যত দিন যাচ্ছে, ততই এসএসসি ও টেট কেলেঙ্কারি নিয়ে নতুন নতুন চাঞ্চল্যকর তথ্য সামনে আসছে।
বিজ্ঞাপন
যেমন সামনে এসেছে গোপাল দলপতি ও তার স্ত্রী হৈমন্তীর কাহিনি। সামনে এসেছে, কীভাবে এজেন্ট লাগিয়ে চাকরিপ্রার্থীদের ধরে পয়সা তুলত কুন্তল ও তাপস মন্ডল। মামা-ভাগনে গ্রামের প্রায় একশজন চাকরি পাওয়ার জন্য এই ফাঁদে পা দিয়ে লাখ লাখ টাকা কুন্তলদের দিয়েছিল বলে অভিযোগ।
গোপাল দলপতি ও হৈমন্তীর কাহিনি
নিয়োগ দুর্নীতি কেলেঙ্কারিতে এখন গোপাল ও হৈমন্তীকে নিয়ে খুব হইচই হচ্ছে। সম্প্রতি আদালত থেকে বের হওয়ার সময় অভিযুক্ত কুন্তল ঘোষ জানিয়েছেন, গোপাল দলপতি ও তার স্ত্রী হৈমন্তী গঙ্গোপাধ্য়ায়ের কাছে সব টাকা আছে। তারা সব জানে।, হৈমন্তীরর কাছে সব টাকা থাকত। যা জানে সব হৈমন্তী জানে।
কুন্তল বলেছে, গোপাল দলপতিকে সে ১৫ কোটি টাকা দিয়েছিল মন্ত্রীকে দেওয়ার জন্য। এবিপি আনন্দে একটি সাক্ষাৎকারে গোপাল দলপতি স্বীকার করেছেন, কুন্তল তার ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে কখনো ৩০ হাজার, কখনো ৭০ হাজার, কখনো এক লাখ টাকা দিয়েছে। কুন্তল তাকে বলেছিল, চাকরিপ্রার্থীপিছু সাত থেকে আট লাখ টাকা অগ্রিম দিতে হবে। কিন্তু প্রার্থীরা তা দিতে রাজি হয়নি। তাই তিনিও কোনো টাকা কুন্তলকে দেননি।
পার্থ-কাণ্ডে সরকারবিরোধী আন্দোলনে পথে বিরোধীরা
প্রতিদিনই কলকাতার রাস্তা দেখছে একের পর এক মিছিল। বুধবার তিনটি মিছিল করেছিল বামেরা। বৃহস্পতিবার ছিল বিজেপির মিছিল।
ছবি: Satyajit Shaw/DW
বিজেপির মিছিল
বৃহস্পতিবার মিছিল করে বিজেপি। বিরাট মিছিল কলেজ স্কোয়্যার থেকে ধর্মতলা পর্যন্ত যায়। হাজার হাজার বিজেপি কর্মী যোগ দিয়েছিলেন মিছিলে।
ছবি: Satyajit Shaw/DW
গেরিলা মিছিল
বুধবার শহরের তিন প্রান্ত থেকে মিছিল করে গান্ধী মূর্তির পাদদেশে পৌঁছায় বাম রাজনৈতিক দলগুলির মিছিল। একটি মিছিল আসে হাওড়া থেকে, একটি পার্ক সার্কাস এবং একটি শিয়ালদহ থেকে।
ছবি: Payel Samanta/DW
মিছিলের মুখ
শাসকদল এবং পার্থের বিরুদ্ধে পোস্টার নিয়ে পথে নেমেছিলেন বামপন্থি নেতৃত্ব।
ছবি: Sukhomoy Sen/NurPhoto/picture alliance
অধীরের নিন্দা
পার্থ-কাণ্ডের তীব্র নিন্দা করেছেন কংগ্রেস নেতা অধীর চৌধুরী। কলকাতার রাস্তায় তারাও মিছিল করবেন বলে জানিয়েছেন।
ছবি: Syamantak Ghosh/DW
মিছিলে পার্থ-অর্পিতা
পার্থ-অর্পিতাদের মুখোশ পরে মিছিলে যোগ দেন বিজেপি কর্মীরা। তাদের গায়ে লেখা 'চোর'।
বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার যোগ দিয়েছেন মিছিলে। মিছিল শেষে বক্তৃতাও করেন তিনি।
ছবি: Satyajit Shaw/DW
শহরে জ্যামজট
মিছিলের জেরে চিত্তরঞ্জন অ্যাভেনিউয়ের মতো ব্যস্ত রাস্তাতেও গাড়ি আটকে পড়ে। ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করতে হয়েছে নিত্য যাত্রীদের।
