1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

নুসরাতের পুরো পরিবারকে পুড়িয়ে মারার হুমকি

হারুন উর রশীদ স্বপন ঢাকা
২৪ অক্টোবর ২০১৯

ফেনীর সোনাগাজীর মাদ্রাসাছাত্রী নুসরাত জাহান রাফি হত্যা মামলায় মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিত আসামীরা নুসরাতের মত তার পরিবারের অন্য সদস্যদের পুড়িয়ে মারার হুমকি দিয়েছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে৷

Bangladesch 16 Todesurteile im Mordfall Schulmädchen Nusrat Jahan Rafi
ছবি: bdnews24.com

রায় ঘোষণার পর আসামিরা আদালতের ভেতেরই এই হুমকি দেন বলে নুসরাতের ছোট ভাই রাশেদুল হাসান রায়হান দাবি করেছেন৷ তিনি বলেন, ‘‘আদালতের মধ্যেই আসামিরা আমাদের সবাইকে নুসরাতের মত পুড়িয়ে হত্যার হুমকি দেয়৷ তারা বলে আমাদের পরিণতিও নুসরাতের মত হবে৷''

ফেনীর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন বিশেষ ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. মামুনুর রশিদ বৃহস্পতিবার ১৬ আসামীর সবার মৃত্যুদণ্ডের রায় ঘোষণা করেন৷ এসময় সব আসামী আদালতের কাঠগড়ায় ছিলেন৷

নুসরাতের বড় ভাই ও মামলার বাদি মাহমুদুল হাসান নোমান বলেন, ‘‘আমরা আগেও হুমকি পেয়েছি, এবার আদালতে বসে তারা হুমকি দিল৷ আমরা আতঙ্কে আছি৷ আমাদের পরিবারের সব সদস্য নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি৷ কারণ তারা প্রভাবশালী এবং তাদের অনেক অনুসারী এবং আত্মীয়-স্বজন আছে৷''

''তদন্ত দল মানবিকতায় উদ্বুদ্ধ ছিলো''

This browser does not support the audio element.

আদালতের ভেতরে হত্যার হুমকি পাওয়ার বিষয়টি পুলিশকে জানানো হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, ''আমাদের পরিবারের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে৷ কারণ আসামিদের ফাঁসির রায় হলেও তাদের লোকজনতো বাইরে আছে৷''

আসামিদের আইনজীবী আহসান কবির বেঙ্গল বলেন, ‘‘ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হয়তো প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে, আমি তাদের হুমকি দিতে দেখিনি৷''

আইন মেনে এই মামলার রায় দেয়া হয়নি অভিযোগ তুলে এই আইনজীবী বলেন, ‘‘এই মামলায় কোনো প্রত্যক্ষদর্শী সাক্ষী নেই৷ এটা হত্যা না আত্মহত্যা তাও পরিস্কার নয়৷ আমরা সাত দিনের মধ্যে এই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করব৷''

আইনজীবীরা জানিয়েছেন, হাইকোর্টে এই মামলার ডেথ রেফারেন্সের শুনানি হবে৷ হাইকোর্টের রায়ের ওপরই পরবর্তী পদক্ষেপ নির্ভর করবে৷ সাত দিনের মধ্যে হাইকোর্টে ডেথ রেফারেন্স পাঠাতে হবে৷

এ মামলা তদন্তের দায়িত্বে থাকা পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন-পিবিআইয়ের প্রধান ডিআইজি বনজ কুমার মজুমদার বলেন, ‘‘এই মামলায় কোনো প্রাথমিক ক্লু ও প্রত্যক্ষদর্শী ছিল না, ফলে খুব সতর্কতার সাথে কাজ করতে হয়েছে৷ কিন্তু মৃত্যুর আগে নুসরাতের একপি ভিডিও স্টেটমেন্ট আমাদের তদন্তে পথ দেখায়৷ ওখান থেকেই আমরা অনেক কিছু পেয়ে যাই৷ তারপর অপরাধীদের চিহ্নিত করি৷ তারপর আর তদন্তে বেগ পেতে হয়নি৷ আমার তদন্ত দল মানবিকতায় উদ্বুদ্ধ ছিল৷''

‘‘আদালতে আমরা বাংলাদেশে প্রথমবারের মত পাওয়ার পয়েন্ট প্রেজেন্টেশনের মাধ্যমে নুসরাত হত্যার ঘটনাটি উপস্থাপন করি৷ এজন্য বিশেষ অনুমতি নিতে হয়েছে৷ আমরা আমাদের তদন্ত ও সাক্ষ্য প্রমাণের ভিত্তিতে ওই পাওয়ার পয়েন্ট প্রেজেন্টেশন তৈরি করি৷''

'আসামিরা আমাদের সবাইকে নুসরাতের মত পুড়িয়ে হত্যার হুমকি দেয়'

This browser does not support the audio element.

এই মামলায়  ৯২ জন সাক্ষীর মধ্যে ৮৭ জন আদালতে সাক্ষ্য দিয়েছেন বলেও জানান তিনি৷

সোনাগাজী ইসলামিয়া ফাজিল (ডিগ্রি) মাদ্রাসা থেকে এবার আলিম পরীক্ষা দিচ্ছিলেন নুসরাত৷ ওই মাদ্রাসার অধ্যক্ষ সিরাজ-উদ দৌলার বিরুদ্ধে যৌন নিপীড়নের অভিযোগ তুলেছিলেন তিনি৷ ওই ঘটনায় নুসরাতের মা মামলা করার পর গত ২৭ মার্চ গ্রেপ্তার হন অধ্যক্ষ সিরাজ৷

সিরাজ গ্রেপ্তার হওয়ার পর তার পক্ষে নামেন স্থানীয় প্রভাবশালীরা৷ তার মুক্তি দাবিতে মানববন্ধনও করেন মাদ্রাসার কিছু শিক্ষার্থী৷ মামলা তুলে নিতে ক্রমাগত হুমকি দেওয়া হচ্ছিল বলে নুসরাতের পরিবারের অভিযোগ৷

এর মধ্যেই ৬ এপ্রিল পরীক্ষা শুরুর আগে পরীক্ষা কেন্দ্রের সাইক্লোন শেল্টারের ছাদে নুসরাতকে কৌশলে ডেকে নিয়ে তার গায়ে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়৷ অগ্নিদগ্ধ নুসরাতকে ঢাকায় এনে বার্ন ইউনিটে ভর্তি করা হলেও টানা পাঁচ দিন যন্ত্রণা সহ্য করে ১০ এপ্রিল মারা যান তিনি৷

নুসরাতের গায়ে আগুন দেওয়ার দুদিন পর তার ভাই মাহমুদুল হাসান নোমান আটজনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত আরও কয়েকজনকে আসামি করে হত্যাচেষ্টার মামলা করেন৷ নুসরাতের মৃত্যুর পর এটি হত্যা মামলায় পরিণত হয়৷

 

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য
স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