মাত্র তিন বছর বয়সি একটি বাচ্চাকে নির্দয়ভাবে মারধর করার পর ফেরার হয়েছে এক গৃহশিক্ষিকা৷ কিন্তু কী শিক্ষা তিনি দিয়ে গেলেন সমাজকে!
বিজ্ঞাপন
সারা কলকাতা শহরই নয়, গোটা রাজ্য, দেশ চমকে উঠেছে দৃশ্যটা দেখে৷ ঘটনাটি এই রকম, কলকাতার লেকটাউন-দক্ষিণদাঁড়ি এলাকার এক পরিবার, তাদের তিনবছরের শিশুপুত্রের জন্য নতুন একজন গৃহশিক্ষিকা নিযুক্ত করেছিল৷ ওই বয়সি অধিকাংশ শিশুর মতো এই বাচ্চাটিও প্রথম দুদিন নতুন দিদিমনির কাছে পড়তে বসতে চায়নি৷ তৃতীয় দিনে ওই গৃহশিক্ষিকা এসে বাচ্চাটির মা-কে বলে ঘরের বাইরে যেতে৷ সম্ভবত তাঁকে সামনে দেখেই বাচ্চাটি বেশি বায়না করছে ভেবে মা-ও চলে যান বাইরের ঘরে৷ এরপর দরজা বন্ধ করে শিশুটিকে সহবৎ শেখানোর দায়িত্ব হাতে নেন ওই শিক্ষিকা৷
শৈশবেই উচ্চ রক্তচাপ; অবহেলা নয়
উচ্চ রক্তচাপ শুধু বয়স্কদের অসুখ নয়, শিশু-কিশোরদেরও হয়ে থাকে৷ তাই শিশুদের উচ্চ রক্তচাপকে অবহেলা না করে গুরুত্ব দেওয়া উচিত৷ কারণ তা না হলে তার ফল হতে পারে মারাত্মক৷
ছবি: Fotolia/pete pahham
শিশু ও উচ্চ রক্তচাপ?
‘শিশু ও উচ্চ রক্তচাপ’ –এ দুটো শব্দ যেন একসাথে মানায় না৷ উচ্চ রক্তচাপ যেন শুধু বয়স্কদের অসুখ – এমনটা মনে করেন অনেকেই৷ তবে এ ধারণা সম্পূর্ণ ভুল! বলেন গ্যোটিংগেন শহরের শিশু-কিশোর বিশেষজ্ঞ ও কার্ডিওলজিস্ট (হার্টের ডাক্তার) মার্টিন হুল্পকে-ভেটে৷
ছবি: DW
দেরিতে ধরা পড়ে
ডাক্তার হুল্পকে ভেটের কথায়, ‘‘জার্মানির শিশু-কিশোরদের মধ্যে চার থেকে পাঁচ ভাগেরই উচ্চ রক্তচাপ রয়েছে, তবে তা বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই ধরা পড়ে অনেক দেরিতে৷’’
ছবি: DW/R. Breuer
গুরুত্ব দেওয়া হয় না
মিউনিখ টেকনিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসার রেনাটে ওবারহোফার বলেন, ‘‘শিশুদের উচ্চ রক্তচাপকে মোটেই গুরুত্ব দেওয়া হয় না৷ যদিও এর ফলে শিশুদের হার্ট অ্যাটাক বা স্ট্রোক পর্যন্ত হতে পারে৷ অসুখের দিক দিয়ে হার্ট অ্যাটাক বা স্ট্রোক – এ দুটোই সারা বিশ্বে সবচেয়ে বেশি হয়ে থাকে৷’’
ছবি: Alexander Raths/Fotolia.com
স্কুলের স্ট্রেস
আগে শোনা যেত ‘স্ট্রেস’ শুধু বড়দের ক্ষেত্রে প্রয়োজ্য৷ কিন্তু আজকের দিনে সেটা আর ঠিক নয়৷ কারণ বাচ্চাদের স্কুল থকেই শুরু হয়ে যায় প্রতিযোগিতার যুদ্ধ, যার ফলে ওদেরও থাকে প্রচণ্ড মানসিক চাপ৷ আর উচ্চ রক্তচাপের প্রধান কারণই যে হলো মানসিক চাপ!
