এমনকি যারা জোট করার আশায় আছেন তারাও নির্বাচনী প্রতীক হিসেবে আওয়ামী লীগের নির্বাচনী প্রতীক নৌকাই চাইছেন৷
চারদিনে আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন ফর্ম বিক্রি হয়েছে তিন হাজার ৩৬২টি৷ এতে দলটির আয় হয়েছে ১৬ কোটি ৮১ লাখ টাকা৷ মঙ্গলবার মনোনয়ন ফর্ম বিক্রি শেষ হয়ছে৷
বিশ্লেষক ও আওয়ামী লীগ নেতা এবং প্রার্থী হতে ইচ্ছুকদের সাথে কথা বলে এর বেশ কয়েকটি কারণ জানা গেছে৷ এরমধ্যে সবচেয়ে বড় কারণ, ফর্ম ক্রেতারা মনে করছেন, বিএনপি যেহেতু নির্বাচনে যাচ্ছে না বলেই মনে হচ্ছে তাই আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেলে জয়ী হওয়া নিশ্চিতই বলা যায়৷ আর ২০১৪ সালের মতো হলে নির্বাচনে তেমন খরচও থাকবে না৷ বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায়ও জয়ী হওয়ার সম্ভাবনা প্রবল হবে৷ এর বাইরেও কেউ প্রচার পেতে, কেউ সংসদ নির্বাচনে মনোনয়ন না পেলেও উপজেলা পরিষদসহ স্থানীয় সরকারের আরও যে নির্বাচন আছে তাতে মনোনয়ন নিশ্চিত করার জন্য অথবা রাষ্ট্রের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের পরিচালনা পর্ষদে জায়গা পেতে এটাকে ব্যবহার করতে চান৷ আর যিনি মনোনয়ন পাবেন তার সঙ্গে দর কষাকষিরও একটা পথ হবে এই মনোনয়ন চাওয়া৷
বিশ্লেষকেরা মনে করছেন, বিএনপি শেষ পর্যন্ত নির্বাচনে না গেলেবিভিন্ন আসনে আওয়ামী লীগের অনেক বিদ্রোহী প্রার্থী হওয়ার আশঙ্কা আছে এবার৷ কারণ আওয়ামী লীগের অনেক এমপিই এখন এলাকায় জনপ্রিয় নন৷ বিদ্রোহী প্রার্থীরা সেই সুযোগ নিতে চাইবেন৷ আর এর বাইরেও বিএনপিসহ আরো অনেক স্বতন্ত্র প্রার্থী হওয়ার আশঙ্কা আছে৷ আর সেটা হলেও আওয়ামী লীগ নির্বাচনে নতুন এক পরিস্থিতির মুখে পড়তে পারে৷
ঝালকাঠি-১ আসন থেকে এরইমধ্যে ১০-১২ জন মনোনয়ন ফরম কিনেছেন৷ তাদের একজন হলেন আওয়ামী লীগের মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক কমিটির সদস্য ও সাবেক ছাত্রনেতা মনিরুজ্জামান মনির৷ তার কথা, ‘‘দলের হাইব্রিডরা এবারও তৎপর৷ এইরকম দুই হাজার হাইব্রিডের তালিকা করা হয়েছিলো ব্যবস্থা নেয়ার জন্য৷ তাদের মধ্যে এমপিও আছেন৷ কিন্তু তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হয়নি৷ এর বাইরে কেউ প্রচার পেতে, কেউ যদি পেয়ে যাই এই মনোভাব থেকে৷ আবার কেউ মনে করছেন মনোনয়ন পেলেই জিতে যাবেন, শিওর শট৷ তবে আমাদের বিশ্বাস এবার ত্যাগী এবং জনপ্রিয়রাই মনোনয়ন পাবেন৷”
স্বাধীন দেশ সবাই মনোনয়ন চাইতে পারেন: তানভীর হাসান
