১৯৬২; পেলে ‘ইনজিওরড’; ব্রাজিলকে বিশ্বকাপ জেতালেন গ্যারিঞ্চা ও আমারিল্দো৷ কিন্তু ব্রাজিল দলে এবার গ্যারিঞ্চা হবার মতো কেউ আছেন কি? অন্যদিকে, ব্রাজিল আজ আগের চেয়ে অনেক বেশি মারকুটে; জার্মানি আগের চেয়ে কম আগ্রাসী৷
বিজ্ঞাপন
সব মিলিয়ে এই সেমিফাইনাল যদি ৯০ ছেড়ে ১২০ মিনিটের দিকে এগোয়, এমনকি পোনাল্টি শুটআউটে পৌঁছায়, তাহলে যেন কেউ আশ্চর্য না হন৷ অপরদিকে নেইমারের অনুপস্থিতি মানেই যে খেলাটা ‘ওয়াকওভার' হবে, এটা জার্মান দলের কেউই মনে করেন না: কোচ ইওয়াখিম ল্যোভ তো নন-ই, তাঁর স্টার খেলোয়াড় বাস্টিয়ান শোয়াইনস্টাইগার-ও নন৷
দলের ম্যানেজার অলিভার বিয়ারহোফ বলেছেন এবং শোয়াইনস্টাইগার বলেছেন যে, তাঁরা পূর্ণশক্তির ব্রাজিল দলের বিরুদ্ধে খেলতে – এবং জিততে পারলে খুশিই হতেন৷ কিন্তু নেইমার বাদ দিয়েও এই ব্রাজিল যে আর সে ব্রাজিল নেই, সেটা জার্মান তরফে সকলেই জানেন৷ কলম্বিয়ার বিরুদ্ধে ২-১ গোলে জেতার সময় ব্রাজিল সর্বসাকুল্যে ৩১টা ফাউল করেছে৷ শোয়াইনস্টাইগার বলেছেন: ‘‘আপনারা ভাবেন ব্রাজিলিয়ানরা সবাই ‘ম্যাজিশিয়ান'৷ কিন্তু ওদের দল বদলে গেছে, ওরা আজ অন্য ধরনের ফুটবল খেলে৷ গায়ের জোর দিয়ে খেলা আজ ওদের খেলার অঙ্গ এবং আমাদের সেজন্য প্রস্তুত থাকতে হবে৷''
জার্মান কোচ ইওগি ল্যোভ-ও বলেছেন: ‘‘ব্রাজিলের প্রথাগত ফুটবল শৈলীর আর বিশেষ কিছু বাকি নেই – ওদের সেই শৈল্পিক ফুটবল, যা আমরা সবাই চিনি৷ ব্রাজিলের প্লেয়ারদের টেকনিক খুব ভালো বৈকি৷ কিন্তু ওরা এই বিশ্বকাপে অন্য যে কোনো দলের চেয়ে বেশি গায়ের জোর দিয়ে খেলছে এবং বিপক্ষদলের আক্রমণ সেইভাবে ব্যাহত করার চেষ্টা করছে৷'' তা নিয়ে ল্যোভের বিশেষ চিন্তিত না হবারই কথা, যেহেতু জার্মান ক্যাপ্টেন ফিলিপ লাম তাঁর অভ্যস্ত রাইট ব্যাক পজিশনে ফেরত গেছেন; গোলরক্ষক মানুয়েল নয়ারের ফর্ম অনবদ্য ; ওদিকে বাদবাকি ব্যাক লাইনের জন্য ল্যোভ পের মের্টেসাকার, মাটস হুমেলস ও জেরোম বোয়াটেং-এর মধ্যে যে কোনো দু'জনকে বেছে নিতে পারেন৷
জার্মানির বিশ্বকাপ দল
বিশ্বকাপ জয়ের জন্য জার্মান কোচ ইওয়াখিম ল্যোভ ২৩ জন খেলোয়াড় নিয়ে এখন ব্রাজিলে৷ জার্মান দলে পরিচিত মুখ যেমন রয়েছে, তেমনি রয়েছে কিছু নতুন মুখও, যাঁরা চমক দেখাতে পারেন৷ এই ছবিঘরে পাবেন তাঁদের সম্পর্কে বিভিন্ন তথ্য৷