ছবি: picture-alliance/dpa
খেলাধুলা
এর থেকে বেরিয়ে আসার জন্য প্রয়োজন পড়াশোনা বা স্কুলের অন্যান্য চাপের পাশাপাশি খেলাধুলা, গান-বাজনা বা কোনো হবি থাকা৷ যাতে শিশু, কিশোর-কিশোরীরা তাদের রাগ, দুঃখ, কষ্ট ভুলে গিয়ে মাথাটাকে পুরোপুরি অন্য দিকে ঘোরাতে পারে৷
ছবি: Khaneye Koudak Teheran
খাওয়া-দাওয়া
শিশু-কিশোররা খেতে পছন্দ করে ‘পিৎসা’, তেলে ভাজা ‘ফ্রেঞ্চফ্রাই’ বা এ ধরনের নানা খাবার৷ এ সব খাবারে থাকে প্রচুর তেল এবং লবণ৷ তাছাড়া কফিনসহ এনার্জি ড্রিংক বা মিষ্টি পানীয়ও অল্পবয়সিদের বেজায় পছন্দ৷
ছবি: MEHR
উচ্চ রক্তচাপ সহজে বোঝা যায় না
শিশু-কিশোরদের ক্ষেত্রে উচ্চ রক্তচাপ সেভাবে বোঝা যায় না৷ তবে অনেকের ক্ষেত্রে হঠাৎ করে নাক দিয়ে রক্ত পড়া, মাথাব্যথা, শ্বাসকষ্ট ইত্যাদি হতে দেখা দেয়৷ নিজের সন্তানের এ ধরনের পরিবর্তন দেখলে মা-বাবার সেদিকে বিশেষভাবে লক্ষ্য রাখা দরকার৷
অতিরিক্ত ওজন
অনেক সময় বংশগত ধারাকে উপেক্ষা করার উপায় থাকে না – তা উচ্চ রক্তচাপই হোক বা অতিরিক্ত ওজনের সমস্যাই হোক৷ তাই যাদের মা-বাবার অতিরিক্ত ওজন এবং উচ্চ রক্তচাপ রয়েছে, তাদের ক্ষেত্রে ছোটবেলা থেকে খাদ্যাভাসের দিকে নজর রাখা ও ব্যায়াম করা প্রয়োজন৷
ছবি: picture alliance/dpa
ধমনীর কাঠিন্য
কার্ডিওলজিস্টরা বলেন, ‘‘উচ্চ রক্তচাপের চেয়েও ধমনীর কাঠিন্য বা সমস্যা থেকে হৃদরোগ হতে পারে৷ এক্ষেত্রে ধমনী আস্তে আস্তে ছোট হয়ে আসে৷ তাছাড়া উচ্চ রক্তচাপের ঝুঁকি বাড়িয়ে দেয় ধুমপান, ডায়বেটিসসহ অন্যান্য অসুখও৷
ছবি: Fraunhofer MEVIS, Bremen
কিডনি নষ্ট হয়ে যাবার ভয়
উচ্চ রক্তচাপের ফলে অনেকের কিডনি পুরোপুরি নষ্ট হয়ে যেতে পারে৷ এ রকমটা হলে সারা জীবনের জন্য ডায়ালিসিসের ওপর নির্ভরশীল হতে হয়৷ অথবা নিতে হয় কিডনি প্রতিস্থাপনের মতো ঝুঁকি৷
ছবি: imago/imagebroker
ওষুধ
প্রতিনিয়ত নানা ধরনের ওষুধ সেবনও উচ্চ রক্তচাপের ঝুঁকি বাড়িয়ে দেয়৷ এক্ষেত্রে বলা যেতে পারে ‘হাইপার অ্যাকটিভ’, অর্থাৎ অত্যন্ত চঞ্চল বা অশান্ত ছটফটে বাচ্চাদের কথা৷ বহুক্ষেত্রে তাদের যে সমস্ত ওষুধ দেওয়া হতে থাকে, তা উচ্চ রক্তচাপের ঝুঁকি বাড়ায়৷
ছবি: picture-alliance/dpa
রক্তচাপ মাপা প্রয়োজন
‘‘যেসব বাচ্চার কিডনি, ইউরিনারি নালী এবং আয়োডিনের সমস্যা রয়েছে অথবা যারা হার্টে খুঁত নিয়ে জন্মেছে, তাদের ক্ষেত্রে নিয়মিত রক্ত চাপ মাপা প্রয়োজন৷’’ এই পরামর্শ দিয়েছেন জার্মানির শিশু-কিশোর ফেডারেল সমিতির বিশেষজ্ঞ ডা. ভল্ফরাম হার্টমান৷
ছবি: picture-alliance/dpa
কিছু নিয়ম
