যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে কি কারচুপি হয়েছে? উইস্কনসিন, মিশিগান ও পেনসিলভেনিয়া- এই তিন রাজ্যে সাইবার হামলার ফলে ভোটগণনায় গোলমাল হয়ে থাকতে পারে বলে বিশেষজ্ঞরাই আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন৷
বিজ্ঞাপন
এই বিশেষজ্ঞদের মাঝে নির্বাচন সংক্রান্ত আইনজীবী ও ডাটা বিশেষজ্ঞও আছেন৷ তাঁদের নেতৃত্ব দিচ্ছেন ভোটাধিকার বিষয়ক অ্যাটর্নি জন বোনিফাজ ও কমপিউটার বিজ্ঞানী জে. অ্যালেক্স হ্যালডারম্যান৷ তাঁরা হিলারি ক্লিন্টনের ক্যামপেইন টিমকে সংশ্লিষ্ট তিনটি রাজ্যে মোট ভোটের পুনর্গণনা দাবি করার পরামর্শ দিয়েছেন৷
নিউ ইয়র্ক ম্যাগাজিন প্রথমে বিশেষজ্ঞদের এই আহ্বানের খবর দেয়, যার মূল বক্তব্য ছিল, যেসব কাউন্টিতে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন ব্যবহার করা হয়েছে, সেখানে ক্লিন্টন প্রত্যাশার চেয়ে কম ভোট পেয়েছেন৷ কিন্তু কেন? প্রেসিডেন্ট-ইলেক্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প উইস্কনসিন আর পেনসিলভেনিয়ায় জিতেছেন সামান্য কিছু ভোটে, মিশিগানে স্বল্প ব্যবধানে৷
জে. অ্যালেক্স হ্যালডারম্যান মিশিগান বিশ্ববিদ্যালয়ের সেন্টার ফর কমপিউটার সিকিউরিটি অ্যান্ড সোসাইটি কেন্দ্রটির পরিচালক৷ বুধবার ‘মিডিয়াম-'এ পোস্ট করা একটি লেখায় তিনি বিশেষ করে উল্লেখ করেছেন যে, বিশেষজ্ঞ গোষ্ঠীর কাছে সাইবার অ্যাটাক বা ভোটে অনিয়মের কোনো প্রমাণ নেই৷ কিন্তু তা যদি সত্যিই ঘটে থাকে, তাহলে তার লক্ষ্য হতো সম্ভবত এই ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনগুলি, কেননা ইন্টারনেট থাক আর না-ই থাক, মেশিনগুলিকে ম্যালওয়্যার দিয়ে সংক্রমিত করা সম্ভব, যার ফলে তারা ভোটের টোটাল বদলে দেবে৷ অপরদিকে অনেক ভোটিং মেশিন কাগজেও ভোট লিপিবদ্ধ করে, যা পরীক্ষা করে দেখা যেতে পারে, ইলেকট্রনিক টোটালগুলো ঠিক কিনা৷
বিশেষ করে পেনসিলভেনিয়াতে হ্যাকিং করা সবচেয়ে সহজ হবে, কেননা সেখানকার ৯৬ শতাংশ মেশিনে কোনো পেপার অডিট ট্রেইল বা কাগজের রেকর্ড নেই৷ সেক্ষেত্রে উইস্কনসিনের অধিকাংশ কাউন্টির ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনগুলিতে পেপার ট্রেইল আছে৷ আর মিশিগানে তো কাগজের ভোটপত্র ব্যবহার করা হয়৷
প্রাক-নির্বাচনি সমীক্ষায় ক্লিন্টন তিনটি রাজ্যেই এগিয়ে ছিলেন৷ অপরদিকে তথাকথিত ‘রাস্ট বেল্ট' বা বন্ধ হয়ে যাওয়া কলকারখানা অঞ্চলে ট্রাম্পের অর্থনৈতিক আশাবাদিতা যে সাড়া জাগাবে, সেটা তার ক্যাম্পেইনের লোকেরা ভালোভাবেই জানতেন৷ ট্রাম্প নিজে একাধিকবার পেনসিলভেনিয়ায় ক্যাম্পেইন করেছেন এবং শেষের দিকে উইস্কনসিন ও মিশিগানের উপর জোর দিয়েছেন৷
ওদিকে ভোট পুনর্গণনার আবেদন করার শেষ তারিখ এগিয়ে আসছে তিনটি রাজ্যেই - বলতে কি, আগামী কয়েক দিনের মধ্যেই, যেমন উইস্কনসিনে রিকাউন্টের পিটিশন জমা দেবার শেষ দিন হলো এই শুক্রবার, ২৫শে নভেম্বর, ২০১৬৷
এসি/এসিবি (এপি, এএফপি, ডিপিএ)
ট্রাম্পকে নিয়ে কার্টুন: না হেসে উপায় কী!
