২৬শে সেপ্টেম্বর জার্মানিতে সাধারণ নির্বাচনের পর চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেল অবসর নিচ্ছেন৷ অবসর জীবন কীভাবে কাটাতে চলেছেন তিনি?
বিজ্ঞাপন
ব্যক্তি হিসেবে আঙ্গেলা ম্যার্কেল কিছু পদ রান্না করতে ভালোবাসেন৷ যেমন আলুর স্যুপ ও প্লাম কেক৷ তবে ২৬শে সেপ্টেম্বর সন্ধ্যায় তিনি মোটেই কাজ থেকে অব্যাহতি পাচ্ছেন না৷ কারণ নতুন সরকার গঠন হওয়া পর্যন্ত তাঁকে নির্বাহী সরকার প্রধানের দায়িত্ব পালন করে যেতে হবে৷ সম্প্রতি তিনি বলেছেন, যে কার্যকালের শেষ দিন পর্যন্ত তিনি দেশের প্রয়োজন অনুযায়ী সক্রিয় থাকবেন৷
গত কয়েক দশকের গড় হিসেব অনুযায়ী জার্মানিতে সাধারণ নির্বাচনের পাঁচ থেকে ছয় সপ্তাহ পর নতুন চ্যান্সেলরের নেতৃত্বে সরকার গঠিত হয়েছে৷ ২০১৭ সালের নির্বাচনের পর সেই অবস্থায় পৌঁছতে সাড়ে পাঁচ মাস সময় লেগেছে৷ অর্থাৎ আবার তেমন জটিলতা দেখা দিলে ম্যার্কেল হয়তো তার রাজনৈতিক অভিভাবক হেলমুট কোলের রেকর্ড ভেঙে ফেডারেল জার্মানির ইতিহাসে চ্যান্সেলরের দীর্ঘতম কার্যকাল পূরণ করবেন৷ ৫,৮৭০ দিনের সেই সীমানা অতিক্রম করতে হলে ম্যার্কেলকে কমপক্ষে ২০২১ সালের ১৭ই ডিসেম্বর পর্যন্ত চ্যান্সেলর থাকতে হবে৷
ম্যার্কেলের পরে কে?
আঙ্গেলা ম্যার্কেল আর চ্যান্সেলর প্রার্থী হবেন না৷ তাই সিডিইউ এবং সিএসইউ দল ম্যার্কেলের উত্তরসূরি বেছে নেয়ার প্রক্রিয়া শুরু করেছে৷ জার্মানির অন্য দলগুলোও বেছে নিচ্ছে তাদের প্রার্থী৷ দেখুন ছবিঘরে...
ছবি: picture-alliance/dpa/B.v. Jutrczenka
আরমিন লাশেট
৬০ বছর বয়সি লাশেট শুধু ম্যার্কেলের দল সিডিইউ-এর বর্তমান চেয়ারম্যানই নন, জার্মানির সবচেয়ে জনবহুল রাজ্য নর্থরাইন ওয়েস্টফেলিয়ার মুখ্যমন্ত্রীও তিনি৷ ম্যার্কেল-ভক্ত এই নেতার শরণার্থীবান্ধব হিসেবে সুখ্যাতি রয়েছে৷
ছবি: picture-alliance/dpa/G. Fischer
মার্কুস স্যোডার
বাভেরিয়ার সিএসইউ দলের শীর্ষ নেতা ও সে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী স্যোডারকে চ্যান্সেলর প্রার্থী হওয়ার দৌড়ে এগিয়ে রাখছেন অনেকেই৷ ম্যার্কেলের দল সিডিইউ-এর সহযোগী দল সিএসইউ-এর ৫৪ বছর বয়সি এই নেতা ২০১৮ সালে মুখ্যমন্ত্রী হয়েই বলেছিলেন, ‘‘বাভেরিয়া শক্তিশালী, বাভেরিয়া এগিয়ে যাবে৷ বাভেরিয়া নিরাপদ এবং নিরাপদই থাকবে৷’’ করোনা সংকটেও স্বাস্থ্যবিধি প্রয়োগ করেছেন কঠোরভাবে৷ ফলে তার এবং দলের জনপ্রিয়তা বেড়েছে৷
ছবি: picture-alliance/dpa/P. Kneffel
আনালেনা বায়েরবোক
