন্য বোমাও
তবে শুধু পেট্রোল বোমাই নয়, লাল বা কালো টেপে মোড়া ককটেলও ব্যবহার হচ্ছে বাংলাদেশে৷ ককটেল তৈরিতে ব্যবহার করা হয় বিভিন্ন ধরনের রাসায়নিক পদার্থ এবং ছোট পেরেক বা লোহার টুকরা৷ এছাড়া বোমা তৈরিতে গান পাউডারও ব্যবহার করা হয়৷
ছবি: picture-alliance/dpa
বোমা বাণিজ্য
রাজনৈতিক অস্থিরতায় সময় হাতে তৈরি বোমার চাহিদা বেড়ে যায়৷ তখন বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীরা ছাড়াও পেশাদারি গ্রুপও বোমা তৈরি করে৷ চড়া দামে এসব বোমা বিক্রিও করা হয়৷ গত বছর পাওয়া হিসেব অনুযায়ী, একেকটি হাত বোমার দাম ৫০০ থেকে ৫ হাজার টাকা পর্যন্ত৷
ছবি: Reuters
বড় পর্যায়ে বোমা হামলা
বলাবাহুল্য, বাংলাদেশে সাম্প্রতিক সময়ে আত্মঘাতী বা বড় পর্যায়ে বোমা হামলার কোনো ঘটনা ঘটেনি৷ তবে ২০০৫ সালের ১৭ আগস্ট জামায়াতুল মুজাহিদীন বাংলাদেশ (জেএমবি) বাংলাদেশের ৬৩ জেলায় একযোগে বোমা বিস্ফোরণ ঘটিয়ে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি করেছিল৷
ছবি: dpa - Bildfunk
আত্মঘাতী হামলা
১৭ আগস্টের সেই সিরিজ হামলার পর কয়েকটি আত্মঘাতী বোমা হামলার ঘটনাও ঘটে৷ দৈনিক জনকণ্ঠে প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুযায়ী, সেসময় ‘‘বোমা হামলায় বিচারক, আইনজীবী, পুলিশ, সরকারি-বেসরকারি কর্মকর্তাসহ কমপক্ষে ৩৩ জন নিহত হন৷’’ তবে নিরাপত্তা বাহিনী কঠোর হাতে জঙ্গিবাদের উত্থান দমনে সক্ষম হয়৷ ২০০৭ সালে জেএমবির কয়েকজন শীর্ষ নেতার ফাঁসি কার্যকর হয়৷
ছবি: AP
বোমা নিষ্ক্রিয়করণ টিম
ডয়চে ভেলের ঢাকা প্রতিনিধি হারুন উর রশীদ স্বপন জানান, বাংলাদেশ পুলিশের শক্তিশালী বোমা নিষ্ক্রিয়করণ টিম রয়েছে৷ তাদের কাছে আধুনিক সরঞ্জামও রয়েছে৷ ইতোমধ্যে বিভিন্ন পর্যায়ের বোমা নিষ্ক্রিয় করে প্রশংসা কুড়িয়েছে পুলিশের এই টিম৷
ছবি: Munir Uz Zaman/AFP/Getty Images
7 ছবি1 | 7
পর্যবেক্ষকরা বলছেন, নির্বাচনের আগে সব রাজনৈতিক দলের কাছেই আস্থার পরিবেশ সৃষ্টি করতে হবে৷ বিশেষ করে নির্বাচন কমিশনকে নিরপেক্ষ হতে হবে৷ তা না হলে ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির মতোই আরেকটা নির্বাচন হবে, যা জাতির জন্য কোনো ভালো ফল বয়ে আনবে না৷
গত জাতীয় সংসদ নির্বাচনের এক বছর পর ২০১৫ সালের ফেব্রুয়ারিতে বাংলাদেশ ঘুরে গিয়ে ডয়চে ভেলেকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ)-এর সাংসদ ইওসেফ ভাইডেনহলৎসার বলেছিলেন, ‘‘নতুন একটি নির্বাচন বাংলাদেশে পরিবর্তন আনতে পারে৷'' ওই বছরের ১৬ থেকে ২০ ফেব্রুয়ারি ঢাকা সফর করে ইউরোপীয় পার্লামেন্টের মানবাধিকার বিষয়ক সাবকমিটি৷ ওই কমিটি শুধু সরকার নয়, বিরোধী দলের সঙ্গেও আলোচনা করেছে৷ বাংলাদেশ সফরের সময় ওই সাবকমিটিতে ছিলেন অস্ট্রিয়ার এমপি ইওসেফ ভাইডেনহলৎসার৷ তিনি জানান, বাংলাদেশের প্রধান দুই রাজনৈতিক দল নিজেদের মধ্যে সমঝোতা থেকে বহু দূরে রয়েছে৷ তবে সঠিক পথে যাওয়ার মতো অবস্থায় এখনো রয়েছে দেশটি৷ তিনি বলেন, সাধারণ মানুষের