কক্সবাজারের টেকনাফ-উখিয়া আসনে এখন পর্যন্ত ১২ জন মনোনয়ন ফরম কিনেছেন৷ আরো অনেকে কিনতে পারেন বলে জানান টেকনাফ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি নুরুল বাশার৷ তিনি নিজেও মনোনয়ন ফরম কিনেছেন৷ তিনি বলেন, ‘‘এর আগেও দুইবার আমি মনোনয়ন চেয়েছি, পাইনি৷ এবার আশা করি পাবো৷ প্রধানমন্ত্রী যদি চান, আল্লাহ যদি রহমত করে তাহলে পাব৷ এত বছর ধরে রাজনীতি করছি আমাদেরও তো কিছু চাওয়া-পাওয়া আছে৷ এমপি হলে জনগণের সেবা আরো বেশি করতে পারব৷”
তার কথা, ‘‘একেক জনের মনোনয়ন ফর্ম কেনার একেক কারণ৷ কেউ কিনছেন ভবিষ্যতের আশায়৷ এবার না পেলেও ভবিষ্যতে পাবেন ৷ কেউ কিনছেন প্রচার পাওয়ার আশায়৷ আবার কেউ কিনছেন এখানে মনোনয়ন না পেলেও উপজেলা বা স্থানীয় সরকার নির্বাচনে মনোনয়ন পাবেন সেই আশায়৷”
টাঙ্গাইল -২ আসনে আওয়ামী লীগের এমপি তানভীর হাসান ( ছোট মনির) মনে করেন, ‘‘দেশের সেবা করার আগ্রহ থেকেই হয়তো অনেকে এবার মনোনয়ন চাইছেন৷ তবে তাদেরই মনোনয়ন চাওয়া উচিত যাদের দেশের জন্য, মানুষের জন্য কাজ করার ইচ্ছা এবং অভিজ্ঞতা আছে৷ আমি ১৫ বছর জার্মানি ছিলাম৷ দেশে ফিরে মানুষের জন্য কাজ করতে রাজনীতি করছি৷”
বাংলাদেশের কিছু নিবন্ধিত রাজনৈতিক দল
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে বাংলাদেশের রাজনৈতিক অঙ্গন বেশ সরব৷ সব রাজনৈতিক দল নানা কর্মসূচিতে ব্যস্ত৷ বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন কর্তৃক নিবন্ধিত দলগুলোর মধ্যে সক্রিয় ২৩টিকে নিয়ে আজকের এই ছবিঘর.....
ছবি: Rashed Mortuza/DW
এলডিপি
লিবারেল ডেমোক্র্যাটিক পার্টি (এলডিপি)-র নিবন্ধন দেওয়া হয় ২০০৮ সালের ২০ অক্টোবর। দলটির প্রতীক ছাতা। এর নিবন্ধন নাম্বার ০০১। রাজনৈতিক এ দলটির প্রেসিডেন্ট ড. অলি আহমদ (বীর বিক্রম) এবং মহাসচিব ডঃ রেদোয়ান আহমেদ। দলটির কেন্দ্রীয় কার্যালয় ঢাকার তেজগাঁও-এ।
ছবি: Rashed Mortuza/DW
জাতীয় পার্টি
জাতীয় পার্টির নিবন্ধন নাম্বার ০১২। দলটির প্রতীক হচ্ছে লাঙ্গল। এ দলটি নিবন্ধন পায় ২০০৮ সালের ০৩ নভেম্বর। এর বর্তমান চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ কাদের এবং মহাসচিব মোঃ মজিবুল হক। দলটির কেন্দ্রীয় কার্যালয় ঢাকার কাকরাইলে।
ছবি: Rashed Mortuza/DW
বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ
বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের নিবন্ধন নাম্বার ০০৬। দলটির প্রতীক নৌকা। এ দল নিবন্ধন পায় ২০০৮ সালের ০৩ নভেম্বর। এর সভানেত্রী হলেন শেখ হাসিনা এবং সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। দলটির কেন্দ্রীয় কার্যালয় ঢাকার বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে।
ছবি: Rashed Mortuza/DW