নিয়মিত শরীরচর্চা অনেক রোগব্যাধিকে দূরে রাখে৷ তাই শৈশবেই শরীর চর্চা ও সুষম খাওয়া-দাওয়ার প্রয়োজন৷ বিশেষ করে যথেষ্ট কলা, বিভিন্ন বাদাম, আলু ইত্যাদি৷ অন্যদিকে লবণ জাতীয় খাবারকে না বলা দরকার৷ স্ট্রেস এড়িয়ে যোগ ব্যায়াম ও বিনোদনমূলক কোনো ব্যায়াম করাও যেতে পারে৷
ছবি: Fotolia/pete pahham
13 ছবি1 | 13
ছেলের কান্না প্রথমেই কানে এসেছিল মায়ের৷ তিনি ভেবেছিলেন হয়ত একটু বকাবকি, খুব বেশি হলে হালকা একটু চড়-চাপড় খাচ্ছে ছেলে৷ কিন্তু কান্নার আওয়াজ ক্রমশ তীব্র হতে উদ্বিগ্ন মা ঘরে লাগানো ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরাটি চালিয়ে যা দেখতে পান, তাতে ভয়ে তাঁর হাড় হিম হয়ে যায়৷ বন্ধ ঘরের মধ্যে ওই শিক্ষিকা তাঁর শিশুপুত্রকে চ্যাংদোলা করে এনে আছাড় মারছে বিছানার ওপর! এক হাত দিয়ে মুখ চেপে ধরে রেখে অন্য হাতে বেদম চড়, কিল, ঘুসি মারছে! এবং একবার নয়, পর পর দুবার পা তুলে ওইটুকু ছেলের বুকে লাথি কষাচ্ছে!
ঘটনাটি যাতে পুলিশে না জানানো হয়, সে জন্য বাড়ি বয়ে এসে হুমকি দিয়ে গিয়েছিল ওই গৃহশিক্ষিকার স্বামী৷ কিন্তু তার পরেও পুলিশে অভিযোগ জানানো হয়, যার পর ফেরার হয়ে যায় ওই গৃহশিক্ষিকা৷ অন্ধ্রের এক দৃষ্টিহীন স্কুলে শিক্ষকের হাতে এক ছাত্রের বেদম মার খাওয়ার দৃশ্যের টিভি ফুটেজ সারা দেশের সংবাদমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ার পর কলকাতা শহরের এই ঘটনা ফের উদ্বেগ, উত্তেজনা ছড়িয়েছে সমাজে৷ স্কুলে বেত পেটা করা বা অন্যান্য শারীরিক শাস্তি দেওয়ার ওপর আইনি নিষেধাজ্ঞা জারি হয়েছে অনেক আগেই এবং বহু স্কুল এখন সেই নিয়ম মেনে চলে৷ গুরুতর অপরাধের ক্ষেত্রে অভিযুক্ত ছাত্র বা ছাত্রীর অভিভাবকদের ডেকে পাঠায় স্কুল, শাস্তি দেওয়ার দায়িত্ব নিজেরা হাতে নেয় না৷ কিন্তু গৃহশিক্ষকের ক্ষেত্রে এমন নির্মম, অমানবিক আচরণ নতুন করে ভাবতে বাধ্য করছে প্রশাসনকে৷
পশ্চিমবঙ্গ সরকারের নারী ও শিশু কল্যাণ মন্ত্রক যেমন সিদ্ধান্ত নিয়েছে, গৃহশিক্ষক এবং অভিভাবকদেরও সচেতনতা বৃদ্ধিতে প্রচার শুরু করার৷ অন্যদিকে পুলিশ জানিয়েছে, এখন থেকে গৃহশিক্ষক নিয়োগের সময়ও বিস্তারিত খোঁজখবর নিয়ে আগাম জানিয়ে রাখতে হবে পুলিশকে৷ তার একটা কারণ যদিও লেকটাউনের ওই গৃহশিক্ষিকা তাঁর ছাত্রের বাড়িতে নিজের ঠিকানা-সহ যা তথ্য দিয়েছিল, সবই ভুয়ো বলে ঘটনার তদন্তে নেমে জানতে পেরেছে পুলিশ৷
সুস্থ পরিবেশেই গড়ে ওঠে সুস্থ জীবন
শিশুর প্রথম নিঃশ্বাস থেকে স্কুল জীবন শেষ করা এবং তারও পরে সন্তানের ভালো-মন্দের সাথে থাকেন তার বাবা-মা৷ কিভাবে ছোট্ট শিশুকে একজন সুস্থ মানুষ হিসেবে গড়ে তোলা সম্ভব, তারই গল্প এই ছবিঘরে৷
ছবি: picture-alliance/dpa
মায়ের গর্ভ