মৃত্যুও টলাতে পারছে না প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আর বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়ার অবস্থানকে৷ এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘‘দেশটির প্রগতির জন্য আসলে একটি ‘কমপ্রিহেনসিভ কনসেপ্ট' বা ‘সমন্বিত পরিকল্পনা' প্রয়োজন৷ এ জন্য একটি সমন্বিত, অংশগ্রহণমূলক এবং গণতান্ত্রিক দৃষ্টিভঙ্গি প্রয়োজন, যা জনগণকে নির্বাচনে অংশ নেয়ার সুযোগ করে দেবে৷ আর একমাত্র সেটা করা হলেই বাংলাদেশ খুব তাড়াতাড়ি এই চলমান সংকট কাটিয়ে উঠতে পারবে বলে আমার বিশ্বাস৷''
বাংলাদেশের পর্যবেক্ষকদের বিশ্লেষণও একই রকম৷ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক ড. শাহাদুজ্জামানও ডয়চে ভেলের সঙ্গে আলাপকালে একই বিষয়ে দৃষ্টিপাত করেছেন৷ তাঁর মতে, ‘‘সবাইকে আস্থায় নিয়ে একটা নির্বাচনের দিকে এগোতে হবে৷ তার জন্য সবার সঙ্গে আলোচনা করে একটা নির্বাচন কমিশন গঠন করতে হবে, যাদের প্রতি সবার আস্থা থাকবে৷ তা না হলে ২০১৪ সালের মতোই আরেকটি নির্বাচন হবে, যা দেশের জন্য ভালো হবে না৷ সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো ভালো একটি নির্বাচন কমিশন গঠন করা৷ আর এই কমিশন গঠনের জন্য আমাদের হাতে কিন্তু বেশি সময় নেই৷ মাত্র পাঁচমাসের মধ্যেই এটা করতে হবে৷''
দেশে যখন আগামী জাতীয় সংসদ নিয়ে আলোচনা হচ্ছে, তখন প্রতিবেশী রাষ্ট্র ভারতের আস্থায় আসতে দৌড়ঝাঁপ শুরু করেছেন জাতীয় পার্টির নেতারা৷ বর্তমানে এই দলটি বিরোধী দলের ভুমিকায় আছে৷ তবে তারা সরকারেও আছে৷ সর্বশেষ পহেলা আগস্ট জিয়াউদ্দিন আহমেদ বাবলুর নেতৃত্বে সাতজন সংসদ সদস্যের নেতৃত্বে একটি দল ভারত সফর করে৷ এর আগে ১৮ জুন ভারতে যান দলটির প্রধান হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদ৷ তারা সবাই ভারতের রাষ্ট্রপতি, পররাষ্ট্রমন্ত্রী, বিজেপি সাধারণ সম্পাদক, কংগ্রেস সহ-সভাপতিসহ গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের সঙ্গে বৈঠক করেন৷ দেশে আলোচনা হচ্ছে, জাতীয় পার্টির পক্ষে ভারতের ‘সায়' আনার চেষ্টা করছেন নেতারা৷
বাংলাদেশের সংসদ নির্বাচনের ইতিহাস
স্বাধীনতার পর থেকে এখন পর্যন্ত বাংলাদেশে ১১ বার সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে৷ ছবিঘরে থাকছে সে সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য৷
ছবি: Anupam Nath/AP/picture alliance
প্রথম জাতীয় সংসদ নির্বাচন
স্বাধীন বাংলাদেশে ১৯৭৩ সালের ৭ মার্চ প্রথম সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছিল৷ সে সময় ৩০০ আসনে সরাসরি নির্বাচন হয়৷ আর সংরক্ষিত মহিলা আসনের সংখ্যা ছিল ১৫টি৷ ঐ সংসদের প্রথম অধিবেশন বসেছিল ৭ এপ্রিল, তেজগাঁওয়ে অবস্থিত তখনকার জাতীয় সংসদ ভবনে৷ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ ৩০০টি আসনের মধ্যে ২৯৩টিতে জয়লাভ করে৷ বঙ্গবন্ধু সে সময় ঢাকা-১২ আসন থেকে বিজয়ী হয়েছিলেন৷
ছবি: AP
দ্বিতীয় সংসদ নির্বাচন, প্রথম নারী সাংসদ
