1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

নির্যাতিত রোহিঙ্গারা আশ্রয়ের খোঁজে

হারুন উর রশীদ স্বপন ঢাকা
২২ নভেম্বর ২০১৬

মিয়ানমারের রাখাইন প্রদেশের নির্যাতিত রোহিঙ্গরা যাতে বাংলাদেশে প্রবেশ করতে না পারে সেজন্য সীমান্তে কড়াকড়ি অব্যাহত রয়েছে৷ তারপরও রোহিঙ্গারা নাফ নদী পার হয়ে বাংলাদেশের টেকনাফে প্রবেশের চেষ্টা করছে৷

Rohingya Flüchtlinge Myanmar Bangladesch
ছবি: Reuters/M.P.Hossain

এরইমধ্যে আনুমানিক ১,৫০০ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে৷ কক্সবাজারের সাংবাদিক ও সীমান্ত এলাকার অধিবাসীরা ডয়চে ভেলেকে এ কথা জানান৷

কক্সবাজারের টেনাফের হোইকং সীমান্তের মোহাম্মদ হোসেন ডয়চে ভেলেকে টেলিফোনে জানান, ‘‘প্রায় প্রতিদিনই নাফ নদী অতিক্রম করে মিয়ানমারের নির্যাতিত রোহিঙ্গরা নৌকায় করে বাংলাদেশে ঢোকার চেষ্টা করছে৷ বিজিবি তাদের ফিরিয়ে দিচ্ছে৷ তাদের কেউ কেউ নদীতে ঝাঁপ দিচ্ছে৷ কেউ কেউ আবার স্থানীয়দের সহায়তায় আশাপাশের গ্রামে আশ্রয় নিচ্ছে৷ রাতেও কিছু রোহিঙ্গা দালালদের সহায়তায় বাংলাদেশে আসছে৷ তারা স্থানীয়দের আশ্রয়ে পরিচয় গোপন করে থাকছেন৷''

তিনি আরো বলেন, ‘‘যারা আসতে পারছেন, তাদের কাছে নির্মম নির্যাতনের কথা জানা যাচ্ছে৷ তাদের কেউ পরিবারে সদস্যদের হারিয়েছন, কারো ঘড়বাড়ি জ্বালিয়ে দেয়া হয়েছে৷''

মোহাম্মদ হোসেন

This browser does not support the audio element.

তিনি আরো জানান, ‘‘এই রোহিঙ্গারা নদীতে ছিনতাই এবং চুরি-ডাকাতিরও শিকার হচ্ছেন৷''

কক্সবাজারের সাংবাদিক আব্দুল আজিজ ডয়চে ভেলেকে জানান, ‘‘এ পর্যন্ত কয়েক দফায় আশ্রয় নিতে আসা পাঁচ শতাধিক রোহিঙ্গাকে ফেরত পাঠিয়েছে বিজিবি৷ তবে নানাভাবে ১৫০০-র মতো রোহিঙ্গা বাংলাদেশে প্রবেশ করতে পেরেছে বলে স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানতে পেরেছি৷ প্রধানত রাতেই তারা নাফ নদী পার হয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করে৷ তাদের টাকার বিনিময়ে কিছু লোক বাংলাদেশে ঢুকতে সহায়তা করছে৷''

তিনি আরো জানান, ‘‘যেসব রোহিঙ্গা টেকনাফ এলাকায় প্রবেশ করতে পেরেছেন তাদের কয়েকজনের সঙ্গে আমি কথা বলেছি৷ তারা জানিয়েছেন রাখাইন প্রদেশে হত্যা, নির্যাতন এবং ঘরবাড়ি পুড়িয়ে দেয়া অব্যাহত আছে৷''

আবদুল আজিজ

This browser does not support the audio element.

