1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

নির্বাচন মানেই আকাশপথে যুদ্ধ!

পায়েল সামন্ত কলকাতা
৬ ফেব্রুয়ারি ২০২১

দলবদল ঘিরে সরগরম পশ্চিমবঙ্গের রাজনীতি৷ তাতে অন্য মাত্রা যোগ করেছে একটি চার্টার্ড বিমান৷ এই বিমানের ব্যবহার বুঝিয়ে দিয়েছে, রাজ্যে ভোটের প্রচারে এবার বিপুল টাকা খরচ করবে রাজনৈতিক দলগুলি৷

Indien Privathubschrauber für den Wahlkampf
ছবি: Payel Samanta/DW

ভোটের মুখে তৃণমূল থেকে একের পর এক বড় থেকে ছোট নেতা পদ্ম শিবিরে যোগ দিচ্ছেন৷ চার্টার্ড বিমানে সওয়ার রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়-সহ অন্যান্য নেতারা দিল্লি গিয়ে অমিত শাহের হাত ধরে বিজেপিতে যোগ দেন৷ এভাবে বিশেষ বিমানে সফরের পর যোগদান ঘিরে প্রশ্ন উঠছে৷ আর নির্বাচনের সময় বিভিন্ন জনসভায় যোগ দেওয়ার জন্য হেলিকপ্টার সফর শুরু হল বলে! রাজনীতিকদের মতে, বিমান-কপ্টার ছাড়া দেশের সব প্রান্তের মানুষের কাছে পৌঁছনো প্রায় অসম্ভব৷ তা বলে শুধু দলে যোগ দেয়ার জন্য বিমান ভাড়া করা হচ্ছে! তা হলে কি এ বারের বিধানসভা ভোটের প্রচারে আকাশপথের দখলদারি নিয়ে প্রতিযোগিতা চলবে?

পশ্চিমবঙ্গের ভোট প্রচারে হেলিকপ্টার ব্যবহারের রেওয়াজ বেশি দিনের নয়৷ বাম নেতারা প্রচারে যেতেন সড়কপথে৷ তৃণমূলের হাত ধরেই মূলত এই রেওয়াজ পশ্চিমবঙ্গে এসেছে৷ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বময় নেত্রী, তিনিই দলের ক্রাউড পুলার‍৷ তাই তাকে রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে সফর করতে হয়৷ প্রয়োজন হয় হেলিকপ্টারের৷ এ নিয়ে বামপন্থিরা মমতার সমালোচনা করতে ছাড়েন না৷ প্রাক্তন তৃণমূল সাংসদ, চিটফান্ড মামলায় ধৃত কে ডি সিংয়ের বিশেষ বিমানে দলের নেতারা সফর করেছেন বলে শোনা যায়৷ ২০১৫ সালে রাজ্য সরকার সিদ্ধান্ত নেয়, বিভিন্ন স্থানে ২১টি স্থায়ী হেলিপ্যাড তৈরি হবে৷ এর জন্য খরচ ধরা হয়েছিল ১৬ কোটি টাকা৷ সরকার পরিকাঠামোর কথা বললেও বিরোধীদের অভিযোগ, তৃণমূল নেত্রীকে প্রচারের সুবিধা করে দিতেই এই পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছিল৷

রতন খাসনবিস

This browser does not support the audio element.

দেশের শাসক দল বিজেপি কিংবা বিরোধী কংগ্রেসের শীর্ষ নেতারা নিয়মিতই আকাশপথে সফর করেন৷ এ নিয়ে দুই দলই একে অপরের দিকে আঙুল তোলে৷ গত লোকসভা নির্বাচনে কংগ্রেস ও বিজেপি দলের মধ্যে চার্টার্ড বিমান এবং হেলিকপ্টার ব্যবহার নিয়ে বাকযুদ্ধ হয়েছিল৷ কংগ্রেসের মুখপাত্র, প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী আনন্দ শর্মা বলেছিলেন, ‘‘এ এক অসম লড়াই৷ নেতাদের প্রচারের জন্য বিমান-হেলিকপ্টার পাওয়া যাচ্ছে না৷ প্রচারে সাড়ে চার হাজার কোটি টাকা খরচ করছে বিজেপি৷’’ যদিও প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বিরোধীদের অভিযোগ খারিজ করে দিয়েছেন৷ তিনি মন্তব্য করেন, ‘‘বিরোধীদের কাছে অর্থশক্তি আর বিজেপির আছে জনশক্তি৷’’

