1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

‘নির্বাচন কমিশন আইন ফল নিশ্চিতের আইন’

৪ ফেব্রুয়ারি ২০২২

‘ডয়চে ভেলে খালেদ মুহিউদ্দীন জানতে চায়’ টকশোতে বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ড. শাহদীন মালিক বলেন, ‘‘কাজে আইনের মোড়ক থাকলে সরকার সহজেই বলে আইনের বাইরে কিছু বলছি না৷ আইনের মোড়ক পরানো হয় সরকারের গ্রহণযোগ্যতার জন্য৷’’

খালেদ মুহিউদ্দীন জানতে চায়ছবি: DW

নির্বাচন কমিশন আইন কি নিরপেক্ষ জাতীয় নির্বাচন নিশ্চিত করতে পারবে? এই প্রসঙ্গে টকশোয়ে মুখোমুখি হন বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ড. শাহদীন মালিক এবং আওয়ামী লীগের তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক ড. সেলিম মাহমুদ৷

ড. মাহমুদের দাবি, ‘‘নির্বাচন কমিশন আইন দীর্ঘ সময় ধরে আলোচিত৷ ১৯৭২ সালের সংবিধানেও উল্লেখ রয়েছে৷ ২০১১ সালেও খসড়া হয়েছিল আইনের৷ ২০১৭ সালে নেত্রী প্রস্তাবনা দিয়ে আগে বলেছিলেন আইনের বিধানের কথা৷ কয়েকমাস ধরেই জানা ছিল আইন হবে৷ সরকারের তরফ থেকে মনে করা হচ্ছে প্রয়োজন৷''

নতুন নির্বাচন কমিশন আইন রাষ্ট্রপতি কি জানতেন? ডয়চে ভেলের বাংলা বিভাগের প্রধানের উত্তরে ড. মাহমুদের দাবি, ‘‘নাগরিক সমাজের চাপ ছিল আইনের৷ রাষ্ট্রপতি কোনও পক্ষ নন৷ রাষ্ট্রপতি সবার কথা শুনেছেন৷ সংবিধান রক্ষা এবং গোপনীয়তার শপথও নিতে হয় রাষ্ট্রপতিকে৷'' 

নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠন কেন সবাই জানতেন না, এই প্রশ্নের উত্তরে ড. মাহমুদ জানান, অধ্যাদেশ দিয়ে আইন পাস করার চাপও ছিল৷ একাধিক দল ও সুশীল সমাজের চাপ ছিল৷ তাড়াহুড়ো করে এই আইন করা হয়নি৷

আগামী নির্বাচনে ফল নিশ্চিতের আইন?

ড. মালিকের কথায়, বাংলাদেশের বর্তমান রাষ্ট্রব্যবস্থায় নির্বাচন কমিশন যত শক্তিশালী হোক না কেন,প্রধানমন্ত্রী না চাইলে স্বাধীন নির্বাচন করা কঠিন৷ আইন থাকলে সব কাজেই সুবিধা হয়৷

ইউটিউব টক শোতে ড. মাহমুদ জানান, আওয়ামী লীগ রাষ্ট্রের পক্ষে যা দরকার, সব করবে৷ ক্ষমতা সবার জন্য খুলে দিয়েছেন৷ রাষ্ট্রপতির অধীনে সার্চ কমিটি করা হয়েছে৷ বর্তমান আইনে ৬ জনের উপর দায়িত্ব রয়েছে৷ ২ জন রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে রায় দিতে পারেন৷ আপিল করতে পারেন৷

ভারতের আইন এবং নির্বাচন কমিশনের স্বাধীনতার প্রসঙ্গ এনে টি এন সেশনের উদাহরণ টানেন তিনি৷ তিনি জানান, কার্যপদ্ধতি নির্ধারণের ক্ষমতা সার্চ কমিটির৷ আইন সবার জন্য৷

এর পাল্টা ড. মালিক বলেন, ‘‘জেতানোর উদ্দেশে কমিশন গঠন করলে তা টি এন সেশনের মতো সুষ্ঠু নির্বাচন উপহার দিতে পারবে না৷ স্থানীয় নির্বাচনে টের পাওয়া গিয়েছে সঠিক কমিশন না৷ যদিও একটা অভিজ্ঞতা থেকে বলা যায় না৷ মূল উদ্দেশ্য, সরকারের কাঙ্ক্ষিত ফল নিশ্চিত করা৷ সরকারও একটু কোণঠাসা৷ তাই নির্বাচন কমিশন প্রথম থেকে আস্থাহীনতায় ভুগবে৷ আগামী কমিশন কাজের সুযোগও পাবে না৷''

ড. মালিকের বক্তব্য, বর্তমান আইনে সুষ্ঠু নির্বাচন করা গেলেও প্রিসাইডিং অফিসার নিয়োগের এক সপ্তাহ আগে থেকে কাজ না করলে সরকার যদি তাকে রেখে দেয়, তাকে সরানো যাবে না৷ ওসিকে যদি সরকার না সরায়, তাহলে পরিস্থিতি জটিল হবে৷ 

