1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

অস্ত্র কিনে চলেছে মিয়ানমার

৩০ মে ২০১৯

ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও যুক্তরাষ্ট্রসহ বিভিন্ন দেশের নিষেধাজ্ঞার মধ্যেও বিপুল পরিমাণের অস্ত্র কিনে চলেছে মিয়ানমার৷ সামরিক শক্তি বাড়াতে চীন, রাশিয়া, ভারত ও ইসরায়েল থেকে দেশটি প্রচুর প্রাণঘাতী অস্ত্র সংগ্রহ করে যাচ্ছে৷

Myanmar Soldaten
ছবি: Getty Images/AFP/Lynn Bo Bo

নির্যাতনের মুখে ৭ লাখ ৪০ হাজারেরও বেশি রোহিঙ্গা মুসলিম বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়ার প্রেক্ষাপটে নানা ধরনের নিষেধাজ্ঞার মুখে পড়ে মিয়ানমার৷ এর মধ্যে দেশটির বেশ কিছু সামরিক কর্মকর্তাও অ্যামেরিকার নিষেধাজ্ঞার মুখে পড়েছিলেন৷

রোহিঙ্গা মুসলমানদের পর রাখাইন রাজ্যে বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী রাখাইন বিদ্রোহীদের টার্গেট করেছে মিয়ানমার সেনাবাহিনী৷ এসবের নিন্দা জানিয়ে আসছে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা৷

কিন্তু মিয়ানমারের সেনাবাহিনী অস্ত্র কেনা অব্যাহত রেখেছে৷ ভৌগোলিক দিক থেকে ও অস্ত্রের বাজার হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ হওয়ায় বিভিন্ন দেশের সরকারের কাছ থেকে অস্ত্র কেনায় ছাড়ও পাচ্ছে দেশটি৷

বিদেশি দেশ থেকে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর অস্ত্র কেনা ও প্রশিক্ষণ নেওয়ার নানা দিক এক প্রতিবেদনে তুলে ধরেছে বার্তা সংস্থা এএফপি৷

চীন

অর্থনৈতিক অবরোধ শিথিল করলেও মিয়ানমারের কাছে এখন অস্ত্র বিক্রি করছে অ্যামেরিকা৷ তবে অস্ত্র বিক্রিতে পিছপা হচ্ছে না চীন৷

রোহিঙ্গা ইস্যুতে জাতিসংঘে মিয়ানমারকে সমর্থন দিয়ে আসছে চীন৷ দেশটিকে মিয়ানমারের অস্ত্রের প্রধান উৎস হিসাবে অভিহিত করেছে স্টকহোম ইন্টারন্যাশনাল পিস রিসার্চ ইনস্টিটিউট (এসআইপিআরআই)৷

প্রতিষ্ঠানটি বলছে, ২০১৩ থেকে ২০১৭ সালে মিয়ানমারের ৬৮ শতাংশ অস্ত্রের আমদানী হয়েছে চীন থেকে৷ সাঁজোয়া যান, ভূমি থেকে আকাশের মিসাইল প্রযুক্তি, রাডার ও মানববিহীন ড্রোনসহ বিভিন্ন সামরিক সরঞ্জাম ছিল এর মধ্যে৷

এসআইপিআরআই-এর এশিয়া-প্যাসিফিক অঞ্চলের জ্যেষ্ঠ গবেষক সিমন উইজেম্যান জানান, সম্প্রতি সিনো-পাকিস্তানি ‘জেএফ-১৭ থান্ডার ফাইটার জেট’ অর্ডার করেছে মিয়ানমার৷ এর প্রত্যেকটির মূল্য ২৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলার৷ ২০১৮ সালের শেষ সময় থেকে এ ধরনের ফাইটার জেট প্রদর্শন করে আসছে মিয়ানমারের বিমান বাহিনী৷

‘‘অস্ত্র বিক্রিতে মূল্যছাড় সাধারণভাবেই দেওয়া হয়ে থাকে,’’ বলেছেন স্টিমসন সেন্টারের চীনা-মিয়ানমার সম্পর্ক বিশেষজ্ঞ ইউন সান৷

রাশিয়া

আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে মিয়ানমারের অন্যতম উদ্যমী বন্ধু রাশিয়া৷ গত মাসে সে-দেশের বিভিন্ন সামরিক স্থাপনা পরিদর্শন করেছেন মিয়ানমারের সেনা প্রধান মিং অং লাইং৷

সেখানে জেনারেল লাইং একটি হেলিকপ্টার প্লান্ট পরিদর্শন করেছেন৷ এরপর ‘এমআই ১৭১’ বিমানে চড়ে গিয়েছেন সাইবেরিয়া অঞ্চলের উলান উদে শহরে৷ ওই এলাকায় তিনি বৈকাল হ্রদের ‘সৌন্দর্য্য উপভোগ' করেছেন বলে মিয়ানমারের সরকারের মুখপত্র গ্লোবাল নিউ লাইটে উল্লেখ করা হয়৷

রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রী সের্গেই শৈগু ২০১৮ সালের জানুয়ারিতে মিয়ানমার সফর করেন এবং ৬টি এসইউ-৩০ বিমান বিক্রি নিয়ে একটি চুক্তিতে সই করেন৷

এই চুক্তিটি ২০০ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের বলে অনুমান করা হয়৷ ‘ফাইটার জেট’ বিমান বাহিনীর প্রধান যুদ্ধবিমানে পরিণত হয়েছে বলে সেই সময় জানান মিয়ানমারের উপ-প্রতিরক্ষা মন্ত্রী৷

ওই চুক্তির পর অ্যামেরিকার স্টেট ডিপার্টমেন্ট বলেছিল, এই চুক্তি রোহিঙ্গা সংকটকে তীব্রতর করবে৷ তবে এই ‘অভিযোগের বিষয়ে কোনো মনোযোগ' তাদের নেই বলে তখন মন্তব্য করেছিলেন রাশিয়া সরকারের একজন মুখপাত্র৷

ভারত

আঞ্চলিক শক্তি হিসাবে চীনের বিপরীতে প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে প্রতিবেশী মিয়ানমারের সঙ্গে প্রতিরক্ষা সম্পর্ক বাড়ায় ভারত৷ একইসঙ্গে রোহিঙ্গা সংকটেও নির্লিপ্ত ভূমিকা রাখে দেশটি৷

নিরাপত্তা বিশ্লেষক অ্যান্থনি ডেভিসের মতে, মিয়ানমারের নৌবাহিনীর দিকে নজর দিচ্ছে ভারত৷ মিয়ানমারকে বিশেষায়িত যন্ত্রপাতি সরবরাহের পাশাপাশি যৌথ মহড়ার প্রস্তাব দিয়ে আসছে দেশটি৷

‘‘ভারতীয়রা মূলত মিয়ানমারের বিমান বাহিনীর আধুনিক করা নিয়ে কাজ করছে এবং এক্ষেত্রে অগ্রগতি হচ্ছে উল্লেখযোগ্য হারে,’’ বলেছেন ডেভিড৷

সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বেশ কয়েকবার ভারত সফরে গেছেন মিয়ানমারের সেনা প্রধান মিং অং লাইং৷ ২০১৭ সালের সেপ্টেম্বরে রোহিঙ্গা নির্যাতন ত্বরান্বিত হওয়ার মধ্যেও মিয়ানমারের বেসামরিক নেত্রী অং সান সুচির সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী৷ সেই সময় প্রতিরক্ষা সম্পর্ক বাড়ানোর বিষয়ে সম্মত হন তাঁরা৷

ইসরায়েল

মিয়ানমারের সঙ্গে ইসরায়েলের সম্পর্ক দীর্ঘ দিনের৷ ২০১৮ সালে রোহিঙ্গা সংকটের মধ্যেও মিয়ানমার সরকারকে পানি বিশুদ্ধকরণ সিস্টেম প্রদান করে ইসরায়েল৷

এর আগে ২০১৫ সালে ইসরায়েল সফর করেন জেনারেল মিং অং লাইং৷ সেই সময় হলোকস্ট জাদুঘরের পাশাপাশি প্রতিরক্ষা সরবরাহ ব্যবস্থাও পরিদর্শন করেন তিনি৷

২০১৭ সালের এপ্রিলে মিয়ানমারে নৌবাহিনী তাদের ফেসবুক পাতায় ইসরায়েল নির্মিত ‘সুপার ডিভোরা এমকে-৩’ পেট্রোল বোটের বেশ কিছু ছবি পোস্ট করেছিল৷

‘‘মিয়ানমারের জলসীমায় সে ৪৫ নটিক্যাল মাইল গতিতে চলছে৷ মিয়ানমারের নৌবাহিনীতে স্বাগতম!’’ একটি পোস্টে এভাবে বলতে শোনা যায় ক্যাপ্টেনকে৷

কিন্তু মিয়ানমারের সঙ্গে সম্পর্ক নিয়ে ইসরায়েলের অভ্যন্তরেই নানা ধরনের বিতর্ক রয়েছে৷ তাই ২০১৭ সালে একবার অস্ত্র বিক্রি বন্ধও হয়ে গিয়েছিল৷ এখন মিয়ানমারের কাছে অস্ত্র বিক্রি আগের মতোই চলছে বলে জানিয়েছে ইয়াঙ্গনের ইসরায়েল দূতাবাস৷

এমবি/এসিবি (এএফপি)

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য
স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