1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

নেতাজির পথেই চলছে আরএসএস, বললেন ভাগবত

২৩ জানুয়ারি ২০২৩

নেতাজির জন্মদিবস পালন করতে কলকাতায় আরএসএস প্রধান। তৃণমূলের নানান অনুষ্ঠান। নেতাজি ভবনেও সুভাষ-স্মরণ।

ছবি: Subrata Goswami/DW

নেতাজি কার? আরএসএস, তৃণমূল, নেতাজি ভবন নাকি দেশের? সুভাষচন্দ্র বসুর ১২৬ তম জন্মদিবসে এই বিতর্কের সাক্ষী থাকলো পশ্চিমবঙ্গ-সহ গোটা দেশ। 

আরএসএসের সভা

সোমবার সকালে কলকাতার শহিদ মিনারে সভা করেন আরএসএস প্রধান মোহনরাও ভাগবত। কলকাতায় এমন সভা সাম্প্রতিক অতীতে হয়নি। সেই সভাতেই আরএসএস প্রধান কোনোরকম রাখঢাক না করে জানিয়ে দেন, আরএসএস নেতাজির পথেই হাঁটছে। নেতাজির যা লক্ষ্য, সঙ্ঘ পরিবারেরও সেই একই লক্ষ্য। সঙ্ঘ নেতাজির পথে কাজ করে যাচ্ছে। সবাইকে সঙ্গে নিয়ে চলছে। সঙ্ঘের শাখায় সেটাই শেখানো হয়। 

ভাগবত বলেছেন, ''নেতাজি সমষ্ঠির জন্য ভাবতে বলেছিলেন। ব্যক্তির জন্য নয়। আমরাও তাই বলি। ব্যক্তির উন্নতির কথা ভাবলে হবে না, সমাজের জন্য ভাবতে হবে। ভাগবতের বক্তব্য, আমরা নির্বাচনে লড়ি না। আমাদের নামের দরকার নেই। আমরা সবাইকে একসঙ্গে নিয়ে চলি।'' 

মোহন ভাগবতের সভায় স্বয়ংসেবকরা। ছবি: Subrata Goswami/DW

নেতাজির ভূয়সী প্রশংসা করে ভাগবত বলেছিলেন, ''তিনি দেশের জন্য তপস্যা করেছেন। কঠোর পরিশ্রম করেছেন, দেশের জন্য নিজের জীবন বিপন্ন করেছেন। নিজের নাম হবে বলে করেননি। নিঃস্বার্থভাবে করেছেন। দেশের মধ্যে তার বিরোধী ছিল। কিন্তু তিনি সকলকে নিয়ে চলতেন। দেশের মধ্যে কোনো বিরোধের রাস্তায় যাননি। তিনি ছিলেন আদর্শ নেতা। সকলকে নিয়ে চলতে পারতেন।'' ইংরেজদের বিরুদ্ধে বাহিনী তৈরি করে লড়েছেন। সেই লড়াইকে কুর্নিশ জানিয়েছেন ভাগবত। 

নেতাজির মেয়ের দাবি

নেতাজির মেয়ে অনিতা বসু পাফ বিবৃতি দিয়ে জানিয়েছেন, ‘আমার বাবা হিন্দু ছিলেন, কিন্তু তিনি সব ধর্মকে সম্মান করতেন। তিনি বিশ্বাস করতেন, সকলে একসঙ্গে থাকতে পারে। কিন্তু, আরএসএস তো এই মতে বিশ্বাস করে না। আরএসএস যদি নেতাজির আদর্শ গ্রহণ করে, তাহলে দেশের জন্য ভালো হবে।''

নেতাজি ভবনে সুভাষচন্দ্র বসুকে শ্রদ্ধার্ঘ। ছবি: Subrata Goswami/DW

তিনি বলেছেন, '‘নেতাজি ধর্মনিরপেক্ষতায় বিশ্বাস করতেন। কিন্তু আরএসএস তা মানতে পারবে কি না সন্দেহ। ‘আরএসএস যদি হিন্দু জাতীয়তাবাদী ধারণা প্রচার করতে চায় তবে তা নেতাজির আদর্শের সঙ্গে মিলবে না। এর জন্য নেতাজিকে ব্যবহার করা হলে আমি তাদের প্রশংসা করব না।''