বিএনপি
বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)-র নিবন্ধন হয় ২০০৮ সালের ০৩ নভেম্বর। দলটির প্রতীক হচ্ছে ধানের শীষ। এর নিবন্ধন নাম্বার ০০৭। রাজনৈতিক এ দলটির চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া ও মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। দলটির কেন্দ্রীয় কার্যালয় ঢাকার নয়াপল্টনে।
ছবি: Rashed Mortuza/DW
বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টি
বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির প্রতীক হাতুড়ি। এ দল নিবন্ধন পায় ২০০৮ সালের ০৩ নভেম্বর। এর নিবন্ধন নাম্বার ০১০। দলটির কেন্দ্রীয় কার্যালয় ঢাকার তোপখানা রোডে। এর সভাপতি রাশেদ খান মেনন এবং সাধারণ সম্পাদক ফজলে হোসেন বাদশা।
ছবি: Rashed Mortuza/DW
জাসদ
জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল বা জাসদের নিবন্ধন নাম্বার ০১৩। দলটির প্রতীক হচ্ছে মশাল। রাজনৈতিক এ দলটিও নিবন্ধন পায় ২০০৮ সালের ০৩ নভেম্বর। এর সভাপতি হাসানুল হক ইনু এবং সাধারণ সম্পাদক শিরীন আখতার। দলটির কেন্দ্রীয় কার্যালয় ঢাকার বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে।
ছবি: Rashed Mortuza/DW
জাকের পার্টি
জাকের পার্টির নিবন্ধন দেওয়া হয় ২০০৮ সালের ০৯ নভেম্বর। দলটির প্রতীক হচ্ছে গোলাপ ফুল। এর নিবন্ধন নাম্বার ০১৬। রাজনৈতিক এ দলটির চেয়ারপার্সন মোস্তফা আমীর ফয়সল ও মহাসচিব এজাজুর রসুল। দলটির কেন্দ্রীয় কার্যালয় ঢাকার বনানীতে।
ছবি: Rashed Mortuza/DW
বাসদ
বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল বা বাসদের প্রতীক মই। বাংলাদেশে এ দলও নিবন্ধন পায় ২০০৮ সালের ০৯ নভেম্বর। এর নিবন্ধন নাম্বার ০১৭। দলটির কেন্দ্রীয় কার্যালয় ঢাকার তোপখানা রোডে। এর সাধারণ সম্পাদক কমরেড বজলুর রশীদ ফিরোজ।
ছবি: Rashed Mortuza/DW
বিজেপি (বাংলাদেশ)
বাংলাদেশ জাতীয় পার্টি বা বিজেপির নিবন্ধন নাম্বার ০১৮। দলটির প্রতীক হচ্ছে গরুর গাড়ি। রাজনৈতিক এ দলটি নিবন্ধন পায় ২০০৮ সালের ০৯ নভেম্বর। এর চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার আন্দালিব রহমান পার্থ। দলটির কেন্দ্রীয় কার্যালয় ঢাকার নয়াপল্টনে।
ছবি: Rashed Mortuza/DW
বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলন
বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলনের নিবন্ধন হয় ২০০৮ সালের ১৩ নভেম্বর। দলটির প্রতীক হচ্ছে বটগাছ। এর নিবন্ধন নাম্বার ০২০। রাজনৈতিক এ দলটির আমীর হযরত মাওলানা হাফেজ আতাউল্লাহ হাফেজ্জি ও মহাসচিব মাওলানা হাবীবুল্লাহ মিয়াজী। দলটির কেন্দ্রীয় কার্যালয় পুরান ঢাকার লালবাগে।
