ন্যাটো নো-ফ্লাই জোনের দায়িত্ব নিচ্ছে, কিন্তু আপাতত তার বেশি নয়
২৫ মার্চ ২০১১অর্থাৎ অভিযান একটা নয়, দু'টো৷ ভূমধ্যসাগরে জাহাজ পাঠিয়ে লিবিয়াকে অস্ত্র সরবরাহ রোখার অভিযানটাকেও একটা তৃতীয় অভিযান বলে গণ্য করা চলে৷ ন্যাটোর মহাসচিব আন্ডের্স ফঘ রাসমুসেন বলেছেন, ন্যাটো নো-ফ্লাই জোনের দায়িত্ব নিচ্ছে, কিন্তু ফ্রান্স, ব্রিটেন, যুক্তরাষ্ট্র এবং অপরাপর দেশের স্বেচ্ছাধীন জোট তাদের নিজেদের গতিবিধি চালিয়ে যাবে৷ ‘‘এর অর্থ, আপাতত দু'টি অভিযান চলবে,'' এ'কথা বলেছেন রাসমুসেন স্বয়ং৷ তবে তিনি এ'ও বলেছেন যে, ন্যাটোকে উভয় অভিযানের দায়িত্ব দেওয়া নিয়ে আলাপ-আলোচনা চলেছে, কিন্তু সে'বিষয়ে এখনও কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি৷ রবিবার নাকি সেই সিদ্ধান্ত নেওয়ার সম্ভাবনা আছে৷
তুরস্কের আপত্তি থেকেই এই বিপত্তি৷ একটি মুসলমান দেশের উপর আক্রমণ, যা'তে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সক্রিয় ভূমিকা আছে: তুরস্ক তার সঙ্গে জড়িয়ে পড়তে চায়নি৷ তাছাড়া লিবিয়ার মুসলমান জনসাধারণ, তাদের মধ্যে হতাহতের ব্যাপারটাও বিড়ম্বনা সৃষ্টি করতে পারে৷ অপরদিকে ফ্রান্সও ন্যাটোকে বাদ দিতেই চেয়েছিল৷ এখন এই দ্বিবিধ অভিযানের মাধ্যমে অধিনায়কত্বের প্রশ্নটাই এড়িয়ে যাওয়া হল৷
শোনা যাচ্ছে ন্যাটো মাঠে নামছে আগামী দু'-তিন দিনের মধ্যেই৷ মজার কথা: ন্যাটোর অভিযানের দায়িত্বে থাকছেন মার্কিন এ্যাডমিরাল স্যামুয়েল লকলিয়ার, যিনি আবার জোটের বায়ু অভিযানের দায়িত্বেও আছেন৷ বলতে কি, সাগরবক্ষে অস্ত্র অবরোধ কার্যকরি করার দায়িত্বও তাঁর৷ অর্থাৎ, ব্যক্তিপর্যায়ে ঐ এক মার্কিন এ্যাডমিরালই সব লাগাম ধরে রাখছেন৷
ফ্রান্স গোড়া থেকেই বিমান পাঠিয়ে, বিমান হামলা চালিয়ে নিজেকে একেবারে অভিযানের পুরোভাগে এনে ফেলেছে৷ এখন নাকি তারা আবার রাজনীতি, কূটনীতি নিয়ে চিন্তাভাবনা করছে৷ - আরব লিগ তাদের মত পাল্টানোর পর থেকেই ফরাসি প্রেসিডেন্ট নিকোলা সারকোজির অবস্থান হয়তো কিছুটা দুর্বল হয়ে পড়েছে৷ এখন সংযুক্ত আরব আমিরশাহী যোগ দিচ্ছে ঘোষণা করতে পেরে তিনি খুব খুশী৷ কিন্তু ন্যাটোর চিন্তা যেমন সামরিক দিকটা নিয়ে, বাদবাকি জোটের চিন্তা কিন্তু তাদের অভিযানের রাজনৈতিক সমর্থন এবং ফলশ্রুতি নিয়ে৷ তাই সারকোজির তাগিদে আগামী মঙ্গলবার লন্ডনে একটি রাজনৈতিক কৌশল কমিশন বসছে, যার কাজ হবে লিবিয়ায় সামরিক অভিযানকে একটা রাজনৈতিক দিকনির্দেশ দেওয়া৷
প্রতিবেদন: অরুণ শঙ্কর চৌধুরী
সম্পাদনা: সাগর সরওয়ার