ছবি: Lennart Preiss/Bongarts/Getty Images
মানুয়েল নয়ার
সেই ২০১০ সালের বিশ্বকাপ থেকেই জার্মানির এক নম্বর গোলরক্ষক হিসেবে রয়েছেন নয়ার৷ অবশ্য ঘাড়ে ইনজুরির কারণে চলতি বিশ্বকাপের আগে তাঁর ফিটনেস নিয়ে খানিকটা উদ্বেগ তৈরি হয়েছিল৷ তবে আশার কথা হচ্ছে, তিনি সেরে উঠেছেন৷ জাতীয় দলের হয়ে ৪৫ বার মাঠে নেমেছেন নয়ার৷
ছবি: Patrik Stollarz/AFP/Getty Images
রোমান ভাইডেনফেলার
ভাইডেনফেলার জার্মান দলের দ্বিতীয় গোলরক্ষক৷ ক্যামেরুনের বিপক্ষে প্রীতি ম্যাচে পুরো ৯০ মিনিটই খেলেছেন তিনি৷ তবে জাতীয় দলের পক্ষে এখন অবধি শুধুমাত্র দু’বার খেলার সুযোগ পেয়েছেন ডর্টমুন্ডের এই গোলরক্ষক৷
ছবি: Getty Images
রন-রবার্ট সিলার
বুন্ডেসলিগায় অন্যতম শক্তিশালী গোলরক্ষক হিসেবে বিবেচিত সিলার ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড অ্যাকাডেমি থেকে প্রশিক্ষিত৷ তৃতীয় গোলরক্ষক হিসেবে জার্মান দলের সঙ্গে আছেন তিনি৷ বলাবাহুল্য, জার্মান দলের এই অবস্থানটিতেও প্রতিযোগিতা কম নয়৷ কোচ ল্যোভের অবশ্য ২৪ বছর বয়সি সিলারকে দারুণ পছন্দ৷
ছবি: Wagner/Bongarts/Getty Images
পেয়ার ম্যার্টেসাকার
আর্সেনালে চমৎকার একটি মৌসুম পার করা ম্যার্টেসাকার বিশ্বকাপেও ভালো করার আশা রাখছেন৷ ক্যামেরুনের বিপক্ষে অধিনায়কের ‘আর্মব্যান্ড’ পরে মাঠে নেমেছিলেন তিনি৷
ছবি: Reuters
জেরোম বোয়াটেং
ল্যোভের রক্ষণভাগের এক শক্তিশালী খেলোয়াড় বোয়াটেং, যিনি ৩৮ বার জাতীয় দলের হয়ে খেলেছেন৷ প্রীতি ম্যাচে লামের অনুপস্থিতি বুঝতেই দেননি তিনি৷ তবে বোয়াটিং মধ্যমাঠেই সবচেয়ে ভালো খেলেন৷
ছবি: Getty Images
মাটস হুমেলস
জাতীয় দলের হয়ে ২৯ বার মাঠে নামা হুমেলস তাঁর সতীর্থদের তুলনায় অভিজ্ঞতার বিচারে হয়ত পিছিয়ে থাকতে পারেন৷ কিন্তু রক্ষণভাগের খেলোয়াড় হিসেবে বুন্ডেসলিগায় ব্যাপক জনপ্রিয় তিনি৷
ছবি: Reuters
বেনেডিক্ট হ্যোভেডেজ
শালকের অধিনায়ক হ্যোভেডেজ দীর্ঘদিন ধরেই জাতীয় দলের সঙ্গে রয়েছেন৷ ব্রাজিলেও তাঁর ব্যতিক্রম ঘটেনি৷ ‘সেন্টার-ব্যাক’ অবস্থানে সবচেয়ে যোগ্য হ্যোভেডেজ প্রয়োজনে ‘রাইট-ব্যাকেও’ খেলতে পারেন৷ তবে তিনি জাতীয় দলের হয়ে এখন অবধি মাত্র ১৮ বার মাঠে নামার সুযোগ পেয়েছেন৷
