বাংলাদেশের কোনো নাগরিক এসএসসি পাস করলেই নির্বাচন পর্যবেক্ষক হতে পারেন। নির্বাচন কমিশনের নীতিমালায় সেরকমই বলা আছে। আর বিদেশিদের ব্যাপারে দেশীয় নীতিমালার সঙ্গে স্বরাষ্ট্র ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন থাকতে হয়৷
বিজ্ঞাপন
ইলেকশন মনিটরিং ফোরাম (ইএমএফ) নামে বাংলাদেশি একটি নির্বাচন পর্যবেক্ষণ প্রতিষ্ঠানের ব্যানারে চার বিদেশির প্রাক নির্বাচন পর্যবেক্ষণে আসার ঘটনা নিয়ে প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। তারা নির্বাচন কমিশন, পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীসহ কয়েকটি রাজনৈতিক দলের সঙ্গে বৈঠকও করছেন। ইএমএফ-এর প্রধান আবেদ আলী ডয়চে ভেলেকে বলেন, " তারা (বিদেশি) নাগরিক সমাজের প্রতিনিধি, সাংবাদিক। সাংবাদিকরা সবচেয়ে বড় নির্বাচন পর্যবেক্ষক।” তার কথা, "যারা আমাকে পছন্দ করেন না, তারা আমার প্রতিষ্ঠানের সমালোচনা করেন।” এই প্রতিষ্ঠানটি ২০১৮ সালেও নির্বাচন পর্যবেক্ষণের জন্য কয়েকজন বিদেশিকে নিয়ে এসেছিল। তারা তখন বাংলাদেশের নির্বাচনের প্রশংসা করেন।
নির্বাচন পর্যবেক্ষকের ‘যোগ্যতা'
২০১৭ সালের নির্বাচন পর্যবেক্ষণ নীতিমালায় নির্বাচনে পর্যবেক্ষক হওয়ার জন্য কোনো ব্যক্তির আট ধরনের যোগ্যতার কথা বলা হয়েছে। তার মধ্যে বয়স, অরাজনৈতিক, কোনো প্রার্থীর পক্ষে কাজ না করার সঙ্গে শিক্ষাগত যোগ্যতা সর্বনিম্ন এসএসসি পাসের কথা বলা হয়েছে। তবে এই পর্যবেক্ষকদের নির্বাচন কমিশনে নিবন্ধিত কোনো পর্যবেকক্ষণ সংস্থার সঙ্গে যুক্ত থাকতে হবে।
যে কাউকে বিশেষজ্ঞ বানিয়ে আনলে তো প্রশ্ন উঠবে: রফিকুল ইসলাম
নির্বাচনের আগে এই সংস্থাগুলোকে কমিশন আবেদনের ভিত্তিতে নিবন্ধন দেয়। এবার নির্বাচনে পর্যবেক্ষক হতে ১৯৯টি সংস্থা আবেদন করেছে। আগে থেকেই কমিশনে ১১৮টি সংস্থা নিবন্ধিত ছিল। তাদের মেয়াদ গত ১১ জুলাই শেষ হয়েছে। যারা আবেদন করেছে, তাদের মধ্যে ৪০টির নিবন্ধন ১১ জুলাই পর্যন্ত ছিল। বাকিগুলো নতুন।
২০১৮ সালের নির্বাচন পর্যবেক্ষণে ইউরোপীয় ইউনিয়নের কোনো পর্যবেক্ষক টিম না এলেও দেশি ৮১টি পর্যবেক্ষক সংস্থার ২৫ হাজার ৯০০ জন এবং ওআইসি ও কমনওয়েলথ থেকে আমন্ত্রিত ও অন্যান্য বিদেশি পর্যবেক্ষক ৩৮ জন, কূটনৈতিক বা বিদেশি মিশনের কর্মকর্তা ৬৪ জন এবং বাংলাদেশে দূতাবাস বা হাইকমিশন বা বিদেশি সংস্থায় কর্মরত বাংলাদেশি ৬১ জন নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করছেন।
ওই সময় নির্বাচন পর্যবেক্ষণকারী আলোচিত দুটি সংস্থা ‘সার্ক হিউম্যান রাইটস ফাউন্ডেশন' এবং ‘ইলেকশন মনিটরিং ফোরাম'-এর কাজ নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। এই দুইটি প্রতিষ্ঠানেরই প্রধান আলোচিত আবেদ আলী। ‘সার্ক হিউম্যান রাইটস ফাউন্ডেশন' আসলে সার্কের কোনো প্রতিষ্ঠান নয়। এটির নামের সঙ্গে সার্ক জুড়ে দেয়া হয়েছে।