ছবি: Satyajit Shaw/DW
পুলিশের তৎপরতা
অন্যবারের মতো মিছিল আটকায়নি পুলিশ। তবে শেষ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে রাস্তা খোলার ব্যবস্থা করেছে।
ছবি: Satyajit Shaw/DW
মিছিলে স্লোগান
মিছিল থেকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধেও স্লোগান ওঠে। তার পদত্যাগ দাবি করা হয়েছে।
ছবি: Satyajit Shaw/DW
মন্ত্রী নন পার্থ
বৃহস্পতিবারই পার্থকে মন্ত্রী পদ থেকে সরিয়ে দিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পরে দল থেকেও তাকে সাসপেন্ড করা হয়।
ছবি: Satyajit Shaw/DW
11 ছবি1 | 11
হৈমন্তী হলো গোপাল দলপতির দ্বিতীয় স্ত্রী। হৈমন্তীর কথাতে গোপাল তার নামবদল করে আরমান গঙ্গোপাধ্যায় করে বলে টিভি৯-এর রিপোর্ট জানাচ্ছে। তারা মিলে হৈমন্তী অ্যাগ্রো প্রাইভেট লিমিটেড নামে কোম্পানি গঠন করেছিলেন। মুম্বইয়ের নরিম্যান পয়েন্টে তাদের অফিস ছিল। নরিম্যান পয়েন্ট হলো মুম্বইয়ের সবচেয়ে দামী জায়গাগুলির মধ্যে একটি। শুদু তাই নয়, তাদের আরো পাঁচটি কোম্পানি ছিল বলে অভিয়োগ।
এর আগে চিটফান্ড নিয়ে একটি অভিযোগের ভিত্তিতে তাদের প্রেপ্তার করা হয়। গোপাল এক বছর তিহারে বন্দিও ছিল।
সূত্র জানাচ্ছে, তদন্ত করে যে তথ্য সিবিআইয়ের হাতে এসেছে তা হলো, গোপাল দলপতি ও তাপস মন্ডল একসঙ্গে কাজ করত। গোপাল ছিল কুন্তল ও তাপসের মধ্যে যোগাযোগরক্ষাকারী। পরে তাদের মধ্যে গোলমাল হওয়ায় তারা আলাদাভাবে এজেন্ট নিয়োগ করে।
এসএসসি আন্দোলনের ৬০০ দিন, রাস্তায় চাকরিপ্রার্থীরা
৬০০ দিন ধরে টানা আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন স্কুলের চাকরিপ্রার্থীরা। ৬০০ দিনের মাথায় কী বলছেন আন্দোলনকারীরা?
ছবি: Subrata Goswami/DW
টানা ৬০০ দিন
কলকাতায় গান্ধীমূর্তির পাদদেশে ৬০০ দিন ধরে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন এসএসসি চাকরিপ্রার্থীরা। আদালতের রায় মেনে এখন তারা সকালে এসে বসেন, বিকেলে উঠে যান।
ছবি: Subrata Goswami/DW
আন্দোলনের শুরু
চাকরিপ্রার্থীদের অভিযোগ ছিল, স্কুলে চাকরির নিয়োগ পদ্ধতিতে দুর্নীতি হয়েছে। আদালতের হস্তক্ষেপে সে বিষয়ে একাধিক মামলা শুরু হয়েছে। গ্রেপ্তার হয়েছেন সাবেক শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়-সহ একাধিক কর্মকর্তা।
ছবি: Subrata Goswami/DW
আদালতের নির্দেশ
আদালতের নির্দেশে বেশ কিছু ব্যক্তিকে চাকরি থেকে বরখাস্ত করা হয়েছে। কিছু আন্দোলনকারীকে চাকরি দেওয়া হয়েছে।
ছবি: Subrata Goswami/DW
বর্তমান দাবি
চাকরিপ্রার্থীদের বক্তব্য, এসএসসি পাশ করা সকলকেই চাকরি দিতে হবে সরকারকে। চাকরি না পাওয়া পর্যন্ত তাদের আন্দোলন চলবে।
ছবি: Subrata Goswami/DW
সঙ্গে অনেকে
