1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

নিহত সাংবাদিক, আক্রান্ত ভারতীয় গণতন্ত্র

২৭ মার্চ ২০১৮

ভারতীয় গণতন্ত্রে সংবাদমাধ্যমকে মানা হয় চতুর্থ স্তম্ভ৷ অথচ সেই দেশেই একের পর এক সাংবাদিক খুন হচ্ছেন৷ পাশাপাশি হচ্ছে প্রতিবাদও৷ সাংবাদিকদের নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্নও উঠছে৷

Symbolbild Pressefreiheit
ছবি: picture-alliance/dpa

এক কথায় মৃত্যু মিছিল৷ ২০১৭ সালে ভারতে ৩ জন সাংবাদিক খুন হয়েছিলেন৷ ২০১৮ সালের গোড়াতেই খুন হয়ে গেলেন আরো ৩ জন৷ দেশের বিভিন্ন প্রান্তে একের পর এক সাংবাদিক খুনের ঘটনা নিয়ে রীতিমতো আলোড়ন সৃষ্টি হয়েছে৷

সোমবার রাতে কেরালার রাজধানী তিরুবন্তপুরমে খুন হন সাংবাদিক এবং রেডিও জকি রাজেশ৷ খবর, একটি অনুষ্ঠান শেষ করে রাত দু'টো নাগাদ এক বন্ধুকে নিয়ে বাড়ি ফিরছিলেন ৩৬ বছরের ওই সাংবাদিক৷ তখনই একদল অজ্ঞাত পরিচয় ব্যক্তি তাঁদের গাড়ি ঘিরে ফেলে৷ বেধড়ক মারধর করা হয় দু'জনকেই৷ বন্ধু কোনোমতে প্রাণ বাঁচাতে পারলেও ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় রাজেশের৷ বরাবরই দেশের রাজনৈতিক অবস্থা নিয়ে স্পষ্ট মতামত জানাতেন রাজেশ৷ রেডিও জকি হিসেবে অত্যন্ত জনপ্রিয়ও ছিলেন তিনি৷ রাজনৈতিক কারণেই তাঁকে খুন করা হয়ে থাকতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে৷ এ ঘটনায় এখনো পর্যন্ত কেউ গ্রেফতার হয়নি৷

কিছুদিন আগেই মধ্যপ্রদেশে খুন হন আরেক সাংবাদিক সন্দীপ শর্মা৷ মধ্যপ্রদেশের একটি নাম করা টেলিভিশন চ্যানেলের  সাংবাদিক ছিলেন সন্দীপ শর্মা৷ অভিযোগ, কিছুদিন আগে রাজ্যের বেআইনি বালি মাফিয়াদের সঙ্গে পুলিশের উচ্চপদস্থ কর্তাদের যোগাযোগের খবর ফাঁস করেছিলেন তিনি৷ এরপর থেকেই একের পর এক হুমকি ফোন আসতে থাকে তাঁর কাছে৷ বিষয়টি নিয়ে থানায় অভিযোগও জানিয়েছিলেন তিনি৷ কিন্তু শেষপর্যন্ত প্রকাশ্য রাস্তায় লরি চাপা দিয়ে খুন করা হয় তাঁকে৷ তাঁকে খুনের দৃশ্যের সিসিটিভি ফুটেজও পাওয়া গিয়েছে৷ ভিডিওতে দেখা গেছে, রাস্তার ধার দিয়ে হাঁটছিলেন ওই সাংবাদিক৷ হঠাৎই একটি লরি এসে তাঁকে পিষে দিয়ে চলে যায়৷ ভিডিও'টি ভাইরাল হয়ে যায় সোশ্যাল নেটওয়ার্কে৷ রাজ্য জুড়ে তীব্র প্রতিবাদ শুরু হয়, যার জেরে এসে পড়ে দিল্লিতেও৷

শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়

This browser does not support the audio element.