লন্ডন স্কুল অব ইকোনমিকের পাবলিক ইন্টারন্যাশনাল ল ডিগ্রিধারী বায়েরবোক তিন বছর ধরে গ্রিন পার্টির কো-চেয়ারম্যান৷ সমর্থকরা তার প্রতি খুব আস্থাশীল হলেও সমালোচকরা মনে করেন, চ্যান্সেলর হলে প্রশাসনিক কাজ এবং মন্ত্রিত্বে অনভিজ্ঞতা তাকে সমস্যায় ফেলতে পারে৷
ছবি: picture-alliance/dpa/M. Kappeler
রবার্ট হাবেক
বহু কাজের কাজী হাবেকও গ্রিন পার্টির নেতা৷ ৫১ বছর বয়সে পোড় খাওয়া রাজনীতিবিদ হয়ে গেলেও রাজনীতিতে আসার আগে ছিলেন শিশু সাহিত্যিক৷ দর্শন শাস্ত্রে পিএইচডিও করেছেন তিনি৷ ২০ বছর আগে রাজনীতিতে যোগ দিয়ে অল্প সময়েরমধ্যেই বক্তা হিসেবে খ্যাতি অর্জন করেন৷ জলবায়ু আন্দোলনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখার যোগ্য মনে করা হয় তাকে৷
ছবি: picture alliance/dpa
ওলাফ শলৎস
সপিডি দলের চ্যান্সেলর প্রার্থী ওলাফ শলৎস৷জার্মানির অর্থমন্ত্রী এবং গ্র্যান্ড কোয়ালিশনে ম্যার্কেলের ডেপুটি শলৎস এক সময় হামবুর্গের মেয়র ছিলেন৷ তবে ৬২ বছর বয়সি এই নেতা নিজের দলকে পুনরুজ্জীবিত করতে পারবেন কিনা এ বিষয়ে দলের নেতা-কর্মীদের মাঝেও সংশয় রয়েছে৷
ছবি: Imago Images/R. Zensen
5 ছবি1 | 5
বই পড়া ওএকটু ঘুমের সময়
গত জুলাই মাসে ওয়াশিংটন সফরের সময় আঙ্গেলা ম্যার্কেলকে তার অবসর জীবনের পরিকল্পনার কথা জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল৷ সাধারণত এমন প্রশ্ন এড়িয়ে গেলেও সে বার তিনি বলেছিলেন, সবার আগে কিছুদিন বিরতি চান তিনি৷ তার পর অন্যদের আমন্ত্রণ গ্রহণ করার কথা ভাববেন৷ তাকে বুঝতে হবে, অন্য কেউ তার এত দিনের দায়িত্ব পালন করছেন৷ ম্যার্কেল বলেন, ‘‘মনে হয়, সেটা উপলব্ধি করে আমার ভালোই লাগবে৷''
কাজ থেকে অবসর পেয়ে ম্যার্কেল নিজের আগ্রহ সম্পর্কে ভাবনা চিন্তা করতে চান৷ বিগত ১৬ বছরে তিনি সেই লক্ষ্যে তেমন সুযোগ পান নি৷ মুচকি হেসে তিনি আরও বলেন, হয়তো বই পড়ার চেষ্টা করবেন, ক্লান্তি কাটাতে একটু বেশি ঘুমাবেন৷ ম্যার্কেলের ভাষায় ‘‘তারপর দেখা যাক, কোথায় আবার উদয় হই৷''
তদন্তে নামছেন ‘‘মিস ম্যার্কেল''
এক ফটো শিল্পী ও গোয়েন্দা কাহিনি লেখক ম্যার্কেলের ভবিষ্যৎ আগেই পরিকল্পনা করে ফেলেছেন৷ আন্দ্রেয়াস ম্যুয়ে ম্যার্কলের মতো দেখতে এক মডেলকে নিয়ে শান্ত ও নির্জন পরিবেশে ছবি তুলে এক প্রদর্শনীর আয়োজন করেছেন৷ ডাভিড সাফিয়ের নামের লেখক মনে করেন, যে কর্মব্যস্ত জীবনের শেষে ম্যার্কেলের সময় দ্রুত ‘বোরিং' বা একঘেয়ে হয়ে উঠবে৷ ম্যার্কেলও ব্রান্ডেনবুর্গে নিজের ভিটেতে ফেরার পর আগাথা ক্রিস্টির ‘মিস মার্পেল' নামের গোয়েন্দা চরিত্রের মতো গোয়েন্দাগিরি শুরু করবেন৷ লেখকের কল্পনায় একটি খুনের ঘটনার জের ধরে ম্যার্কেলের মধ্যে আবার কাজের স্ফুলিঙ্গ জেগে উঠবে৷