শুধু এসএসসি নয়, ময়দানের অন্য প্রান্তে আন্দোলন চালাচ্ছেন টেট, শারীরশিক্ষা, কর্মশিক্ষার চাকরিপ্রার্থীরাও। সকলেরই দাবি, দ্রুত চাকরির ব্যবস্থা করতে হবে।
ছবি: Subrata Goswami/DW
সরকারের মনোভাব
শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু জানিয়েছেন, আন্দোলন করলেই চাকরি পাওয়া যাবে না। আদালতের নির্দেশ মেনেই চাকরি দেওয়া হবে।
ছবি: Subrata Goswami/DW
আন্দোলনকারীদের পাল্টা
আন্দোলনকারীদের বক্তব্য, তারা দীর্ঘদিন ধরে অপেক্ষা করছেন। সরকার তাদের চাকরি দেওয়ার প্রতিশ্রুতিও দিয়েছিল। এবার সেই প্রতিশ্রুতি রক্ষা করতে হবে।
ছবি: Subrata Goswami/DW
৬০০ দিনের কনভেনশন
শুক্রবার গান্ধীমূর্তির পাদদেশে একটি কনভেশনের আয়োজন করেন চাকরিপ্রার্থীরা। কলকাতার বেশ কিছু বিশিষ্ট মানুষও সেই কনভেনশনে যোগ দিয়েছিলেন।
ছবি: Subrata Goswami/DW
আর কতদিন
আন্দোলনকারীরা শিশুদের সঙ্গে নিয়ে আন্দোলনে এসে যোগ দিচ্ছেন। বিক্ষোভস্থলে বসেই তারা ছেলেমেয়েদের পড়াচ্ছেন।
ছবি: Subrata Goswami/DW
অসুস্থ আন্দোলনকারী
কঠিন অসুখ নিয়েও দিনের পর দিন আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন অনেকে। আন্দোলন চলাকালীন অসুস্থ হয়ে পড়েছে বহু বিক্ষোভকারী। কিন্তু আন্দোলন গুটিয়ে নেওয়ার প্রশ্নই নেই বলে জানিয়ে দিয়েছেন তারা।
ছবি: Subrata Goswami/DW
10 ছবি1 | 10
গোপাল সিবিআইকে জানিয়েছে, তার স্ত্রী কয়েকবছর আগে তাকে ছেড়ে চলে গেছে। সে কোথায় তা তিনি জানেন না।
এজেন্টের মাধ্যমে
আনন্দবাজার জানাচ্ছে, ইডি সূত্রের খবর, কুন্তল নিজে টাকা তোলার জন্য এজেন্টদের নিয়োগ করত। তার ২২ জন এজেন্টের সন্ধান পাওয়া গেছে।
এজেন্টরা ইডিকে জানিয়েছে, তারা কোটি কোটি টাকা তুলে কুন্তলকে দিয়েছে। হুগলির এক এজেন্ট ৬২ জনের কাছ থেকে তিন কোটি চার লাখ টাকা তুলে কুন্তলের কাছে জমা দেন। বিভিন্ন এজেন্টকে জেরা করে এখনো পর্যন্ত আট কোটি টাকার হিসাব পেয়েছে ইডি।
আর ইডির জেরায় তাপস জানিয়েছেন, তিনি কুন্তলকে ১৯ কোটি দুই লাখ ১০ হাজার টাকা দিয়েছেন।
বিক্ষোভে রাস্তায় চাকরিপ্রার্থীরা, তাদের জীবনে উৎসব নেই
করোনার পর এবার শারদোৎসবে মেতেছে গোটা পশ্চিমবঙ্গ। তবে চাকরিপ্রার্থীরা উৎসবের মধ্যেও আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন।
ছবি: Subrata Goswami/DW
উৎসবের দিনেও প্রতিবাদ
এক বছর পরেও ছবিটা বদলালো না। ২০২১ সালের দুর্গোৎসবেও ঘরবাড়ি ছেড়ে এভাবেই আন্দোলনের মধ্যে কাটিয়েছিলেন চাকরিপ্রার্থীরা। এই বছরও কাটাচ্ছেন। তারা উৎসবে নেই, প্রতিবাদে আছেন। এসএসসি চাকরিপ্রার্থীদের কাছে উৎসবের আলাদা তাৎপর্য নেই। তাদের দাবি, পরীক্ষা দিয়ে পাস করার পরেও দুর্নীতির জন্য চাকরি পাননি। তাই সকলে যতদিন চাকরি না পাচ্ছেন, ততদিন প্রতিবাদ চলবে।
ছবি: Subrata Goswami/DW
