বৃহস্পতিবার নেদারল্যান্ডস ও ব্রিটেনে ইউরোপীয় পার্লামেন্ট নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে৷ বুথ-ফেরত জরিপ বলছে, ডাচরা ইউরোপ বিরোধীদের প্রত্যাখ্যান করেছেন৷
বিজ্ঞাপন
নেদারল্যান্ডসের সরকারি প্রচারমাধ্যম এনওএস-এর বুথ ফেরত জরিপ বলছে, ডানপন্থি পপুলিস্ট দল এফভিডি এবং ইসলাম-বিরোধী পিভিভি ২৬টির মধ্যে মাত্র তিনটি আসন পাবে৷ অথচ নির্বাচনের আগে জরিপ বলছিল, দল দুটি মোট ১০টি আসন পেতে পারে৷
উল্লেখ্য, ইউরোপীয় পার্লামেন্টে আসনের সংখ্যা ৭৫১৷ এর মধ্যে জনসংখ্যার অনুপাতে প্রতিটি দেশের জন্য আসনসংখ্যা নির্দিষ্ট করে দেয়া আছে৷ সে হিসেবে নেদারল্যান্ডস থেকে ২৬ জন সাংসদ নির্বাচিত হবেন৷ এই সাংসদদের এমইপি বলা হয়৷
এক মিনিটে ইউরোপীয় নির্বাচন সম্পর্কে জেনে নিন
01:12
বুথ-ফেরত জরিপ বলছে, ইইউ সংসদে সামাজিক গণতন্ত্রী গ্রুপের প্রধান প্রার্থী ফ্রান্স টিমারমান্সের লেবার পার্টি পাবে পাঁচটি আসন৷ আর ডাচ প্রধানমন্ত্রী মার্ক রুটের লিবারেল পার্টি পাবে চারটি আসন৷
এবারের ইইউ নির্বাচনে পপুলিস্ট, ডানপন্থি দলগুলো ভালো করতে পারে বলে আশঙ্কা করা হয়েছিল৷ ফলে নেদারল্যান্ডসে তারা ভালো করতে না পারার ট্রেন্ড কি বাকি ইউরোপেও দেখা যেতে পারে? আমস্টারডামে ডয়চে ভেলের সাংবাদিক ব্যার্ন্ড রিগ্যার্ট অবশ্য তেমনটা মনে করছেন না৷ তিনি বলছেন, নেদারল্যান্ডসে যে ফলাফলের কথা বলা হচ্ছে, সেটা শুধু একটা বুথ-ফেরত জরিপ৷ ফলে এই ট্রেন্ড কি ইউরোপেও দেখা যাবে কিনা, তা বলাটা একটু জলদি হয়ে যাবে৷ ‘‘২৮টি সদস্যরাষ্ট্রের প্রতিটিতে ভিন্ন গল্প, ভিন্ন কর্মসূচি রয়েছে৷ ফলে সেসব দেশের ফলের ভবিষ্যদ্বাণী করা কঠিন৷’’
এদিকে, ব্রিটেনের নির্বাচনি আইনের কারণে সে দেশে অনুষ্ঠিত ভোটের পর কোনো বুথ-ফেরত জরিপ প্রকাশ করা হয়নি৷ তবে ব্রিটেনে বসবাসরত ইউরোপের অন্য দেশের অনেক নাগরিক ভোট দিতে পারেননি বলে অভিযোগ উঠেছে৷ যুক্তরাজ্যের নির্বাচন কমিশন এজন্য ব্রিটেনের ইইউ নির্বাচনে অংশ নেয়ার সিদ্ধান্ত নিতে দেরি হওয়াকে দায়ী করেছে৷ এক বিবৃতিতে তারা বলছে, ‘খুব অল্প সময়ের মধ্যে’ ব্রেক্সিট স্থগিত করে ইইউ নির্বাচনে অংশ নেয়ার সরকারি সিদ্ধান্তের কারণে জটিলতা তৈরি হয়েছিল৷
উল্লেখ্য, রবিবার ইইউর সব দেশে ভোটগ্রহণ শেষ হবে৷ এরপরই নেদারল্যান্ডস, ব্রিটেনসহ সব দেশের ফল জানা যাবে৷
জেডএইচ/এসিবি (এএফপি, ডিপিএ, রয়টার্স, এপি)
ইউরোপীয় নির্বাচনে লড়ছেন যাঁরা
আগামী ২৩-২৬ তারিখ নেতৃত্ব নির্বাচনে ভোট দিবেন ইউরোপীয় ইউনিয়নের নাগরিকরা৷ ব্রেক্সিট আর জাতীয়তাবাদী রাজনীতির ঢেউয়ে এবারের নির্বাচনটি আলাদা গুরুত্ব পাচ্ছে৷ কে জয়ী হচ্ছেন তার উপর ইইউ-র সামনের দিনের অনেক নীতিও নির্ভর করবে৷
ছবি: picture-alliance/dpa/D. Kalker
মানফ্রেড ভেবার