ড. মাহমুদের পাল্টা জবাব, ‘‘বাংলাদেশের ইতিহাসে এমন আইন কেউ কল্পনা করতে পারবে না৷ বিএনপি খেলার মাঠ ছেড়ে চলে গেছে৷ হতাশা, নেতৃত্বহীনতায় ভুগে বেরিয়ে গেছে বিএনপি৷ গণতন্ত্রের কথা বলেন হাসিনা৷ জনগণ ক্ষমতার উৎস৷ গ্রামে গেলে দেখা যাবে, মানুষ কেন আওয়ামী লীগকে ভোট দিতে চায়৷''

ইভিএম দিয়ে প্রভাবিত সম্ভব?

ড. মালিকের কথায়, সারা বিশ্বে আধা ডজন দেশেও ইভিএম ব্যবহার করা হয় না বোধ হয়৷ ‘‘দুনিয়ার ১৯০টি দেশ না পারলেও আমরা বুঝে ফেললাম, আমাদের দক্ষতা আকাশচুম্বী, '' মন্তব্য ড. মালিকের৷

তার কথায়, কর্তৃত্ববাদী সরকার তৈরি হচ্ছে৷ একই সরকার বারবার জিতলে এমন হবেই৷ আওয়ামী লীগের জনপ্রিয়তা তাই নির্দিষ্ট একটি সমীক্ষা দেখে বোঝা মুশকিল৷

ড. মাহমুদের দাবি, ৩০টির বেশি দেশে ব্যবহার হয় ইভিএম৷ বিএনপিও ইভিএমের বিষয়টিতে সমর্থন করেছিল৷

কর্তৃত্বপরায়ণতা নিয়ে ড. মাহমুদের দাবি, ‘‘জনগণের অবদান হাসিনার অবদান অতুলনীয়৷ ভোটাধিকার সংরক্ষণ সরকারের দায়িত্ব৷ মানুষ শুধু আওয়ামী লীগকেই ভোট দিতে চায়, কারণ আওয়ামী লীগ কাজ করে৷ আন্তর্জাতিক যে কোনও পদ্ধতিতে ভোট হোক, আওয়ামী লীগ সেই পথে যাবে৷''

ড. মালিক অবশ্য বলেন, ‘‘বিশ্বের ৭০ ভাগ দেশে নির্বাচন কারচুপি হয়৷ সৌদি আরব, উত্তর কোরিয়া, চীন নির্বাচনই হয় না৷'' ক্যামেরুনের প্রসঙ্গ টেনে তার দাবি, কারচুপিতে পারঙ্গম বিশ্বের বেশিরভাগ কর্তৃত্ববাদী সরকার৷ অনেক পদ্ধতিতে বিরোধীদের সরানো যায়৷ আগামী নির্বাচনে বর্তমান সরকার আসবে কমিশনে ব্যাপারটা দেখে এমনটাই মনে হচ্ছে৷

নিরপেক্ষ নির্বাচনের সুযোগ আছে? সাংবিধানিক উপায় আছে?

ড. মালিক বলেন, ‘‘সরকারের সদিচ্ছা থাকলে সংবিধান লঙ্ঘন না করেও কাজ করা সম্ভব৷ ৫ জন যদি সরে যান৷ নতুন ৫ জনকে গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব দেওয়া যেতে পারে৷ প্রধানমন্ত্রী অফিসের কাজ না করে নির্বাচনী প্রচার করতে পারেন৷''

বিএনপির রাজনৈতিক পদক্ষেপে দূরদর্শিতার অভাব ছিল তাই শক্ত অবস্থান নেই, এ কথাও বলেন তিনি৷

ড. মাহমুদের বক্তব্য, ‘‘সংসদের পক্ষ থেকে সবরকম সহযোগিতা করা হয়েছে৷ ফ্রিডম হাউসের স্টাডি বলছে, ৬৭টা দেশে নিম্নগামী  গণতন্ত্রের গ্রাফ৷ এর মধ্যে ইউরোপের দেশও রয়েছে৷ বাংলাদেশে গণতন্ত্রের মডেল পাশ্চাত্য মডেল৷ স্বাধীন বাংলাদেশের বয়স ৫০ বছর৷ এই দেশ এগোতে চায়৷ হাসিনা যে অবদান রেখেন, মানুষ আওয়ামীকে সমর্থন করবেই৷''

ড. মালিক বলেন, ‘‘ক্ষমতায় থাকলে পুনর্নিবার্চিত হবেন, এমন সবাই বলেন৷ পাশাপাশি বিরোধীরা বলবেন, সরকারকে জণগণ অপছন্দ করেন৷''

আরকেসি/এআই

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