যে মানুষটি কয়েক দশক ধরে ভোর থেকে রাত পর্যন্ত কর্মব্যস্ততার মধ্যে কাটিয়েছেন এবং গুরুদায়িত্ব পালন করে এসেছেন, তিনি কি রাতারাতি হাত ঝেড়ে ফেলতে পারেন? মজার সেই কাহিনির শুরুতেই সেই প্রশ্ন রাখা হয়েছে৷ বার্লিনে ম্যার্কেল নিজেই বলেছেন, কোনো কিছুর অভাব বোধ হচ্ছে কিনা, সেটা আর না থাকলে তবেই তা বোঝা যায়৷
নিশ্চিত অবসর ভাতা
গত ১৭ই জুলাই আঙ্গেলা ম্যার্কেল ৬৭ বছর পূর্ণ করেছেন৷ আর্থিক সচ্ছলতা সম্পর্কে তাকে দুশ্চিন্তা করতে হবে না৷ বর্তমানে তিনি চ্যান্সেলর হিসেবে মাসিক ২৫ হাজার ইউরো ভাতা পাচ্ছেন৷ সেই সঙ্গে সংসদ সদস্য হিসেবে ১০ হাজারের বেশি আয়ও রয়েছে৷ ৩০ বছরেরও বেশি সময় ধরে তিনি সংসদে সক্রিয় রয়েছেন৷ সেই কাজের শেষে তিন মাস পর্যন্ত সংসদ হিসেবে পূর্ণ ভাতা পাবেন৷ তারপর সর্বোচ্চ ২১ মাস পর্যন্ত সেই অংকের অর্ধেক পেতে পারেন৷
চ্যান্সেলর, মন্ত্রী ও সংসদ সদস্য হিসেবে ম্যার্কেলের দীর্ঘ কার্যকালের সুবাদে প্রাপ্য অবসর ভাতার মধ্যে মেলবন্ধন ঘটিয়ে চূড়ান্ত অংক স্থির করা হবে৷ বর্তমান আইন অনুযায়ী সব হিসেবনিকেশ করে ম্যার্কেল শেষ পর্যন্ত মাসে ১৫ হাজার ইউরো অবসর ভাতা পেতে পারেন৷ তাছাড়া আজীবন দেহরক্ষী ও চালকসহ সরকারি গাড়িও তার প্রাপ্য৷ বুন্ডেসটাগ ভবনে বেশ কয়েকজন কর্মীসহ নিজস্ব একটি দফতর তার জন্য বরাদ্দ থাকবে৷
বার্লিন প্রাচীর না ভাঙলে ম্যার্কেল যা করতেন
আগামী ৯ নভেম্বর বার্লিন প্রাচীর ভাঙনের ৩০ বছর পূর্তি হচ্ছে৷ কিন্তু প্রাচীর যদি না ভাঙতো তাহলে সাবেক পূর্ব জার্মানিতে বেড়ে ওঠা আঙ্গেলা ম্যার্কেল কী করতে পারতেন, তা এক সাক্ষাৎকারে জানিয়েছেন তিনি৷
ছবি: picture-alliance/dpa/dpaweb
ম্যার্কেলের অ্যামেরিকান স্বপ্ন
জার্মানি যদি এখনও বিভাজিত থাকতো তাহলে আপনি এখন কী করতেন - জার্মান চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেলকে সম্প্রতি এই প্রশ্ন করেছিলেন এক সাংবাদিক৷ উত্তরে তিনি ঐ সাংবাদিককে বলেন, ‘‘নিশ্চিতভাবেই আমরা এভাবে কথা বলতাম না৷’’ এরপর ম্যার্কেল জানান, তিনি হয়তো তাঁর স্বপ্ন পূরণ করতে পারতেন৷ ‘‘আমি চেয়েছিলাম, আমার প্রথম লম্বা সফর হবে অ্যামেরিকায়,’’ জার্মান ম্যাগাজিন ডেয়ার স্পিগেলকে বলেন তিনি৷
ছবি: picture-alliance/dpa/dpaweb
রকি মাউন্টেন
যুক্তরাষ্ট্রের আকার, বৈচিত্র্য ও সংস্কৃতির প্রতি ভালো লাগার কথা জানিয়ে ম্যার্কেল বলেন, গাড়ি চালিয়ে ঘোরা, রকি মাউন্টেন দেখা তাঁর স্বপ্ন ছিল৷ ছবিতে ডেনভার শহরের পেছনে রকি মাউন্টেন দেখা যাচ্ছে৷
