1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

নির্বাচনে গণমাধ্যমের ভূমিকা

২৪ ডিসেম্বর ২০১৮

বাংলাদেশের একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আর মাত্র কয়েকদিন বাকি৷ নির্বাচনের প্রস্তুতি চলছে সব স্থানে৷ গণমাধ‌্যমেও প্রস্তুতির শেষ নেই৷ সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ সংবাদ প্রচার করতেই এত আয়োজন দেশের গণমাধ্যমগুলোর৷

Bangladesh Zeitungen
ছবি: DW

পশ্চিমা বিশ্বের মতো বাংলাদেশের গণমাধ্যম নির্বাচনে সরাসরি সমর্থন দেওয়ার সুযোগ পায় না৷ ফলে একটি সংবাদ মাধ্যমের রাজনৈতিক সমর্থনগত অবস্থান যা-ই হোক না কেন বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ প্রকাশেই তারা সচেষ্ট থাকে বা থাকতে হয়৷

তবে সম্প্রতি প্রশ্ন উঠেছে গণমাধ্যমের ভূমিকা নিয়ে৷ একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন বেশ কয়েকটি গণমাধ্যমের মালিক৷ এসব গণমাধ্যমের নির্বাচনি সংবাদ প্রকাশ কতটা বস্তুনিষ্ঠ এবং দলীয় প্রভাবমুক্ত হবে, সে নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে৷ অতীতেও সংবাদপত্র মালিক বা সম্পাদকের নির্বাচনে অংশ নেওয়ার বেশ কিছু উদাহরন আছে৷ দেশের শীর্ষ স্থানীয় সংবাদপত্র ইত্তেফাকের প্রকাশক ও  সাবেক সম্পাদক আনোয়ার হোসেন মঞ্জু'র মন্ত্রীত্বও দেখেছে এবং দেখছে বাংলাদেশের জনগণ৷

কাজী মারুফ

This browser does not support the audio element.

এ প্রসঙ্গে কলামিস্ট চিররঞ্জন সরকার বলেন, ‘‘গণমাধ্যম হচ্ছে সাধারণ মানুষের মুখপাত্র৷ এখানে সব দলমতের প্রতিফলন থাকে৷ ঘটনা, খবর-মত-মন্তব্য কোনো পক্ষকে খুশি কিংবা অখুশি করার জন্য করা হয় না৷ থাকে বস্তুনিষ্ঠতা৷ কিন্তু গণমাধ্যমের মালিক পক্ষ যদি নির্বাচনে অংশ নেন, তাহলে তিনি আর দলনিরপেক্ষ থাকেন না৷ তিনি হয়ে যান দলের৷ আর মালিকানার সুবাদে সেই দলীয় প্রভাব প্রত্যক্ষ কিংবা পরোক্ষভাবে পড়ে সেই গণমাধ্যমের ওপর৷ এতে করে গণমাধ্যমের বস্তুনিষ্ঠ ও নিরপেক্ষ চরিত্র হারিয়ে যায়৷ কোনো মালিক গণমাধ্যমকে তাঁর ব্যক্তিগত রাজনৈতিক আদর্শ প্রচারের ক্ষেত্রে লিফলেটে পরিণত করেন৷ এতে স্বাধীন ও নিরপেক্ষ গণমাধ্যমের পবিত্রতা ক্ষুণ্ণ হয়৷ গণমাধ্যমের মালিকপক্ষ নির্বাচন করলে অবশ্যই সেই গণমাধ্যমের সঙ্গে ‘কনফ্লিকট অফ ইন্টারেস্ট' ঘটে৷ এটা আমাদের মতো ক্ষুদ্র মানসিকতাসম্পন্ন ও দলতন্ত্রের দেশে না ঘটাই ভালো৷''