তিন দফার প্রতিবাদ
এসএসসি চাকরিপ্রার্থীদের আন্দোলন শুরু হয়েছিল ২০১৯-এ। তিন দফায় এই আন্দোলনের বয়স আজ সাড়ে পাঁচশ দিন পেরিয়ে গেছে। কলকাতা হাইকোর্ট জানিয়েছে, এসএসসি চাকরিপ্রার্থীদের নিয়োগে দুর্নীতি ছিল। কতজন এইভাবে চাকরি পেয়েছেন তা জানানোর নির্দেশ দিয়েছে আদালত।
ছবি: Subrata Goswami/DW
ঝড়-জল উপেক্ষা করে
এই কয়েকবছরে গান্ধীমূর্তির পাদদেশের এই ধর্নামঞ্চ রাজ্যের বিভিন্ন জেলা থেকে আসা এই মানুষগুলোর কাছে অভ্যেসে পরিণত হয়েছে। নেই পানীয় জলের ব্যবস্থা, নেই শৌচাগারও। ঝড়-বৃষ্টি-রোদ উপেক্ষা করে দিনের পর দিন অবস্থান করে চলেছেন এরা। কেউ অসুস্থ বাবা-মাকে বাড়িতে রেখে কেউ বা কোলের শিশুকে সঙ্গে নিয়ে। আন্দোলন এখন এদের জীবনের অঙ্গ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
ছবি: Subrata Goswami/DW
উৎসবের দিনেও
গত দুইবছর ধরে ধর্না মঞ্চেই কেটেছে উৎসবের দিনগুলি। দুইটি ঈদ, দুইটি দুর্গাপুজার মত বড় উৎসব এভাবে কেটেছে চাকরিপ্রার্থীদের। বস্তুত তাদের জীবনে উৎসব নেই, আনন্দ নেই, আছে কেবল অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করে চাকরি পাওয়ার লড়াই।
ছবি: Subrata Goswami/DW
অর্পিতার কাহিনি
পশ্চিম মেদিনীপুরের পিংলার অর্পিতা হাজরা। ধর্নামঞ্চে উপস্থিত থাকার জন্য যাতায়াত মিলিয়ে সাতঘণ্টা লাগে অর্পিতার। ভোর পাঁচটায় উঠে রান্না করে তারপর আসেন, আবার বাড়ি ফিরে ১০ বছরের মেয়েকে নিয়ে পড়াতে বসেন।
ছবি: Subrata Goswami/DW
আনন্দ নয়, লড়াই
অর্পিতা জানালেন, ''ছোট্টো মেয়েটাকে নিয়ে যখন জামাকাপড়ের দোকানে গিয়ে শপিং করার কথা, পুজোর চারদিন কীভাবে কাটাব সেই পরিকল্পনা করার কথা, সেই সময় বসে রয়েছি রাস্তার ধারে। পুজোটা আমাদের কাছে প্রবল যন্ত্রণার। সকলকে আনন্দ করতে দেখে আরও যন্ত্রণা পাই ভেতরে ভেতরে।''
ছবি: Subrata Goswami/DW
ঈদও কেটেছে এখানেই
সরকারিভাবে বসতে নিষেধ ছিল, তাও এইবছর দুপুরের পরে এখানে বসেই ঈদ পালন করেছে কামরুজ্জামান, বাড়ির লোকেদের সঙ্গে দেখা করাও হয়ে ওঠেনি। অন্যান্যবার দুর্গাপুজোতেও মুর্শিদাবাদের বাড়ির সামনের পুজোতেই হাজির থাকে কামরুজ্জামান। এইবছর ধর্নামঞ্চেই কাটবে।
ছবি: Subrata Goswami/DW
নিরানন্দ পিঙ্কি
হুগলির পিঙ্কি সাধুখাঁ জানালেন, ''আমাদের এবারের পুজোর দিনগুলো এভাবে কাটার কথা ছিল না। চাকরির নিয়োগপত্র হাতে পেয়ে বাচ্চার হাত ধরে মণ্ডপে মণ্ডপে অনন্দ করে বেড়ানোর কথা ছিল। যেদিন থেকে জানতে পেরেছি আমরা দুর্নীতির শিকার, সেদিন থেকে আমাদের জীবনের আনন্দ চলে গিয়েছে।''
ছবি: Subrata Goswami/DW
সীমার প্রশ্ন
পুজোমণ্ডপে না গিয়ে কোলের বাচ্চা নিয়ে ধর্নামঞ্চে অবস্থান করছেন সীমা। তিনি বললেন, ''নিজের মনেই যদি আনন্দ না থাকে বাচ্চাকে কীভাবে আনন্দ দেব বলতে পারেন?''
