1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

নীতি নির্ধারণে নারীর অংশগ্রহণ

৮ মার্চ ২০১৭

বাংলাদেশে সর্বস্তরের নারীই ধীরে ধীরে উঠে আসছে৷ তারপরও প্রশ্ন উঠছে, প্রকৃত অর্থে নারীর ক্ষমতায়ন কতটুকু হচ্ছে? নীতি নির্ধারণে নারীর অংশগ্রহণ কতটুকু? নারী কি আদৌ প্রভাব বিস্তার করতে পারছে?

Bangladesch neuer Angriff auf säkulare Verleger und Autoren Demo
ছবি: Getty Images/AFP/M. Uz Zaman

বাংলাদেশের একটি পাঠকপ্রিয় দৈনিক ব্যাতিক্রমী কাজে সফল নারীদের সংবর্ধনা দিয়েছে৷ তাদের ছবি খবরের প্রধান ‘আইটেম’ হিসেবে প্রকাশ করেছে বিশ্ব নারী দিবসে৷ তার মধ্যে ঘোরসওয়ার, তীরন্দাজ, লাঠিয়ালও রয়েছেন৷ আর বিমান চালনা থেকে শুরু করে বাংলাদেশের নারীরা রেলগাড়িও চালায়৷ চালায় সমুদ্রগামী জাহাজ৷ দেশের শীর্ষ পদে নারী৷ উদ্যোক্তা হিসেবেও নারীর অবস্থান সংহত হচ্ছে ক্রমশই৷ কিন্তু এতকিছুর পরও নারীর ক্ষমতায়ন কতটুকু হচ্ছে?

বাংলাদেশে ১৯৮৬ সালের সাধারণ নির্বাচনে সরাসরি ভোটে মাত্র পাঁচজন নারী সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন৷ বর্তমানে সংসদে ৬৯ জন নারী সদস্য রয়েছেন৷ এছাড়া মন্ত্রিসভায় নারী আছেন, প্রধানমন্ত্রী নারী, সাবেক প্রধানমন্ত্রী নারী, বিরোধী দলীয় নেতা নারী, এমনকি জাতীয় সংসদের স্পিকারও নারী৷

আলী ইমাম মজুমদার

This browser does not support the audio element.

বাংলাদেশে সরকারের নীতি নির্ধারণে মন্ত্রীদের পরই যাদের ভূমিকা, তারা হলেন সচিব৷ এই সচিব বা আমলারাই নীতি নির্ধারণ এবং নীতি বাস্তবায়নে মূল ভূমিকা পালন করেন৷ আর সেখানে নারীদের অবস্থান দেখলে সহজেই বোঝা যাবে নীতি নির্ধারণ এবং নীতি বাস্তবায়নে নারীর অবস্থান৷

বর্তমান সরকারের প্রশাসনে সচিব পদমর্যাদায় কাজ করছেন মোট ৭৮ জন কর্মকর্তা৷ তাদের মধ্যে মাত্র সাত জন নারী সচিব৷ দুই জন ভারপ্রাপ্ত সচিব৷ সব মিলিয়ে বলা যায়, নারী সচিব রয়েছেন মাত্র নয় জন৷ শতকরা হিসেবে মাত্র ১১ ভাগ৷

নারী নেত্রী অ্যাডভোকেট এলিনা খান বলেন, ‘‘ঘোরসওয়ার, তীরন্দাজ নারী আমাদের উৎসাহ দেয়৷ তারা অনেক কষ্ট করে উঠে এসেছেন৷ নারীরা এখন পুলিশ, সেনাবাহিনী, নৌ-বাহিনী এবং বিমান বাহিনীতেও ভালো করছেন৷ কিন্তু নারী শিক্ষার হার যেভাবে বাড়ছে, সেভাবে নীতি নির্ধারণ ও নীতির বাস্তবায়নে তাদের অংশগ্রহণ নেই৷ আর নারী যদি নীতি নির্ধারণে তার অবস্থান সংহত করতে না পারে, তাহলে নারীর ক্ষমতায়ন আশা করা যায় না৷''

এবার কয়েকটি মন্ত্রণালয়ে নারী কর্মকর্তাদের হিসাব দিলে বিষয়টি আরো পরিষ্কার হয়ে যাবে৷ নারী দিবসে সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে মোট ১৩৪ জন কর্মকর্তার মধ্যে নারী ৩৫ জন৷ মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে ৬৭ জনের মধ্যে নারী কর্মকর্তা ১২ জন৷ 