ট্রাম্পের জয়ে বিশ্ব জুড়ে কার্টুনিস্টদের পোয়াবারো
ছবি: Getty Images/AFP/Y. Cortez
মেক্সিকোয় ট্রাম্পের জন্য ‘দেয়াল’
মেক্সিকো সীমান্তে দেয়াল তোলার কথা বলেছিলেন ট্রাম্প৷ তাই অলঙ্করণ শিল্পী আর্টুরো কেম্চস মেক্সিকো সিটির ক্যারিকেচার মিউজিয়ামে একটি প্রদর্শনীর আয়োজন করেছেন৷ কেম্চস ইবেরো-অ্যামেরিকান ইউনিয়ন অফ গ্র্যফিক হিউমরিস্টস সমিতির সভাপতি৷ প্রদর্শনীর জন্য তিনি তাঁর সতীর্থদের কাছ থেকে শত শত ড্রয়িং পেয়েছেন৷
ছবি: Getty Images/AFP/Y. Cortez
২০১৭ সাল থেকে ভ্রাম্যমান প্রদর্শনী
‘ট্রাম্প: এ ওয়াল অফ ক্যারিকেচার্স’ প্রদর্শনীটির উদ্বোধন হয় গত অক্টোবর মাসে৷ ইউরোপীয় শিল্পীরাও এই প্রদর্শনীতে অবদান রেখেছেন৷ অনেক কার্টুনে নাৎসিদের প্রতি ইঙ্গিত করা হয়েছে৷ সাড়া জাগানো প্রদর্শনীটি ২০১৭ সালের সূচনায় অন্যান্য শহরে যাবে, এমনকি যুক্তরাষ্ট্রের একাধিক শহরে দেখানো হবে৷
ছবি: Getty Images/AFP/Y. Cortez
ফ্যাশন গুরু কার্ল লাগারফেল্ডও কম যান না
ট্রাম্প সম্পর্কে ফ্যাশন ডিজাইনার কার্ল লাগারফেল্ড লিখেছেন, ‘‘রাজনীতিতেও উনি মহিলাদের দিকে এমনভাবে তাকান যেন ঘোড়ার ব্যাপারি৷’’ কার্টুনের মাঝখানে যে মূর্তিটিকে রেখেছেন, তিনি হলেন জার্মানির দক্ষিণ ঘেঁষা এএফডি দলের প্রধান ফ্রাউকে পেট্রি৷ পেট্রিরও নাকি কার্টুনটা ভালো লেগেছে৷
ছবি: picture-alliance/dpa/Frankfurter Allgemeine Magazin
#হেয়ারফোর্সওয়ান
ট্রাম্পের চুল নিয়ে ঠাট্টা-মশকরা গোড়া থেকেই চলেছে৷ কোথায় নরওয়ের কোন মাঠে খড় পড়ে রয়েছে, তার ছবি ডোনাল্ড ট্রাম্পের ‘পরচুলোর খামার’ হিসেবে ইন্টারনেট মাতিয়েছে৷ কাজেই মার্ক নাইট মার্কিন প্রেসিডেন্টের এয়ারফোর্স ওয়ান বিমানকেও ট্রাম্পের হেয়ারস্টাইলে সজ্জিত করেছেন৷
ছবি: Twitter/@Knightcartoons
আফ্রিকান দৃষ্টিকোণ
আব্দুলকরিম বাবা আমিনু নাইজেরিয়ার একজন বিশিষ্ট সাংবাদিক, শিল্প সমালোচক ও অলঙ্করণ শিল্পী৷ তাঁর কার্টুনের ক্যাপশন হলো, ‘‘ডোনাল্ড ট্রাম্প কৃষ্ণাঙ্গদের ঘৃণা করেন বলে আমরা দেশ ছেড়ে চলে যাব৷ তারপর তিনি এই দেশ নিয়ে যা খুশি করুন!’’