ছবি: picture-alliance/dpa
এরিক ডুর্ম
চ্যাম্পিয়ন্স লিগে রেয়াল মাদ্রিদের বিপক্ষে ভালো করা ডর্টমুন্ডের খেলোয়াড় ডুর্ম জাতীয় দলে একেবারেই নতুন৷ ক্যামেরুনের বিপক্ষে প্রীতি ম্যাচটি দিয়ে তাঁর জাতীয় দলে যাত্রা শুরু হয়৷
ছবি: Getty Images
কেভিন গ্রোসক্রয়েৎস
গ্রোসক্রয়েৎসের মতো খেলোয়াড় দলে পেলে যে কোনো ম্যানেজারই খুশি হবেন৷ ডর্টমুন্ডের এই তারকা ‘ডিফেন্ডার’ হিসেবে তো বটেই, মাঠের যে কোনো অবস্থানেই ভালো খেলতে পারেন৷ ফলে জাতীয় দলের ২৩ জনের তালিকায় তাঁর স্থান পাওয়ায় বিস্মিত হওয়ার কিছু নেই!
ছবি: Getty Images
ফিলিপ লাম
দল এবং দেশের পক্ষে খেলাগুলিতে ফিলিপ লামকে বিভিন্ন অবস্থানে খেলানো হয়েছে৷ তবে ল্যোভের বিবেচনায় ‘রাইট ব্যাক’ অবস্থানের জন্যই সবচেয়ে উপযুক্ত তিনি৷ জাতীয় দলের পক্ষে ১০৫ বার মাঠে নামা লাম এবার তাঁর সাফল্যের তালিকায় বিশ্বকাপ ট্রফিও যোগ করতে চান৷ ৩০ বছর বয়সি এই ফুটবলার জার্মান জাতীয় দলের অধিনায়ক৷
ছবি: picture-alliance/dpa
মাটিয়াস গিন্টার
ফুটবল মাঠে বিভিন্ন পজিশনে খেলতে পারদর্শী মাটিয়াস গিন্টারও কোচ ল্যোভের বিশেষ পছন্দের তালিকায় রয়েছেন৷ জার্মানির ঘরোয়া ফুটবলে চমৎকার একটি বছর কাটিয়েছেন ফ্রাইবুর্গের এই তরুণ খেলোয়াড়৷
ছবি: Getty Images
বাস্টিয়ান শোয়াইনস্টাইগার
জাতীয় দলের হয়ে একশোবার মাঠে নামার সৌভাগ্যবানদের তালিকায় কিছু দিন আগেই নাম লিখিয়েছেন শোয়াইনস্টাইগার৷ মধ্যমাঠের খেলোয়াড় হিসেবে তাঁর অভিজ্ঞতা এবারের বিশ্বকাপে জার্মানিকে সহায়তা করবে বলে আশা করছেন অনেকেই৷ পাশাপাশি তরুণ খেলোয়াড়দেরও তাঁর কাছ থেকে শেখার আছে অনেক৷
ছবি: Getty Images
ক্রিস্টোফ ক্রামার
মাঠে নিরলস ভাবে দৌঁড়ানো এবং নির্ভুল ‘পাস’ দেয়ার সুনামের অধিকারী ক্রামার পোল্যান্ডের বিপক্ষে চমৎকার খেলেছেন৷ আর ক্যামেরুনের বিপক্ষে শেষের ১৫ মিনিটে তাঁর খেলা ল্যোভের মন জয় করার জন্য ছিল যথেষ্ট৷
ছবি: Getty Images
সামি খেদিরা
চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ফাইনালে এক পর্যায় মাঠ থেকে তুলে নেয়া হয় সামি খেদিরাকে৷ গত নভেম্বরে হাঁটুতে প্রচণ্ড আঘাত পেয়েছিলেন তিনি৷ তবে তিনি দ্রুতই সেরে উঠছেন৷ পুরোপুরি ফর্ম ফিরে পেলে জার্মানির বিশ্বকাপ দৌঁড়ে বড় অবদান রাখার সুযোগ রয়েছে তাঁর৷
