1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

মধ্যযুগীয় নিদর্শন

১ ফেব্রুয়ারি ২০১২

বলা হয়, নেপালে যেন মধ্যযুগ এখনো শেষ হয়নি৷ ইতিবাচক অর্থেই বলা হয় সেটা৷ কারণ দেশজুড়ে থাকা সেসময়কার স্থাপত্য কর্মের অনেক নিদর্শন৷ কিন্তু দিন দিন পরিস্থিতি পাল্টে যাচ্ছে৷

মাউন্ট এভারেস্ট সহ হিমালয়ের আকর্ষণে নেপালে আসেন অনেকেছবি: picture alliance/dpa

নেপালের আয়ের একটা বড় অংশ আসে পর্যটন থেকে৷ বিশ্বের সর্বোচ্চ চূড়া মাউন্ট এভারেস্ট এর একটা কারণ৷ তবে মধ্যযুগীয় কারুকাজে সজ্জিত ভবনের উপস্থিতিও এর একটা কারণ৷

অন্যান্য দেশের মানুষকে যখন ইতিহাসের কাছে যেতে ছবির শরণাপন্ন হতে হয় সেখানে নেপালে গেলেই দেখতে পাওয়া যায় সারি সারি ইতিহাস৷ এবং সেটা বাস্তবে৷

কাটমাণ্ডুর আশেপাশে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে বহুছাদ বিশিষ্ট বৌদ্ধ ও হিন্দু মন্দির৷ একেকটি মন্দির যেন স্থাপত্যের একেকটা অনন্য উদাহরণ৷ কিন্তু দ্রুতই সেগুলো ভেঙে ফেলা হচ্ছে৷ আধুনিক জীবনের সঙ্গে মিলিয়ে চলতে নেপালিরাও ইতিহাস ভেঙে গড়ে তুলছে নতুন স্থাপত্যের সব ভবন৷

একাজে যেন বাধা দেয়ার কেউ নেই৷ মাত্র দশ বছর আগেও ঐতিহাসিক নিদর্শন ভেঙে ফেলার জন্য কারও অনুমতি নিতে হতনা বলে জানান জার্মান নাগরিক, স্থাপত্য বিশারদ নিলস গটশোভ৷ প্রায় চল্লিশ বছর ধরে তিনি বাস করেছেন নেপালে৷ সেখানে ইতিহাস ধরে রাখার কাজ করছেন তিনি৷

গটশোভ জানান, এখন কোনো ভবন ভাঙতে সরকারের অনুমতি নেয়ার আইন করা হয়েছে৷ কিন্তু সে পর্যন্তই৷ আইনের কোনো প্রয়োগ নেই৷ তাই যে যার খুশিমত পুরনো দালান ভেঙে নতুন দালান গড়ে তুলছে৷ নগরায়নের কারণে হারিয়ে যাচ্ছে ইউনেস্কোর ওয়ার্ল্ড হেরিটেজের অন্তর্ভুক্ত এসব নিদর্শন৷

১৯৭৯ সালে ইউনেস্কোর তালিকায় ঢোকা এশিয়ার প্রথম স্থাপত্য হলো কাটমাণ্ডু ভ্যালির এসব ভবন৷ ভক্তপুর, কাটমাণ্ডু আর পাটান - এই তিন এলাকার হিন্দু ও বৌদ্ধ মন্দিরগুলো এই তালিকার অংশ৷

নেপালের আয়ের একটা বড় অংশ আসে পর্যটন থেকেছবি: Santosh Giri

৭০ বছর বয়সি গটশোভের জন্ম জার্মানির হামবুর্গ শহরে এক স্থপতির ঘরে৷ তিনি নিজেও স্থাপত্যের উপর পড়াশোনা করেছেন৷ পরে গত শতকের ষাটের দশকে জাপান যান শিক্ষানবিশ হিসেবে কাজ করতে৷ এরপর ১৯৭১ সালে যান নেপালে৷ উদ্দেশ্য - হিন্দু মন্দির ‘পূজারি মঠ'এর সংস্কার৷ কাটমাণ্ডু থেকে ১৩ কিলোমিটার পূবে ভক্তপুর এলাকায় মন্দিরটি অবস্থিত৷ পরবর্তী কালে এই এলাকাতেই ঘর বানিয়ে থেকে যান গটশোভ৷ নেপালের ঐতিহ্য রক্ষায় কাজ করে যাচ্ছেন এই নিবেদিত প্রাণ৷ এ কাজে ব্যবহার করছেন স্থাপত্য প্রযুক্তি৷

বর্তমানে তিনি দ্বাদশ শতাব্দীর নিদর্শন পাটান রয়েল প্যালেস ও ভাণ্ডারখাল আর্কিওলজিক্যাল গার্ডেন সংস্কারের কাজ করছেন৷

এসব কাজ করতে গিয়ে বিভিন্ন সময়ে নানা বাধার মুখোমুখি হতে হয়েছে গটশোভকে৷ এ প্রসঙ্গে তিনি একটা ঘটনার কথা জানান৷ কাটমাণ্ডুতে বৌদ্ধদের একটি অন্যতম বড় নিদর্শন ‘ইতুম বাহাল' সংস্কারের সময় গটশোভের কর্মীদের উপর হাতুড়ি নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল একদল সন্ত্রাসী৷

এতক্ষণ ধরে যেসব স্থাপনার কথা বলা হচ্ছে সেগুলো তৈরি করেছেন নেওয়ার'রা৷ কাটমাণ্ডু ভ্যালিতে এই বিশেষ গোত্রের লোকেদের বাস৷ তাদের উপর একটি বই বের করেছেন গটশোভ৷ নাম ‘আর্কিটেকচার অব নেওয়ারিস'৷

গটশোভ বলছেন, হয়তো আর কিছুদিনের মধ্যে নেপালের এসব ঐতিহাসিক নিদর্শনগুলো হারিয়ে যাবে৷ তখন অন্যান্য দেশের মানুষের মতো তাঁর এই বই পড়েই নেপালিদের হয়তো ইতিহাস খুঁজতে হবে৷

জার্মান এই স্থপতি বলেন, আমি কিন্তু হতাশ হইনি৷ কেননা এটা জীবনেরই একটা অংশ, মন্তব্য গোটশোভের৷

প্রতিবেদন: জাহিদুল হক

সম্পাদনা: আব্দুল্লাহ আল-ফারূক

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য
স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