মায়ের গর্ভে থাকার সময় থেকেই শিশুর ভালোর জন্য সব কিছু করেন বাবা-মা৷ সত্যিকার অর্থে সুস্থ পরিবেশই শিশুকে সুস্থ, সুন্দর ভবিষ্যৎ দিতে পারে৷ তবে সুস্থ পরিবেশ বলতে কী বোঝায়, সেটা খুব বুঝে-শুনে ঠিক করতে হয় মা-বাবাকে৷ আর এর জন্য সন্তান কী চায়, অর্থাৎ তার মন এবং শরীরকে বোঝা অত্যন্ত জরুরি৷
ছবি: picture-alliance/dpa
মায়ের দুধ দিয়ে শুরু
শিশুকে জন্মের সাথে সাথেই মায়ের দুধ পান করানো উচিত বলে মনে করেন বার্লিনের শিশু ও পুষ্টি বিশেষজ্ঞ ডা. ফ্রাংক ইয়োখুম৷ তাঁর কথায়, ‘‘মায়ের দুধে আছে শিশুদের প্রয়োজনীয় সব পুষ্টিগুণ৷ শিশু মায়ের দুধ পানের মাধ্যমে মায়ের শরীরের প্রতিরোধ ক্ষমতাটিও পায়৷ এর ফলে শিশুরা নানা রকম রোগের সংক্রমণ থেকে যেমন রেহাই পায়, তেমনই বড় বয়সে ডায়বেটিস বা অতিরিক্ত ওজন সমস্যার মতো অসুখ থেকেও কিছুটা দূরে থাকে৷’’
ছবি: Fotolia/evgenyatamanenko
মায়ের খাবার
মা যতদিন শিশুকে দুধ পান করাবেন, ততদিন অবশ্যই তাঁর খাবার তালিকায় সব ধরনের খাবার থাকতে হবে৷ বিশেষ করে চর্বিযুক্ত মাছ, তাজা ফল ও সবজি৷ কারণ মাছের তেল শিশুদের মস্তিস্ক গঠনে খুব গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে৷ মা সব কিছু খেতে পারলেও, লক্ষ্য রাখতে হয় যে শিশুর শরীর সে খাবার কিভাবে গ্রহণ করছে৷ এছাড়া মায়ের দুধ পান করার মাধ্যমেই কিন্তু শিশুরা বিভিন্ন খাবারের স্বাদও পেতে থাকে৷
ছবি: Fotolia/WavebreakmediaMicro
শক্ত খাবার
বাচ্চাদের চার মাস বয়স থেকে প্রথম শক্ত খাবার দেয়া যায়৷ তবে শিশুদের জন্য তৈরি বিশেষ ‘বেবিফুড’ বা ঘরে রান্না করা খাবার অবশ্যই দিতে হয় ছয় মাস বয়স থেকে৷ এর কারণ, তখন আর শুধু মায়ের দুধ যথেষ্ট নয়৷ তবে সে সময় ‘‘লক্ষ্য রাখতে হবে যে শিশুর খাবারে বড়দের তুলনায় যেন মসলা এবং লবণ কম থাকে’’৷ এমনই পরামর্শ দেন ডা. ইয়োখুম৷
ছবি: Fotolia/victoria p
শাক-সবজি
অনেক সময় বাচ্চারা সবুজ-সবজি বা ফলমূল খেতে চায় না৷ তখন অনেক মা-বাবা গল্প করে, আদর করে সেগুলো তাদের খেতে বলেন, অনেকে আবার জোরও করেন৷ অথবা সালাদ বা পাতে দেয়া সবজিটুকু খেয়ে নিলে সে একটা চকলেট বা আইসক্রিম পাবে – এমন লোভও দেখিয়ে থাকেন তাঁরা৷
ছবি: picture-alliance/dpa
বাচ্চারা নকল করে
ডা. ইয়োখুম জানান, ‘‘মা-বাবা নিজেরা যদি নিয়মিত শাক-সবজি এবং ফলমূল খেতে অভ্যস্ত হন অথবা পছন্দ করেন, তবে সেটা খুব ছোট বয়স থেকেই সন্তানদের সামনে করা বা দেখানো যেতে পারে৷ কারণ শিশুরা বাবা-মাকে যা করতে দেখে সেটা নিজেরাও নকল করে, যা পরবর্তীতে অভ্যাসে পরিণত হয়৷’’
ছবি: Fotolia/Tatyana Gladskih
পুষ্টিগুণই যথেষ্ট
শিশুরা কোনো একটা সবজি বা ফল না খেলে জোর করার তেমন কোনো প্রয়োজন নেই, বলেন ডা. ইয়োখুম৷ বরং বাচ্চারা যেসব খাবার পছন্দ করে, সেসব খাবার সুস্থভাবে বেড়ে ওঠার জন্য প্রয়োজনীয় পুষ্টিগুণ আছে কিনা – সেদিকে লক্ষ্য রাখলেই যথেষ্ট৷
