1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

নূরের বিরুদ্ধে ভুল বাংলায় নারীর অবমাননার অভিযোগ

১৩ অক্টোবর ২০২০

ফেসবুক লাইভে ধর্ষণ মামলার বাদীকে ‘দুশ্চরিত্রা' বলার অভিযোগ সম্পর্কে ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হক নূর বলেন, ‘‘দুশ্চরিত্রা নয়, আমি দুশ্চরিত্রহীন বলেছি৷''

DW Talkshow Khaled Muhiuddin Asks | 031 | Nurul Haq Nur
ছবি: Sazzad Hossain/DW

নারীনেত্রী ও মানবাধিকার কর্মীরা বলছেন, বাংলা ভাষায় ‘দুশ্চরিত্রহীন' শব্দই নেই, নূর আসলে কৌশলে দায় অস্বীকারের  অপচেষ্টা করছেন৷

নূর বলছেন, ‘‘দুশ্চরিত্রহীন, মানে তাকে চরিত্রবান বা চরিত্রহীন কোনোটাই বলিনি৷ তিনি অন্যের প্ররোচনায় এসব কাজ করছেন৷'' এর জবাবে ধর্ষণের মামলা করা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ওই ছাত্রী বলেন, ‘‘নুর আগেই আমাকে দেখে নেয়ার হুমকি দিয়েছিলো৷ আর এখন ফেসবুক লাইভে আমাকে দুশ্চরিত্রা বললো৷ এতেই বোঝা যায় যে, তার আসল উদ্দেশ্য কী৷’’
নুরুল হক নূর রবিবার রাতে ফেসবুক লাইভে তাদের বিরুদ্ধে তিন সপ্তাহ আগে করা ধর্ষণ মামলা নিয়ে কথা বলেন৷ তিনি বলেন, ‘‘তদন্ত করে দেখেছি, ছাত্র অধিকার পরিষদের আব্দুল্লাহ হিল বাকি, নাজমুল হুদা ও সাইফুল ইসলাম এবং আমার এই ঘটনার সঙ্গে সংশ্লিষ্টতা নেই৷''
গত ২০ সেপ্টেম্বর লালবাগ থানায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্রী নুরুল হক নূর ও ছাত্র অধিকার পরিষদের আহ্বায়ক হাসান আল মামুনসহ ছয় জনের বিরুদ্ধে ধর্ষণ মামলা করেন৷ নূরের বিরুদ্ধে অভিযোগ ধর্ষণে সহযোগিতার৷ অভিযুক্তদের মধ্যে মামুন ও সোহাগকে ছাত্র অধিকার পরিষদ থেকে সাময়িক অব্যাহতি দেয়া হয়েছে৷
ওই ছাত্রী ৮ অক্টোবর থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের সামনে আসামিদের গ্রেপ্তারের দাবিতে অনশন শুরু করেন৷ শনিবার অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে ঢাকা মেডিকেলে চিকিৎসা দেয়া হয়৷ চিকিৎসার পর আবার অনশন শুরু করেছেন তিনি৷

‘আমি এটা নিয়ে তার বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেয়ার চিন্তা করছি’

This browser does not support the audio element.

মামলার পর তিন সপ্তাহে কোনো আসামীকে গ্রেপ্তার না করলেও অনশন শুরুর পর ১১ অক্টোবর দুই আসামি ছাত্র অধিকার পরিষদের যুগ্ম আহ্বায়ক মো. সাইফুল ইসলাম এবং ঢাবি শাখার সহ-সভাপতি নাজমুল হুদাকে গ্রেপ্তার করে রিমান্ডে নেয় পুলিশ৷ এ প্রসঙ্গে ওই ছাত্রী বলেন, ‘‘ছয়জন আসামিকেই গ্রেপ্তার করতে হবে৷ সব আসামিকে গ্রেপ্তার না করা পর্যন্ত আমি অনশন চালিয়ে যাবো৷''

তিনি অভিযোগ করেন, ‘‘আগে আমাকে নূর বলেছিলেন এই ঘটনা নিয়ে বাড়াবাড়ি করলে আমাকে পতিতা হিসেবে অভিহিত করা হবে৷ এতদিন তার সমর্থকরা এই কাজ করে আসছিলো৷ নানাভাবে আমার সম্মানহানি করেছে তারা৷ এবার ভিপি নূর নিজেই তা করলো৷ ফেসবুক লাইভে সে আমাকে দুশ্চরিত্রা বলেছে৷ এটা বলে সে শুধু আমারই সম্মানহানি করেনি, ডাকসু ভিপি পদেরও অমর্যাদা করেছে৷ আমি এটা নিয়ে তার বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেয়ার চিন্তা করছি৷”


