1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

নির্বাচনে যেতে বিএনপির সাত দফা

হারুন উর রশীদ স্বপন ঢাকা
৩০ সেপ্টেম্বর ২০১৮

সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে রবিবার সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের সমাবেশ থেকে বিএনপি সাত দফা দাবি পেশ করেছে৷ সরকারের পদত্যাগ ও জাতীয় সংসদ বাতিল করে নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন চায় দলটি৷

ছবি: bdnews24.com

বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সমাবেশে এই সাত দফা দাবি পেশ করেন৷ তিনি বলেন, ‘‘দাবি আদায়ে ধাপে ধাপে কর্মসূচি দেয়া হবে৷'' তারই অংশ হিসেবে আগামী ৩ অক্টোবর সারা দেশের জেলায় সমাবেশ, সমাবেশের পর জেলা প্রশাসক বরাবর স্মারকলিপি প্রদান এবং ৪ অক্টোবর সারাদেশের মহানগরগুলোতে সমাবেশ ও বিভাগীয় কমিশনার বরাবর স্মারকলিপি প্রদানের কর্মসূচি দিয়েছে বিএনপি৷

নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার আগেই বিএনপি তাদের সাত দফা দাবি মেনে নেয়ার আহ্বান জানিয়েছে সরকারকে৷ বিএনপির দাবিগুলো হলো:

১. বিএনপির চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার নিঃশর্ত মুক্তি এবং তার বিরুদ্ধে দায়ের করা সব মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার৷

২. জাতীয় সংসদ বাতিল করা৷

৩. সরকারের পদত্যাগ ও সব রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আলোচনা সাপেক্ষে নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকার প্রতিষ্ঠা করা৷

৪. সুষ্ঠু নির্বাচনের স্বার্থে প্রতিটি ভোটকেন্দ্র ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতাসহ সশস্ত্র বাহিনী নিয়োগ নিশ্চিত করা৷

৫. নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহার না করার বিধান নিশ্চিত করা৷

৬. নির্বাচনের স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে দেশীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষক নিয়োগের ব্যবস্থা নিশ্চিত করা এবং সম্পূর্ণ নির্বাচন প্রক্রিয়া পর্যবেক্ষণে তাদের ওপর কোনো ধরনের বিধি-নিষেধ আরোপ না করা৷ যোগ্য ব্যক্তিদের সমন্বয়ে নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠন করতে হবে৷

৭. (ক) দেশের সব বিরোধী রাজনৈতিক নেতাকর্মীর মুক্তি, সাজা বাতিল ও মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার৷ (খ) নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার তারিখ থেকে নির্বাচনী ফল চূড়ান্তভাবে প্রকাশিত না হওয়া পর্যন্ত চলমান সব রাজনৈতিক মামলা স্থগিত রাখা ও নতুন কোনও মামলা না দেওয়ার নিশ্চয়তা৷ (গ) পুরনো মামলায় কাউকে গ্রেপ্তার না করার নিশ্চয়তা৷ (ঘ) কোটা সংস্কার আন্দোলন, নিরাপদ সড়কের দাবিতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলন, সাংবাদিকদের আন্দোলন এবং সামাজিক গণমাধ্যমে স্বাধীন মতপ্রকাশের অভিযোগে ছাত্র-ছাত্রী, সাংবাদিকসহ সবার বিরুদ্ধে দায়ের করা হয়রানিমূলক মামলা প্রত্যাহার ও গ্রেফতারকৃতদের মুক্তির নিশ্চয়তা৷

জনসভায় মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সভাপতিত্বে সমাবেশে বক্তব্য রাখেন দলের কেন্দ্রীয় নেতারা৷

সমাবেশে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুণ ইসলাম খান বলেন, ‘‘আমরা রাজপথে নামলে শেখ হাসিনা পদত্যাগ করবেন৷ দেশে নিরপেক্ষ ও সুষ্ঠু নির্বাচন হবে৷ সেই নির্বাচনের মাধ্যমে খালেদা জিয়া আবারও প্রধানমন্ত্রী হবেন৷ তারেক রহমান দেশে ফিরে আসতে পারবেন৷ আর যদি রাজপথে না থাকতে পারি, তাহলে এর কোনোটাই হবে না৷''

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন,  ‘‘রাজপথে যে থাকবে তার সঙ্গে ঐক্য হবে৷ সেই যদি শয়তানও হয়, তার সঙ্গে ঐক্য হবে৷''

তিনি আরও বলেন, ‘‘বিএনপি ঐক্যের জন্য প্রস্তুত৷ খালেদা জিয়ার ডাকে যে ঐক্য যাত্রা শুরু হয়েছিল, সেই ঐক্য মানুষের মনে আশার তৈরি করেছিল৷ সেই ঐক্যের জন্য বিএনপি প্রস্তুত৷ এই ঐক্যে অনৈক্যের সুর বাজলে জনগণ থুতু দেবে৷''

মাহবুব উল আলম হানিফ

This browser does not support the audio element.

সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে কারাবন্দি খালেদা জিয়ার সম্মানে চেয়ার খালি রাখা হয়৷ ব্যানারেও তাকে প্রধান অতিথি হিসেবে উল্লেখ করা হয়৷ প্রধান বক্তা ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন৷

তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় অবশ্য বিএনপির এই সাত দফা দাবিকে একরকম উড়িয়েই দিয়েছে আওমী লীগ৷ দলটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘বিএনপির এই দাবি অসাংবিধানিক এবং বেআইনি৷ নির্বাচন হবে সংবিধান অনুযায়ী৷ সংসদ ভেঙ্গে দেয়া এবং সরকারের পদত্যাগের প্রশ্নই ওঠে না৷''

তিনি বলেন, ‘‘খালেদা জিয়ার কিরুদ্ধে যে মামলায় শাস্তি হয়েছে তা আমাদের সময় করা নয়৷ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময়ে৷ আদালত শাস্তি

দিয়েছে৷ তারা সব মামলা প্রত্যাহার দাবি করে আইনের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে৷ আর নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে সব মামলা প্রত্যাহার করা হবে কেন? ২০১৩-১৪ সালের হত্যা, হামলার বিচার হবে না?''

হাফিজ উদ্দিন খান

This browser does not support the audio element.

তবে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা হাফিজ উদ্দিন খানও বিএনপির দাবির সাথে একমত৷ ডয়চে ভেলেকে তিনি বলেন, ‘‘বিএনপি যে দাবি দিয়েছে তা ছাড়া সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন সম্ভব নয়। এই নির্বাচন কমিশন দিয়ে নিরপেক্ষ নির্বাচন আশা করা যায় না। তাদের সে দক্ষতাও নেই। ক্ষমতাও নেই।’’

তিনি বলেন, ‘‘বাংলাদেশে দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন কখনো সুষ্ঠু এবং নিরপেক্ষ হয়নি। তাই নির্বাচনের জন্য  নির্দলীয়-নিরপেক্ষ সরকার প্রয়োজন। নির্বাচনের আগে অবশ্যই সংসদ ভেঙে দিতে হবে। নির্বাচনের সময় সেনাবাহিনী মোতায়েনও প্রয়োজন।’’

খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবি প্রসঙ্গে অবশ্য ভিন্ন মত তাঁর৷ তিনি বলেন, ‘‘নির্বাচনের সঙ্গে খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবি জড়ানো ঠিক না।’’

 

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

আরো সংবাদ দেখান
স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