ছবি: picture alliance / AP Images
সঙ্গে স্প্রিংস্টিনের গান
যুক্তরাষ্ট্রের পথে পথে ঘোরার সময় মার্কিন রকস্টার ব্রুস স্প্রিংস্টিনের গান শোনার ইচ্ছা ছিল বলেও জানান জার্মান চ্যান্সেলর৷ ‘বর্ন ইন দ্য ইউএস’, ‘বর্ন টু রান’সহ অসংখ্য জনপ্রিয় গান গেয়েছেন স্প্রিংস্টিন৷
ছবি: picture alliance/AP Photo
জার্মানিও ঘুরে দেখতেন
শুধু যুক্তরাষ্ট্র নয়, পুরো জার্মানিও ঘুরে দেখতেন বলে জানিয়েছেন ম্যার্কেল৷ তিনি বলেন, সাবেক পূর্ব জার্মানিতে ৬০ বছর বয়সে মানুষ অবসরে যেত৷ এরপর তাঁদের পূর্ব জার্মানির বাইরে যাওয়ার অনুমতি মিলতো৷ এখন তাঁর বয়স ৬৫ হওয়ায় তিনি সেই সুযোগ কাজে লাগিয়ে পুরো জার্মানি দেখতে বের হতেন বলেও জানিয়েছেন৷
ছবি: picture-alliance/H. Bellmann
সঙ্গে মার্কিন গাড়ি?
ঘোরাঘুরির জন্য কি মার্কিন গাড়ি ব্যবহার করতেন? এই প্রশ্নের উত্তরে ম্যার্কেল বলেন, ‘‘না- আমি ছোট গাড়ির ভক্ত৷ তবে ট্রাবান্ট গাড়ির চেয়ে আর ভালো কী হতে পারতো?’’ পূর্ব জার্মানির একটি গাড়ি কোম্পানি এই গাড়ি তৈরি করতো৷ এটাকে সাবেক পূর্ব জার্মানির প্রতীক হিসেবেও দেখা হতো৷
ছবি: picture-alliance/dpa/P. Gercke
5 ছবি1 | 5
দ্বিতীয়কর্মজীবনও সম্ভব
জার্মানিতে সরকারের প্রাক্তন সদস্যদের গোপনীয়তার শপথ মেনে চলতে হয়৷ সে সব কথা পেটে রাখতে হলেও পরামর্শদাতা এবং রাজনৈতিক আঙিনায় অসংখ্য যোগাযোগের সুবাদে এমন ব্যক্তিরা শিল্পবাণিজ্য জগতে বেশ জনপ্রিয়৷ ম্যার্কেলের কয়েকজন পূর্বসূরি বেসরকারি ক্ষেত্রে কাজ করেছেন৷ যেমন হেলমুট স্মিট ১৯৮২ সালে সাপ্তাহিক ‘ডি সাইট' পত্রিকার প্রকাশক হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন৷ ২০১২ সালে এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, কোনো লেকচারের জন্য তিনি ১৫,০০০ ডলারের কম পারিশ্রমিক না নেবার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন৷
হেলমুট কোল ও গেয়ারহার্ড শ্র্যোডার প্রাক্তন চ্যান্সেলর হিসেবে স্মিটের তুলনায় আরও বেশি আয়ের মুখ দেখেছেন৷ কোল রাজনীতি ও স্ট্র্যাটেজিক সংক্রান্ত পরামর্শ দিতে নিজেই একটি কোম্পানি প্রতিষ্ঠা করেন৷ লবিয়িং করে ও পরামর্শ দিয়ে তিনি মোটা অংকের আয় করেছেন৷
শ্র্যোডারকে ঘিরে বিতর্ক
