1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

নর্তকী পেশায় নিষেধাজ্ঞা অসাংবিধানিক

অনিল চট্টোপাধ্যায়, নতুন দিল্লি২১ জুলাই ২০১৩

বার-ড্যান্সারদের পেশার ওপর মহারাষ্ট্র সরকারের নিষেধাজ্ঞা জারিকে অসাংবিধানিক বলে রায় দেন ভারতের শীর্ষ আদালত৷ সামাজিক নৈতিকতার নিরিখে এই রায়ের অভিঘাত ভালো না মন্দ, তা নিয়ে চলেছে বিতর্ক৷

ছবি: Prakash Mathema/AFP/Getty Images

আট বছর পর মহারাষ্ট্র রাজ্য সরকারের জারি করা বার-ড্যান্সার বা নিশি-আলয়ের নর্তকীদের ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা রদ হয়ে গেল সুপ্রিম কোর্টের রায়ে৷ এতে স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেললো ২,৫০০ নিশি-আলয়ের মালিক, অশিক্ষিত, স্বল্প শিক্ষিত, গ্রাম ও আধা শহর থেকে আসা প্রায় ৭৫,০০০ পেশাদার নর্তকী এবং এই পেশার সঙ্গে পরোক্ষভাবে যুক্ত প্রায় এক লাখ অন্যান্য ব্যক্তি৷ এই আট বছরে তাঁদের বেশির ভাগের জীবন তছনছ হয়ে গেছে৷ কর্মচ্যুত মেয়েদের পুনর্বাসন দেবার কথা ছিল রাজ্য সরকারের৷ কিন্তু তা দেয়া হয়নি৷ চরম দারিদ্র্যের জ্বালা থেকে বাঁচতে অনেককে নামতে হয় দেহ ব্যবসায় ও অন্যান্য অবৈধ কাজে৷

এই রায়ে উৎসাহিত হয়ে ড্যান্স-বারগুলির এই ব্যবসাকে প্রত্যক্ষ বিদেশি লগ্নি, অর্থাৎ এফডিআই অধিনিয়মের আওতায় আনার দাবি জানিয়েছে মুম্বই বার অ্যাসোশিয়েশন৷ বলেছে, এই বিশ্বায়নের যুগে স্থানীয় মেয়েদের রাখাটা ব্যবসার দিক থেকে যথেষ্ট লাভজনক নয়৷ ভোক্তাদের চাহিদা মেটাতে বিদেশিনীদের নিয়ে আসা দরকার৷ কারণ ২০০৫ সাল আর ২০১৩ সালের চাহিদার মধ্যে ফারাক অনেক৷

আইপিএল-এ চিয়ারলিডার হিসেবে আসতে আগ্রহী বিদেশিরাছবি: Fotoagentur UNI

পর্যটন ভারতের এক বড় শিল্প৷ আগে পর্যটকরা চিত্ত বিনোদনের জন্য চলে যেতেন থাইল্যান্ড বা লাস ভেগাস৷ এবার তাঁরা একই জিনিস পাবেন ভারতে – অবসর যাপনের সঙ্গে চিত্ত বিনোদন৷ আর্থিক মন্দাবস্থার কারণে বিদেশের অনেক বার-গার্ল এবং ড্যান্সার ভারতে আসতে আগ্রহী৷ আইপিএল-এর চিয়ারলিডাররাও এ দেশে আসার জন্য এক পায়ে খাড়া৷ কারণ ওদের দেশের ক্লাব ও বারে ভিড় কমে গেছে আগের তুলনায়৷

এই উদ্যোগে ভারতীয় বার-গার্লদের মনে ভয় ঢুকেছে, সাদা চামড়ার মেয়েরা এসে ভিড় করলে তাঁদের কাজের পরিসর কমে যাবে৷ সাদা চামড়ার প্রতি ভারতীয়দের দুর্বলতা সর্বজনবিদিত৷ এই ইস্যুতে ভোট-ব্যাংকের গন্ধ পেয়ে স্থানীয় মেয়েদের পাশে দাঁড়িয়েছে বিজেপি, শিবসেনা ও এমএনসি-র মতো রাজনৈতিক দলগুলি৷

মোদ্দা কথা হচ্ছে, বার-ড্যান্সারদের এতদিনের পেশা হঠাৎ বন্ধ করার পেছনে সরকারের যুক্তি কী ছিল? নিশি-আলয়গুলি সমাজ-বিরোধী কাজকর্মের আখড়া হয়ে উঠছে এবং দেহ ব্যবসা, অশ্লীলতা ও নারী পাচারের গন্তব্যস্থলে পরিণত হচ্ছে৷ মহারাষ্ট্রের শাসক দলের সঙ্গে এ বিষয়ে একমত বিজেপি, শিবসেনা ও এমএনসি৷

সুপ্রিম কোর্টের যুক্তি হলো, বড় বড় তারকা চিহ্নিত হোটেল এই একই জিনিস চলছে অবাধে ধনী ও উচ্চবর্গীয়দের জন্য৷ তাতে সামাজিক অবক্ষয় না হয়ে থাকলে নিম্নবিত্ত, নিম্নবর্গীয়দের ক্ষেত্রে সেটা হলে গেল গেল রব তোলা অযৌক্তিক, আপত্তিকর৷ পেশাগত গণতান্ত্রিক অধিকার সবার ক্ষেত্রে সমান৷ শীর্ষ আদালতের রায়ের নিহিতার্থ, নৈতিক দিক থেকে দুর্নীতিগ্রস্ত রাজনীতিবিদরা অনেক বেশি দোষী৷

সামাজিক স্বয়ংসেবী সংস্থাগুলি মনে করে, পতিতালয় বেআইনি৷ কিন্তু চলছে৷ সমাজের শুচিতা রক্ষায় জোর করে বন্ধ করতে গেলে ভালোর থেকে যেমন খারাপ হবে বেশি, এক্ষেত্রেও সেটা সত্য৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য
স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