প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের আমলে ১৯৭৯ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারি ভোটগ্রহণ হয়৷ সেবার সংরক্ষিত মহিলা আসনের সংখ্যা ছিল ৩০টি৷ তবে ঐ সংসদেই প্রথমবারের মতো প্রত্যক্ষ ভোটে একজন নারী সাংসদ নির্বাচিত হয়েছিলেন৷ খুলনা-১৪ থেকে নির্বাচিত হন সৈয়দা রাজিয়া ফয়েজ৷ প্রথম অধিবেশন বসেছিল ২ এপ্রিল৷ নির্বাচনে মাত্র মাস ছয়েক আগে প্রতিষ্ঠিত দল বিএনপি ২০৭টি আর আওয়ামী লীগ ৫৪টি আসন পেয়েছিল৷
ছবি: imago stock&people
তৃতীয় সংসদ নির্বাচন
ভোটগ্রহণ হয় ১৯৮৬ সালের ৭ মে৷ জাতীয় পার্টি ১৫৩টি, আওয়ামী লীগ ৭৬টি আর জামায়াতে ইসলামী ১০টি আসন পায়৷ বিএনপি এই নির্বাচন বর্জন করেছিল৷
ছবি: http://www.parliament.gov.bd
চতুর্থ সংসদ নির্বাচন
১৯৮৮ সালের ৩ মার্চ এই নির্বাচনের ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়েছিল৷ আওয়ামী লীগ, বিএনপি সহ বেশ কয়েকটি দল এই নির্বাচন বর্জন করেছিল৷ জাতীয় পার্টি আসন পেয়েছিল ২৫১টি৷ সংরক্ষিত মহিলা আসন সংক্রান্ত আইনের মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ায় এই সংসদে মোট আসন সংখ্যা ছিল ৩০০টি৷
ছবি: http://www.parliament.gov.bd
পঞ্চম সংসদ নির্বাচন
তৎকালীন প্রধান বিচারপতি শাহাবুদ্দিন আহমেদকে প্রধান উপদেষ্টা করে গঠিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে ১৯৯১ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত নির্বাচনে বিএনপি ১৪০টি, আওয়ামী লীগ ৮৮টি আর জাতীয় পার্টি ৩৫টিতে জয়লাভ করে৷ এছাড়া নির্বাচিত সংসদ সদস্যদের ভোটের মাধ্যমে পরোক্ষভাবে ৩০ জন মহিলাকে সাংসদ নির্বাচিত করা হয়৷ অবশ্য তখন তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থাটি সংবিধানের অংশ ছিল না৷ পরের সংসদে সেই বিল পাস হয়েছিল৷
ছবি: Getty Images
ষষ্ঠ সংসদ নির্বাচন
অনুষ্ঠিত হয় ১৯৯৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি৷ আওয়ামী লীগ সহ অধিকাংশ বিরোধী রাজনৈতিক দল নির্বাচনটি বর্জন করেছিল৷ ফলে মোট ভোট গৃহীত হয়েছিল মাত্র ২১ শতাংশ৷ ৩০০টি আসনের মধ্যে বিএনপি ২৭৮টিতে জয়লাভ করেছিল৷ মাত্র চার কার্যদিবসে সংসদ বসার পর তা বিলুপ্ত ঘোষণা করা হয়৷ এই সংসদে তত্ত্বাবধায়ক সরকার বিল পাস হয়৷
ছবি: picture-alliance/Dinodia Photo
সপ্তম সংসদ নির্বাচন
তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে ১৯৯৬ সালের ১২ জুন অনুষ্ঠিত প্রথম নির্বাচনে আওয়ামী লীগ ১৪৬, বিএনপি ১১৬ ও জাতীয় পার্টি ৩২টি আসনে জয়লাভ করে৷ পরে শেখ হাসিনাকে প্রধানমন্ত্রী করে সরকার গঠন করে আওয়ামী লীগ৷
ছবি: Reuters
অষ্টম সংসদ নির্বাচন
ভোটগ্রহণ হয় ২০০১ সালের ১ অক্টোবর৷ অষ্টম সংসদের মোট সদস্য সংখ্যা ছিল ৩০০টি৷ কারণ সংরক্ষিত মহিলা আসন সংক্রান্ত আইনের মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ায় শুরুতে কোনো মহিলা আসন ছিল না৷ পরে আইন করে নারীদের জন্য সংরক্ষিত আসনের সংখ্যা ৩০ থেকে বাড়িয়ে ৪৫ এ উন্নীত করা হয়৷ নির্বাচনে বিএনপি ১৯৩ আর আওয়ামী লীগ ৬২টি আসনে জয়ী হয়েছিল৷