ছবি: Rashed Mortuza/DW
বাংলাদেশ তরিকত ফেডারেশন
বাংলাদেশ তরিকত ফেডারেশনের প্রতীক ফুলের মালা। বাংলাদেশে এ দলটি নিবন্ধন পায় ২০০৮ সালের ০৯ নভেম্বর। এর নিবন্ধন নাম্বার ০১৯। দলটির কেন্দ্রীয় কার্যালয় ঢাকার ধানমন্ডিতে। এর চেয়ারম্যান আলহাজ্ব সৈয়দ নজিবুল বশর মাইজভান্ডারি ও মহাসচিব আলহাজ্ব ড. সৈয়দ রেজাউল হক চাঁদপুরী।
ছবি: Rashed Mortuza/DW
জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশ
জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশের নিবন্ধন নাম্বার ০২৩। দলটির প্রতীক হচ্ছে খেজুর গাছ। রাজনৈতিক এ দলটি নিবন্ধন পায় ২০০৮ সালের ১৩ নভেম্বর। এর সভাপতি মাওলানা শাইখ জিয়াউদ্দিন ও মহাসচিব মাওলানা মঞ্জুরুল ইসলাম আফেন্দী। দলটির কেন্দ্রীয় কার্যালয় ঢাকার পুরানা পল্টনে।
ছবি: Rashed Mortuza/DW
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের প্রতীক হাতপাখা। বাংলাদেশে এ দলটি নিবন্ধন পায় ২০০৮ সালের ২০ নভেম্বর। এর নিবন্ধন নাম্বার ০৩৪। দলটির কেন্দ্রীয় কার্যালয় ঢাকার পুরানা পল্টনে। এর আমীর হচ্ছেন মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করিম পীরসাহেব চরমোনাই এবং মহাসচিব ইউনুস আহম্মেদ শেখ।
ছবি: Rashed Mortuza/DW
খেলাফত মজলিস
খেলাফত মজলিসের নিবন্ধন দেওয়া হয় ২০০৮ সালের ২২ নভেম্বর। দলটির প্রতীক হচ্ছে দেয়াল ঘড়ি। এর নিবন্ধন নাম্বার ০৩৮। রাজনৈতিক এ দলের আমীর মাওলানা যোবায়ের আহমদ চৌধুরী ও মহাসচিব ড. আহমদ আবদুল কাদের। দলটির কেন্দ্রীয় কার্যালয় ঢাকার বিজয়নগরে।
ছবি: Rashed Mortuza/DW
এনডিএম
জাতীয়তাবাদী গণতান্ত্রিক আন্দোলন বা এনডিএম-এর নিবন্ধন নাম্বার ০৪৩। দলটির প্রতীক হচ্ছে সিংহ। রাজনৈতিক এ দল নিবন্ধন পায় ২০১৯ সালের ৩০ জানুয়ারি। এর চেয়ারম্যান ববি হাজ্জাজ ও মহাসচিব হুমায়ূন পারভেজ খান। দলটির কেন্দ্রীয় কার্যালয় ঢাকার মালিবাগে।
ছবি: Rashed Mortuza/DW
বাংলাদেশ কংগ্রেস
বাংলাদেশ কংগ্রেস নামের রাজনৈতিক দলটির নিবন্ধন দেওয়া হয় ২০১৯ সালের ০৯ মে। দলটির প্রতীক হচ্ছে ডাব। এর নিবন্ধন নাম্বার ০৪৪। রাজনৈতিক এ দলটির চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট কাজী রেজাউল হোসেন ও মহাসচিব মো. ইয়ারুল ইসলাম। দলটির কেন্দ্রীয় কার্যালয় কাজী নজরুল ইসলাম অ্যাভিনিউয়ে।
ছবি: Rashed Mortuza/DW
ইনসানিয়াত বিপ্লব বাংলাদেশ
ইনসানিয়াত বিপ্লব বাংলাদেশের প্রতীক আপেল। বাংলাদেশে এ দলটি নিবন্ধন পায় ২০২৩ সালের ০৮ মে। এর নিবন্ধন নাম্বার ০৪৬। দলটির কেন্দ্রীয় কার্যালয় ঢাকার গুলশানে। এর চেয়ারম্যান ইমাম আবু হায়াত এবং মহাসচিব মোঃ রেহান আফজাল।
