ইংল্যান্ড আবারও পেনাল্টিতে হেরে গেলেও যারা টাইব্রেকারে ব্যর্থ হয়েছেন তারা মাথা উঁচু করে থাকতে পারেন৷ কিন্তু সহিংস ও নির্বোধ অল্প ‘সমর্থকের’ জন্য ইংলিশদের কিছু সাফল্য চাপা পড়ে গেছে বলে মনে করেন ডিডাব্লিউর ম্যাট পিয়ারসন৷
বিজ্ঞাপন
ওয়েম্বলিতে আমার কয়েক মিটার সামনে ইটালির গোলরক্ষক ডোনারুমা যখন ইংল্যান্ডের সাকার পেনাল্টিটা ঠেকিয়ে দিলেন তখন প্রথমেই আমার যা মনে হয়েছে তা প্রকাশযোগ্য নয়৷ দ্বিতীয় ভাবনাতে আমি পেনাল্টি বিষয়টাকে অভিশাপ দিয়েছি৷
এমন সব পরিচিত অনুভূতির কিছুক্ষণ পর আমার মনে আরেকটি অনুভূতির জন্ম হয়েছিল যেটা আরো উদ্বেগজনক ছিল: স্টেডিয়ামের বাইরে ধ্বংসযজ্ঞ শুরু হতে পারে৷
আসলেই তা হয়েছিল৷ স্টেডিয়াম থেকে হেঁটে বাস স্টপে যাওয়ার সময় ১৫ মিনিটে আমি দেখেছি এক ব্যক্তির উপর হামলা হয়েছে, তিনি রাস্তায় পড়ে গিয়েছিলেন৷ যানজটে আটকে থাকা এক ব্যক্তির গাড়ির কাচ ভেঙে ফেলা হয়েছিল৷
খেলা শুরুর আগে ওয়েম্বলি স্টেডিয়ামের সামনে জড়ো হওয়া অনেক সমর্থকের আচরণও অদ্ভুত ছিল৷ তারা আকাশে কাচের বোতল, ক্যান, ব্যাগ, জুতা ইত্যাদি ছুড়ে মারছিলেন৷ এসব কাজের মধ্য দিয়ে দেশপ্রেমের প্রকাশ হয় না, বরং এটা একে অপরের দিকে জিনিসপত্র ছুড়ে মারার মতো বিষয়৷
এছাড়া টিকিট না থাকা সত্ত্বেও কিছু সমর্থক স্টেডিয়ামে ঢোকার চেষ্টা করেছেন৷ অনেকে সফলও হয়েছেন৷ পুলিশ ৪৫ জনকে গ্রেপ্তার করেছে৷
টাইব্রেকারে গোল করতে না পারায় খেলা শেষে সামাজিক মাধ্যমে রাশফোর্ড, সাঞ্চো ও সাকাদের বর্ণবাদের শিকার হতে হয়েছে, যা একটি জঘন্য কাজ৷
ফাইনালে প্রিয় দলকে হারতে দেখা কঠিন৷ পেনাল্টিতে হারার বিষয়টি তার চেয়েও বেশি কঠিন৷ কিন্তু নিজ দলের সমর্থক হিসেবে বোতল ছুড়ে মারা, বর্ণবাদী আচরণ করা ব্যক্তিদের দেখা মনে অন্যরকম দুঃখ জাগায়৷ কোনো দলেরই এমন ‘সমর্থক’ প্রাপ্য নয়৷ বিশেষ করে এই ইংল্যান্ড দলের তো নয়ই৷
ম্যাট পিয়ারসন/জেডএইচ
ইংল্যান্ডের স্বপ্নভঙ্গ, টাইব্রেকারে হার, ইউরো কাপ ইটালির
দুই মিনিটে গোল করে এগিয়ে যাওয়ার পরও ইউরো কাপ জিততে পারল না ইংল্যান্ড। টাইব্রেকারে হেরে বিদায় নিতে হলো।
ছবি: Christian Charisius/dpa/picture alliance
প্রথমে এগিয়ে গিয়েও
খেলার বয়স তখন মাত্র দুই মিনিট। তখনই ইটালির জালে বল জড়িয়ে দেন লিউক শ। বক্সের ভিতরে চলতি বলে বাঁ পায়ের শট। ইটালির গোলরক্ষক পরাস্ত হন।
ছবি: John Sibley/REUTERS
ইটালির নিয়ন্ত্রণে