ছবি: Munir Uz Zaman/AFP/Getty Images
নবম সংসদ নির্বাচন
তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থার অধীনে অনুষ্ঠিত সবশেষ নির্বাচনটি অনুষ্ঠিত হয় ২০০৮ সালের ২৯ ডিসেম্বর৷ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন জোট সরকার পেয়েছিল ২৬৩টি আসন৷ আর বিএনপি নেতৃত্বাধীন জোট পায় ৩৩টি আসন৷
ছবি: picture-alliance/A.A./N. Kumar
দশম সংসদ নির্বাচন
২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত নির্বাচন বর্জন করেছিল বিএনপি৷ ফলে ১৫৩ জন সাংসদ কোনো প্রতিদ্বন্দ্বিতা ছাড়াই সাংসদ নির্বাচিত হন৷
ছবি: DW/M. Mamun
একাদশ সংসদ নির্বাচন
বাংলাদেশের সবশেষ জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে ২০১৮ সালে৷ আওয়ামী লীগ সরকারের অধীনে হওয়া এই নির্বাচনে সংসদের ৩০০ আসনের ২৮৮টিই পেয়েছিল ক্ষমতাসীন দল ও মহাজোট৷ সেই নির্বাচনে নৌকার পক্ষে ভোট পড়েছে পাঁচ ভাগের চার ভাগ৷ ঘটেছে নজিরবিহীন ঘটনাও৷ ২১৩টি কেন্দ্রে শতভাগ ভোট পড়েছে৷ প্রায় আট হাজার কেন্দ্রে পড়েছে ৯০ শতাংশের বেশি৷
ছবি: Anupam Nath/AP/picture alliance
11 ছবি1 | 11
২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি জাতীয় নির্বাচনের ১০ মাস পর নভেম্বরেই ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) রাষ্ট্রদূত হিসেবে বাংলাদেশে যোগ দেন পিয়ের মায়াউদঁ৷ এর এক মাস পর বাংলাদেশ সফর করেন ইইউ-র দক্ষিণ এশিয়া বিষয়ক কমিটির চেয়ারম্যান জিন ল্যামবার্ট৷ ১০ ডিসেম্বর গুলশানে ইউরোপীয় ইউনিয়ন প্রতিনিধি কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে ল্যামবার্ট বলেন, বাংলাদেশে এখন নতুন কোনো নির্বাচন নয়, আমরা বেশিরভাগ রাজনৈতিক দলের অংশগ্রহণের মাধ্যমে পরবর্তী নির্বাচন অনুষ্ঠানের বিষয়ে সমঝোতা চাই৷ তিনি বলেন, ‘‘নির্বাচন যখনই হোক না কেন, সেটা যাতে প্রধান প্রধান রাজনৈতিক দলের অংশগ্রহণে হয় এবং সাধারণ মানুষ যাতে তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারেন – সে বিষয়গুলো নিশ্চিত করতে হবে৷'' রাজনৈতিক দলগুলোকেই এ বিষয়ে ঐকমত্যে আসতে হবে৷ সর্বশেষ নির্বাচনে অধিকাংশ রাজনৈতিক দল অংশগ্রহণ না করায় পর্যবেক্ষক পাঠায়নি ইইউ, বলেন তিনি৷ ওই সাংবাদিক সম্মেলনে পিয়ের মায়াউদঁ-ও উপস্থিত ছিলেন৷
জিম ল্যামবার্টের ওই সাংবাদিক সম্মেলনের পর পৌনে দুই বছর পার হয়েছে৷ কিন্তু পরিস্থিতি একটুও বদালায়নি৷ এমনকি ইইউ'র সাংসদ ইওসেফ ভাইডেনহলৎসার দেড় বছর আগে ডয়চে ভেলেকে যে কথা বলেছিলেন বর্তমান পরিস্থিতি তার সঙ্গেও মিলে যায়৷ দুই প্রধান রাজনৈতিক দলের মধ্যে দুরত্ব আরো বরং বেড়েছে৷ ফলে এই পরিস্থিতিতে কিভাবে সবার অংশগ্রহনে সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব সেটাই এখন বাংলাদেশের মানুষের কাছে সবচেয়ে বড় প্রশ্ন৷
এ বিষয়ে আপনার কি কিছু বলার আছে? লিখুন নীচের মন্তব্যের ঘরে৷