নূর যে এখন ‘দুশ্চরিত্রহীন' বলেছেন, ‘দুশ্চরিত্রা' বলেননি বলে একটা ব্যাখ্যা দিয়েছেন সে প্রসঙ্গে অনশনরত ছাত্রী বলেন, ‘‘আসলে সে কী বলেছে তা সবাই জানে৷ কোন প্রেক্ষাপটে বলেছে তা-ও স্পষ্ট৷ ব্যাখ্যা দিলেই তো সব ঠিক হয়ে যায় না৷”
নূর বলেন, ‘‘তাকে পরোক্ষভাবে চরিত্রবান বা চরিত্রহীন সেটা আমি বুঝাইনি৷ তাকে খারাপ মেয়ে বলিনি৷ তিনি যে কারো প্ররোচনায় এটা করছেন আমি সেটা বুঝাতে চেয়েছি৷ এই অনশনের সময় তিনি ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীবেষ্টিত ছিলেন৷ ছাত্রলীগের প্ররোচনায় তিনি এসব করছেন৷''
যে তদন্তে অভিযুক্ত ব্যক্তিও ছিলেন সেই তদন্ত প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘‘আমাদের তদন্তে নাজমুল হাসান সোহাগের সাথে তার প্রেমের সম্পর্ক ছিল বলে নিশ্চিত হয়েছি৷ হাসান আল মামুনের সঙ্গে তার কোনো সম্পর্ক ছিল কিনা তা আমরা নিশ্চিত হতে পারিনি৷ আর মামুনের সাথে আমরা যোগাযোগও করতে পারিনি৷ কিন্তু আমিসহ বাকি চারজনের ওই ঘটনার সাথে কোনো সংশ্লিষ্টতা নাই৷”

‘দুশ্চরিত্রাহীন, মানে তাকে চরিত্রবান বা চরিত্রহীন কোনোটাই বলিনি’

This browser does not support the audio element.

তবে ধর্ষণ মামলার আসামিদের প্রকাশ্যে বিবৃতি দেয়া বা বক্তব্য রাখার সুযোগ থাকা উচিত নয় বলে মনে করেন আইন ও সালিশ কেন্দ্র (আসক)-এর সাবেক নির্বাহী পরিচালক শিপা হাফিজ৷ তিনি বলেন, ‘‘মামলা হয়েছে৷ তদন্ত হবে৷ আদালতই দেখবে কে দোষী আর কে নির্দোষ৷ নুর তাকে যে দুশ্চরিত্রা বলেছেন,  সেটা একটি অপরাধ৷ আমাদের এখানে এটা চলে আসছে৷ কোনো নারী ধর্ষণ বা যৌনহয়রানির অভিযোগ করলেই এক গ্রুপ তার চরিত্র নিয়ে কথা বলা শুরু করে৷ তাদের উদ্দেশ্যই থাকে অপরাধীকে আড়াল করা৷''

তিনি আরো বলেন, ‘‘তিনি (নূর) যদি এখন নতুন ব্যাখ্যা দেন, দুশ্চরিত্রা নয়, দুশ্চরিত্রহীন বলেছেন, তা আমার কাছে গ্রহণযোগ্য নয়৷ এটাও তিনি খারাপ উদ্দেশ্যে করছেন৷ কারণ, তার কথার মোটিভ বোঝা যায়৷ আর বাংলা ভাষায় দুশ্চরিত্রহীন বলে কোনো শব্দ আছে বলে আমার জানা নেই৷''
আর নুরুল হক নূরের এক নারী সম্পর্কে আপত্তিকর মন্তব্যের অভিযোগ প্রসঙ্গে মানবাধিকার কর্মী নূর খান বলেন, ‘‘মেয়েদের প্রতি নূরের যে কী ধরনের অশ্রদ্ধা তা তিনি ওই অভিযোগকারী ছাত্রীকে দুশ্চরিত্রা বলে প্রমাণ দিলেন৷ এই ধরনের কথা কোনো সুস্থ মানুষ বলতে পারেন না৷ এটা নৈতিকতা ও আইনবিরোধী৷”

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য
স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