1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

নিয়মের ব্যতিক্রম বুদ্ধদেব

শীর্ষ বন্দ্যোপাধ্যায় কলকাতা
২ সেপ্টেম্বর ২০১৯

পশ্চিমবঙ্গের নবনিযুক্ত রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড় গিয়েছিলেন প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করতে৷ সেই সুবাদে অসুস্থ বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যর ছবি সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশ পেতেই আলোড়িত সমাজ৷

Indien, Buddhadeb Bhattacharya
ছবি: picture-alliance/dpa/P.Adhikary

সক্রিয় রাজনীতি থেকে তিনি নিজেকে গুটিয়ে নিয়েছেন তিনি৷ পশ্চিমবঙ্গের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য৷ ২০০৬ সালে বিধানসভা ভোটে সংখ্যাগরিষ্ঠের বিপুল সমর্থন পেয়েছিলেন তাঁরা৷ পাঁচ বছর পরেই ফল পুরো উল্টে গেল৷ বামফ্রন্ট সরকারের টানা ৩৪ বছরের শাসনে ছেদ ঘটিয়ে ক্ষমতায় এল তৃণমূল কংগ্রেস৷ সেই হারের নৈতিক দায়িত্ব স্বীকার করে নিয়েই বুদ্ধদেব কার্যত রাজনীতি থেকে সরতে থাকেন৷ এমনকি দলীয় বৈঠকেও গরহাজির থাকতে শুরু করেন এবং মিছিল-মিটিং থেকেও দূরে থাকেন৷ সেটা অবশ্য শারীরিক অসুস্থতার কারণে৷ নিয়মিত এবং খুব বেশি ধূমপান করলে সিওপিডি নামে যে শ্বাসকষ্ট হয়, তিনি তার শিকার৷ ২৪ ঘণ্টা অক্সিজেন চালিয়ে তাঁকে শ্বাস নিতে হয়৷ শেষ যেবার প্রকাশ্যে দেখা গেল তাঁকে, বামফ্রন্টের সেই ব্রিগেডের জনসভায় নাকে অক্সিজেনের নল নিয়ে গাড়ির মধ্যেই বসে থাকতে হয় তাঁকে৷ বাইরে বেরোতে, বা মঞ্চে উঠতে পারেননি৷
সম্প্রতি পশ্চিমবঙ্গের নতুন রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড় দক্ষিণ কলকাতার পাম এভিনিউতে প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করতে যান৷ অতি ছোট মাপের সরকারি ফ্ল্যাটে, যেখানে মুখ্যমন্ত্রী থাকার সময়েও থেকেছেন বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য৷ বইপত্রে ঠাসা সেই ছোট ঘরে, অসুস্থ মুখ্যমন্ত্রীর এখনকার চেহারা দেখে বিচলিত হয়েছে গোটা রাজ্য৷ দৃশ্যতই অসুস্থ তিনি৷ কিন্তু দলীয় সূত্রে জানা যায়, তিনি হাসপাতালে যেতে চান না৷ প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে যে সরকারি চিকিৎসা তাঁর প্রাপ্য, সেই বিশেষ পরিষেবাতেও অনাগ্রহী৷ বর্তমান মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি নিজে গিয়ে সেই প্রস্তাব দিলেও, বুদ্ধবাবু তা গ্রহণ করেননি৷ এর পাশাপাশি যে নেহাতই সাধারণ, শিক্ষিত মধ্যবিত্তের সংসার তাঁর, তাও ফের নতুন করে লোকের চোখে পড়েছে৷ ফলে আবার চর্চা শুরু হয়েছে মানুষটির সাদাসিধে জীবনদর্শন এবং রাজ্যে শিল্পায়নে তাঁর ব্যর্থ প্রচেষ্টা নিয়ে৷
লোকে যে এখন কিছুটা আক্ষেপের সুরেই সেসব নিয়ে কথা বলছে, এটা নির্ভুলভাবে চিহ্নিত করলেন বুদ্ধদেবের দল সিপিআইএম–এর নেতা, প্রাক্তন সাংসদ ও মন্ত্রী মহম্মদ সেলিম৷ যে আজকের রাজনীতিতে আত্মপ্রচারই যেখানে নিয়ম, সেখানে বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য ব্যতিক্রম৷ মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে নেননি, প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী হিসেবেও নিতে চান না৷ বরং একজন সাধারণ কমিউনিস্ট কর্মী হিসেবে যা তাঁর প্রাপ্য, সেটুকুই তিনি নেবেন৷ এর অতিরিক্ত, এমনকি তাঁর অসুস্থতা নিয়ে আলোচনা, বা খবর হোক, সেটাও তিনি চান না৷ বস্তুত ডয়চে ভেলের পক্ষ থেকে আরও দুজন প্রথম সারির বাম নেতার সঙ্গে কথা বলতে গিয়ে বিমুখ হতে হল, কারণ বুদ্ধবাবু পছন্দ করেন না৷
তাও তাঁকে নিয়ে চর্চা হচ্ছে, কারণ লোকের যত না উদ্বেগ, তার থেকে বেশি দুঃখবোধ এবং যন্ত্রণাবোধ কাজ করছে, যে এই মানুষটি আমাদের রাজ্যের শিল্প–সম্ভাবনাকে বুঝতে পেরেছিলেন৷ সেই কারণে কৃষির সাফল্যকে সংহত করে শিল্পায়নের প্রচেষ্টা নিয়েছিলেন, যেটা বাংলার বেকারদের মুখে হাসি ফোটাতে পারত৷ বললেন মহম্মদ সেলিম৷ জোর গলায় দাবি করলেন, রাজ্যে শিল্পায়নের প্রশ্নে তাঁর যে উদ্দেশ্যের আন্তরিকতা এবং সততা, সেটা নিয়ে কেউ প্রশ্ন তুলতে পারে না৷ কলকাতার সল্ট লেক সেক্টর ফাইভের তথ্য–প্রযুক্তি শিল্প তালুকের উদাহরণ টেনে বললেন, এরকম আরও কারখানা দরকার ছিল৷ সে শালবনীতেই হোক, বা সিঙ্গুরে, কিংবা নন্দীগ্রামে৷ লোকেও সেটা এখন বুঝছে৷

মহম্মদ সেলিম

This browser does not support the audio element.

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য
স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