প্রাক্তন চ্যান্সেলর হিসেবে গেয়ারহার্ড শ্র্যোডার ২০০৫ সালে কার্যকালের কয়েক মাস পরেই নর্ড স্ট্রিম নামের পাইপলাইন কোম্পানির হয়ে আসরে নেমে প্রবল সমালোচনার মুখে পড়েন৷ চ্যান্সেলর হিসেবে রাশিয়ার গাজপ্রম কোম্পানির এই প্রকল্পের হয়ে তদ্বির করে তার পরেই সেই কোম্পানির সঙ্গে জড়িয়ে পড়ার বিষয়টি ছিল অত্যন্ত দৃষ্টিকটু৷ সেই ঘটনার পর আইন প্রণয়ন করে স্থির করা হয়েছে, যে জার্মানির কোনো প্রাক্তন চ্যান্সেলরকে নতুন কাজ নেবার আগে চ্যান্সেলর দফতরে জানাতে হবে৷ প্রস্তাবিত সেই ভূমিকা রাষ্ট্রীয় স্বার্থ ক্ষূণ্ণ করতে পারে কিনা, এক এথিক্স কমিটি সরকারকে সে বিষয়ে পরামর্শ দেবে৷ তেমন আশঙ্কা দেখা দিলে সরকার ১৮ মাস পর্যন্ত নিষেধাজ্ঞা জারি করতে পারে৷
ম্যার্কেলের স্বামী আপাতত বার্লিনেই
ম্যার্কেল কি স্বেচ্ছাসেবী হিসেবে নতুন কোনো কাজ করতে চাইবেন? এখনো পর্যন্ত তিনি সে বিষয়ে কোনো উচ্চবাচ্চ্য করেন নি৷ আপাতত তিনি বার্লিনেই থাকবেন বলে মনে হচ্ছে৷ কারণ তার স্বামী ইওয়াখিম সাউয়ার কোয়ান্টাম রসায়নের প্রোফেসর হিসেবে এখনো কাজ গুটিয়ে আনার কথা ভাবছেন না৷ ৭২ বছর বয়সি সাউয়ার আগেই আনুষ্ঠানিকভাবে অবসর নিলেও আপাতত ২০২২ সাল পর্যন্ত বার্লিনের হুমবল্ট বিশ্ববিদ্যালয়ে সিনিয়র রিসার্চার হিসেবে চুক্তিবদ্ধ রয়েছেন৷
শিল্পীর চোখে ম্যার্কেল
বিশ্বের ক্ষমতাধর ব্যক্তিদের তালিকা প্রথম সারির একজন জার্মান চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেল৷ বুধবার ৬৫ বছর পূর্ণ করেছেন তিনি৷ জন্মদিনে দেখে নিন, কীভাবে শিল্পের তুলিতে ধরা পড়েছেন ম্যার্কেল৷
ছবি: Elizabeth Peyton
বিবর্তন
‘ক্ষমতার পদচিহ্ন‘ নামের সিরিজে আঙ্গেলা ম্যার্কেল, সাবেক চ্যান্সেলর গেরার্ড শ্র্যুডার ও সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইওশকা ফিশারকে তুলে ধরেছেন আলোকচিত্রী হেরলিন্ডে কোয়েলব্ল ৷ ছবি ও সাক্ষাৎকারের মাধ্যমে রাজনীতিকদের বিবর্তন তুলে ধরেছেন তিনি৷
ছবি: Herlinde Koelbl
পপ আইকন
ভগ ম্যাগাজিনের জন্য ২০১৭ সালে ম্যার্কেলের এই চিত্রটি এঁকেছেন মার্কিন চিত্রশিল্পী এলিজাবেথ পেইটন৷ যৌবনের ছাপ রাখা ছবিতে তাঁর দৃঢ়তাকে তুলে ধরতে চেয়েছেন শিল্পী৷ ম্যার্কেলের ৩০ বছরের রাজনৈতিক জীবনের কয়েকশ’ ছবি থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে ছবিটি আঁকা হয়েছে৷
ছবি: Elizabeth Peyton
মানবিকতা
২০১৫ সালে এভাবে টাইম ম্যাগাজিনের পারসন অব দ্য ইয়ার সংখ্যার প্রচ্ছদে স্থান পান আঙ্গেলা ম্যার্কেল৷ ছবির শিল্পী কলিন ডেভিডসন বলেন, ‘‘তাঁকে শান্ত ও নরম মনের মানুষ হিসাবে দেখানো হয়েছে, শরণার্থীদের প্রতি তাঁর মানবিক অবস্থানের কারণে৷’’ সেসময় ইউরোপের ঋণ এবং শরণার্থী সংকটে মানবিকতার হাত প্রসারিত করেছিলেন ম্যার্কেল৷
ছবি: picture-alliance/AP Photo/Time Magazine
অবসাদ
