1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

নেকড়ের হাত থেকে ভেড়া উদ্ধার

ইওয়াখিম এগার্স/এসি২৭ জানুয়ারি ২০১৬

জর্জিয়ার মাঠেপ্রান্তরে এখনও মেষপালকরা তাদের ভেড়ার পাল নিয়ে ঘোরেন৷ নেকড়ের হাত থেকে ভেড়া, আর মানুষের হাত থেকে নেকড়েকে বাঁচাতে গেলে কী করতে হয়, এ হলো তার কাহিনি৷

Tiere Wolf in Sweden
ছবি: picture alliance/AP Photo/J. Ekströmer

যতদূর চোখ যায়, ভেড়ার পাল৷ একটা দু'টো নয়, সতের'শ৷ তাদের খেয়াল রাখতে দশটা রাখালিয়া কুকুর হিমশিম৷ দিনে তারা ঘাসের উপর পড়ে ঘুমোয়, রাখালের কথা শোনে না৷ সব চেষ্টাই বৃথা৷ কুকুররা সবাই ক্লান্ত৷

ভেড়ার পালের মালিক ওতার ফারেউলিদসে বলেন, ‘‘রাত্রে কুকুরদের অনেক কাজ থাকে৷ সারাক্ষণ পাহারা দিতে হয়৷ এই এলাকায় অনেক নেকড়ে আছে৷ ওরা এখানে ঘোরাফেরা করে, কাজেই কুকুরদের খুব সতর্ক থাকতে হয়; প্রয়োজনে নেকড়েদের ধাওয়া করে তাড়িয়ে দিতে হয়৷ কাজেই যতটা সহজ মনে হয়, ওদের জীবন ততটা সহজ নয়৷''

গত গ্রীষ্মে একটা ভাল্লুক ওতার-এর ১৩টা ভেড়া মেরেছে৷ এ বছর এসেছে নেকড়েরা, প্রতিবছরই যেমন হয়, যখন রাখালরা হাজার হাজার ভেড়া নিয়ে এখানে আসে৷

নেকড়ে, ভেড়া, কুকুর

05:27

This browser does not support the video element.

‘নেকড়ে মানুষ'

টেমো পপিয়াশভিলি ‘নাক্রেস' বন্যপ্রাণী সুরক্ষা সংগঠনের হয়ে কাজ করেন৷ রাখালরা তাঁকে বলেন ‘নেকড়ে মানুষ'৷ রাখালরা তাঁর কাছে অভিযোগ করেন, ভেড়া চরানোর জায়গা কীভাবে কমে আসছে৷ ক্রমেই আরো বেশি রাস্তা, আরো বেশি বেড়া, এখন আবার নেকড়েদের কথাও ভাবতে হবে, কুকুরদের ধরে রাখতে হবে, নেকড়েদের দিকে গুলি চালালে চলবে না৷

‘নাক্রেস' বন্যপ্রাণী সুরক্ষা সংগঠনের টেমো পপিয়াশভিলি বলেন, ‘‘ওরা আমার সম্পর্কে কী ভাবেন, তা জানি না৷ আশা করি, ওরা আমাকে বুঝতে পারেন; বুঝতে পারেন যে, আমাদের সংগঠন ওদের সাহায্য করার চেষ্টা করছে৷ কিন্তু আমরা যখন শিকারি জীবজন্তুদের নিয়ে কথা বলি, তারা যে জর্জিয়ার প্রকৃতি ও পরিবেশের অঙ্গ, তখন মাঝেমধ্যে বিতর্ক হয় বৈকি৷''

বিষ্ঠা কিন্তু ‘ব্যাজার' কৈ?