ছবি: DW/Abdulkareem Baba Aminu
স্ট্যাচু অফ লিবার্টি ক্যানাডার দ্বারস্থ
কার্টুনিস্ট ইগ্রেক-এর ট্রাম্প-বিরোধী কার্টুনগুলোতে প্রায়ই স্ট্যাচু অফ লিবার্টির দেখা পাওয়া যায়৷ এখানে ট্রাম্পের জয়ের পর ‘লিবার্টি’ বা স্বাধীনতা দেশ ছেড়ে পালাচ্ছেন৷ টুইটারে ইংরেজিতে @ইগ্রেক দেখুন৷
ছবি: Twitter/@ygreck
যে কেউ প্রেসিডেন্ট হতে পারে
বেলজিয়ামের অলঙ্করণ শিল্পী লেকটরর (টুইটারে ইংরেজিতে @লেকটরর) ট্রাম্পকে নিয়ে অনেক কার্টুন এঁকেছেন৷ এই কার্টুনটার বক্তব্য হলো, ‘‘যে কেউ প্রেসিডেন্ট হতে পারে’’, এই কথাটার মানে মাত্র আট বছরে কিভাবে বদলে গেছে...
ছবি: Twitter/@lectrr
দেয়াল লিখন
স্পেনের বার্সেলোনায় ২০১৬ সালের গ্রীষ্মে এই গ্র্যাফিটির উদয়: চোয়াড়ে চেহারার এক গুণ্ডা প্রকৃতির মানুষ৷ সেই ডোনাল্ড ট্রাম্পের জয়ে ‘অর্ধেক পৃথিবী নির্বাক’, লিখেছিলেন স্প্যানিশ দৈনিক ‘এল পাইস’-এর এক কলামনিস্ট৷
ছবি: Getty Images/AFP/J. Lago
গুয়ের মাছি
পথশিল্পী হানস্কি যখন প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্পের এই কার্টুনটি আঁকেন, ট্রাম্প তখনো রিপাবলিকান দলের মনোনয়ন পাননি৷ নিউইয়র্কের লোয়ার ইস্ট সাইডের একটি শপিং এলাকার দেয়ালে স্প্রে করে ছবিটি আঁকা হয় ২০১৫ সালের আগস্ট মাসে৷
ছবি: picture-alliance/abaca/Van Tine Dennis
ধর্মের নামে
গাডো আফ্রিকার সবচেয়ে বিখ্যাত কার্টুনিস্টদের অন্যতম৷ ট্রাম্প তাঁর নির্বাচনি প্রচারণায় বলেছিলেন, ‘‘আমি খ্রিষ্টধর্মের ঐতিহ্য বজায় রাখার প্রতিশ্রুতি দিচ্ছি৷’’ তাই গাডো তাঁর কার্টুনে দেখিয়েছেন, ট্রাম্প কিভাবে মুসলিমদের ক্রুশবিদ্ধ করছেন৷