1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

নুরের মামলার বাদী পুলিশ, মূল এজাহারও পুলিশের

হারুন উর রশীদ স্বপন ঢাকা
২৫ ডিসেম্বর ২০১৯

ডাকসু ভবনে নুরুল হক নুর ও তার সংগঠনের সদস্যদের ওপর হামলার ঘটনায় যে মামলা হয়েছে তাতে বাদী থাকছে পুলিশই৷ এক্ষেত্রে নুর অভিযোগ করলেও তাকে বাদী হওয়ার সুযোগ দেয়া হচ্ছে না৷

Nurul Haque Nur - Dhaka University Studentenrat von Bangladesch
ছবি: Privat

ডাকসু ভবনে ভিপি নুরুল হক নুর ও তার অনুসারীদের ওপর হামলার ঘটনায় অভিযোগ দু'টি, কিন্তু মামলা একটি৷ একটি মামলা আগেই করেছে পুলিশ৷ আরেকটি মামলা নুরের পক্ষে পরে করা হলেও ওই অভিযোগটি পুলিশের মামলার সঙ্গে যুক্ত হবে৷কিন্তু মামলার বাদী থাকবে পুলিশই৷

তবে এর বিরোধীতা করেছেন, সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের যুগ্ম আহ্বায়ক রাশেদ খান৷ তিনি বলেন,‘‘আমরা ভিপি নুরের অভিযোগকেই মূল এজাহার হিসেবে নেয়ার জন্য বলেছি৷ তা যদি না করা হয় তাহলে ভিন্ন উদ্দেশ্য আছে বলে ধরে নেব৷ এরমধ্যে ষড়যন্ত্র আছে৷ আর নুরকেই বাদি করতে হবে৷'' তিনি আরো বলেন, ‘‘আমরা এজাহারে যাদের নাম দিয়েছি তাদের দ্রুত গ্রেপ্তার করা হোক৷''

২২ ডিসেম্বর ভিপি নুর ও তার অনুসারীদের ওপর হামলা হয় ডাকসু ভবনে৷ পুলিশ নিজে উদ্যোগী হয়ে মামলা করে ২৪ ডিসেম্বর (২৩ ডিসেম্বর দিবাগত রাত সাড়ে ১২টা)৷ এর আগে হামলার সাথে জড়িত থাকার অভিযোগে মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চের তিনজনকে আটক করা হয়৷ পরে তাদের পাঁচ দিনের রিমান্ডে নেয় পুলিশ৷ তারা হলো, মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চের সাধারণ সম্পাদক আল মামুন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাধারণ সম্পাদক ইয়াসিন আরাফাত তূর্য এবং দপ্তর সম্পাদক মেহেদী হাসান শান্ত৷

পুলিশের মামলায় শাহবাগ থানার সাব-ইন্সপেক্টর রইচ উদ্দিন হত্যাচেষ্টার অভিযোগ এনেছেন৷ এজাহারে মোট আট জনের নাম উল্লেথ করা হয়েছে৷ আরো ২০-২৫ জন অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে৷ তারা সবাই মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চের সঙ্গে জড়িত৷ এই মামলায় ছাত্রলীগের গুরুত্বপূর্ণ কোনো নেতার নাম নেই৷

রাশেদ খান

This browser does not support the audio element.

কিন্তু ভিপি নুর পুলিশের কাছে ২৪ ডিসেম্বর যে লিখিত অভিযোগ করেছেন তাতে মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ এবং ছাত্রলীগকে হামলার জন্য দায়ী করেছেন৷ তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি সঞ্জিত চন্দ্র দাস এবং সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসেনসহ ছাত্রলীগের ৩৭ জন নেতার নাম উল্লেখ করেছেন৷ তাদের প্রত্যেকের পদ ও পরিচয় তিনি অভিযোগে উল্লেখ করেন৷

মামলাটি বুধবার তদন্তের জন্য ডিবিতে হস্তান্তর করা হয়েছে৷ তার আগ পর্যন্ত তদন্ত কর্মকর্তার দায়িত্ব পালন করেন শাহবাগ থানার ইন্সপেক্টর (তদন্ত) আরিফুর রহমান সরদার৷ তিনি বলেন, ‘‘একটি ঘটনায় একটিই মামলা হবে৷ নুর এজাহার দায়েরে দেরি করায় পুলিশই আগে বাদী হয়ে মামলা করেছে৷ কারণ এই ঘটনায় জড়িতদের কয়েকজনকে আমরা ঘটনার পর আটক করি৷ পরে নুর যে অভিযোগটি করেছেন তা পুলিশের এজাহারের সঙ্গে সংযুক্ত করে আদালতে পাঠিয়ে দিয়েছি৷ এখন তদন্তে যা আসে সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে৷'' নুরের অভিযোগে আসামিদের গ্রেপ্তারের ব্যাপারে তিনি বলেন, ‘‘যাদের নাম বলা হয়েছে তাদের সংশ্লিষ্টতা পাওয়া গেলে গ্রেপ্তারে কোনো বাধা নেই৷''