হেমন্তে পরিস্থিতি গ্রীষ্মের চেয়ে একটু সহজ৷ তখন নাকি উঁচু ঘাসের মধ্যে দিয়ে গেলে অন্তত সাপের কামড় খাবার ভয় থাকে না – বলেন রাখালরা৷ গবেষকরা কিন্তু সাপের বদলে খুঁজে পেলেন পশুর বিষ্ঠা৷ তা থেকে এই ন্যাশনাল পার্কে যে সব জীবজন্তু থাকে, তাদের শনাক্ত করা যায়৷ ‘নাক্রেস'-এর গেয়র্গে গরগাদসে বলেন, ‘‘আমরা সবসময় বিষ্ঠার আকার আর তার গন্ধ দেখি৷ সব জীবজন্তুর একটা নিজস্ব গন্ধ আছে৷ এটা যেমন একটা ইউরোপীয় ব্যাজার-এর বিষ্ঠা৷''

কিন্তু এই সব জীবজন্তুগুলো থাকে কোথায়? তাদের তো কোনো দেখা নেই? অথচ নাক্রেস যে সব ক্যামেরা ট্র্যাপ লাগিয়ে থাকে, তার ছবি থেকে এই সব জীবজন্তুর অস্তিত্বের স্পষ্ট প্রমাণ পাওয়া যায়৷ বুনো বেড়াল, খ্যাঁকশেয়াল, ইউরেশীয় লিনক্রস, আর হাল্কা রঙের যাদের-বলা-হয় সিরিয়ান ভাল্লুক, তারা অন্তত গোটা বিশেক৷ এমনকি কয়েক বছর আগে একটা পার্শিয়ান চিতাবাঘেরও দেখা পাওয়া গিয়েছিল৷ তারপরেই সে উধাও হয়৷

জীবজন্তুরা পার্কের ঠিক কোথায় রয়েছে, তা জানার জন্য একটা ড্রোনের ব্যবস্থা করেছে নাক্রেস৷ বেআইনি শিকারি অথবা যারা বিনা অনুমতিতে কাঠ কাটছে, তাদের খোঁজ পেতেও এই ড্রোন কাজে লাগে৷ সুবিশাল খাদগুলোতে নাকি ভাল্লুকরা থাকে, মাঝেমধ্যে ওপরে উঠে ভেড়া মারে৷

ড্রোনটা ৫০ কিলোমিটার পর্যন্ত উড়তে পারে, জিপিএস দিয়ে চালানো হয়৷ নাক্রেস সবে এই কাজ শুরু করেছে৷ কাজেই দুর্ঘটনাও ঘটে থাকে৷ চিন্তা নেই, ড্রোন মেরামত করে নেওয়া যায়৷ দ্বিপ্রহরে প্রথম ভেড়ার পালগুলো এসে পৌঁছায়৷ শীতে এখানে জর্জিয়ার অন্যান্য জায়গার চেয়ে বেশি গরম, তাই আবার ঘাস গজায়৷ কিন্তু একটা ভেড়া মরলে মালিকের ক্ষতি হয় মোট একশ ইউরো, যা এর আগের দিন ঘটেছে৷

ভেড়ার পালের মালিক বেসো খোসিকারিদসে বলেন, ‘‘এই কাছেই ঘটনাটা ঘটেছে, দিনের বেলা৷ আমরা আবার ছিলাম দু'জন, কিন্তু ভেড়ার পালের অন্যদিকে দাঁড়িয়ে ছিলাম, নেকড়েটা যেদিক থেকে আক্রমণ করেছে, সেদিকে নয়৷ কুকুররাও খেয়াল করেনি যে, নেকড়েটা একটা ভেড়াকে আক্রমণ করেছে৷ আমরা যখন এসে পৌঁছাই, তখনও ভেড়াটা বেঁচে ছিল৷ আমরাই সেটাকে মেরে খাই৷''

হাড়গুলো পেল কুকুররা, কাজেই শেষমেষ সকলেরই লাভ – এক ভেড়াটার ছাড়া৷ নেকড়েটাও যে কবে মাঠঘাট পার হয়ে কোথায় গেছে, কে জানে৷ তবে তাকে মানুষের গুলিতে মরতে হয়নি৷ সেটাই বা কম কীসের?

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য
স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