ছবি: picture-alliance/dpa
টোনি ক্রোস
বায়ার্ন মিউনিখে নিজের ভবিষ্যত কী হবে – সেটা নিয়ে এখন সম্ভবত ভাবছেন না ক্রোস৷ তাঁর চিন্তা এখন শুধুই বিশ্বকাপকে ঘিরে৷ অসাধারণ ‘পাস’ দিতে দক্ষ এই তারকা জাতীয় দলের অন্যতম কাণ্ডারি৷
ছবি: Getty Images
ইউলিয়ান ড্রাক্সলার
ল্যোভের আরেক আবিষ্কার ড্রাক্সলার৷ মধ্যমাঠের আক্রমণাত্মক মেজাজের এই খেলোয়াড়ের বয়স মাত্র ২০ বছর৷ গত মৌসুমে অবশ্য তাঁর খেলায় ছন্দটি ঠিক ছিল না৷ তবে এবার দলের সঙ্গে থেকে যে অভিজ্ঞতা তিনি অর্জন করবেন, তা ভবিষ্যতেও কাজে দেবে৷
ছবি: picture-alliance/dpa
শ্কদ্রান মুস্তাফি
বিশ্বকাপের আগ মুহূর্তে মার্কো রয়েসের ইনজুরি যেন মুস্তাফির কপাল খুলে দিয়েছে৷ ২০০৯ সালে উয়েফা অনুর্ধ-১৭ চ্যাম্পিয়নশিপ জয়ী জার্মান দলের সদস্য তিনি৷ তাঁর বয়স এখন ২২৷
ছবি: Martin Rose/Bongarts/Getty Images
মেসুত ও্যজিল
চলতি মৌসুমের শেষের দিকে খানিকটা নিষ্প্রভ হয়ে যান ও্যজিল৷ তবে শুধুমাত্র একটি মৌসুম দিয়ে ‘পারফর্মেন্স’ বিবেচনা করার মতো খেলোয়াড় তিনি নন৷ জাতীয় দলের হয়ে পঞ্চাশবারের বেশি মাঠে নেমেছেন তিনি৷ চূড়ান্ত বিবেচনায় তাই জার্মান দলের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ খেলোয়াড় মেসুত ও্যজিল৷
ছবি: Alexander Hassenstein/Bongarts/Getty Images
মারিও গ্যোটৎসে
সর্বশেষ মৌসুমে ডর্টমুন্ড ছেড়ে মিউনিখে যাওয়ায় খানিকটা সমালোচনার শিকার হয়েছিলেন গ্যোটৎসে৷ এমনকি পুরাতন ক্লাবের বিপক্ষে গোল করে নিজের সাবকে ভক্তদেরও মন ভেঙে দিয়েছেন তিনি৷ চলতি বিশ্বকাপে আক্রমণভাগে বেশি দেখা যেতে পারে গ্যোটৎসেকে৷
ছবি: Reuters
আন্দ্রে শ্যুর্লে
জাতীয় দলের সঙ্গে থাকলেও মাঠে শ্যুর্লের অবস্থান কী হবে – তা এখনো নিশ্চিত নয়৷ কোচ ইওয়াখিম ল্যোভ তাঁকে আক্রমণভাগে রাখতে পারেন৷
ছবি: picture-alliance/dpa
লুকাস পোডোলস্কি
জাতীয় দলের হয়ে ১১২ বার মাঠে নেমেছেন পোডোলস্কি, যা এক রেকর্ড৷ খুব কম খেলোয়াড়ের পক্ষেই এমন রেকর্ড ভাঙা সম্ভব৷ ইদানীং অবশ্য দলের হয়ে মাঠে নামার চেয়ে ‘সাইড বেঞ্চে’ বসে থাকতেই বেশি দেখা যায় তাঁকে৷ তবে যে কোনো সময় জ্বলে ওঠার ক্ষমতা রাখেন পোডোলস্কি৷
ছবি: Getty Images
টোমাস ম্যুলার