রাজনৈতিক দলগুলি ভোটের প্রচারে কপ্টার, ব্যক্তিগত বিমান ব্যবহার করে৷ তাই ভোট বাজারে রীতিমতো পৌষমাস বেসরকারি উড়ান সংস্থাগুলির৷ সাধারণভাবে একটি হেলিকপ্টার প্রতি ঘণ্টায় ৫০ হাজার থেকে দেড় লক্ষ টাকা ভাড়া নেয়৷ এক-দুই ঘণ্টা নয়, প্রচারের সময় দিনে কয়েক ঘণ্টার জন্য হেলিকপ্টার ভাড়া নিতে হয় রাজনৈতিক দলগুলিকে৷ পশ্চিমবঙ্গে নির্বাচনের দিনক্ষণ ঘোষিত হলে প্রধানমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ছাড়াও বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব বারবার রাজ্যে প্রচারে আসবেন৷ নির্বাচনী প্রচারে ঝড় তুলবেন তাঁরা, ফলে হেলিকপ্টার ব্যবহারে বৃদ্ধি অবশ্যম্ভাবী৷ গত বিহার বিধানসভা ভোটে দেখা গিয়েছে, অন্যবারের তুলনায় অনেক কম হেলিকপ্টার, বিমান ব্যবহার হয়েছে৷ করোনা অতিমারীর জেরে ভোটের প্রচারে সামাজিক মাধ্যমে জোর দেওয়া হয়েছিল৷ পশ্চিমবঙ্গে সংক্রমণ নিম্নগামী৷ জনজীবন স্বাভাবিক ছন্দে ফিরেছে৷ ফলে নির্বাচনের প্রচারে কাটছাঁট হবে বলে মনে হয় না৷

নির্বাচন কমিশন ইতিমধ্যে প্রত্যেক প্রার্থীর নির্বাচনি খরচের ঊর্ধ্বসীমা বাড়িয়েছে৷ ২৮ লক্ষ খেকে ৩০ লক্ষ ৮০ হাজার টাকা৷ কিন্তু, পুরনো প্রশ্নটি সামনে আসছে৷ কীভাবে ভোটের বেহিসেবি খরচে লাগাম টানা যাবে? অর্থনীতিবীদ রতন খাসনবিস ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘এ বার বাংলার ভোটে দেখা যাবে হেলিকপ্টার যুদ্ধ৷ এর জন্য শিল্পপতিদের কাছ থেকে অনুদান নেয় রাজনৈতিক দলগুলি৷ ক্রোনি ক্যাপিটালিস্টরা এর সুযোগ নেয়৷ তারা প্রচারের টাকা দেয়, বিনিময়ে সরকারের কাছ থেকে সুবিধা আদায় করে৷ কেন্দ্র ও রাজ্যে একই ছবি৷’’ নির্বাচনি সংস্কারের মাধ্যমে শিল্পপতি নয়, রাষ্ট্রের অনুদানে দলগুলির ভোটে লড়ার প্রস্তাব এসেছে বারবার৷ কিন্তু তা বাস্তবায়িত হয়নি৷ তাই কবীর সুমনের গানটাই সত্যি হয়ে ওঠে প্রতি নির্বাচনে— নেতা আসছেন, পাখা ঘুরছে, নেতা ভাসছেন, ভাসছেন, হেলিকপ্টার!

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