প্রধানমন্ত্রী মোদীর সিদ্ধান্ত

নেতাজির জন্মদিবসে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী আন্দামান ও নিকোবরের ২১টি দ্বীপের নতুন নাম চালু করার কথা জানিয়েছেন। ২০১৮ সালে রস আইল্যান্ডের নাম নেতাজি দ্বীপ করার কথা ঘোষণা করেছিলেন মোদী। এবার তার ঘোষণা, নেতাজির স্মরণে জাতীয় স্মৃতিস্তম্ভ গড়ে তোলা হবে নেতাজি দ্বীপে। নীল ও হ্যাভলককেও শহিদ ও স্বরাজ দ্বীপ করা হয়েছে। এছাড়া ২১টি অনামা দ্বীপকে পরমবীর চক্র বিজয়ী ২১ জনের নামে রাখা হয়েছে। সবচেয়ে বড় অনামা দ্বীপের নাম রাখা হয়েছে মেজর সোমনাথ শর্মার নামে।

মোদী বলেছেন, নেতাজি সৌধ আগামী প্রজন্মের কাছে প্রেরণা জোগাবে। তিনি মনে করিয়ে দিয়েছেন, আন্দামানের মাটিতে প্রথম বার তেরঙা পতাকা উড়েছিল। তার দাবি, অতীতে নেতাজিকে অবহেলা করা হয়েছে।

রোড রোডে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্য়োপাধ্যায়।ছবি: Subrata Goswami/DW

তৃণমূলের প্রতিক্রিয়া

কলকাতার মেয়র ও মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম বলেছেন, বাংলার মানুষ বিজেপির আদর্শে বিশ্বাস করে না। মোদীর মন্ত্রিসভায় কোনো সংখ্যালঘু মন্ত্রী নেই। কোনো সাংসদও মুসলিম নেই। উত্তর প্রদেশে কোনো মুসলিম বিধায়ক নেই। ওরা ঘৃণার রাজনীতি করে। এই ধরনের পথ নেতাজি কোনোদিন বরদাস্ত করতেন না।

কংগ্রেস-বামের বক্তব্য

কংগ্রেস নেতা অধীর চৌধুরী বলেছেন, বিজেপি-র নেতারা একটু নেতাজিকে পড়ুন। ইন্ডিয়ান স্ট্রাগল পড়ুন। সাভারকর কী করতে চেয়েছিলেন তা নেতাজি বলেছেন। নেতাজির মেয়ে বলছেন, বিজেপি নেতাজিকে ব্যবহার করে আখের গুছিয়ে নিতে চাইছে। নেতাজির সম্প্রীতির আদর্শ না নিয়ে শুধু নেতাজি নেতাজি করলে কী হবে?

সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তী বলেছেন, নেতাজির আদর্শ কোনোভাবে বিজেপি-আরএসএসের সঙ্গে যায় না।

নেতাজি ভবনের অনুষ্ঠানে বলছেন সুগত বসু। ছবি: Subrata Goswami/DW

তৃণমূলই সম্মান দেয়

তৃণমূলের নেতা কুণাল ঘোষের বক্তব্য, তৃণমূল প্রথম থেকে নেতাজিকে সম্মান দেয়। নেতাজির পরিবারের দুই জন সদস্য তৃণমূলের সাংসদ ছিলেন।

মমতা যা বললেন

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন, কেন্দ্র তো নেতাজির পরিকল্পিত প্ল্যানিং কমিশনই তুলে দিয়েছে।

মুখ্যমন্ত্রীর দাবি, নেতাজি তাঁতিদের স্বনির্ভর করার কথা বলতেন। বাংলার স্কুলে তাই বাংলার তাঁতিদের তৈরি পোশাক দেয়া হয়।

নেতাজির জন্মদিনে সুফল বাংলা প্রকল্পও চালু করেছেন তিনি।

জিএইচ/এসজি (পিটিআই, টিভি৯, এবিপি লাইভ)

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