ডাচ শিল্পী এরিক ফন লিশাউটের তুলিতে এভাবে ধরা দিয়েছেন অবসাদগ্রস্ত ও বিষন্ন ম্যার্কেল৷ বন শহরের সমসায়মিক চিত্রকর্মের সংগ্রহশালা সংগ্রহ করেছে এ চিত্রটি৷ ফন লিশাউট বলেছেন, প্রতিকৃতিটি আঁকতে মাত্র এক ঘন্টা সময় নিলেও লাল লিপিস্টিকে অন্যরকমভাবে ফুটে উঠেছেন জার্মান চ্যান্সেলর৷
ছবি: Erik van Lieshout
জর্জ ডাব্লিউ বুশের তুলিতে
কেবল প্রখ্যাত শিল্পীদের নয়, শখের বশে চিত্রকরদের তুলিতে ধরা পড়েছেন ম্যার্কেল৷ সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট জর্জ ডাব্লিউ বুশ তুলিতে যে ত্রিশ বিশ্বনেতার ছবি এঁকেছেন, তাঁদের একজন ম্যার্কেল৷
ছবি: picture-alliance/dpa/L. W. Smith
রাজনীতির দেয়ালচিত্র
দক্ষিণ অ্যামেরিকার রাজনৈতিক বক্তব্য সম্বলিত ম্যুরালটি এঁকেছেন ইটালিয়ান শিল্পী ইয়ুপিতারফাব৷ চিত্রটিতে গ্রীসের প্রধানমন্ত্রী অ্যালেক্সিস সিপ্রাসের সঙ্গে অন্তরঙ্গ হতে দেখা যায় ম্যার্কেলকে৷
ছবি: picture-alliance/NurPhoto/G. Georgiou
রম্যচিত্র
আর্ট জাদুঘরের সংগ্রহশালার অন্যতম অনুষঙ্গ রাজনৈতিক রম্যচিত্র৷ এই ছবিতে উলঙ্গ ম্যার্কেলে কোলে উঠে পড়েছেন নেপোলিয়ান হ্যাট পড়া সাবেক ফরাসি প্রেসিডেন্ট সারকোজি৷ এঁকেছেন ব্রিটিশ শিল্পী ও রম্যলেখক কায়া মার৷
ছবি: picture-alliance/Photoshot/B. Strenske
সংলাপ
বুলেগিরার স্টারো জেলেজারে গ্রামে এই দেয়ালচিত্রটি এঁকেছেন চারুকলার শিক্ষার্থীরা৷ স্থানীয় বাসিন্দাদের ছবি দিয়ে দেয়ালচিত্রটির সূচনা হলেও পরে ম্যার্কেলের মতো রাজনীতিকদের সেখানে অন্তর্ভূক্ত করা হয়৷ সাধারণ মানুষের সঙ্গে ম্যার্কেলের সংলাপ দেখানো হয় তাতে৷
ছবি: picture-alliance/NurPhoto/H. Rusev
প্রতিবাদ
প্রতিবাদী অনেক ভাস্কর্যে বিকৃতভাবে ম্যার্কেল উপস্থাপন করা হয়েছে ম্যার্কেলকে৷ ‘ইউরোপিয়ান সিটিজেনশিপ‘ শিরোনামের ভাস্কর্যে ম্যার্কেলকে তুলে ধরা হয়েছিল মুণ্ডুহীন৷ উপরের ছবিটি ‘ট্রানজিট‘ নামক ইনস্টলেশনের, যেখানে দুই হাজার ৬০০ জনের একজন ম্যার্কেল৷
ছবি: Courtesy Georg Korner
হিপস্টার
‘হিপস্টোরি’ নামের সিরিজে ক্ষমতাবান ও প্রভাবশালী ব্যক্তিদের তরুন হিপস্টার হিসাবে তুলে ধরার চেষ্টা চালিয়েছেন ইসরায়েলি ইলুস্ট্রেটর আমিত শিমোনি৷ হাওয়াইয়ান শার্ট পড়া ট্রাম্প আর উঁচু খোপার ওবামার সঙ্গে ম্যার্কেল আছে সেখানে৷ কালো হ্যাট আর লিপিস্টিক পড়া ম্যার্কেলকে এভাবে হিপস্টার বানিয়েছেন শিমোনি৷
ছবি: picture-alliance/dpa/M. Kappeler
ব্যঙ্গচিত্র
কুঁচকানো চোখ আর মুখসমেত ম্যার্কেলের ছবিও কম আঁকা হয়নি৷ জার্মানির বাইরের বহু গণমাধ্যমেও এমন সব চিত্রায়ন দেশ ছাড়িয়ে তাঁর বিশ্বনেতা হওয়ার প্রমাণ বহন করে৷