জার্মান দলের হয়ে গোল করতে অন্যতম দক্ষ ম্যুলার৷ সতীর্থ ক্লোজের সঙ্গে এক্ষেত্রে তাঁর মিল অনেক৷ জাতীয় দলের হয়ে ৪৭ বার মাঠে নেমে ১৮ গোল করেছেন ম্যুলার৷
ছবি: Getty Images
মিরোস্লাভ ক্লোজে
জাতীয় দলের হয়ে ৬৮টি গোল করা ক্লোজের সামনে দুটি রেকর্ড ভাঙার সুযোগ রয়েছে৷ বিশ্বকাপে সবচেয়ে বেশি গোল করার রেকর্ডটি রোনাল্ডোর কাছ থেকে নিয়ে নিতে পারেন তিনি৷ আর জার্মানির হয়ে সর্বোচ্চ গোল করে গের্ট ম্যুলারের গড়া রেকর্ডও এবার ভাঙতে পারেন তিনি৷
ছবি: Lennart Preiss/Bongarts/Getty Images
23 ছবি1 | 23
ব্রাজিলও মুষড়ে নেই
ওদিকে নেইমারের বিরহে যে ব্রাজিলিয়ান টিম একেবারে নুয়ে পড়েছে, এমন নয়৷ চেলসির উইলিয়ান – উচ্চতায় এক মিটার ৬৩ সেন্টিমিটার – নাকি নেইমারের জায়গা নিতে প্রস্তুত: ‘‘আমরা ও না থাকায় দুঃখিত, কিন্তু তার ফলে আমাদের স্বপ্ন সফল করার আরো বেশি প্রেরণা পাব৷'' কোচ লুইজ ফেলিপে স্কোলারি বলেছেন: ‘‘আমরা প্লেয়ারদের বোঝানোর চেষ্টা করছি যে, এই বিপর্যয় একটা সুযোগও হতে পারে, সব কিছু অন্যভাবে করার সুযোগ৷ আর আমরা ঠিক তাই করব৷''
নেইমারের জায়গায় উইলিয়ান, আর দা সিলভার জায়গায় বায়ার্ন মিউনিখের দান্তে? মাইকন কি রাইট ব্যাক থাকছে? ফ্রেড কি আবার গোড়া থেকেই খেলবে? স্কোলারির সামনে নানা প্রশ্ন৷ বলতে কি, ফুটবলের সামনেও৷ তবে নতুন কোনো প্রশ্ন নয়৷ শিল্পের সঙ্গে রুটির বিরোধ তো চিরকাল৷ ‘জোগা বোনিতো', বিউটিফুল গেম এক কথা, আর ম্যাচ জেতা, ট্রফি জেতা আরেক কথা৷ কিন্তু এবার ফুটবলের সামনে যে প্রশ্ন, অনেক ক্ষেত্রে একটি দেশের রাজনীতিকেও পঙ্গু করে দেবার ক্ষমতা রাখে৷
ফুটবল ও গুণ্ডামি
ফুটবলে কতটা গুণ্ডামি চলে? এ প্রশ্নের জবাব দৃশ্যত ফিফার কাছে নেই৷ ফিফা কখনো রেফারিদের বলে কড়া হতে; কখনো রেফারিদের বলে, অত চট করে হলুদ কার্ড দেখিও না৷ আর এই দোনামোনার সুযোগ নিয়ে একদল পেশাদারি ফুটবলার পেশাদারি গুণ্ডাদের মতো আচরণ শুরু করে৷ অবশ্য সেই গুণ্ডামি সাধারণত নেইমারের বিরুদ্ধে ফাউলের মতো মোটা দাগের হয় না, ফাউল করা হয় চুরি-ছ্যাঁচড়ামি-পকেটমারির মতো: হাত কি জামা ধরে টানা; জড়িয়ে ধরা; পিছন থেকে ঠেলা দিয়ে বিপক্ষের খেলোয়াড়ের ভারসাম্য নষ্ট করে দেওয়া; হেড দেবার প্রচেষ্টা হিসেবে বস্তুত কারুর মাথায় চড়ে বসা৷