ছবি: Rashed Mortuza/DW
বাংলাদেশ জাসদ
বাংলাদেশ জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-বাংলাদেশ জাসদ নিবন্ধন নাম্বার ০৪৭। দলটির প্রতীক হচ্ছে মোটরগাড়ি (কার)। রাজনৈতিক এ দলটি নিবন্ধন পায় ২০২৩ সালের ১৮ জুন। এর চেয়ারম্যান শরীফ নুরুল আম্বিয়া এবং মহাসচিব নাজমুল হক প্রধান। দলটির কেন্দ্রীয় কার্যালয় ঢাকার তোপখানা রোডে।
ছবি: Bangladesh Jasod
বিএনএম
বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী আন্দোলন বা বিএনএম নামের রাজনৈতিক দলটির নিবন্ধন দেওয়া হয় ২০২৩ সালের ১০ আগস্ট। দলটির প্রতীক হচ্ছে নোঙ্গর। এর নিবন্ধন নাম্বার ০৪৮। রাজনৈতিক এ দলটির চেয়ারম্যান ড. আব্দুর রহমান এবং মহাসচিব মেজর মুহাঃ হানিফ (অবঃ)। দলটির কেন্দ্রীয় কার্যালয় ঢাকার বনানীতে।
ছবি: Rashed Mortuza/DW
বিএসপি
বাংলাদেশ সুপ্রিম পার্টি (বিএসপি)-র প্রতীক একতারা। বাংলাদেশে এ দলটি নিবন্ধন পায় ২০২৩ সালের ১০ আগস্ট। এর নিবন্ধন নাম্বার ০৪৯। দলটির কেন্দ্রীয় কার্যালয় ঢাকার মিরপুরে। এর চেয়ারম্যান শাহাজাদা সৈয়দ সাইফুদ্দীন এবং মহাসচিব মোঃ আব্দুল আজিজ সরকার।
ছবি: Rashed Mortuza/DW
গণফোরাম
গণফোরামের নিবন্ধন নাম্বার ০২৪। দলটির প্রতীক হচ্ছে উদীয়মান সূর্য। রাজনৈতিক এ দলটি নিবন্ধন পায় ২০০৮ সালের ১৩ নভেম্বর। এর সভাপতি ডঃ কামাল হোসেন এবং সাধারণ সম্পাদক ডাঃ মো মিজানুর রহমান। দলটির কেন্দ্রীয় কার্যালয় ঢাকার পুরানা পল্টনে।
ছবি: Gonoforum
গণতন্ত্রী পার্টি
গনতন্ত্রী পার্টি নামের রাজনৈতিক দলটির নিবন্ধন দেওয়া হয় ২০০৮ সালের ০৩ নভেম্বর। দলটির প্রতীক কবুতর। এর নিবন্ধন নাম্বার ০০৮। এ দলের সভাপতি ব্যারিস্টার মো. আরশ আলী এবং সাধারণ সম্পাদক ডা. শাহাদাত হোসেন। দলটির কেন্দ্রীয় কার্যালয় ঢাকার পুরানা পল্টনে।
ছবি: Gonotontri Party
সিপিবি
বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি)-র প্রতীক কাস্তে। বাংলাদেশে এ দলটি নিবন্ধন পায় ২০০৮ সালের ০৩ নভেম্বর। এর নিবন্ধন নাম্বার ০০৫। দলটির কেন্দ্রীয় কার্যালয় ঢাকার পুরানা পল্টনে। এর সভাপতি মোহাম্মদ শাহ আলম এবং সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স।
ছবি: Rashed Mortuza/DW
23 ছবি1 | 23
তার কথা, ‘‘স্বাধীন দেশ সবাই মনোনয়ন চাইতে পারেন৷ অভিনেতা, খেলোয়াড়, সাংবাদিক সবাই চাইছেন৷ কিন্তু মনোনয়ন নির্ভর করছে শেখ হাসিনার ওপর৷”
চার দিনে ঢাকা বিভাগে ৭৩০টি, চট্টগ্রাম বিভাগে ৬৫৯টি, সিলেট বিভাগ ১৭২টি, ময়মনসিংহ বিভাগ ২৯৫টি, বরিশাল বিভাগে ২৫৮টি, খুলনা বিভাগে ৪১৬টি, রংপুর বিভাগে ৩০২টি ও রাজশাহী বিভাগে ৪০৯টি মনোনয়ন ফরম বিক্রি হয়েছে৷
আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এস এম কামাল হোসেন মনে করেন, ‘‘আওয়ামী লীগ অনেক বড় দল৷ অনেক নেতা৷ অনেকই এমপি হতে চান৷ তাই মনোনয়ন চাইছেন৷ এতে দোষের কিছু নাই৷ তবে মনোনয়ন তো দেবেন শেখ হাসিনা৷ এটা নিয়ে তিনি হোম ওয়ার্ক করেছেন৷ বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থাসহ নিজস্ব প্রার্থীদের ব্যাপারে নিজস্ব জরিপ আছে তার কাছে৷ তিনি জনপ্রিয়তা ও যোগ্যতা দেখে মনোনয়ন দেবেন৷”
এস এম কামাল হোসেন খুলনার একটি আসনের জন্য নিজেও মনোনয়ন ফরম কিনেছেন৷ এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘‘কেউ কেউ শিওর শট চিন্তা করে মনোনয়ন পাওয়ার চেষ্টা করতে পারেন৷ কিন্তু এবার সেরকম হবে না৷ বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাাচত হওয়ার সুযোগও থাকবে বলে মনে হয় না৷”
২৩ নভেম্বর আওয়ামী লীগের মনোনয়ন বোর্ডেও বৈঠক বসবে৷ ওই বৈঠকে মনোনয়ন চূড়ান্ত করা হবে৷ নির্বাচনের জন্য রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে মনোনয়নপত্র দাখিল করতে হবে ৩০ নভেম্বরের মধ্যে৷ জানা গেছে বিএনপির শেষ অবস্থান দেখে মনোনয়ন চূড়ান্ত হবে৷ জোটের মধ্য থেকে কাদের নৌকা প্রতীক দেয়া হবে তাও বিএনপির অবস্থানের ওপর নির্ভর করছে৷
বিএনপি শেষ পর্যন্ত নির্বাচনে এলে আওয়ামী লীগ ‘পপুলার’ প্রার্থীদের বেছে নেবে৷ তা না হলে বর্তমান এমপিদেরই প্রাধান্য থাকবে৷ তবে নির্বাচন জমাতে বিদ্রোহীদের ব্যাপারে দলটি নমনীয় থাকবে বলে জানা গেছে৷
এস এম কামাল হোসেন বলেন, ‘‘ক্রিকেটার, অভিনেতা-অভিনেত্রী, সাংবাদিক অনেকেই মনোনয়ন চাইলেও তারা পাবেন বলে মনে হয় না৷ রাজনৈতিক প্রার্থীদেরই প্রাধান্য থাকবে৷ আর মনোনয়ন চূড়ান্ত হবার পর বিভিন্ন আসনে কোন্দল না হলেও মান অভিমান থাকবে৷”রাজনৈতিক বিশ্লেষক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. শান্তনু মজুমদার মনে করেন, ‘‘নামহীন, গন্ধহীন এলেবেলে অনেকেই এবার মনোনায়ন ফরম কিনছেন৷ আমার মনে হয় তাদের বড় একটি অংশ কিনছেন প্রচারের আশায়৷ আর একটা কারণ হলে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেলে জয় লাভের সমূহ সম্ভাবনা দেখছেন তারা৷ আর এর আগে শিওর শটের চিন্তা ছিলো৷ এবারও বিএনপি না থাকায় সেরকম না হলেও আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেলে জয়ী হওয়ার বেশ একটা সম্ভাবনা আছে৷ এবার শিওর শট নাও হতে পারে৷ কারণ অন্যান্য দল থাকবে৷ আরও কিছু বিষয় আছে৷”
ইতিহাসে ঠাঁই পাওয়া কিছু অহিংস, শান্তিপূর্ণ আন্দোলন