ছবি: Fotolia/Subbotina Anna
লোভনীয় মিষ্টি খাবার
বাজারে শিশুদের জন্য নানা রকম লোভনীয় মিষ্টি খাবার সাজানো থাকে, যা থেকে দূরে থাকাই ভালো৷ কারণ শিশুকাল থেকে সেসব খাবারে অভ্যস্ত হয়ে গেলে বড় বয়সেও শরীর তা পেতে চায়৷ বলা বাহুল্য, ‘লো ফ্যাট’ দুধেও রয়েছে যথেষ্ট ক্যালসিয়াম এবং ফসফরাস, যা শিশুদের হাড় শক্ত করতে সাহায্য করে৷ তাই বেশি মিষ্টি বা ফ্যাটের কোনো প্রয়োজনই নেই!
ছবি: picture-alliance/dpa
স্বাস্থ্যকর পানীয়
বড়দের শরীরের তুলনায় বাচ্চাদের শরীরে বেশি পানি প্রয়োজন৷ তবে তাদের জন্য সবচেয়ে ভালো ট্যাপ ওয়াটার অথবা মিনারেল ওয়াটার৷ জার্মানিতে ট্যাপের পানি পান করা নিরাপদ৷ তাছাড়া ঘরে করা ফলের জুস, চা ইত্যাদি পান করা যেতে পারে৷ তবে বাজারের কেনা ‘আইস টি’, ফান্টা বা জুস নয়৷ কারণ সে সবে দেয়া থাকে প্রচুর চিনি৷ অবশ্য মাঝে মধ্যে যে এক, আধ গ্লাস পান করা যাবে না – তা কিন্তু নয়!
ছবি: Fotolia/Elenathewise
সাধারণভাবে বড় হওয়া
সারাদিন ঘরে বসে কম্পিউটারে খেলা বা টিভি দেখা নয়৷ যতটা সম্ভব বাইরে খেলাধুলা করার সুযোগ করে দেওয়া প্রয়োজন বাচ্চাদের৷ তার সঙ্গে সঙ্গে বিভিন্ন হবি বা খেলাধুলার জন্য ক্লাবে ভর্তি করে দিলে শিশুরা অন্য বাচ্চাদের সাথে মিলে-মিশে, হেসে-খেলে স্বাভাবিকভাবে বড় হয়ে উঠতে পারবে৷
ছবি: SerrNovik - Fotolia
বয়ঃসন্ধিকাল
এই বয়সে কেউ যেমন আর বাচ্চা নয়, আবার সবকিছু বোঝার মতো যথেষ্ট বড়ও নয়৷ কিশোর-কিশোরীরা এ বয়সে অন্য রকম কিছু করতে চায়, দেখতে চায় বা নানা কারণে মানসিক সমস্যাও হতে পারে তাদের৷ তাই বাবা-মায়ের উচিত সন্তানদের মনের অবস্থা বুঝে সেভাবে বাধা না দিয়ে শারীরিক ও মানসিক সমস্যাগুলি সুন্দভাবে বুঝিয়ে দেয়া এবং অবশ্যই একজন বন্ধুর মতো আচরণ করা৷
ছবি: picture-alliance/dpa
নার্ভ শক্ত রাখতে হবে
ডা. ইয়োখুমের মতে, বয়ঃসন্ধিকাল অর্থাৎ শিশুর জীবনের গুরুত্বপূর্ণ এই সময়ে নানা ধরণের পরিস্থিতির জন্য বাবা-মাকে নার্ভ শক্ত রাখতে হবে এবং কিছু কিছু ব্যাপারে তাদের ‘সাপোর্ট’-ও করতে হবে৷ একমাত্র তবেই সন্তানরা বয়ঃসন্ধিকাল সহজভাবে পার করে আস্তে আস্তে দায়িত্বশীল হয়ে উঠতে পারবে৷
ছবি: DW/Li Fern Ong
বন্ধুর মতো সহজ সম্পর্ক
সন্তান এবং বাবা-মায়ের ভেতরের সম্পর্ক যদি বন্ধুর মতো হয়, তাহলে অনেককিছুই অনেক সহজ হয়ে যায়৷ এই সম্পর্কে তৈরি করতে অবশ্য বেশ খানিকটা সময় একসাথে কাটানো খুব দরকার৷ আজকের এই যান্ত্রিক জীবনে সময় পাওয়া কঠিন হলেও সময় বের করে নেওয়াটা কিন্তু খুবই জরুরি৷ কারণ শিশুর সুন্দরভাবে বেড়ে ওঠার ক্ষেত্রে ‘সময়’ মহা মূল্যবান!