আইনজীবী তুহিন হাওলাদার বলেন, ‘‘নুরের অভিযোগকে সম্পূরক অভিযোগ বলা হয়৷ পুলিশ তদন্তে এই অভিযোগের যতটুকু সত্যতা পাবে ততটুকু চার্জশিটে অন্তর্ভূক্ত করে চার্জশিট দেবে৷ এটা কোনো আলাদা মামলা হিসেবে গণ্য হবে না৷ আবার চাইলে পুলিশ ওই অভিযোগের ভিত্তিতে সম্পূরক চার্জশিটও দিতে পারে৷''

তিনি জানান, ‘‘এই মামলার বাদী হওয়ার আর কোনো সুযোগ নাই নুরের৷ শাহবাগ থানার যে সাব ইন্সপেক্টর প্রথম মামলা করেছেন তিনিই বাদী থাকবেন৷'' শাহবাগ থানার ইন্সপেক্টর আরিফুর রহমান সরদারও একই কথা বলেন৷

তবে প্রশ্ন উঠেছে  হামলার শিকার নুর না হয়ে থানার একজন সাবইন্সপেক্টর মামলার বাদী হওয়ায় মামলার সঠিক তদন্ত বাধাগ্রস্ত হবে কিনা? রাশেদ খান বলেন, ‘‘নুরের এজাহার মূল এজাহার হিসেবে গ্রহণ না করলে মামলার তদন্ত ভিন্ন খাতে যাবে৷ সেই উদ্দেশ্যেই এসব করা হচ্ছে৷ আর নুরকে বাদ দিয়ে পুলিশকে বাদী করা ষড়যন্ত্রমূলক৷''

সাদ্দাম হোসেন

This browser does not support the audio element.

সিসি ক্যামেরার ফুটেজ গায়েব

এদিকে ডাকসু ভবনে মোট নয়টি সিসি ক্যামেরা রয়েছে৷ কিন্তু হামলার দিনের সিসি ক্যামেরার ফুটেজ এরইমধ্যে গায়েব হয়ে গেছে৷ এনিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. এ কে এম গোলাম রব্বানীর কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘‘ওই দিনের ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে৷ আশা করি তদন্তের মাধ্যমে জানা যাবে সিসি ক্যামেরার ফুটেজ কোথায় গেল, কারা গায়েব করল৷''

এ বিষয়ে রাশেদ খান বলেন, ‘‘মুক্তিযোদ্ধা মঞ্চের হামলার শুরুতেই প্রক্টর স্যারকে ফোন করেছি৷ তিনি উল্টো আমাকে গালাগাল করেন৷ এরপর ছাত্রলীগ এসে হামলা চালায়৷ তখন প্রক্টর স্যার বা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কেউ আসেন নি৷ তারা এসেছেন হামলা করে চলে যাওয়ার পর৷ তাই আমাদের ধারণা হামলায় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের হাত আছে৷ তারাই সিসি ক্যামেরার ফুটেজ সরিয়েছে৷''

এদিকে ভিপি নুরের অভিযোগে নাম থাকা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ও ডাকসুর এজিএস সাদ্দাম হোসেন দাবি করেন, ‘‘নুর নাটকবাজ ভিপি ছিলেন, নাটকবাজ থেকে দুর্নীতিবাজ ভিপি হয়েছেন৷ দুর্নীতিবাজ ভিপি থেকে তিনি সর্বশেষ মামলাবাজ ভিপিতে পরিণত হলেন৷ তার অভিযোগ আমরা আইনগতভাবে মোকাবলা করব৷ তিনি বিচার পেতে মামলা করেননি৷ রাজনৈতিক ফায়দা নেয়ার জন্য মামলা করেছেন৷''

সাদ্দাম দাবি করেন, ‘‘সংঘাত হয়েছে মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ এবং ভিপি নুর ও তার লোকজনের মধ্যে৷ এর সঙ্গে ছাত্রলীগ কোনোভাবেই জড়িত না৷ আর ওই দিনের আগে মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চের নেতা-কর্মীদের রাজু ভাস্কর্য এলাকায় নির্যাতন করা হয়েছে৷ তার প্রতিক্রিয়া এটা৷ আমরা এসব ঘটনার নিন্দা জানাই ও সুষ্ঠু বিচার দাবি করছি৷''

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