নেতৃত্ব ছাড়ার ঘোষণা দিয়েছেন বাংলাদেশ ওয়ানডে দলের অধিনায়ক মাশরাফী বিন মোর্ত্তজা৷ জিম্বাবোয়ের বিপক্ষে তৃতীয় ওয়ানডে হতে যাচ্ছে তাঁর নেতৃত্বে বাংলাদেশের শেষ ম্যাচ৷
বিজ্ঞাপন
বৃহস্পতিবার সিলেটে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ ঘোষণা দেন বলে জানায় ডয়চে ভেলের কনটেন্ট পার্টনার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম৷
শুক্রবার সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে জিম্বাবোয়ের বিপক্ষে তিন ম্যাচ সিরিজের শেষ ওয়ানডেতে খেলতে নামবে বাংলাদেশ৷ আগের দুই ম্যাচ জিতে সিরিজ জয় নিশ্চিত করেছে স্বাগতিক দল৷
জিম্বাবোয়ের বিপক্ষে শেষ ম্যাচ জিতলে বাংলাদেশের প্রথম অধিনায়ক হিসেবে ৫০তম জয়ের স্বাদ পাবেন মাশরাফী ৷
বৃহস্পতিবার ম্যাচপূর্ব সংবাদ সম্মেলনে সবার প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে মাশরাফী বলেন, ‘‘কাল অধিনায়ক হিসেবে আমার শেষ ম্যাচ৷ আমার প্রতি এত দীর্ঘ সময় আস্থা রাখার জন্য বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডকে ধন্যবাদ৷ আমার নেতৃত্বে বাংলাদেশ দলের যত ক্রিকেটার খেলেছেন, তাদের সবাইকে ধন্যবাদ৷ আমি নিশ্চিত এই প্রক্রিয়া সহজ ছিল না, গত চার-পাঁচ বছরের ভ্রমণ সহজ ছিল না৷’’
সংবাদ সম্মেলনের এক পর্যায়ে কিছুটা আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন তিনি৷
তার উত্তরসূরী যাকে বানানো হবে তিনি যেন ২০২৩ সালের বিশ্বকাপে নেতৃত্ব দিতে পারেন সেটা মাথায় রাখার পরামর্শও দেন তিনি৷
এসএনএল/জেডএইচ (বিডিনিউজ)
এক নজরে মাশরাফী বিন মোর্ত্তজা
নিঃসন্দেহে মাশরাফী ক্রিকেটের এক কিংবদন্তীর নাম৷ কিংবা বলা যেতে পারে একটি মিথ৷ কারণ, মাশরাফি মাঠে থাকলেই নাকি সতীর্থরা উজ্বীবিত বোধ করেন৷ চলুন এক নজর দেখে নিই তাঁর ক্যারিয়ারকে৷
ছবি: DW/N. Mohammad
নড়াইল এক্সপ্রেস
নড়াইলের সন্তান মাশরাফী৷ জন্ম ১৯৮৩ সালের ৫ অক্টোবর৷ পেস বোলার হিসেবে ক্যারিয়ারের শুরুতেই সাড়া ফেলেন৷ তাই অনূর্ধ-১৯ দলে থাকতেই বাংলাদেশের তৎকালীন অস্থায়ী ক্যারিবিয়ান বোলিং কোচ অ্যান্ডি রবার্টসের নজর কাড়েন৷ ডাক পড়ে ‘এ’ দলে৷ সেখানে খেলেন মাত্র এক ম্যাচ৷ তারপর? পরেরটা ইতিহাস৷
ছবি: Getty Images/AFP/F.K. Godhuly
টেস্ট অভিষেক
জীবনের প্রথম যে প্রথম শ্রেণির ম্যাচটি ‘ম্যাশ’ খেলেছেন, সেটি হলো টেস্ট ম্যাচ৷ ৮ নভেম্বর, ২০০১-এ বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে জিম্বাবোয়ের বিপক্ষে টেস্ট ক্রিকেটে তাঁর অভিষেক৷ বৃষ্টির কারণে ম্যাচটি অমীমাংসিত থাকলেও ওই সুযোগেই ১০৬ রানে ৪ উইকেট নিয়ে নিজের জাত চেনান মাশরাফি৷ স্টুয়ার্ট কার্লাইল তাঁর প্রথম শিকার৷
ছবি: AP
টেস্ট ক্যারিয়ার
৩৬ টেস্টে ৭৮ উইকেট নিয়েছেন মাশরাফী৷ এক ইনিংসে পাঁচ উইকেট পাননি কখনো৷ তবে ৪ উইকেট নিয়েছেন চারবার৷ বোলিং গড় ৪১.৫২৷ ইকোনমি ৩.২৪৷ রান করেছেন ৭৯৭৷ সর্বোচ্চ ৭৯৷
ছবি: AP
ওয়ানডে অভিষেক
সেই সিরিজেই ওয়ানডেতেও অভিষেক হয় মাশরাফীর৷ চট্টগ্রামের এম এ আজিজ স্টেডিয়ামে ২০০১ সালের ২৩ নভেম্বর৷ সেখানেও তৃতীয় ওভারেই গ্রান্ট ফ্লাওয়ারের স্টাম্প উড়িয়ে দেন ‘নড়াইল এক্সপ্রেস’৷ এরপর অ্যান্ডি ফ্লাওয়ারের উইকেটও তুলে নেন৷ ম্যাচটি বাংলাদেশ হারলেও মাশরাফি ৮.২ ওভারে ২৬ রান দিয়ে নেন ২ উইকেট৷
ছবি: Getty Images/AFP/M. Melville
ওয়ানডে ক্যারিয়ার
ওয়ানডে ক্যারিয়ারে এখনো ইতি টানেননি৷ ছয় মার্চ জিম্বাবোয়ের বিপক্ষে ছিল তাঁর ক্যারিয়ারের ২২০-তম ম্যাচ৷ ওয়ানডেতে মোট উইকেট ২৭০টি৷ ইকোনমি ৪.৮৮৷ ৫ উইকেট নিয়েছেন একবার৷ ৪ উইকেট সাতবার৷ ব্যাট হাতে করেছেন ১৭৮৭ রান৷ সর্বোচ্চ অপরাজিত ৫১৷
ছবি: Getty Images/AFP/I. S. Kodikara
টি-টোয়েন্টি
৫৪টি টি-টোয়েন্টি আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলেছেন ম্যাশ৷ উইকেট নিয়েছেন ৪২টি৷ রান করেছেন ৩৭৭৷ ম্যাচে ৪ উইকেট নিয়েছেন একবার৷
ছবি: Getty Images/AFP/F.K. Godhuly
অধিনায়ক মাশরাফী
বাংলাদেশের সবচেয়ে সফল ওয়ানডে অধিনায়ক মাশরাফী৷ ২০০৯ সালে তিনি অধিনায়কের দায়িত্ব পান৷ ৮৮টি ম্যাচ বাংলাদেশ খেলেছে তাঁর অধিনায়কত্বে৷ এর মধ্যে ৫০টি জিতেছে এবং ৩৬টি হেরেছে৷ ২টির কোনো ফলাফল হয়নি৷ তাঁর নেতৃত্বে বাংলাদেশে জয়ের হার ৫৮ ভাগ৷ সফলতায় তার পরে আছেন সাকিব আল হাসান৷ তাঁর অধিনায়কত্বে জয়ের হার প্রায় ৪৭ ভাগ৷