গোল করার পর কিছুটা গুটিয়ে যায় ইংল্যান্ড। তখন মাঠজুড়ে খেলতে থাকে ইটালি। বলের নিয়ন্ত্রণেও ছিল তাদের প্রশ্নাতীত প্রাধান্য।
ছবি: Andy Rain/REUTERS
গোলের সুযোগ
প্রথমার্ধে গোলের সুযোগও পায় ইটালি। তিনজন ডিফেন্ডারকে কাটিয়ে গোল লক্ষ্য করে শট নেন ফেদেরিকো কিয়েসা। কিন্তু তা বাইরে যায়। অনেক সময়ই ইংল্যান্ডের সব ফুটবলারকে রক্ষণে মন দিতে দেখা যায়। প্রথমার্ধের শেষ ১৫ মিনিট তো ইটালি একের পর এক আক্রমণ করে গেছে। উপরে এমনই এক আক্রমণের ছবি।
ছবি: Pool via REUTERS
কেন ও স্টারলিং কড়া নজরে
দুই মিনিটে গোল খেলে কী হবে, ইটালির রক্ষণ তারপর নিখুঁত ছিল। ইংল্যান্ডকে আক্রমণে উঠতেই দিচ্ছিল না। কেনকে কড়া মার্কিংয়ে রাখা হয়েছিল। স্টারলিংকেও। ফলে ইংল্যান্ডের আক্রমণ ধারালো হয়ে উঠতে পারেনি। উপরের ছবিটি স্টারলিংয়ের।
ছবি: Laurence Griffiths/REUTERS
দ্বিতীয়ার্ধেও ইটালির দাপট
ম্যাচের দ্বিতীয়ার্ধেও ইটালির দাপট অব্যাহত ছিল। তবে মাঝে মাঝে আক্রমণে যাচ্ছিল ইংল্যান্ডও।
ছবি: John Sibley/REUTERS
৬৭ মিনিটে গোল
খেলার ৬৭ মিনিটে ইটালির হয়ে গোল করেন লিয়োনার্দো বোনুচ্চি। তারপর আর কোনো গোল হয়নি। নির্ধারিত সময়ে ফলাফল থাকে ১-১। অতিরিক্ত সময়েও ফল একই থাকে।
ছবি: PA Images/imago images
ইটালির গোলরক্ষকের কামাল
ইটালির গোলরক্ষক ডোনারুমা দুইটি সেভ করেন। তার কৃতিত্বে ভর দিয়ে ইটালি ইউরো কাপ জিতে নেয়। ইটালির বেলোত্তি ও জর্জিনহো মিস করেন। ইংল্যান্ডের হয়ে মার্কাস, সাঞ্চো ও সাকা গোল দিতে পারেননি।
ছবি: Paul Ellis/Getty Images/AFP
স্বপ্নভঙ্গ
খেলা ছিল ঘরের মাঠে, ওয়েম্বলি স্টেডিয়ামে। এখানেই বিশ্বকাপ জিতেছিল ইংল্যান্ড। ১৯৬৬ সালে। তারপর আন্তর্জাতিক ফুটবলে ইংল্যান্ডের আর কোনো বড় সাফল্য নেই। তাই ইংল্যান্ডের ফ্যানদের আশা ছিল এবার দল জিতবে। তাদের স্বপ্নভঙ্গ হলো।
ছবি: Ed Sykes/Action Images/REUTERS
একরাশ হতাশা
ইউরো কাপে ইংল্যান্ডের সমর্থকরা বারবার গেয়েছেন, ইটস কামিং হোম। কাপ তাদের ঘরে আসবে। স্টেডিয়াম ভরা ছিল দর্শকে। লন্ডনের বিভিন্ন জায়গায় বড় স্ক্রিন লাগানো ছিল। তার সামনে সমর্থকদের ভিড়। উপরের ছবিটা ট্রাফালগার স্কোয়ারের।
ছবি: Henry Nicholls/REUTERS
দ্বিতীয় ইউরো কাপ ইটালির
দ্বিতীয়বার ইউরো কাপ জিতল ইটালি। রবের্তো মানচিনির কোচিংয়ে ইটালি এখন অসাধারণ খেলছে। ফাইনালেও মানচিনির প্লেয়ার পরিবর্তন করে ইটালির আক্রমণকে ধারালো করেন।