দাবি আদায়ে রাজপথের আন্দোলনে প্রায়ই দেখা যায় সহিংস ঘটনা৷ কিন্তু ইতিহাসে ঠাঁই পাওয়া সহিংসতামুক্ত অন্দোলনও কম নয়৷
ছবি: Ravi Batra/Zuma/IMAGO
অহিংস আন্দোলন
মোহনদাস করমচাঁদ গান্ধী বা মহাত্মা গান্ধীকে বলা হয়ে থাকে অহিংস আনোদলনের জনক৷ ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনে অহিংস দর্শনের কারণে তিনি নিজেও ঠাঁই করে নিয়েছেন ইতিহাসের পাতায়৷ তার অহিংস আন্দোলনে নীতির প্রতি সম্মান দেখিয়ে গান্ধীর জন্মদিন, অর্থাৎ প্রতি বছরের ২ অক্টোবরকে আন্তর্জাতিক অহিংস দিবস হিসেব পালন করে জাতিসংঘের সদস্য দেশগুলো৷
ছবি: Facebook/@NARTHAKI/Forensically
অসহযোগ আন্দোলন
অসহযোগ আন্দোলন হলো গান্ধীর নেতৃত্বে প্রবর্তিত ও পরিচালিত ভারতের একটি শক্তিশালী জাতীয়তাবাদী আন্দোলন। ১৯২১ সালের জানুয়ারি মাস থেকে এই আন্দোলন ভারতব্যাপী সাফল্য অর্জন করতে শুরু করে। ছাত্র-ছাত্রীসহ বিভিন্ন শ্রেনী-পেশার মানুষ দেশব্যাপী গড়ে ওঠা এই আন্দোলনে যোগদান করে৷ অবশ্য এক পর্যায়ে সহিংসতায় রূপ নিলে ১৯২২ সালের ১২ ফেব্রুয়ারি অসহযোগ আন্দোলনের সমাপ্তি ঘোষণা করেন মহাত্মা গান্ধী৷
ছবি: picture alliance/ASSOCIATED PRESS
লবণ কুচকাওয়াজ
মহাত্মা গান্ধীর নেতৃত্বে উপমহাদেশে উল্লেখযোগ্য অহিংস আন্দোলনগুলোর আরেকটি হলো লবণ কুচকাওয়াজ৷ এটি হলো ভারতে ব্রিটিশদের একচেটিয়া লবণ নীতির বিরুদ্ধে একটি অহিংস করপ্রদানবিরোধী প্রতিবাদ আন্দোলন। সমর্থকদের সাথে নিয়ে তিনি প্রায় ২৩০ কিলোমিটার পদযাত্রা করেন৷ আরব সাগরের তীরে গিয়ে তিনি হাতে লবণ নিয়ে প্রতিবাদ দেখান৷
ছবি: Everett Collection/IMAGO
লুথার কিং ও সিভিল রাইটস মুভমেন্ট
মার্টিন লুথার কিং জুনিয়র ছিলেন বিখ্যাত আফ্রিকান-অ্যামেরিকান মানবাধিকার কর্মী। অ্যামেরিকায় নাগরিক ও মানবাধিকার প্রতিষ্ঠায় অহিংস আন্দোলনের জন্য ১৯৬৪ সালে নোবেল শান্তি পুরস্কারে ভূষিত হয়েছিলেন তিনি। ২৮ আগস্ট ১৯৬৩ সালে তার নেতৃত্বে কৃষ্ণাঙ্গদের অধিকার আদায়ের লক্ষ্যে যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটনে সমবেত হয় হাজার হাজার মানুষ৷
ছবি: AP
ম্যান্ডেলার বর্ণবাদবিরোধী আন্দোলন
বিশ্বের শান্তিপূর্ণ আন্দোলনের ইতিাহাসে দক্ষিণ আফ্রিকার অবিসংবাদিত নেতা নেলসন ম্যান্ডেলার নাম উল্লেখযোগ্য৷ ১৯৫৫ সালে এএনসির ‘স্বাধীনতার সনদ’ প্রণয়নে মূল ভূমিকা ছিল ম্যান্ডেলার। সেই সনদে বলা হয়, ‘দক্ষিণ আফ্রিকা তাদেরই, যারা সেই দেশের জনগণ। দক্ষিণ আফ্রিকা কৃষ্ণাঙ্গ, শ্বেতাঙ্গ সবার। তবে এক পর্যায়ে এই আন্দোলনটি অবশ্য আর অহিংস থাকেনি৷ বর্ণভিত্তিক আন্দোলন বন্ধে আইন করা হলে ব্যাপক বিক্ষোভ শুরু হয়।