নির্বাচন বিশ্লেষক কাজী মারুফ ইসলাম বলেন, ‘‘এটা খুব স্পষ্ট যে, বাংলাদেশের নাগরিক হিসাবে মালিকপক্ষ নির্বাচন করতে পারে৷  অন্যদিকে সংবাদ মাধ্যমের সামাজিক দায়িত্ব রয়েছে৷ তবে মালিকপক্ষ যখন নির্বাচনে অংশ নেয়, তখন বস্তুনিষ্ঠতা নিয়ে প্রশ্ন থাকে৷ নির্বাচন বিষয়ক সংবাদ প্রকাশ নিয়ে একটা সংশয় দেখা দেয়৷ আর আমাদের মিডিয়া হাউসগুলোতে পূর্ণ পেশাদারিত্ব না থাকার ফলে মালিকপক্ষের আদর্শ ও রাজনৈতিক অবস্থান সংবাদ উৎপাদনে প্রভাব ফেলতে পারে৷'' 

 তিনি মনে করেন,  মালিকপক্ষের আদর্শ এবং সংবাদ প্রকাশে পেশাদারি আচরণে স্পষ্ট পার্থক্য না করা গেলে  গণমাধ্যমের বস্তুনিষ্ঠ ভূমিকা প্রশ্নবিদ্ধ হবেই৷

সৈয়দ ইশতিয়াক রেজা

This browser does not support the audio element.

এই মুহূর্তে যেসব সংবাদ মাধ্যমের মালিকরা নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন তাদের গণমাধ্যমে এর কেমন প্রভাব দেখছেন- এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, ‘‘সব সংবাদমাধ্যম অনুসরণ করা হয়নি, তবে স্পষ্ট দেখেছি, গাজী টেলিভিশনে সরকারি দলের বিজ্ঞাপন ও তাদের কিছু কন্টেন্ট রয়েছে, যেটি সরকারপক্ষীয়৷'' তাদের কিছু প্রকাশিত সংবাদেও পক্ষপাতিত্ব স্পষ্ট বলে উল্লেখ করেন কাজী মারুফ৷ তিনি আরো বলেন, ‘‘এটি এমন না যে, শুধু মালিকপক্ষ নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে তাই সংবাদ প্রকাশে পক্ষপাতিত্ব রয়েছে৷ এখন সব নিউজ মিডিয়ার সংবাদেই পক্ষপাতিত্ব স্পষ্ট, সরকারের সঙ্গে নানাভাবে সব মালিক পক্ষই সংযুক্ত বলা যায়৷''

এদিকে এবারও জাতীয় নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন নারায়ণগঞ্জ-১ আসনের সংসদ সদস্য ও গাজী গ্রুপের চেয়ারম্যান গোলাম দস্তগীর গাজী (বীরপ্রতীক)৷ তিনি একাধারে জনপ্রিয় টেলিভিশন চ্যানেল গাজী টিভি ও অনলাইন সংবাদমাধ্যম সারাবাংলার চেয়ারম্যান৷  তাঁর নির্বাচনে অংশ নেওয়া নিয়ে  গাজী টিভি ও সারাবাংলার  প্রধান সম্পাদক সৈয়দ ইশতিয়াক রেজা বলেন, ‘‘চেয়ারম্যান বা মালিক হিসেবে তাঁকে একটু বাড়তি কাভারেজ দেওয়ার চেষ্টা করি আমরা এডিটোরিয়াল সিদ্ধান্ত থেকেই৷ এটাকেই প্রভাব বলা যায়৷ নতুবা জিটিভি বা সারাবাংলার সংবাদ প্রকাশ থেকে শুরু করে কোনো বিষয়েই তিনি কখনোই কোনো কথা বলেন না৷ তিনি কখনোই তাঁর দলীয় মতামত সংবাদ প্রকাশের ক্ষেত্রে চাপিয়ে দেননি৷ সংবাদ প্রকাশের ভঙ্গি ও কোন সংবাদ প্রকাশ হবে সেই সিদ্ধান্ত আমরা সম্পাদকরাই নেই৷''

 

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য
স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