সাজো বিশ্বকাপের সাজে
প্রিয় দলের প্রতি সমর্থন নানাভাবে প্রকাশ করেন ফুটবল ভক্তরা৷ কেউবা বেছে নেন উদ্ভট বেশভূষা, কেউবা নিজের মুখটা রাঙান পতাকার রঙে৷ আজকাল আবার লেন্সও পাওয়া যাচ্ছে পতাকার রঙে৷ ফুটবল ভক্তদের কিছু ব্যতিক্রমী বেশভূষা পাবেন এখানে৷
ছবি: picture-alliance/dpa
বিকিনিতে পতাকা
ক্যামেরন এবং ক্রোয়েশিয়ার ম্যাচ দেখতে আসা এক ব্রাজিলের ভক্ত এভাবেই সাজিয়েছেন নিজেকে৷ পুঁতির তৈরি বিকিনিতে বিশেষভাবে ব্রাজিলের পতাকা ফুটিয়ে তোলা হয়েছে৷ ফুটবল ভক্তদের ব্যতিক্রমী বেশভূষার কিছু নমুনা পাবেন এই ছবিঘরে৷
ছবি: picture alliance/PIXSELL
চোখের মণিতে পতাকা
দেখলে মনে হবে, জার্মানির এক ফুটবলভক্ত চোখের মণিতে এঁকেছেন জাতীয় পতাকা৷ আসলে তিনি কন্ট্যাক্ট লেন্স ব্যবহার করছেন৷ আর সেই লেন্সটাতে রয়েছে পতাকার রং৷
ছবি: picture-alliance/dpa
ঐতিহ্যবাহী পোশাক
ব্রাজিলে ঘানা এবং যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যকার ম্যাচের সময়কার গ্যালারির ছবি এটি৷ ঘানার সমর্থকদের দেখা যাচ্ছে সে দেশের ঐতিহ্যবাহী পোশাকে৷
ছবি: picture-alliance/dpa
দলকে জেতাতে মরিয়া!
দেখে মনে হচ্ছে দলকে জেতাতে রীতিমত ঝাড়ফুঁক দিচ্ছেন ঘানার এই ফুটবল ভক্ত৷ ছবিটি ১৬ই জুন ঘানা এবং যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যকার খেলার সময় তোলা৷
ছবি: picture-alliance/dpa
ইকুয়েডরের ভক্ত
ইকুয়েডরের এক ফুটবল ভক্তের ফুটবল মাস্ক এটি৷ হন্ডুরাস এবং ইকুয়েডরের খেলা দেখতে এভাবেই মাঠে হাজির হন তিনি৷
ছবি: picture-alliance/dpa
পতুর্গাল বাদ
এবারের বিশ্বকাপের গ্রুপ পর্যায় পার হতে পারেনি পর্তুগাল৷ কিন্তু এ জন্য কিন্তু ভক্তদের দোষ দেয়া যাবে না কিছুতেই৷ বরং তারা কিন্তু দলকে উজ্জীবিত রাখতে সর্বাত্মক চেষ্টাই করেছেন৷ এক পর্তুগিজ ফুটবল যুগল মাঠে এসেছিলেন এই লেবাসে৷
ছবি: picture-alliance/dpa
মার্কিন সমর্থক
ইনি একজন মার্কিন সমর্থক৷ পর্তুগাল এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের খেলা দেখতে ২২শে জুন এভাবে মাঠে হাজির হন তিনি৷ সে খেলায় অবশ্য শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত ছিল টানটান উত্তেজনা৷
ছবি: picture-alliance/dpa
পোশাক দেখে কি চেনা যায়?
