ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনইয়ামিন নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে ঘুস দেয়া-নেয়ার অভিযোগ আনার পর্যাপ্ত প্রমাণ আছে বলে জানিয়েছে দেশটির পুলিশ৷ তবে এসব অভিযোগ ভিত্তিহীন বলে দাবি করেছেন নেতানিয়াহু৷
বিজ্ঞাপন
বৃহস্পতিবার ইসরায়েলের পুলিশ জানায়, তারা প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে ঘুস ও প্রতারণার অভিযোগ আনার সুপারিশ করছেন৷ তাদের কাছে এ সংক্রান্ত পর্যাপ্ত তথ্যপ্রমাণ আছে বলেও জানিয়েছে পুলিশ৷
‘কেস ১০০০' শীর্ষক একটি মামলায় নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে দুই লক্ষ ৮৩ হাজার ডলারের সমপরিমাণ উপহার নেয়ার অভিযোগ আনা হয়েছে৷ এতে বলা হয়, ইসরায়েলি বিলিওনেয়ার ও হলিউডের প্রযোজক আরনন মিলচান ও অস্ট্রেলিয়ান মোগল জেমস পেকারের কাছ থেকে উপহার হিসেবে দামি সিগার, অলংকার আর শ্যাম্পেন নিয়েছেন নেতানিয়াহু৷ এসব উপহার দেয়ার মাধ্যমে মিলচান তাঁর ব্যবসার জন্য কর সুবিধা পাওয়ার চেষ্টা করেছেন বলে অভিযোগ রয়েছে৷
এদিকে, ‘কেস ২০০০' শীর্ষক মামলায় নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে শীর্ষস্থানীয় এক পত্রিকার সম্পাদককে বিশেষ সুবিধা দেয়ার অভিযোগ আনা হয়েছে৷ বিনিময়ে নেতানিয়াহু ঐ পত্রিকায় ইতিবাচক কাভারেজ চেয়েছিলেন৷
পুলিশের এসব অভিযোগকে ভিত্তিহীন বলে মন্তব্য করেছেন নেতানিয়াহু৷ টেলিভিশনে দেয়া এক বক্তব্যে তিনি বলেন, এর আগেও কয়েকবার তাঁর বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ আনা হয়েছিল, কিন্তু পরে কিছু পাওয়া যায়নি৷
বিশ্বে যে ২০ জন মানুষের ক্ষমতা সবচেয়ে বেশি
এই বিশ্বে এখন প্রায় ৭৪০ কোটি মানুষের বাস৷ এত মানুষের মধ্যে সবচেয়ে ক্ষমতাবান ২০ জন মানুষ৷ ২০১৮ সালের তালিকায় কে কে আছেন, সেটা অনুমান করতে পারেন? দেখুন ফোর্বস ম্যাগাজিন কোন ২০ জনকে বেছে নিয়েছে৷
শি জিনপিং
চীনের প্রেসিডেন্ট এবং কমিউনিস্ট পার্টির সাধারণ সম্পাদক
ছবি: Getty Images/Rolex dela Pena
20 ছবি1 | 20
অভিযোগের পরও তাঁর সরকার দায়িত্ব পালন করে যাবে বলে জানান নেতানিয়াহু৷ ২০১৯ সালে অনুষ্ঠেয় নির্বাচনে তিনি আবারও ভোটারদের সমর্থন পাবেন বলেও আশা প্রকাশ করেন তিনি৷
বিরোধী রাজনীতিকরা নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে এসব অভিযোগকে কাজে লাগিয়ে সুবিধা নিতে চাইছেন৷ বিরোধী দলের নেতা অভি গ্যাবি বলেছেন, ‘‘নেতানিয়াহুর যুগ শেষ৷'' উল্লেখ্য, গত ১২ বছর ধরে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন নেতানিয়াহু৷
এখন কী হবে?