ছবি: Subrata Goswami/DW
উৎসব আর নেই
আশিকুল ইসলাম জানালেন, ''যোগ্য হয়েও চাকরি পাইনি। এই আনন্দে এখন আর কোনও উৎসাহ পাই না। দিনলিপি থেকে মুছে গেছে উৎসব।''
ছবি: Subrata Goswami/DW
দুর্গারা পথে
মুর্শিদাবাদের রহুল বিশ্বাস বললেন, ''একদিকে দেবী দুর্গা পুজিত হচ্ছেন আর এখানে দুর্গারা বঞ্চিত হয়ে পথের ধারে পড়ে আছে। সরকার চাইলে যেকোনও সময় আমাদের এই অবস্থা থেকে মুক্তি দিতে পারে।''
ছবি: Subrata Goswami/DW
নিরুপায় তপতী
বাড়িতে সন্তানকে রেখে চুঁচুড়া থেকে প্রতিদিন এই ধর্নামঞ্চে আসেন তপতী দাস। পুজোমণ্ডপে গেলেও মন পড়ে থাকবে এই ধর্নামঞ্চে। তিনি জানালেন, ''আমরা নিরুপায়। বাধ্য হয়ে একটা আশা নিয়েই দিনের পর দিন বসে রয়েছি এখানে।''
ছবি: Subrata Goswami/DW
চোখে জল জয়ন্তের
সাড়ে তিন বছরের বাচ্চা ফোনে তাকে বার বার বাড়িতে আসতে বলছে। বাবার কোলে চড়ে ঠাকুর দেখার বায়না ছোট্ট ছেলেটার। কথাগুলো বলতে বলতে চোখ মুছতে থাকে বীরভূমের জয়ন্ত। ''যখন সারা কলকাতা আলোর রোশনাইতে মেতে উঠেছে, আমরা গান্ধীমূর্তির পাদদেশে, অন্ধকারেই পড়ে আছি। দুইটি পুজো এভাবেই কেটেছে, চাকরির নিয়োগপত্র হাতে না পেলে জীবনের সব পুজো এখানেই কাটাতে পারি।''
ছবি: Subrata Goswami/DW
নিয়োগপত্র চাই
বনগাঁর সোমা মালাকার বললেন, ''দুর্নীতি করে যারা চাকরি পেয়েছে, তারা আজ পরিবার পরিজন নিয়ে আনন্দে পুজো কাটাচ্ছে। অথচ আমরা যোগ্য হয়েও পথে পড়ে রয়েছি। চাকরির নিয়োগপত্রই আমাদের কাছে পূজার প্রসাদ। যেদিন হাতে পাব সেদিনই আমাদের সত্যিকারের পুজো।'' বললেন, বনগাঁর সোমা মালাকার।
ছবি: Subrata Goswami/DW
14 ছবি1 | 14
এক গ্রাম থেকে
বাগদায় মামা ভাগনে গ্রাম থেকে প্রায় একশজন চাকরি পাওয়ার জন্য তাপস মন্ডলকে টাকা দিয়েছিল বলে অভিযোগ। তারমধ্যে অরিন্দম মন্ডল দাবি করেছেন, তিনি তার পরিবারের পাঁচজনের চাকরির জন্য তাপসকে ৪৪ লাখ টাকা দিয়েছিলেন। এর মধ্যে দুই জনের চাকরি হয়েছিল। বাকি তিনজনের হয়নি। যাদের হয়েছিল, তারাও আদালতের রায়ে চাকরি হারিয়েছেন।
চতুর্থ শ্রেণি, প্রাথমিক ও উচ্চ প্রাথমিকে শিক্ষকের চাকরির রেট ছিল ১২ লাখ টাকা। চতুর্থ শ্রেণির জন্য একটু কম। তার মধ্যে মোটা অঙ্কের টাকা অগ্রিম দিতে হত।
অরবিন্দের দাবি, তিনি ও মামা ভাগনে গ্রামের প্রায় একশজন নিজেদের জমি বিক্রি করে টাকা দিয়েছিলেন তাপস মন্ডলকে। পাঁচজনের জন্য যদি ৪৪ লাখ টাকা দিতে হয়, তাহলে একশজনের কাছ থেকে কোটি কোটি টাকা তুলেছিল তাপসরা।