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে ৫৭ জন কর্মকর্তার মধ্যে নারী ৯ জন৷ স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে ১১৬ কর্মকর্তার মধ্যে নারী ২৮ জন৷ ধর্ম মন্ত্রণালয়ে ২২ জনের মধ্যে নারী কর্মকর্তা তিনজন৷

সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের ২৬ জনের মধ্যে চার জন নারী কর্মকর্তা৷ শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে ৬৫ কর্মকর্তার মধ্যে নারী ১৫ জন৷ প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ে মোট ৩৮ জনের মধ্যে নারী কর্মকর্তা ছয় জন৷ খাদ্য  মন্ত্রণালয়ে ৪৬ জন কর্মকর্তার মধ্যে ১১ জন নারী৷ অন্যান্য মন্ত্রণালয়ের অবস্থা এরচেয়ে ভালো না৷ কোনো মন্ত্রণালয়েই নারীদের অবস্থান শতকরা ২০ ভাগের বেশি নয়৷

সরকারি এবং আধা সরকারি প্রতিষ্ঠানে অনুমোদিত পদের সংখ্যা ১০ লাখ ৯৭ হাজার ৩৩৪টি৷ এর মধ্যে নারীর সংখ্যা ৮৩ হাজার ১৩৩, অর্থাৎ শতকরা ৭ দশমিক ৬ ভাগ৷ উপসচিব থেকে সচিব পদ পর্যন্ত নারীদের সংখ্যা গড়ে মাত্র ২ শতাংশ বা তারও কম৷ বিচার বিভাগে বিচারক পদের ১০ শতাংশ নারী হলেও হাইকোর্টে প্রধান বিচারপতি পদে এখনো নারীকে দেখা যায়নি৷

এলিনা খানের মতে, ‘‘বাংলাদেশের শীর্ষ পদে এখন নারী৷ প্রধানমন্ত্রী নারী৷ রাজনীতিতেও নারীর উপস্থিতি লক্ষ্য করার মতো৷ কিন্তু এখানে একটি বিষয় বিবেচনায় নিতে হবে আর তা হলো, পদে নারী থাকলেই হবে না৷ দেখতে হবে, তিনি প্রকৃত অর্থেই নারীর প্রতিনিধিত্ব করেন কিনা৷নারী যদি হয় পুরুষন্ত্রের প্রতিনিধি, তাহলে সেটা তো আর নারীর ক্ষমতায়ন নয়৷''

এলিনা খান

This browser does not support the audio element.

বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর সর্বশেষ জরিপ অনুযায়ী, দেশের ৫ কোটি ৪১ লাখ কর্মজীবীর মধ্যে ১ কোটি ৬২ লাখ নারী৷ ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প উদ্যোক্তাদের মধ্যে নারীর সংখ্যা ১৬ হাজার ৬৯৭ জন৷ বিদেশে বিভিন্ন পেশায় কর্মরত ৭৬ লাখ প্রবাসীর মধ্যে ৮২ হাজার ৫৫৮ জন নারী৷ বৈদেশিক মুদ্রা আয়ের প্রধান খাত তৈরি পোশাক শিল্পের ৮০ ভাগ কর্মীই নারী৷ আর দেশের ৯০ শতাংশ ক্ষুদ্রঋণ ব্যবহারকারীও নারী৷

মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সাবেক সচিব আলী ইমাম মজুমদার ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘নারী এগিয়েছে৷ কর্মজীবী নারী বাড়ছে৷ তবে সার্বিক বিচেনায় নীতি নির্ধারণে বা প্রশাসনে নারীর অংশগ্রহণ কম৷ কিন্তু তাদের অংশগ্রহণ বাড়ছে৷ অতীতে নারীকে নিরুৎসাহিত করা হতো, এখন উৎসাহিত করা হয়৷ পরিস্থিতি পাল্টাচ্ছে৷''

আরেক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘‘নীতি নির্ধারণ এবং নীতি বাস্তবায়নে নারীর প্রতিনিধিত্ব বাড়াতে হবে এবং তা বাড়ছে৷''

বন্ধু, আপনার কী মনে হয়? বাংলাদেশে নীতি নির্ধারণে কতটা অংশ নিচ্ছে নারী? লিখুন নীচের ঘরে৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