 

এই ঘটনার দিন কয়েক আগেই বিহারে খুন হন এক প্রথমসারির হিন্দি  খবরের কাগজের সাংবাদিকনবীন নিশ্চল৷ অভিযোগ, স্থানীয় রাজনৈতিক ব্যক্তিদের সঙ্গে বচসার পরেই তাঁকে খুন করা হয়৷ মধ্যপ্রদেশ এবং বিহারের ঘটনায় অবশ্য ইতিমধ্যেই দুই রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ৷ অভিযোগ, খুনের পিছনে তাঁদের হাত আছে৷

বিজেপি ক্ষমতায় আসার পর থেকে দেশ জুড়ে সাংবাদিকদের নিরাপত্তা নিয়ে বিপুল প্রশ্ন উঠছে৷ ২০১৭ সালে বেঙ্গালুরুতে খুন হয়েছিলেন গৌরী লঙ্কেশ৷ বিজেপি সরকারের কঠোর সমালোচক ছিলেন ওই সাংবাদিক৷ এবং সেকারণেই তাঁকে খুন হতে হয়েছে বলে অভিযোগ৷ ত্রিপুরাতেও খুন হন দু'জন সাংবাদিক৷ এর আগে ২০১৬ সালে খুন হয়েছিলেন ৩ জন সাংবাদিক৷

তাহলে কি পৃথিবীর সর্ববৃহৎ গণতন্ত্রের দেশ ভারতে সাংবাদিকদের কোনো নিরাপত্তা নেই? প্রশ্ন তুলছেন অনেকেই৷ ভারতীয় গণতন্ত্রে গণমাধ্যমকে চতুর্থ স্তম্ভ হিসেবে গণ্য করা হয়৷ বরাবরই সেখানে গণমাধ্যমের স্বাধীনতা এবং সাংবাদিকের মত প্রকাশের স্বাধীনতাকে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে৷ ইন্দিরা গান্ধী জরুরি অবস্থা ঘোষণা করার পর সংবাদ মাধ্যমের ওপর হস্তক্ষেপের চেষ্টা হয়েছিল৷ কিন্তু তার বিরুদ্ধে বিপুল প্রতিবাদ হয়েছিল৷ জনসমাজও পাশে দাঁড়িয়েছিল সংবাদমাধ্যম এবং সাংবাদিকদের৷ এর জেরে বেশ কিছু সাংবাদিককে জেলেও ঢোকানো হয়েছিল৷ অনেকেই মনে করছেন, বর্তমান সরকারের আমলে তার চেয়েও খারাপ দিকে যাচ্ছে পরিস্থিতি৷ সুযোগ পেলেই খুন করা হচ্ছে সাংবাদিকদের৷

মিলন দত্ত

This browser does not support the audio element.

এ বিষয়ে ডয়চে ভেলেকে তাঁর মতামত জানিয়েছেন বিশিষ্ট সাহিত্যিক এবং প্রাক্তন সাংবাদিক শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়৷ তাঁর মতে,‘‘ সাংবাদিকদের উপর আক্রমণ একটি নিন্দনীয় ঘটনা৷ এবং যারা ঘটাচ্ছে, তারা দেশের গণতন্ত্রের বিরোধী৷'' 

প্রাক্তন সাংবাদিক এবং সমাজকর্মী মিলন দত্তের মতে ইন্দিরা গান্ধি যখন জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছিলেন তখন সেটা জানা বিষয়ছিল, কিন্তু বর্তমান সরকার তো গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে নির্বাচিত৷ ফলে এই সময়ে সাংবাদিক এবং আপামর প্রতিবাদীদের ওপর আক্রমণ আরো বড় সমস্যা৷ এবং তাঁর ধারণা সমস্যা আরো বাড়বে৷

তবে আশার কথা, একের পর এক সাংবাদিক হত্যার পাশাপাশি প্রতিবাদও হয়েছে৷ দিল্লিতে বিশাল জমায়েত হয়েছে সাংবাদিকদের ওপর আক্রমণের প্রতিবাদে৷ নাগরিক সমাজ পথে নেমেছে৷ 

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

আরো সংবাদ দেখান
স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