নির্বাচন কমিশনের অতিরিক্ত সচিব অশোক কুমার দেবনাথ বলেন, "আমরা সব সমই চাই যেন বেশি সংখ্যায় দেশি-বিদেশি পর্যবেক্ষক নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করেন। আমাদের এজন্য দুইটি আলাদা নীতিমালা আছে। সেটা আমরা অনুসরণ করি। কিন্তু যারা পর্যবেক্ষণের কাজ করেন, তারা তাদের ব্যাপারে যে তথ্য দেন তা আমরা সত্য ধরে নিই। কারণ, ওই তথ্য যাচাইয়ের কোনো ব্যবস্থা আমাদের নেই। আর বিদেশি পর্যবেক্ষকদের বিষয়টি আসলে দেখে স্বরাষ্ট্র ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। আমরা অনুমোদন দিই। কিন্তু তারা ক্লিয়ারেন্স না দিলে বিদেশিরা ভিসা পান না।”
তিনি জানান, "ইউরোপীয় ইউনিয়সহ আরো যে চার বিদেশি প্রাক নির্বাচন পর্যবেক্ষণে এসেছেন, এটা নির্বাচন পর্যবেক্ষণ নয়। তাই আমাদের অনুমোদনেরও প্রয়েজন হয়নি। তাদের বিষয়টি স্বরাষ্ট্র ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় দেখেছে। তারা এখানে এসে আমাদের অ্যাপয়ন্টমেন্ট নিয়ে কথা বলেছেন। তাদের ব্যাকগ্রাউন্ড চেক করার সুযোগ আমাদের নেই।”
সাবেক নির্বাচন কমিশনার রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘‘নির্বাচনের সময় যারা পর্যবেক্ষণ করবেন, তাদের অনুমোদন দেয় নির্বাচন কমিশন। আর আমরা বিদেশিদের অনুমতি দিলেও যে তারা নির্বাচন পর্যবেক্ষণে আসতে পারবেন, তা কিন্তু নয়। আমাদের সময়ে আমরা অনেক বিদেশি পর্যবেক্ষণ সংস্থাকে অনুমোদন দিয়েছিলাম। কিন্তু তারা সবাই আসতে পারেননি। স্বরাষ্ট্র ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ক্লিয়ারেন্স না দেয়ায় তারা ভিসা পাননি। আবার আবেদ আলী সাহেব যাদের নিয়ে আসতে চেয়েছেন, তারা আসতে পেরেছেন।”
তিনি জানান, " নীতিমালা অনুযায়ী বিদেশি পর্যবেক্ষকদের কোনো সংগঠন আনতে পারে, রাষ্ট্রও আনতে পারে। সাধারণভাবে নির্বাচন পর্যবেক্ষণের জন্য আন্তর্জাতিক পর্যায়ে পরিচিত প্রতিষ্ঠান, সংস্থা ও ব্যক্তি আছে। তাদের নিয়ে কোনো প্রশ্ন নেই। কিন্তু যে কাউকে বিশেষজ্ঞ বানিয়ে আনলে তো প্রশ্ন উঠবে।”
পর্যবেক্ষণ সংস্থার যোগ্যতা থাকতে হবে: বদিউল আলম মজুমদার
২০২০ সালে ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি নির্বাচন পর্যবেক্ষণে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্যসহ পশ্চিমা দেশের দূতাবাসগুলোইসির কাছে থেকে নির্বাচন পর্যবেক্ষকের কার্ড নেয়। তখন ১০টি দেশের মিশনের মোট ৭৪ জন পর্যবেক্ষক কার্ড পান। তবে এর মধ্যে বিভিন্ন দূতাবাসে চাকরি করা ২৮ জন বাংলাদেশি ছিলেন। বাকি ৪৬ জন বিদেশি পর্যবেক্ষক। বাংলাদেশি ২৮ জনকে নিয়েও প্রশ্ন উঠেছিল।
নির্বাচন কমিশনে পর্যবেক্ষক সংস্থা হিসেবে নিবন্ধিত হতে হলে তাদের সুশাসন, মানবাধিকার ও গণতন্ত্র নিয়ে কাজের অভিজ্ঞতার কথা বলা হয়েছে। বলা হয়েছে ভোটাধিকার ও সুষ্ঠু নির্বাচন নিয়ে প্রচারের কাজের কথা।
সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন)-এর সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদার বলেন, "নির্বাচনে পর্যবেক্ষক হতে হলে তাকে উচ্চ শিক্ষিত হতে হবে এমন কোনো কথা নেই। এসএসসি পাস হলেই হয়, যদি কাজটি তারা পারেন। কিন্তু যারা পর্যবেক্ষণ সংস্থা পরিচালনা করবেন, তাদের তো অভিজ্ঞতা ও যোগ্যতা থাকতে হবে।” তার কথা, "আবেদ আলী সাহেব যে চার জন বিদেশিকে নিয়ে এসেছেন, তাদের তো কোনো অভিজ্ঞতা নেই। ২০১৮ সালেও তিনি বিদেশিদের এনে জালিয়াতি করেছেন, এখনো একই কাজ করছেন। নির্বাচন কশিমনের নীতিমালা যদি এই জালিয়াতির সুযোগ করে দেয়, তাহলে তা বদলানো উচিত।” তবে আবেদ আলী বলেন, তাদের আমন্ত্রণে যারা প্রাক নির্বাচন পর্যবেক্ষণে এসেছিলেন তারা হলেন যুক্তরাষ্ট্রের টেরি ইসলে, আয়ারল্যান্ডের নিক পল, চীনের এন্ডি লিন ও জাপানের ইউসুকি সুগো। তারা সুশীল সমাজের প্রতিনিধি, সমাজ সেবক এবং রাজনৈতি বিশ্লেষক বলেও দাবি তার৷ তাদের মধ্যে একজন সাংবাদিক। তিনি জানান, " সামনের নির্বাচনে আমাদের বড় পর্যবেক্ষক দল থাকবে। সেখানেও বিদেশি পর্যবেক্ষকরা থাকবেন।”
বাংলাদেশে রাজনীতি ও নির্বাচন নিয়ে বিদেশিদের যত মন্তব্য
নির্বাচন ঘনিয়ে এলেই বাংলাদেশের রাজনীতিতে বিদেশি কূটনীতিকদের সরব উপস্থিতি দেখা যায়৷ ২০০০ সালের পর থেকে এমন কয়েকটি উল্লেখযোগ্য ঘটনা থাকছে ছবিঘরে৷
২০০০ সালের পর থেকে অনুষ্ঠিত জাতীয় নির্বাচনগুলোর প্রায় প্রত্যেকটির আগে বিভিন্ন দেশের কূটনীতিক ও রাষ্ট্রদূতদের কথা বলতে দেখা গেছে৷ বিদেশি কূটনীতিকদের এমন আচরণকে সবসময় ক্ষমতাসীন দল ‘শিষ্টাচার লঙ্ঘন’ হিসেবে অভিহিত করে। আর ক্ষমতার বাইরে থাকলে তা ‘গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার’ পদক্ষেপ৷
ছবি: AP
‘স্টুপিড রাষ্ট্রদূত’
চার দলীয় জোট সরকারের মেয়াদ শেষের আগে নির্বাচন নিয়ে বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূত ও কূটনীতিকদের তৎপরতা দেখা যায়৷ তৎকালীন যোগাযোগমন্ত্রী ব্যরিস্টার নাজমুল হুদা বলেন, ‘‘কিছু কিছু দালাল রাষ্ট্রদূত মহাজোটকে (আওয়ামী লীগ ও তার জোট) সংবিধান ধ্বংসের উসকানি দিচ্ছেন৷ তাদের কর্থাবার্তা স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের প্রতি হুমকিস্বরুপ৷’’ বাংলাদেশে মার্কিন ও ব্রিটিশ রাষ্ট্রদূতকে ‘স্টুপিড’ হিসেবে অভিহিত করেন তিনি৷
ছবি: Mortuza Rashed/DW
২০ বছর পর আওয়ামী লীগের মুখেও একই সুর
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ঘোষণা করেছে ভিসা নীতি। কথা বলছেন ইউরোপীয় ইউনিয়নের কূটনীতিকেরাও। দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপের শামিল বা বিতর্ক সৃষ্টি করে এমন বিষয় বা অনুষ্ঠান থেকে কূটনীতিবিদেরা বিরত থাকবেন বলে আশা পররাষ্ট্রমন্ত্রীর৷
ছবি: DW
২০০১ সালের নির্বাচনের আগে ঢাকায় সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট
২০০১ সালের নির্বাচনকে সামনে রেখে আগস্টে ঢাকায় আসেন সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট জিমি কার্টার। ‘সুষ্ঠু নির্বাচন ও গণতন্ত্রকে সুসংহত‘ করতে প্রধান রাজনৈতিক দলগুলোর সাথে আলোচনায় বসেন তিনি৷ ঢাকা ত্যাগের আগে সংবাদ সম্মেলনে কার্টার জানান, ১) সংসদ বর্জন নয় ২) হরতাল নয় ৩) সন্ত্রাস নয় ৪) ভোটকেন্দ্রে স্থানীয় পর্যবেক্ষক এবং ৫) কমপক্ষে ৬০জন নারী এমপি, এই পাঁচ প্রশ্নে একমত হয়েছে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি৷
ছবি: John Amis/REUTERS
‘বাংলাদেশ ট্রাবলসাম হয়ে উঠেছে’
চারদলীয় জোট সরকারের আমলে সারাদেশে বোমা বিস্ফোরণের ঘটনা, জঙ্গিবাদের উথ্থানে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে আলোচনায় আসে বাংলাদেশ৷ এমন প্রেক্ষিতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের তৎকালীন পরররাষ্ট্রমন্ত্রী কন্ডোলিৎসা রাইসের এক বক্তব্য বেশ আলোড়ন তোলে৷ তিনি বলেন, ‘‘বাংলাদেশ বেশ ট্রাবলসাম বা সমস্যাসংকুল হয়ে উঠেছে এবং এ ব্যাপারে আমাদের (যুক্তরাষ্ট্র ও ভারত) কিছু করতে হবে।’’
ছবি: DW/O. Sawizky
বাংলাদেশ বিষয়ে মার্কিন কংগ্রেসম্যানদের চিঠি
সম্প্রতি বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের কাছে লেখা ছয় মার্কিন কংগ্রেসম্যানের চিঠি নিয়ে আলোচনা শুরু হয়েছে বাংলাদেশের রাজনীতিতে৷ এমন ঘটনা নতুন নয়৷ ২০০৫ সালে চারদলীয় জোট সরকারের আমলে ১৬ বা ১৮ জন মার্কিন কংগ্রেসম্যান-সিনেটর পররাষ্ট্রমন্ত্রী কন্ডোলিৎসা রাইসকে তৎকালীন প্রেসিডেন্ট বুশের কাছে বাংলাদেশের রাজনৈতিক সহিংস জঙ্গিবাদের ব্যাপারটি উথ্থাপন করার অনুরোধ জানান৷
ছবি: Anna Moneymaker/Getty Images
এক-এগারো সরকার ও কূটনীতিকেরা
চারদলীয় জোট সরকারের মেয়াদ শেষ হবার আগেই বাংলাদেশে শুরু হয় রাজনৈতিক অস্থিরতা৷ তত্ত্বাবধায়ক সরকার, প্রধান নির্বাচন কমিশনার ইত্যাদি বিষয়ে সম্পূর্ণ দুই মেরুতে অবস্থান নেয় সেসময় ক্ষমতায় থাকা বিএনপি ও প্রধান বিরোধী দল আওয়ামী লীগ। এমন পরিস্থিতিতে নির্বাচনের আগে থেকেই তৎপরতা শুরু করে কূটনীতিকেরা।
ছবি: DW
সরব পশ্চিমারা
চারদলীয় জোটের সময়কালে অনুষ্ঠিত নির্বাচন নিয়ে বেশ তৎপরতা দেখা যায় পশ্চিমা কূটনীতিকদের৷ ২০০৬ সালের ৮ ডিসেম্বর তৎকালীন রাষ্ট্রপতি ও প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর ইয়াজউদ্দিন আহম্মেদকে ফোন করেন মার্কিন আন্ডার সেক্রেটারি নিকোলাস বার্নসে৷ সব দল যাতে নির্বাচনে অংশ নিতে পারে সেই ব্যবস্থা নিতে পরামর্শ দেন৷
ছবি: Jakub Porzycki/NurPhot/picture alliance
যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূতের 'কফি গ্রুপ’
সেনা সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে ঢাকাস্থ পশ্চিমা কূটনীতিকেরা বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি পর্যালোচনার জন্য নিজেদের মধ্যে নিয়মিত বৈঠক করতেন। যার নাম দেয়া হয়েছিল ‘কফি গ্রুপ’। এর সাথে সম্পৃক্ত ছিল অ্যামেরিকা, ব্রিটেন, ক্যানাডা, অস্ট্রেলিয়া, জার্মানি ও জাতিসংঘের প্রতিনিধি। এই গ্রুপে জাপানকেও আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল। উইকিলিকসে প্রকাশিত তথ্য এমন ইঙ্গিত দেয়।