জাতিসংঘের অভিবাসন সংক্রান্ত সংস্থা ইন্টারন্যাশনাল অর্গানাইজেশন অব মাইগ্রেন্টস (আইওএম) -এর নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক প্রত্যক্ষদর্শী আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যমকে বলেছেন, সোমবার ৫শ'রও বেশি রোহিঙ্গাকে সীমান্ত পেরিয়ে পাহাড়ি ক্যাম্পগুলোতে আশ্রয় নিতে দেখেছেন তিনি৷ জাতিসংঘের অন্যান্য ত্রাণ কর্মকর্তাও তাদেরকে বাংলাদেশে প্রবেশ করতে দেখেছেন৷

এদিকে মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচ স্যাটেলাইট থেকে তোলা কিছু ছবি প্রকাশ করে জানিয়েছে, অক্টোবর থেকে ১০ নভেম্বরের মধ্যে মিয়ানমারে মংডু জেলার তিনটি গ্রামের ৪৩০টি ভবন পুড়িয়ে দেয়া হয়েছে৷ আর ২১ নভেম্বর স্যাটেলাইট থেকে তোলা আরো কিছু ছবি বিশ্লেষণ করে জানায়, ১০ নভেম্বর থেকে ১৮ নভেম্বর পর্যন্ত সহিংসতায় নতুন করে মংডু জেলার ৫টি গ্রামে ৮২০টি ঘর-বাড়ি ও অবকাঠামো ধ্বংস হয়েছে৷ হিউম্যান রাইটস ওয়াচের হিসেব মতে, সবমিলে এক মাসে ধ্বংস হওয়া ঘর বাড়ির সংখ্যা ১২৫০৷

জাতিসংঘের হিসেবে চলমান সহিংসতায় ৮৬ জন রোহিঙ্গা নিহত হয়েছেন৷ ঘর ছাড়তে বাধ্য হয়েছে ৩০,০০০ মানুষ৷

আনিসুর রহমান

This browser does not support the audio element.

এর আগে ২০১২ সালে উগ্র জাতীয়তাবাদী বৌদ্ধদের তাণ্ডবে প্রায় ২০০ রোহিঙ্গা মারা যায়৷ ঘর ছাড়তে বাধ্য হয় ১ লাখেরও বেশি মানুষ৷

বর্তমানে বাংলাদেশের কক্সবাজারের তিনটি শরণার্থী শিবিরে আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গার সংখ্যা ৩৩ হাজার৷ তবে অনিবন্ধিত রোহিঙ্গা শরনার্থীর সংখ্যা তিন লাখেরও বেশি হবে বলে স্থানীয় সূত্রগুলো জানায়৷ অবশ্য এখন বাংলাদেশ নতুন করে রোহিঙ্গাদের প্রবেশ করতে দিচ্ছেনা৷ সরকারের পক্ষ থেকে কেউ কিছু স্পষ্ট করে বলছেনও না৷ সোমবার ঢাকায় সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, ‘‘রোহিঙ্গাদের নিয়ে অস্বস্তিকর অবস্থায় আছি৷''

এদিকে চলমান পরিস্থিতি নিয়ে বুধবার দুই দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর সেক্টর কমান্ডার পর্যায়ে কক্সবাজারে বৈঠক হতে পারে বলে বাংলাদেশের সীমান্ত রক্ষী বাহিনী বিজিবি'র কক্সবাজারের সেক্টর কমান্ডার কর্নেল আনিসুর রহমান ডয়চে ভেলেকে জানান৷ তবে বৈঠকে কী নিয়ে আলোচনা হতে পারে তা তিনি জানানি৷ সীমান্ত পরিস্থিতি এবং রোহিঙ্গাদের ফেরত পাঠানোর ব্যাপারে জানাতে চাইলে তিনি বলেন, ‘‘আমরা যা করার তা-ই করছি৷'' সূত্র জানায় রোহিঙ্গারা বাংলাদেশে যাতে প্রবেশ করতে না পারে এজন্য বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্তে টহল এবং নজরদারি বাড়ানো হয়েছে৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

আরো সংবাদ দেখান
স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