২০২০ সালে ভারত এই চীনা সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাপটি বন্ধ করে দেয়। এবার নেপালও সেই পথে হাঁটলো।
বিজ্ঞাপন
সোমবার বিবৃতি দিয়ে নেপালের সরকার জানিয়েছে, সামাজিক সম্প্রীতি রক্ষা করার জন্যই এই সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হয়েছে তারা। ক্যাবিনেট মন্ত্রী রেখা শর্মা সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, মন্ত্রিসভার বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে। তারপরেই সমস্ত ইন্টারনেট প্রোভাইডারদের বলা হয়েছে দ্রুত অ্যাপটি ব্লক করে দেওয়ার জন্য। সোমবারের মধ্যেই প্রায় গোটা নেপালে টিকটক ব্লক করে দেওয়া হয়েছে।
টিকটকের চীনা সংস্করণের সহায়তায় যুক্তরাষ্ট্রে
বিশ্বজুড়ে যে অ্যাপ টিকটক নামে পরিচিত, চীনে তার নাম ডোওয়িন। আর এই অ্যাপে শেয়ার করা নানা তথ্যের ওপর ভিত্তি করে মেক্সিকো সীমান্ত পাড়ি দিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে আসছেন অনেক চীনা অভিবাসী।
ছবি: REUTERS
এ যেন পর্যটনের গাইড
পর্যটকদের জন্য নানা ধরনের অ্যাপে নানা পরামর্শ থাকে। ঠিক একইভাবে অভিবাসীদের সীমান্ত পাড়ি দেয়ার জন্য ডোওয়িন অ্যাপেও রয়েছে নানা পরামর্শ। এর মধ্যে কিভাবে প্রস্তুতি নিতে হয়, কী ধরনের জুতা পরতে হয়, কোন রুট ধরে যেতে হয়, কখন গেলে সুবিধা ইত্যাদি নানা পরামর্শ দিয়ে ভিডিও তৈরি করেন অনেকে। কিভাবে আস্থাভাজন গাইড খুঁজে সীমান্ত পর্যন্ত যাওয়া যায়, এমন পরামর্শ পাওয়া যাচ্ছে এই অ্যাপে।
ছবি: REUTERS
শত শত চীনা অভিবাসী
টেক্সাস রাজ্যের দক্ষিণ-পূর্বের একটি প্রত্যন্ত রুটে প্রায় তিন সপ্তাহ ধরে ছবি তুলেছেন বার্তা সংস্থা রয়টার্সের চিত্রগ্রাহক। অনেক চীনা অভিবাসীর সাক্ষাৎকারও নিয়েছেন। সাক্ষাৎকার দেয়া অভিবাসীরা প্রত্যেকেই জানিয়েছেন, এই রুটের খবর তারা জেনেছেন ডোওয়িন অ্যাপে শেয়ার করা নানা ভিডিও দেখে। এমনকি কোনো তথ্যের প্রয়োজন হলে ভিডিওর নীচে মন্তব্যে সেগুলোর উত্তরও পাওয়া যাচ্ছে খুব সহজেই।
ছবি: REUTERS
বাইবেল হাতে যুক্তরাষ্ট্রের পথে
অনেক চীনা অভিবাসীর গলায় ক্রুশ ঝুলতে দেখা গেছে, হাতে দেখা গেছে চীনা ভাষায় লেখা বাইবেল। এসব অভিবাসীরা নিজেদের খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বী হিসাবে পরিচয় দিয়েছেন। তাদের দাবি, চীনে তারা স্বাধীনভাবে নিজেদের ধর্ম পালন করতে পারেন না। চীনের সংবিধানে ধর্মের স্বাধীনতার কথা বলা হয়। তবে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে কমিউনিস্ট ভাবাদর্শের প্রতি চ্যালেঞ্জ হয়ে উঠতে পারে, এমন আশঙ্কায় ধর্মীয় আচারের ওপর কঠোরতা আরোপ করা হয়েছে।
ছবি: REUTERS
যাত্রা শুরু ইকুয়েডরে