ছবি: TREVOR SAMSON/AFP/Getty Images
তিয়েনআনমেন স্কয়ার বিক্ষোভ
চীনে গণবিক্ষোভের সূত্রপাত ঘটে ১৯৮৯ সালের এপ্রিল মাসে। কমিউনিস্ট সরকারের দুর্নীতি বন্ধ ও গণতন্ত্রের দাবিতে বেইজিং বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্ররা ছিলেন প্রতিবাদের অগ্রভাগে। তারা ঐতিহাসিক তিয়েনআনমেন স্কয়ারে অনশন শুরু করেন। আন্দোলন দমাতে এক পর্যায়ে তাদের উপর চড়াও হয় পুলিশ৷ সরকারের নিপীড়ণে কয়েক হাজার মানুষ নিহত হয়েছিলেন বলে দাবি অনেকের৷ ছবিতে এক ব্যক্তিকে ট্যাংকের সামনে দাঁড়িয়ে প্রতিবাদ করতে দেখা যাচ্ছে৷
ছবি: Reuters/A. Tsang
গান গেয়ে প্রতিবাদ
ইউরোপের দেশ লিথুয়ানিয়া, লাটভিয়া এবং এস্তোনিয়ার নাগরিকেরা রাশিয়ার কাছ থেকে স্বাধীনতা আদায়ের দাবিতে জাতীয় সংগীত ও দেশাত্মকবোধক গান গেয়ে এই আন্দোলনটি করেছিলেন, যা ইতিহাসে ‘সিংগিং রেভোলিউলশন’ নামে পরিচিত৷ ২৩ আগস্ট ১৯৮৯ সালে ৭ লাখ এস্তোনিয়ান, প্রায় ৫ লাখ লাটভিয়ান এবং প্রায় দশ লাখ লিথুয়ানিয়ান হাতে হাত রেখে এই প্রতিবাদটি করেন৷ ছবিতে দেখা যাচ্ছে ২০১৯ সালে দিনটি উদাযাপন করছেন এস্তোনিয়ার নাগরিকেরা৷
ছবি: David Keyton/AP Photo/picture alliance
‘ইরাকে হামলা বন্ধ কর’
২০০৩ সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র যখন ইরাক আক্রমণ করছিল, তখন বিশ্বব্যাপী যুদ্ধবিরাধেীরা রাস্তায় নেমেছিল৷ এর মধ্যে ইটালির রোমেই জড়ো হয়েছিল প্রায় ৩০ লাখ মানুষ৷ তাছাড়া, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য স্পেনসহ আরো কয়েকটি দেশে লাখ লাখ মানুষ প্রতিবাদে জড়ো হয়েছিলেন৷ ২০১৫ সালে লন্ডনে অনুষ্ঠিত প্রতিবাদের ছবি এটি৷
ছবি: Getty Images/P. Macdiarmid
ইউক্রেনের কমলা বিপ্লব
২০০৪ সালে কমলা রংয়ে ছেয়ে গিয়েছিল কিয়েভের রাজপথ৷ গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা, দুর্নীতি নির্মূল – এসব দাবির সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করে লাখো মানুষ জমায়েত হয়েছিল ইউক্রেনের রাজপথে৷ ইউক্রেনীয়দের এই আন্দোলনটি ঠাঁই করে নিয়েছিল ইতিহাসে৷
ছবি: Sergey Dolzhenko/picture-alliance/dpa
ভারতে কৃষক আন্দোলন
২০২০ সালের সেপ্টেম্বর মাসে কৃষি বিল প্রত্যাহারের দাবিতে বিক্ষোভ শুরু করে কৃষকেরা৷ দাবি আদায়ে, ২৫ নভেম্বর ‘দিল্লি চলো’ আন্দোলনের ডাক দেন কৃষকেরা৷ দিল্লিতে ঢোকার মুখে হরিয়ানায় পুলিশ তাদেরকে ছত্রভঙ্গ করার চেষ্টা করে৷ পরে দিল্লিতে অবস্থান কর্মসূচি পালনের অনুমতি পায় কৃষকেরা৷ কৃষকদের দাবির মুখে এক পর্যায়ে ২০২১ সালের নভেম্বরে কৃষি আইন বাতিল করে বিজেপি সরকার৷