1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

নির্বাচনের পর চ্যালেঞ্জ ও চিন্তা

২৫ সেপ্টেম্বর ২০১৭

সিডিইউ-সিএসইউ নাটকীয়ভাবে ভোট হারিয়েছে, এফডিপি আবার সংসদে, তৃতীয় স্থানে এএফডি৷ জার্মান সংসদীয় নির্বাচন বার্লিন রাজনীতির প্রথাগত হিসাবনিকাশ ভণ্ডুল করে দিয়েছে৷

Bundestagswahl | Merkel
ছবি: imago/S. Zeitz

ভোটে আসল চমক দিয়েছেন এবার অজ্ঞাত ভোটদাতারা; আবার তারা সব প্রাক-নির্বাচন জরিপকে ভুল প্রমাণ করে দিয়েছেন৷ আঙ্গেলা ম্যার্কেলের দল সিডিইউ ও তাদের বাভেরীয় সহযোগী সিডিইউ মিলে ৪০ শতাংশের কাছাকাছি ভোট পাবে বলেই বিশেষজ্ঞরা ভবিষ্যদ্বাণী করে এসেছিলেন: পরিবর্তে ইউনিয়ন দলগুলি ১৯৪৯ সাল যাবৎ তাদের সবচেয়ে খারাপ ফলাফল করেছে৷ প্রতিক্রিয়া হিসেব চ্যান্সেলর ম্যার্কেলকে বলতে শোনা গেছে, ‘‘আমাদের বাদ দিয়ে কোনো সরকার গঠন করা সম্ভব হবে না৷'' সেটুকুই সান্ত্বনা৷   

এসপিডি এবার বিরোধীপক্ষে থাকবে

সিডিইউ-সিডিইউ দলের বেশ কিছু ভোটার প্রধানত এফডিপি দলকে ভোট দিয়েছেন; প্রচুর সিডিইউ-সিএসইউ ভোটার এএফডি-কেও ভোট দিয়েছেন৷ অপরদিকে রক্ষণশীলরা তরুণ ভোটারদের টানতে পারেনি৷

সিডিইউ-সিএসইউ দলের ভোট কমার একটি বড় কারণ হলো, বাভেরিয়ায় সিএসইউ দলের বিপর্যয়৷ সিএসইউ শুধুমাত্র বাভেরিয়াতেই ভোটে নামে, সিডিইউ যেমন সেখানে ভোটে নামে না৷ দক্ষিণের ঐ প্রদেশটি চিরকালই সিএসইউ-এর রাজত্ব; সেখানে এবার তারা ২০১৩ সালের তুলনায় ১০ শতাংশ ভোট হারিয়েছে – ওদিকে আগামী বছর বাভেরিয়ায় রাজ্য নির্বাচন৷ ভোটের দিন সন্ধ্যাতেই সিএসইউ নেতা হর্স্ট জেহোফার ঘোষণা করেছেন যে, সিএসইউ এবার স্পষ্ট দক্ষিণপন্থি ধারা অবলম্বন করবে৷

এসপিডি দলের নতুন নির্বাচনি বিপর্যয়ের ফলে আঙ্গেলা ম্যার্কেল তাঁর একটি সম্ভাব্য জোট সহযোগীকে হারালেন৷ ভোটার সমীক্ষা ভিত্তিক প্রাথমিক ফলাফল ঘোষিত হবার পর-পরই এসিপিডি দলের নেতৃস্থানীয় সদস্যরা সিডিইউ-সিএসইউ ও এসপিডি দলের তথাকথিত ‘‘বৃহৎ জোট'' থেকে বিদায় নেবার সিদ্ধান্ত ঘোষণা করেন৷

বাকি রইল ‘জামাইকা' জোট

জামাইকার জাতীয় পতাকার রং হলো কালো, হলুদ ও সবুজ: প্রথাগতভাবে সিডিইউ-সিএসইউ, এফডিপি ও সবুজ দলকে এই তিনটি রং দিয়ে বর্ণনা করা হয়৷ ইতিপূর্বে কেন্দ্রে কখনো এই তিনটি দলের জোট ক্ষমতায় আসেনি৷ ‘জামাইকা' জোটের প্রয়োজনীয় আসনসংখ্যা থাকলেও, সরকার গঠন সংক্রান্ত আলাপ-আলোচনা খুব সহজ হবে না, বিশেষ করে যখন এফডিপি আর সবুজদের মধ্যে চিরকালই বিশেষ বনিবনা নেই৷ তবে গত জুন মাস যাবৎ উত্তরের ছোট্ট শ্লেসভিগ-হলস্টাইন রাজ্যে একটি ‘জামাইকা' জোট শাসন চালাচ্ছে৷ 