দক্ষিণ অ্যামেরিকার ইকুয়েডর থেকে সাধারণত যাত্রা শুরু করেন অভিবাসীরা। অনেক দেশেই চীনা নাগরিকদের ভিসামুক্ত চলাচলের অধিকার রয়েছে। এই সুযোগ নিয়ে সহজে এবং কম খরচে দক্ষিণ অ্যামেরিকার কোনো একটি দেশে আসেন চীনারা। তারপর শুরু হয় তাদের এই যাত্রা।
ছবি: REUTERS
আট দেশ, দুই মহাদেশ
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে পৌঁছানোর জন্য দুই মহাদেশের মধ্যে দিয়ে যেতে হয় অভিবাসীদের। দক্ষিণ অ্যামেরিকার কোনো একটি দেশ থেকে যাত্রা করে যুক্তরাষ্ট্র পৌঁছাতে তাদের পাড়ি দিতে হয় পানামার প্রত্যন্ত ডারিয়েন গ্যাপ। যুক্তরাষ্ট্র সীমান্তে পৌঁছাতে প্রায় তিন হাজার ৭০০ কিলোমিটার যাত্রাপথে অন্তত আটটি দেশ পেরোতে হয় তাদের। কারো কারো ক্ষেত্রে দেশের সংখ্যা আরো বেশিও হতে পারে।
ছবি: REUTERS
রয়েছে শিশুরাও
এই ক্লান্তিকর যাত্রায় কেবল প্রাপ্তবয়স্করাই আসেন না, চিত্রগ্রাহক প্রায় প্রতিটি পরিবারের সঙ্গেই শিশুদেরও দেখেছেন। স্বভাবসুলভ চপলতা থাকলেও দীর্ঘ ক্লান্তিকর যাত্রাপথের ছাপ শিশুদের চোখেমুখে স্পষ্ট।
ছবি: REUTERS
চীনা অভিবাসীর সংখ্যা বাড়ছে
যুক্তরাষ্ট্র সীমান্তরক্ষা সংস্থার তথ্য অনুযায়ী ২০২২ সালের অক্টোবরের পর ছয় মাসে মেক্সিকো সীমান্তে সাড়ে ছয় হাজারের বেশি চীনা নাগরিককে আটক করা হয়েছে। সীমান্তে আসা মোট অভিবাসীদের সংখ্যার তুলনায় এই সংখ্যা একেবারেই কম। কিন্তু আগের তথ্য বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, যুক্তরাষ্ট্র-মেক্সিকো চীনা অভিবাসীদের সংখ্যা খুব দ্রুত বেড়ে চলেছে।
ছবি: REUTERS
7 ছবি1 | 7
রেখা জানিয়েছেন, ''টিকটকের মাধ্যমে সমাজে অশ্লীল ভিডিও এবং ছবি ছড়িয়ে পড়ছিল। সে কারণেই এই চরম পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।'' সরকারের এই পদক্ষেপ নিয়ে অবশ্য সরকারের ভিতরে এবং বাইরে চরম সমালোচনা শুরু হয়েছে। সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী প্রদীপ গ্যাওয়ালি বলেছেন, ''ন্য সমাজ মাধ্যমগুলিতেও এই ধরনের অশ্লীল ভিডিও এবং ছবি থাকে। সেগুলিকেও কি বন্ধ করে দেওয়া হবে?'' প্রদীপের বক্তব্য, বন্ধ করে নয়, সমাজ মাধ্যমগুলির কনটেন্টে সরকারকে হস্তক্ষেপ করতে হবে। কোথায় কী যাচ্ছে তার উপর নজরদারি করতে হবে। কিন্তু কোনো অ্যাপ বন্ধ করে দেওয়া কখনোই কোনো সমাধান হতে পারে না।
নেপালি কংগ্রেসের নেতা গগন থাপা জানিয়েছেন, ব্যক্তি স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ করা হচ্ছে। এভাবে সমাজকে রক্ষা করা যাবে না।
২০২০ সালে লাদাখে চীনের সঙ্গে সংঘাত শুরু হওয়ার পর ভারত চীনের অ্যাপ টিকটক বন্ধ করে দিয়েছিল। ভারতের বক্তব্য ছিল, এই অ্যাপ ভারতের গোপন তথ্য বাইরে ফাঁস করে দিচ্ছে। ওই সময় ভারতে কয়েক কোটি টিকটক ব্যবহারকারী ছিলেন। নেপালেও টিকটক অত্যন্ত জনপ্রিয়।