1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

নৃ-গোষ্ঠীদের ভাষা রক্ষায় রাষ্ট্রের আগ্রহ কম

সমীর কুমার দে ঢাকা
২১ ফেব্রুয়ারি ২০২১

বাংলা বাদ দিয়েও বাংলাদেশে ৪০টি ভাষা রয়েছে৷ এই ভাষাগুলো নিয়ে সরকারের তেমন একটা উদ্যোগ নেই৷ মাতৃভাষায় প্রাথমিক শিক্ষার ক্ষেত্রেও এখন পর্যন্ত মাত্র পাঁচটি ভাষায় তিনটি করে বই প্রকাশ হয়েছে৷ 

ফাইল ছবিছবি: bdnews24.com

মাতৃভাষা সংরক্ষণ, পুনরুজ্জীবন, বিকাশ, চর্চা, প্রচার-প্রসারে অবদানের জন্য এবারই প্রথম তিন ব্যক্তি ও এক প্রতিষ্ঠানের হাতে প্রথমবারের মত তুলে দেওয়া হল ‘আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা পদক’৷ জাতীয় অধ্যাপক  মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম ছাড়াও এই পদক পেয়েছেন খাগড়াছড়ির জাবারাং কল্যাণ সমিতির নির্বাহী পরিচালক মথুরা বিকাশ ত্রিপুরা৷ জাতীয় পর্যায়ে ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর ভাষা সংরক্ষণে অবদানের জন্য তাকে এই পদক দেওয়া হয়৷ 

এছাড়া আন্তর্জাতিক পর্যায়ে উজবেকিস্তানের গবেষক ইসমাইলভ গুলম মিরজায়েভিচ ও লাতিন আমেরিকার আদি ভাষাগুলো নিয়ে কাজ করা বলিভিয়ার অনলাইন উদ্যোগ অ্যাক্টিভিজমো লেংকুয়াস এ সম্মাননা পেয়েছে৷

মথুরা বিকাশ ত্রিপুরা

This browser does not support the audio element.

বাংলা ছাড়াও অন্য ভাষাগুলো ব্যবহারের অধিকার, চর্চা, গবেষণা ও রাষ্ট্রের মনোভাবের বিষয়ে জানতে চাইলে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা পদক পাওয়া মথুরা বিকাশ ত্রিপুরা ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘আগের চেয়ে এই ভাষাগুলো রক্ষায় উদ্যোগ বেড়েছে৷ তরুণদের মধ্যে এক ধরনের আগ্রহ তৈরি হয়েছে৷ তবে গবেষণাসহ অনেক কিছুই এখনও বাকি৷ সরকার চাইলে এই উদ্যোগগুলো নিতে পারে৷ এই ভাষাগুলোর ব্যবহার যত বাড়বে ততই এটা সমৃদ্ধ হবে৷’’

বাংলাদেশে এখন আদিবাসীর সংখ্যা কত? জানতে চাইলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাষা বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. সৌরভ সিকদার বলেন, ‘‘এই সংখ্যাটা সুনির্দিষ্ট করে বলা যাবে না৷ ২০১১ সালের যে জনগণনা জরিপ ছিল, তাতে উল্লেখ ছিল ১৭ লাখ৷ কিন্তু আমরা বিভিন্ন গবেষণা ও বিভিন্ন উৎস থেকে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী বলতে পারি, এই সংখ্যাটা ২৮ থেকে ৩০ লাখের কম হবে না৷’’

অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক ড. আবুল বারকাত তার ‘পলিটিক্যাল ইকোনমি অফ আনপিপলিং অফ ইন্ডিজিনাস পিপলস: দ্য কেইস অফ বাংলাদেশ’ গ্রন্থে দেখিয়েছেন, ‘‘বাংলাদেশে সরকার ২২টি ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীকে স্বীকার করে না৷ ২৭টি ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীকে স্বীকার করা হলেও বাস্তবে দেশের ৪৮ জেলায় ৪৯টি ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর বসবাস৷’’ বাংলা বাদ দিয়ে যে ৪০টি ভাষা রয়েছে, তার মধ্যে ৩৪টি আদিবাসী বা ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর ভাষা রয়েছে৷

২০১০ সালের শিক্ষা নীতিতে মাতৃভাষায় প্রাথমিক শিক্ষার প্রচলন হলেও তা কার্যকর হয়েছে ২০১৭ সালে৷ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক মেজবাহ কামাল বলেন, ‘‘এই কাজটা খুবই সামান্য এগিয়েছে৷ এ পর্যন্ত মাত্র পাঁচটি ভাষায় তিনটি করে বই হয়েছে৷ এছাড়া কোন কাজই হয়নি৷ শিক্ষক নিয়োগ, শিক্ষার কারিকুলাম, প্রশিক্ষন এখনও কিছুই হয়নি৷’’

ড. সৌরভ সিকদার

This browser does not support the audio element.

আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউট বলছে, বাংলা ছাড়া অন্য ভাষাগুলোর (নৃ-গোষ্ঠীর মাতৃভাষা) মধ্য থেকে কয়েকটি ভাষা সংরক্ষণের উদ্যোগ নিয়েছে তারা৷ নানা বিষয়ে গবেষণা চলছে৷ দেশের যেকোন ব্যক্তি, শিক্ষাবিদ ও প্রতিষ্ঠান এই গবেষণায় অংশ নিয়ে ভাষা বৈচিত্র্যকে সমৃদ্ধ করতে পারেন৷ এজন্য সহযোগিতা দেবে তারা৷ এগুলো পরবর্তীতে ইনস্টিটিউটের আর্কাইভে সংরক্ষিত থাকবে৷

তবে অধ্যাপক সৌরভ সিকদারের মতে, ‘‘এভাবে কেউ এগিয়ে আসবে না৷ কেউ কি গিয়ে বলবে আমি গবেষণা করতে আগ্রহী, আমাকে ফান্ড দেন? কীভাবে তাকে ফান্ড দেবেন তারা? আসলে উদ্যোগটা তাদেরই নিতে হবে৷ গবেষক নিয়োগ দিতে হবে, কাজগুলোকে একত্রিত করতে হবে৷ তাহলেই এই কাজগুলো সম্ভব৷’’

তবে একেবারে যে কিছুই এগুয়নি এমনটা মনে করেন না মথুরা বিকাশ ত্রিপুরা৷ তিনি বলেন, ‘‘আগে তো ভাবাই যেত না, ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর শিশুরা স্কুলে নিজের ভাষার বই পড়বে৷ এখন তো কিছুটা হচ্ছে৷’’ তিনি মনে করেন, প্রভাবশালী ভাষার কারণে ভিন্ন নৃগোষ্ঠীদের ভাষাগুলো কোণঠাসা হয়ে পড়ে৷ এজন্য গবেষণা, প্রকাশনাসহ নানাভাবে রাষ্ট্র চাইলে এই পৃষ্ঠপোষকতা করতে পারে৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

আরো সংবাদ দেখান
স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