ছবি: DW
চাকরির নিশ্চয়তা চান সেনাপ্রধান
বাংলাদেশের সেনাপ্রধান মইন উ আহমেদ সেসময়ের ভারতীয় পররাষ্ট্রমন্ত্রী প্রণব মুখার্জির কাছে চাকরির নিশ্চয়তা চেয়েছিলেন। পরে ভারতের রাষ্ট্রপতি পদে অধিষ্ঠিত প্রণব মুখার্জি ‘দ্য কোয়ালিশন ইয়ার্স’ এ জানান, মইন উ আহমেদের আশঙ্কা ছিল, শেখ হাসিনা ক্ষমতায় এলে তাকে চাকুরিচ্যুত করা হবে। তার চাকরির দায়িত্ব প্রণব মুখার্জি ব্যক্তিগতভাবে নিয়েছিলেন বলে উল্লেখ করেন।
ছবি: DW / Samir Kumar Dey
সুজাতা সিংয়ের বিতর্কিত সফর
২০১৪ সালের দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রধান বিরোধী বিএনপি তত্ত্বাবধায়ক সরকার ছাড়া নির্বাচনে যাবে না এমন অবস্থানে অনড়৷ সেবছরের পাঁচ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা নির্বাচন৷ ঠিক এক মাস আগে ঢাকা সফর করেন ভারতের পররাষ্ট্র সচিব সুজাতা সিং। অনকের দাবি, সুজাতা সিং জাতীয় পার্টির প্রধান হুসেইন মোহাম্মদ এরশাদকে নির্বাচনে আসতে অনুরোধ জানান৷ এর ফলে বিএনপিকে ছাড়া আওয়ামী লীগের পক্ষে নির্বাচন আয়োজন সহজ হয়৷
ছবি: DW
পুলিশ রাতে ব্যালট ভর্তি করেছে: জাপানের রাষ্ট্রদূত
দ্বাদশ নির্বাচনের আগে হঠাৎ করেই একাদশ নির্বাচন নিয়ে মন্তব্য করে আলোচনায় আসেন জাপানের সাবেক রাষ্ট্রদূত ইতো নাওকি৷ তিনি বলেন, ‘‘বাংলাদেশে গত নির্বাচনে (২০১৮ নির্বাচনে) পুলিশের বিরুদ্ধে ব্যালট বাক্স ভর্তি করার যে অভিযোগ উঠেছে, অন্যান্য দেশের ক্ষেত্রে কখনোই এমনটা শুনিনি। আশা করি আগামী নির্বাচনে এ ধরনের ঘটনা ঘটবে না। জাপান আশা করে বাংলাদেশের আসন্ন নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক হবে।’’
ছবি: U.S. Embassy Dhaka
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা নীতি
সম্প্রতি বাংলাদেশের নতুন ভিসা নীতি ঘোষণা করেছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র৷ ৷ ২৪ মে ঘোষিত ওই ভিসানীতিতে বলা হয়েছে, সুষ্ঠু নির্বাচন বাধাগ্রস্ত করলে ভিসা নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হতে পারে৷ এদিকে ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) রাষ্ট্রদূত চার্লস হোয়াইটলি চ্যানেল 24-কে বলেন, সুষ্ঠু নির্বাচন হলে ইউরোপের বাজারে ‘জিএসপি প্লাস’ সুবিধার দুয়ার খুলতে পারে।
সার্বভৌমত্ব, স্বাধীনতা ও আঞ্চলিক অখণ্ডতা রক্ষার পাশাপাশি অভ্যন্তরীণ ও বৈদেশিক নীতি সমুন্নত রাখার প্রশ্নে বাংলাদেশের প্রতি চীনের অকুণ্ঠ সমর্থন রয়েছে বলে জানিয়েছেন চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ওয়াং ওয়েনবিন। অবশ্য এক সপ্তাগ আগে গত শুত্রবার বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে উপহারসামগ্রী পাঠিয়েছে ঢাকার চীনা দূতাবাস।