ছবি: picture-alliance/dpa
13 ছবি1 | 13
ফলে বাড়িতে কাজের লোক, ড্রাইভার রাখার ক্ষেত্রে যা নিয়ম এতদিন চালু ছিল, এবার গৃহশিক্ষকদের ক্ষেত্রেও সেই একই বিধিনিষেধ চালু করতে চায় পুলিশ৷ তাতে ছাত্র-ছাত্রীদের সুরক্ষা হয়ত নিশ্চিত হবে, কিন্তু গৃহশিক্ষকদের যে সম্মানহানি হবে, তা বলাই বাহুল্য৷ কিন্তু পুলিশও এ ক্ষেত্রে নিরুপায়৷ আর তার থেকেও বড় কথা, ওই গৃহশিক্ষিকা কী শিখিয়ে গেলেন সমাজকে! এটাই কি, যে বাবা-মায়ের পরেই জীবনে যে শিক্ষকদের স্থান ছিল, তাঁদের ওপরেও আর ভরসা রাখা যাচ্ছে না?
দীর্ঘদিন শিক্ষকতার কাজ করছেন অভিজিৎ ব্যানার্জি৷ কোনও স্কুলে নয়, তিনিও নিজের বাড়িতে দুবেলা ক্লাস নেন৷ তিনি স্বীকার করলেন যে গৃহশিক্ষকদের মান বেশ কিছু বছর ধরে ক্রমশই অধোগামী৷ তার সবথেকে বড় কারণ, শিক্ষকতা আজকাল নেহাতই একটা পেশা৷ কোনও মহতি ভাবনা থেকে আজকাল আর কেউ শিক্ষকতা করতে আসেন না৷ সেই সব শিক্ষকরাও আর নেই, যাঁদের দেখে ভবিষ্যৎ গঠনের কর্তব্যবোধ পরবর্তী প্রজন্মের শিক্ষকদের মধ্যে সঞ্চারিত হবে৷ অন্যদিকে এক অভিভাবকের বক্তব্য, বর্তমান শিক্ষকরাই সেই সম্মান আদায়ে ব্যর্থ! এঁরা ঘড়ি ধরে পড়ান, গুণে পয়সা নেন এবং আর পাঁচটা চাকরির মতো সবেতন ছুটি-সহ যাবতীয় সুযোগ-সুবিধা দাবি করেন!
তবে সাম্প্রতিক এই শিশু নিগ্রহের ঘটনাটি যে শুধু ধিক্কারযোগ্য, তা নয়, এমন ঘটনা যে ঘটাই উচিত হয়নি, এ ব্যাপারে শিক্ষক থেকে অভিভাবক, সবাই একমত৷ কিন্তু সমস্যা হল, দায়িত্বশীল, স্নেহপ্রবণ শিক্ষকের যেখানে আকাল, সেখানে এমন অযোগ্য মানুষের হাতে সন্তানের দায়িত্ব ছেড়ে দেওয়ার বাধ্যতা থেকেই বা নিষ্কৃতি মিলবে কীভাবে? সেই প্রশ্নের উত্তর এখনও অজানা৷