প্রায় ছয় দশক পরে আবার জার্মান সংসদে ছ'টি দল আসন নিতে চলেছে৷ বড় দু'টি দল, অর্থাৎ সিডিইউ-সিএসইউ এবং এসপিডি ব্যাপকভাবে ভোট হারিয়েছে, অপরদিকে ছোট চারটি দলই তাদের ভোটের অনুপাত বাড়াতে পেরেছে – যার ফলে তাদের আত্মবিশ্বাস বেড়েছে বৈ কমেনি৷ ভোট সবচেয়ে বেড়েছে এএফডি দলের, যারা ১২ দশমিক ৬ শতাংশ ভোট নিয়ে সংসদে তৃতীয় বৃহত্তম গোষ্ঠী হতে চলেছে৷ মুক্ত গণতন্ত্রী এফডিপি দল চার বছর সংসদে অনুপস্থিত থাকার পর এবার ১০ দশমিক ৭ শতাংশ ভোট নিয়ে ফিরতে চলেছে৷ বামদল ‘ডি লিঙ্কে' নয় শতাংশের বেশি ভোট পেয়েছে, যা তাদের নির্বাচনি লক্ষ্যের চেয়ে বেশি৷ অপরদিকে সবুজরাও ৮ দশমিক ৯ শতাংশ ভোট নিয়ে অনুরূপভাবে তাদের ভোটের পরিমাণ বাড়াতে সমর্থ হয়েছে৷ তবে তিনটি ছোট দলই এএফডি-র চেয়ে অনেক কম ভোট পেয়েছে, যা তাদের পছন্দ হওয়ার কথা নয়৷

‘বৃহৎ জোটে' অরুচি

ইউনিয়ন দলগুলি ও এসপিডি মিলিয়ে মোট ১৩ শতাংশ ভোট হারিয়েছে – এবং ভোটারদের অনুপস্থিতি তার কারণ নয়, কেননা চার বছর আগের নির্বাচনের তুলনায় এবার পাঁচ শতাংশ বেশি ভোটার ভোট দিতে গেছেন (অথবা পত্র মারফত ভোট দিয়েছেন) – সাকুল্যে ৭৬ শতাংশের বেশি৷

মধ্যমপন্থি বড় দলগুলি আর দৃশ্যত একা জার্মান রাজনীতির কর্ণধারের ভূমিকা নিতে পারবে না৷ বিশেষ করে বড় দলগুলির মধ্যে জোটে বাম ও ডানের ছোট দলগুলি পালে হাওয়া পায়, এএফডি-র সাফল্য যার প্রমাণ৷ ১৯৮৭ সালের নির্বাচনে সিডিইউ-সিএসইউ আর এসপিডি মিলে মোট ৮১ শতাংশ ভোট পেয়েছিল; এবার তা কমে দাঁড়িয়েছে ৫৪ শতাংশে৷

‘বৃহৎ জোটের' ছোট তরফ হিসেবে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এসপিডি, কেননা ম্যার্কেল সরকারে থেকে ম্যার্কেলের বিরোধিতা করা সহজ নয়৷ অপরদিকে ম্যার্কেল সরকারের সমালোচনা করার অর্থ অংশত এসপিডি দলের সমালোচনা করা৷ কাজেই এবার নেতৃস্থানীয় এসপিডি রাজনীতিকরা সাততাড়াতাড়ি ঘোষণা করেছেন যে, এসিপিডি এবার সরকারে না থেকে বিরোধীপক্ষে যেতে চায়৷

অর্থনীতির রমরমা ও বেকারত্ব কমতির দিকে হওয়া সত্ত্বেও ‘কালো-লাল' সরকার যে ভোটারদের মন কাড়তে পারেননি, তার একটা কারণ হলো উদ্বাস্তু নীতি বা অবসরভাতা সংক্রান্ত নীতি নিয়ে সাধারণের অসন্তোষ৷

এএফডি-র চ্যালেঞ্জ

প্রায় সব রাজ্য বিধানসভায় আসন নেওয়ার পর এএফডি এবার জার্মান সংসদেও আসন নিতে চলেছে৷ জার্মানির পূর্বাঞ্চলের রাজ্যগুলিতে – অর্থাৎ সাবেক পূর্ব জার্মানির এলাকায় এএফডি সাকুল্যে ২১ শতাংশ ভোট পেয়ে সিডিইউ-এর পরেই দ্বিতীয় বৃহত্তম রাজনৈতিক শক্তিতে পরিণত হয়েছে৷ পূর্বাঞ্চলের পুরুষদের শুধু ধরলে এএফডি আজ পূর্বাঞ্চলে প্রথম স্থানে৷ কেন্দ্রে প্রথমবার নির্বাচনে নেমেই এএফডি তৃতীয় বৃহত্তম গোষ্ঠী৷ অপরদিকে এএফডি-কে যারা ভোট দিয়েছেন, তাদের ৬০ শতাংশ বলেছেন যে, তারা অপরাপর দলগুলির বিরুদ্ধে প্রতিবাদে এএফডি-কে ভোট দিয়েছেন – অর্থাৎ বাস্তবিক এএফডি সমর্থকের সংখ্যা এর চেয়ে অনেক কম৷ তবুও এএফডি-র একজন মুখ্য প্রার্থী আলেক্সান্ডার গাউলান্ড ঘোষণা করেছেন যে, তারা নতুন ম্যার্কেল সরকারকে ‘‘তাড়িয়ে নিয়ে বেড়াবেন''৷

ফল্কার ভাগেনার/এসি

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