পুলিশের এসব অভিযোগের কারণে আইনগতভাবে ক্ষমতা ছাড়তে বাধ্য নন নেতানিয়াহু৷ তবে এখন যদি দেশটির অ্যাটর্নি জেনারেল নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দায়ের করেন এবং পরে সেটি প্রমাণিত হয়, তাহলে নেতানিয়াহুকে পদত্যাগ করতে হবে৷ ২০০৯ সালে এমন অভিযোগে অভিযুক্ত হওয়ার পর তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী কে ক্ষমতা থেকে সরে যেতে মামলা দিয়ে শিশু নির্যাতন আর কত? হয়েছিল৷
জেডএইচ/এসিবি (এপি, এএফপি)
দুর্নীতিগ্রস্ত সব বিশ্বনেতারা
দুর্নীতি, ঘুস ও ক্ষমতার অপব্যবহার৷ চলুন জেনে নেয়া যাক, গত কয়েক বছরে কোন কোন বিশ্বনেতার বিরুদ্ধে এ সব অপরাধ প্রমাণিত হয়েছে৷
ছবি: picture-alliance/AP Photo/E. Peres
লুইজ ইনাসিও লুলা ডা সিলভা, ব্রাজিল
লুলার বিরুদ্ধে অভিযোগ দুর্নীতি ও অর্থ পাচারের৷ ঘুস গ্রহণের মামলায় আগেই সাড়ে নয় বছরের জেল হয়েছিল৷ তবে ২০০৩ থেকে ২০১০ সাল পর্যন্ত প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব পালন করা লুলা আপিল করেছিলেন৷ শুক্রবার তাঁকে কুরিচিবা শহরের পুলিশ সদরদপ্তরে আত্মসমর্পণ করার নির্দেশ দিয়েছেন ব্রাজিলের ফেডারেল বিচারক৷
ছবি: picture-alliance/AP Photo/E. Peres
পার্ক জিউন-হাই, দক্ষিণ কোরিয়া
২০১৬ সালে ক্ষমতার অপব্যবহার এবং দুর্নীতির অভিযোগে বিক্ষোভের মুখে ক্ষমতা ছাড়তে বাধ্য হয়েছিলেন পার্ক জিউন-হাই৷ চাঁদাবাজি, ঘুস ও ক্ষমতার অপব্যবহারের অভিযোগে মামলা শুরু হয়েছিল তারপর৷ অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় তাঁকে ২৪ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছে দক্ষিণ কোরিয়ার আদালত৷
ছবি: Getty Images/A.Young-Joon
ক্রিস্টিনা ফার্নান্দেজ দে কির্সনের, আর্জেন্টিনা
প্রথমে ফার্স্ট লেডি এবং পরে আর্জেন্টিনার প্রেসিডেন্ট (২০০৭ থেকে ২০১৫) হওয়া ক্রিস্টিনা ফার্নান্দেজ কির্শনার ২০১৬ সালে দুর্নীতির দায়ে অভিযুক্ত হন৷ পছন্দের ঠিকাদার কোম্পানিকে সরকারি নির্মাণ কাজ পাইয়ে দেয়ার অভিযোগ রয়েছে তাঁর বিরুদ্ধে, যদিও তিনি তা অস্বীকার করেছেন৷ তিনি রাজনীতিতে ফিরে আসতে চাইছেন৷ কেউ কেউ বলছেন, তিনি এলে এসব অভিযোগ থেকে মুক্তি পাওয়ার উপায় খুঁজছেন৷
ছবি: picture-alliance/dpa/L. La Valle
ইহুদ ওলমের, ইসরায়েল
২০০৬ থেকে ২০০৯ সাল পর্যন্ত ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করা ওলমের ২০১৪ সালে দুর্নীতির দায়ে অভিযুক্ত হন৷ ২০১৬ সালের ফেব্রুয়ারিতে তাঁর জেল হয়৷ অবশ্য পরের বছরেরর জুলাই মাসে ছাড়াও পেয়ে যান৷ জেলে যাওয়া ইসরায়েলের সাবেক প্রধানমন্ত্রীদের মধ্যে তিনিই প্রথম৷ পরে তাঁকে অনুসরণ করেন বেনইয়ামিন নেতানিয়াহু৷
ছবি: Reuters/O. Zwigenberg
আদ্রিয়ান নাসটাসে, রোমানিয়া
তাঁর বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ ওঠে ২০১২ সালে এবং এরপর দু’বছরের জন্য জেলও খাটেন৷ রোমানিয়ান রেভোলিউশনের পরের ২৩ বছরে তিনিই প্রথম কোনো সরকার প্রধান, যাঁকে জেলের ভাত খেতে হয়েছে৷ আদ্রিয়ান নাসটাসে রোমানিয়ার প্রধানমন্ত্রী ছিলেন ২০০৪ থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত৷
ছবি: Getty Images/AFP/
চার্লস জি. টেলর, লাইবেরিয়া
নব্বইয়ের দশকে সিয়েরা লিওনের গৃহযুদ্ধের সময় নৃশংস কর্মকাণ্ডের জন্য তাঁকে ২০১২ সালে ৫০ বছরের কারাদণ্ড দেয় আদালত৷ ন্যুরেমবার্গ ট্রায়ালে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে সংঘটিত যুদ্ধাপরাধের বিচারের পর প্রথম আন্তর্জাতিক কোনো ট্রাইব্যুনালে বিচার হওয়া কোনো রাষ্ট্রপ্রধান টেলর৷ ১৯৯৭ থেকে ২০০৩ সাল পর্যন্ত তিনি লাইবেরিয়ার প্রেসিডেন্ট ছিলেন৷