ইউরোপীয় পার্লামেন্টের অন্যতম দল ইউরোপিয়ান পিপলস পার্টি-ইপিপির প্রার্থী মানফ্রেড ভেবার৷ জার্মান এই রাজনৈতিক নেতার প্রতি চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেলের সমর্থন রয়েছে৷ নির্বাচনি প্রতিদ্বন্দ্বীতায় সামনের সারিতে থাকলেও আন্তর্জাতিক অঙ্গনে তিনি স্বল্প পরিচিত৷ তাঁর ভাষা দক্ষতাও তেমন একটা ভালো নয়৷
ছবি: Reuters/V. Kessler
ফ্রান্স টিমারমান্স
ইউরোপীয় কমিশনের প্রথম ভাইস প্রেসিডেন্ট ফ্রান্স টিমারমান্স৷ তিনি লড়বেন প্রোগ্রেসিভ অ্যালায়েন্স অফ সোশ্যালিস্টস অ্যান্ড ডেমোক্র্যাটস-এর হয়ে৷ ভেবারের প্রধান এই প্রতিদ্বন্দ্বী ইউরোপীয় জোটকে আরো সুদৃঢ় করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন ভোটারদের কাছে৷ কারণ, এমন এক সময়ে এই নির্বাচন হচ্ছে, যখন ব্রেক্সিটের মাধ্যমে ব্রিটেন ইইউ থেকে বেরিয়া যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে আর জাতীয়তাবাদী আন্দোলনের নতুন ঢেউও উঠেছে৷
ছবি: Reuters/F.Lenoir
ইয়ান যারাডিল
ইইউ সংসদের তৃতীয় বৃহৎ দল ইরোপিয়ান কনজারভেটিভস অ্যান্ড রিফর্মিস্টের প্রার্থী ইয়ান যারাডিল৷ এই চেক রাজনীতিবিদ ‘ফরেস্ট গাম্প’ হিসেবেও পরিচিত অনেকের কাছে৷ ইউরোপীয় পার্লামেন্টের একটি অধিবেশনে অংশ নিতে তিনি প্রাগ থেকে স্ট্রাসবুর্গ পর্যন্ত সাইকেল চালিয়ে এসেছিলেন৷ অনুদান সংগ্রহের অংশ হিসেবে চেক রিপাবলিকানে ১৩০০ কিলোমিটার দৌড়ে বেড়িয়েছেন৷
ছবি: imago/Belga
মার্গেরোটে ভেস্তাগার
৫১ বছর বয়সি মার্গেরোটে ভেস্তাগার অ্যালায়েন্স অফ লিবারেলস অ্যান্ড ডেমোক্র্যাটস ফর ইউরোপ গ্রুপের সাত প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বীর একজন৷ এই ডেনিশ নেত্রী বর্তমানে ইউরোপীয় প্রতিযোগিতা বিষয়ক কমিশনার হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন৷ অ্যাপল, অ্যামাজন আর গুগলের মালিকানা প্রতিষ্ঠান অ্যালফাবেটের মুখোমুখি হয়েছেন৷
ছবি: Reuters/Y. Herman
বাস আইকাউট
ইউরোপীয় পার্লামেন্টের সপ্তম বৃহৎ দল গ্রিনস-ইউরোপিয়ান ফ্রি অ্যালায়েন্স৷ ডাচ রাজনীতিবিদ বাস আইকাউট প্রেসিডেন্ট হতে লড়ছেন এই ‘সবুজ’ দলের হয়ে৷ ইউরোপে ‘সবুজ’ পরিকল্পনা যাতে বাস্তবায়ন হয়, তা নিশ্চিত করতেই তিনি এই দৌড়ে যোগ দিয়েছেন বলে জানান৷ পাম অয়েলের ব্যবহার ২০২৩ সালের মধ্যে সীমিত আকারে নেয়া আর ২০৩০ সালের মধ্যে শুন্যে নামিয়ে আনার প্রচার চালাচ্ছেন তিনি৷
ছবি: picture-alliance/dpa/W. von Dewitz
ভিওলেটা টমিচ
ছবির বাম দিকের নারী স্লোভেনিয়ার নেত্রী ভিওলেটা টমিচ৷ মূলত টিভি উপস্থাপক ও অভিনেতা হিসেবেই তিনি বেশি পরিচিত৷ ২০১৪ সালে পা রাখেন রাজনীতির অঙ্গনে৷ ইউরোপে সমকামী ও নাগরিকদের অধিকার আদায়ের আন্দোলনে তিনি সবসময় সরব৷