উত্তর খুঁজতে কষ্ট করার দরকার নেই৷ এরা মেক্সিকোর সমর্থক৷ ২৩শে জুন তাঁরা একটু বাড়তিই উচ্ছ্বসিত ছিলেন৷ কেননা সেদিন তাঁদের দল ৩-১ গোলে হারায় ক্রোয়েশিয়াকে৷
ছবি: picture-alliance/dpa
ইনিও মেক্সিকোর সমর্থক
আগের ছবিতে যাদের কথা বলেছি, ইনিও তাঁদেরই একজন৷ তবে তাঁর লেবাস কিছুটা ভিন্ন৷ এমন বেশভূষা দীর্ঘসময় পরে থাকা কিন্তু সহজ কথা নয়৷ তবে ভক্তরা সবই পারেন৷
ছবি: picture-alliance/dpa
এত বড় চিরুনি!
যাঁদের মাথায় চুল নেই তাঁরা এটাকে বাড়াবাড়ি মনে করতেই পারেন৷ তবে এই ফুটবল ভক্ত ব্রাজিল এবং ঘানার মধ্যকার ম্যাচ দেখতে এত বড় চিরুনি নিয়েই হাজির হন৷
ছবি: picture alliance/augenklick/firo Sportphoto
ঠোঁটে পতাকা!
জার্মানির এই দুই সমর্থক তাঁদের ঠোঁট রাঙিয়েছেন জাতীয় পতাকার আদলে৷ জার্মানিতে এমন চর্চা প্রচুর৷ খেলা শুরুর আগে ফুটবল ভক্তরা ছোট্ট করে গালে এঁকে নেন জাতীয় দলের পতাকা কিংবা ঠোঁট রাঙিয়ে নেন এভাবে৷
ছবি: DW/E.de Sá
11 ছবি1 | 11
এবারকার বিশ্বকাপে যে ফাউলটি ফাইন আর্টে পরিণত হয়েছে, সেটি হলো পা মাড়িয়ে দেওয়া; বুটের পয়েন্টটা দিয়ে পায়ে খোঁচা মারা; সন্তর্পণে লেঙ্গি মারা – বাঙালির প্রিয় ঐ বস্তুটি যে একদিন বিশ্বের সেরা ফুটবল খেলোয়াড়দের তুণের অস্ত্র হয়ে দাঁড়াবে, তা কে ভাবতে পেরেছিল? সেই সঙ্গে: বল গোললাইন পেরিয়েছে কিনা, তা দেখার জন্য সাতটি ক্যামেরা আছে৷ কিন্তু ফাউল থেকে অফসাইড দেখছেন এখনও এক রক্তমাংসের রেফারি এবং তাঁর সাগরেদ দুই লাইন্সম্যান, যাঁরা মাঠময় কানামাছি ভোঁ-ভোঁ করে বেড়াচ্ছেন আর প্লেয়াররা অন্য প্লেয়ারদের কামড়ে দিলে – কিংবা হাঁটুর গুঁতোয় তাঁদের মেরুদণ্ডের হাড় সরিয়ে দিলে – সেই সব ছোট-খাটো অপরাধ চোখে দেখেন না৷ এ যেন এক দারোগা আর দুই পাহারোলায় মিলে পাড়ায় পাড়ায় খুনোখুনি রোখার চেষ্টা৷
ও হ্যাঁ, সুয়ারেজের মরণ কামড় যিনি দেখেও দেখেননি, সেই রেফারিই আবার জার্মান-ব্রাজিল সেমিফাইনালে বাঁশি বাজাবেন কিনা!